টিপস সংস্কৃতি বনাম নো-টিপস সংস্কৃতি – সুপ্রিয় রায়

অনেক দেশে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার শেষে ওয়েটারদের টিপস দেওয়াটা এক ধরনের রীতি। পরিষেবা শিল্পে, যেমন রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, হোটেল এবং বিউটি সেলুনগুলিতে এই প্রথা দেখা যায় । টিপস দেওয়ার প্রথা আছে এমন দেশ যেমন: USA, Canada, India ইত্যাদি। আবার কিছু দেশ, যেমন ফিনল্যান্ড,  জাপান ইত্যাদি দেশে যেখানে এই প্রথার অস্তিত্বই নেই। এখানে অর্থাৎ ফিনল্যান্ডে দেখছি রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর কোন টিপস দেওয়ার প্রথা নেই । খুব ভাল লাগলো এটা দেখে । তাই মনে প্রশ্ন আসলো যে  —এই দুই ব্যবস্থার মধ্যে কোনটি বেশি উপযুক্ত সমাজের দৃষ্টিতে?

আমার মনে হয় টিপস দেওয়ার সংস্কৃতি একদিকে যেমন ভালো সার্ভিসকে পুরস্কৃত করে, অন্যদিকে সেটি একটি চাপও তৈরি করে গ্রাহকের জন্য। অনেক দেশে মূল বেতন কমিয়ে রেখে ধরে নেওয়া হয় যে ওয়েটাররা টিপস থেকে বাঁচবেন। ফলে তাদের আয়ের স্থায়িত্ব থাকে না। টিপস না পেলে তারা অপমানিতও বোধ করতে পারেন।

অন্যদিকে, ফিনল্যান্ডের মতো সমাজে টিপস না দিলেও পরিষেবার মান এ  কোন ঘাটতি হয় না। কারণ এখানে সার্ভিসটাই পেশাগত দায়িত্ব। ওয়েটাররা নির্দিষ্ট ও ন্যায্য বেতন পান, ফলে টিপসের উপর নির্ভরশীলতা তৈরি হয় না। পরিষেবার মান এবং মানবিক মর্যাদা—দুটোই অটুট থাকে।

তুলনামূলকভাবে  বিচার করলে আমার মনে হয় ‘নো-টিপস’ সংস্কৃতি সমাজে সাম্য ও মর্যাদার ভিত্তিকে আরও সুদৃঢ় করে এখানে ভালো ব্যবহার কোনো অর্থমূল্যর কারণে নয়, বরং পেশাদারিত্ব ও মানবিকতার কারণেই হওয়া উচিৎ ।তার ফলে সমাজে সমান মর্যাদা ও পেশাগত গর্ব বজায় থাকে।

13 thoughts on “টিপস সংস্কৃতি বনাম নো-টিপস সংস্কৃতি – সুপ্রিয় রায়

  1. Ratnabali Chatterjee

    আবার একটা অন্যরকম উপস্থাপনা বেশ লাগল।

    টিপস্ দেবার নিয়মটা চালু না থাকাই বাঞ্ছনীয়। তবে রেস্টুরেন্টে টিপস্ দেবার সময় বোধহয় একটা মনোভাব কাজ করে গ্রাহকরা নানা লোভনীয় খাবার খেলেও পরিবেশনকারীদের ভাগ্যে তো সেসব জোটে না। কিছু বাড়তি পয়সা পেলে তারা ইচ্ছে হলে পছন্দের খাবার কিনে খেতে পারবে। আমার তো সেই রকমই মনে হয়।এর সঙ্গে পরিষেবার মানের কোন সম্পর্ক থাকা উচিত নয়।তবে ইদানিং আমাদের দেশে রেস্টুরেন্টে নগদ অর্থের লেনদেনের চল কমে যাওয়াতে টিপস দেবার চলও বোধকরি কমে গেছে।তবে বিউটি স্যালোনে টিপস্ দেবার খুব একটা প্রয়োজন আছে বলে মনে হয় না যদিও জানি না সেখানে পরিষেবা প্রদানকারীরা ন্যায্য বেতন পান কি না।

    Like

  2. Sudhir Bagchi

    ভাই সুপ্রিয়, তোমরা বেড়াতে গেলে কত কিছু যে ঘরে বসে জানতে পারি । খুব ভাল লাগে। লেখাটাও ভাল লাগল। সাবধানে থেকো ভাই ।

    Like

Leave a reply to supriyoroy Cancel reply