ফিনল্যান্ডের রাস্তায় ডেলিভারি রোবট: ভবিষ্যতের দরজায় কড়া নাড়া- সুপ্রিয় রায়

ফিনল্যান্ডের রাস্তায় ডেলিভারি রোবট: ভবিষ্যতের দরজায় কড়া নাড়া- সুপ্রিয় রায়

গত শনিবার ফিনল্যান্ডের রাজধানী হেলসেঙ্কি দিয়ে গাড়ি করে যেতে যেতে হটাৎ একটা অদ্ভুত জিনিস ছেলে দেখলো । দেখলাম – ফুটপাথ দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে ছোট একটা রোবট। শুনলাম ফিনল্যান্ডের কিছু শহরে, বিশেষ করে হেলসিঙ্কি, এসপু, এবং তাম্পেরে-র মতো জায়গায় এখন রাস্তায় ছোট ছোট স্বচালিত রোবট দেখা যাচ্ছে, যারা খাবার, মুদি জিনিস বা অনলাইন অর্ডার ডেলিভারি পারসনের ভূমিকা পালন করছে।

এই রোবটগুলিকে বলা হয় delivery robots বা autonomous delivery vehicles। এই রোবটগুলো “Starship Technologies” নামের একটি কোম্পানির তৈরি। প্রতিষ্ঠানটি ইউরোপ এবং আমেরিকার বিভিন্ন শহরে ইতিমধ্যেই সফলভাবে রোবট ডেলিভারি চালু করেছে।

এই রোবটগুলো মূলত স্বচালিত (autonomous)। এরা নিজেরাই রাস্তা চিনে নেয়, বাঁক নেয়, ট্রাফিক বোঝে, এমনকি মানুষের পথেও সরে দাঁড়ায়।রাস্তায় পড়ে গেলে ‘হেল্প, হেল্প’ বলে চীৎকার করে , কেউ তুলে দিলে ‘ thank you’ বলে আবার রওনা দেয় ।

ব্যবহারকারী একটি অ্যাপের(আমাদের দেশে যেমন আম্যাজন , বিগবাস্কেট , ফ্লিপকার্ট, সুইগি , জুমাটো ইত্যাদি ) মাধ্যমে অর্ডার করলে, রোবট নির্দিষ্ট দোকানে গিয়ে জিনিস তুলে নেয়, তারপর ধীরে ধীরে গড়িয়ে পৌঁছে যায় ঠিকানায়।

বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা যেমন হেলসিঙ্কি ইউনিভার্সিটি, Aalto University-এর ক্যাম্পাসে ছাত্রছাত্রীদের জন্য এই রোবট নিয়মিত ফুড ডেলিভারি করে থাকে। দিনের বিভিন্ন সময়ে এদের দেখা যায় লাইব্রেরি, হোস্টেল আর ক্যাফের আশেপাশে চলাফেরা করতে।

ডেলিভারি রোবট এখন আর কল্পকাহিনি নয়, বাস্তব। একসময় যেসব কাজ শুধুই মানুষের ছিল, এখন তা ভাগ করে নিচ্ছে প্রযুক্তি। ডেলিভারি রোবট এর একটি উজ্জ্বল উদাহরণ। এ দেশে প্রতিটি রাস্তা সুন্দর আর লোকসংখ্যা কম তাই এদেশে এসব সম্ভব । আমাদের দেশে এসব কোনমতেই সম্ভব নয় ।

এছাড়াও সেদিন হেলসিঙ্কির রাস্তায় দেখলাম একটা পাব ট্রাম- যেখানে রয়েছে একটি অনন্য ভ্রাম্যমাণ বার। এটি একটি ঐতিহাসিক লাল ট্রাম যা পানীয়ের সাথে পর্যটকদের দর্শনীয় স্থান দেখার অভিজ্ঞতা প্রদান করে। ট্রামটি হেলসিঙ্কির কেন্দ্রস্থলে বৃত্তাকারে ভ্রমণ করে আর শহরের অনেক প্রধান দর্শনীয় স্থানের পাশ দিয়ে যায়।

রাত সাড়ে নটার সময়কার আমাদের দুটো ছবি দিলাম এটা দেখানোর জন্য ( যেটা গত পোস্টে লিখেছি ) যে জুলাইয়ের হেলসিঙ্কি এক আলোর শহর। রাত যেন ভুলে গেছে অন্ধকারের কথা—সূর্য ডুবে গেলেও আলো থেকে যায় আকাশে, মানুষের মুখে। হেলসিঙ্কির গ্রীষ্মে রাত মানে অন্ধকার নয়—এ এক অপার্থিব আলোয় স্নাত সময়। মধ্যরাত পেরিয়ে গেলেও আকাশে রয়ে যায় নরম সোনালি আভা, যেন সূর্য তার বিদায় নিতে নিতে একটু দাঁড়িয়ে দেখে নিচ্ছে শহরটাকে।

19 thoughts on “ফিনল্যান্ডের রাস্তায় ডেলিভারি রোবট: ভবিষ্যতের দরজায় কড়া নাড়া- সুপ্রিয় রায়

  1. Anita Sengupta

    লালদা তোমার লেখা পড়ে আর ছবি দেখে দারুন লাগছে !আরো জানতে ইচ্ছে করছে !আরো সব জানিও !

    Like

  2. Sanjoy Das

    ডেলিভারি রোবট এবং ভ্রাম্যমাণ বারের ব্যাপারে জানা গেলো এবারের লেখনীতে, দাদা তোমার প্রত্যেকটা লেখাতে কিছু না কিছু জানবার তথ্য থাকে, খুব ভালো লাগে।

    Like

  3. Gautam Chaki

    সত্যিই আমাদের কাছে এটা কল্পকাহিনী অনেক অজানা তথ্য জানতে পারছি ধন্যবাদ তিলক ভালো থাকিস।

    Like

  4. Swapna Sen Gupta

    ডেলিভারি রোবটের কথা জানি আগেই।তবে আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম।আরো কিছু জানার জন্য অপেক্ষা করে রই লাম।সাবধানে থেকো সবাই ।

    Like

  5. Aparajita Sengupta

    প্রযুক্তি যে কত উন্নত হয়েছে তা এই ডেলিভারি রোবট দেখলে বোঝা যায়। পাব ট্রাম খুব ভালো। রাতের হেলসিঙ্কি দেখে মুগ্ধ হচ্ছি।তোমার লেখনী অসাধারণ। আরো নতুন কিছু দেখার আশায় রইলাম আগামী তে। ভালো থেকো তোমরা সকলে। ❤🧡

    Like

Leave a reply to supriyoroy Cancel reply