গত পরশু সন্ধ্যায় আমরা তিনজন মিলে বেড়িয়ে ছিলাম কিছু দৈনন্দিন বাজার করার উদ্দেশ্যে। ইন্ডিয়ান স্টোর থেকে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কেনা শেষ হতেই লিপিকা হঠাৎ বলল —
“চলো না, অনেকদিন পর একটু ভালো সাউথ ইন্ডিয়ান খাওয়া যাক!”
প্রস্তাবটা এমনই মিষ্টি ছিল যে, আমরা সাগ্রহে সন্মতি দিলাম । মুহূর্তেই আমরা রওনা হলাম বেলেভিউয়ের বিখ্যাত Dosa House-এর দিকে।
রেস্তরাঁয় ঢুকতেই মন ভরে গেল চেনা মশলার গন্ধে। বেশ বড় জায়গা জুড়ে ছিমছাম সাজ, আর সেখানে দেখা গেল ভালোই ভিড় — বেশিরভাগই ভারতীয় মুখ।গরম গরম দোসার সঙ্গে সাম্বার, আর তিন রকম চাটনি — নারকেল, টমেটো আর পুদিনা। শেষে ছিল এক চমক — মিষ্টি পায়েস!আর এর সাথে আমরা নিয়েছিলাম দৈ ফুচকা । দীর্ঘদিন পর এমন আসল দক্ষিণ ভারতীয় স্বাদে মনটা যেন একেবারে ভরে গেল।
তৃপ্তি ভরা মুখে রেস্তরাঁ থেকে বেড়িয়ে গাড়িতে উঠতেই ছেলে বলল —
“চলো, আজ রাতে তোমাদের একটা দারুণ জায়গা দেখাই। বাজি ধরে বলতে পারি, তোমরা ওখানে আগে যাওনি!”আমরা তো ঘুরতে পারলেই খুশি! তাই এক কথায় রাজি।
গাড়ি ছুটে চলল আলো ঝলমলে বেলেভিউ পেরিয়ে বিশাল Lake Washington-এর ওপর দিয়ে — পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ভাসমান ব্রিজের ওপর! চারপাশের জলেতে প্রতিফলিত হচ্ছে আলো, মনে হচ্ছিল যেন শহরটা ভেসে আছে তারার সমুদ্রে।
ব্রিজ পেরিয়ে গাড়ি এবার উঠতে লাগল পাহাড়ি পথে। কিছুক্ষণ পর থামল এক পার্কের সামনে — Kerry Park।গাড়ি থেকে নেমে পার্কের অপর প্রান্তে যেতেই চোখ দুটো যেন স্থির হয়ে গেল। সামনে আলোকোজ্জ্বল সিয়াটেল — কোজাগরী পূর্ণিমার চাঁদের আলোয় যেন বিভন্ন মণি মানিক্যের খনি একসাথে জ্বলজ্বল করছে। দূরে দাঁড়িয়ে আছে বিখ্যাত Space Needle, আর তার চারপাশে উজ্জ্বল স্কাইলাইন যেন শহরের হৃদস্পন্দন।
এই কেরি পার্কটি Queen Anne Hill-এর ওপর অবস্থিত, যেখান থেকে দেখা যায় Puget Sound আর পাহাড়ের মনোমুগ্ধকর প্যানোরামা। সত্যিই, এমন দৃশ্যকে ভাষায় বর্ণনা করা যায় না — শুধু অনুভব করা যায়।
ঠান্ডা হাওয়ায় অনেকটা সময় কাটিয়ে অবশেষে ফিরে এলাম বেলেভিউয়ের পথে। ঘড়ির কাঁটা তখন অনেকটাই রাত পেরিয়ে গেছে। কিন্তু সেই রাতের আলো, সেই দৃশ্য, আর সেই প্রশান্তি — সব মিলিয়ে তৈরি হয়ে গেল এক অবিস্মরণীয় স্মৃতি।
সেদিনের রাতটা যেন এখনও মনে ঝলমল করে —
এক ভ্রমণ, এক দৃশ্য, এক মুগ্ধতা আর এক গভীর প্রশান্তি, যা সারা জীবন মনে থেকে যাবে।
Rupa Bhattacharjee
পড়ে মনে হলো তোমাদের সাথে আমিও জায়গাটাকে দেখে এলাম…দাদা তোমার লেখনীর হাত কিন্তু চমত্কার….বলে বোঝান যাবে না…

LikeLike
Anita Sengupta
LikeLike
Dalia Deb
Wowww….dekhe mon vorai…..lekhar kotha bollam na r










LikeLike
Partha Pratim Dasgupta
গোটা জার্নি টা ধাপে ধাপে যা সুন্দরভাবে তুমি বর্ণনা দিলে তা এককথায় দারুন । নিজের চোখে না দেখেও মনেহল দেখলাম। পরে ছবিতে মিলিয়ে নিলাম কি অপরূপ সেই চারপাশের দৃশ্য। এছাড়া দোসা হাউসের খাওয়ার গল্পটা আমার জিভে জল এনে দিলো।
LikeLike
Aparna Mukherjee
Chhobi gulo to khubi shundar kintu tar thekeo beshi shundar tomar barnona. Apurbo lekhoni tomar. Mone holo jano nijer chokhei dekhlam.
LikeLike
Ratnabali Chatterjee
কোজাগরীর রাত আনন্দে উদযাপন , খুব ভাল লাগল।আপনাদের অনেক অনন্য অভিজ্ঞতার কিছুটা স্বাদ পেলাম আপনার এই লেখাটা থেকে। খুব ভাল লাগল। ছবিগুলোও যথাযথ সঙ্গত করেছে লেখার সঙ্গে।
LikeLike
Tanima Goswami
Khub sundor lage tomar lekha Porte.
Ashadharan.Tomader photo gulo apurbo.
LikeLike
Mohan Lal Ghose
Khub bhalo laglo
LikeLike
Apurba Neogi
Very nice photographs of enjoying Siatel trip.
LikeLike
Sanjoy Das
দাদা, খুব ভালো লাগলো। গল্পের শুরুটা পড়তে পড়তে জিভে জল এসে গেছিল, কোনরকমে নিজেকে সামলে পুরো গল্পটা পড়লাম।
LikeLike
Samarendra Nath Sarkar
Good description made more precious
LikeLike
Bani Paul
Darun description,, picture also.
LikeLike