অ্যামেরিকার টিপস সংস্কৃতি যেন এক অঘোষিত ট্যাক্স – সুপ্রিয় রায়

ফিনল্যান্ডে থাকাকালীন দারুন ভাল এক অভিজ্ঞতা হয়েছিল। রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর বা অনলাইনে খাবার আনালে দেখেছি ওখানে কেউ টিপস দেয় না বা কেউ আবার নেয়ও না। শুনেছি , নতুন নতুন আসার পর প্রথম দিকে একজন একবার ফিনল্যান্ডে রেস্টুরেন্টে খেয়ে উঠে অভ্যাস বশত টিপস দিতে গিয়েছিল— ওয়েটার এমনভাবে তাকিয়েছিল , যেন মনে হচ্ছিল ও ওদের ঘুষ দিতে চাইছে ! টিপস ছাড়াই পরিষেবা ওখানে বরাবরই একেবারে নির্ভুল। কারণ সেখানে কাজটাই পেশাগত দায়িত্ব, আর কর্মীরা ন্যায্য বেতন পান। ফলে তাঁদের মুখে হাসিটাও বেতনের সঙ্গে প্যাকেজে থাকে!

আমাদের দেশেও অনলাইনে খাবার বা জিনিস আনালে টিপস না দিলেও চলে। তবে রেস্টুরেন্টে খাওয়ার পর টিপস দেওয়াটা একটা সামাজিক প্রথা । টিপস না দিলে ওয়েটারের দৃষ্টি এমন হয় যেন আমি আমার শ্বশুরবাড়িতে খালি হাতে গিয়েছি !

এবার আমেরিকার কথা বলি। এখানে টিপস না দিলে মনে হয়, ওয়েটার হয়তো পরের জন্মেও আমার খোজ করবে! অনলাইনে খাবার আসুক বা জিনিস আসুক — সব জায়গায় টিপস যেন এক অঘোষিত ট্যাক্স।

ভালো ব্যবহার বা পরিষেবা কখনোই বাড়তি পয়সার ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। বরং সেটা আসা উচিত পেশাদারিত্ব আর মানবিকতা থেকে। তাতে কর্মীর সম্মানও থাকে, আবার আমাদেরকেও ক্যালকুলেটরে বসে ১৮%–২০% টিপস হিসাব করতে হয় না!

আপনারা কী বলেন? টিপস দিয়ে হাসি কিনব, না কি টিপস ছাড়াই হাসিটা ফ্রি পাওয়া উচিত?

16 thoughts on “অ্যামেরিকার টিপস সংস্কৃতি যেন এক অঘোষিত ট্যাক্স – সুপ্রিয় রায়

  1. কিছুদিন আগে সুপ্রয়দার ফিনল্যান্ডের নো টিপস নিয়মটি নিয়ে লেখাটি পড়ে খুব ভাল লেগেছিল,দেশটির এই নিয়মটি জেনে।আবার এই লেখাতে পড়লাম ইউ এস এ তে ঠিক তার উল্টো নিয়মটির কথা।

    যেখানে ওয়েটারদের মাইনে তাদের পরিষেবার তুলনায় কম সেখানে টিপস্ দিলে হয়তো তাদের কিছুটা অর্থনৈতিক সুবিধা হয় কিন্তু যেখানে তারা পরিষেবার তুলনায় যথেষ্ট মাইনে পায় সেখানে এই টিপস্ দেবার নিয়মটি তাদের অর্থলোভী করে তোলে বলেই মনে হয়।আর হাসিমুখে পরিষেবা দেওয়াটা টিপসের ওপর নির্ভর করা উচিত নয় হাসিমুখে পরিষেবা দিলে একটা ফিল গুড ফ্যাক্টার তৈরি হয় যা বোধকরি খাবারকে আরো স্বাদু করে তোলে।

    বেশ নতুন নতুন বিষয় নিয়ে সুপ্রিয়দার উপস্থাপনা সত্যিই প্রশংসনীয়।

    Like

  2. Sukhendu Ray

    খুব আনন্দ করে বেড়াচ্ছিস দেখে আমার ভীষণ ভালো লাগছে। তোর লেখা পড়ে বিদেশ সম্পর্কে কিছু জানতে পারছি। এটাই আমাদের পাওনা।

    Like

  3. Jaharlal Purkait

    পাড়ার একটা ছেলে (বখাটে) সকালে পেপার দেয়।

    ৮টার আগে পেপার দিলে জানবে আজ দিনটা কাটবে ভালো। অনেকবার পেপার নেবনা ধমকি দিয়েও কাজ হয়নি।পেপার ওয়ালা ডেলিভারি মান চেঞ্জ করে দিলো।প্রতিদিন সাড়ে সাত তার মধ্যে পেপার।অনেকদিন খুশি ছিলাম।পুজোর একসপ্তাহ আগে আবার হাজির সেই ছোকরা।সময় পেপার দিচ্ছে,কোনো অসুবিধা নেই।দুদিন পরে এসে হাজির বখশিস দাও।

    বললাম:পেপারটাতো টাইমে দিসনা

    কিসের বখশিস?কিছুদূর গিয়ে সাইকেল থেকে এমন ভাবে তাকালো বুঝতে পারলনা,বখশিস চাইছিল না হপ্তা উসুলি করতে এসেছিল।যাহোক পেপারওয়ালা হাতদিয়ে বখশিস পাঠিয়ে দিয়ে নিশ্চিন্ত হলাম।

    Like

  4. Partha Pratim Dasgupta

    সবাই তার কাজের জায়গায় তার কর্তব্য পালন করে পরিবর্তে কতৃপক্ষ তার বিনিময় মূল্য দিয়ে থাকে। এটাই নিয়ম। সেখানে ওয়েটারকে টিপস দেবেই বা কেন আর সে নেবেই বা কেন ? ব্যাপারটা কখনোই সমর্থন যোগ্য নয় এবং দৃষ্টিকটু ও বটে।

    Like

Leave a reply to supriyoroy Cancel reply