28/08/2023 তারিখ সকাল সকাল ট্রেনে আমরা তিনজন রওনা হয়ে গেলাম ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেল। দু ঘণ্টার মতো জার্নি । ব্রাসেল স্টেশনের কাছেই আমাদের হোটেল আর তার আশে পাশেই সব টুরিস্ট স্পট । বেলজিয়াম ইউরোপের ক্ষুদ্রতম ও সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ দেশগুলির একটি। এটি একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। বেলজিয়াম ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। ব্রাসেল শহরটি বেলজিয়ামের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। ইউরোপীয় কমিশন, ন্যাটো এবং বিশ্ব শুল্ক সংস্থার সদর দপ্তর ব্রাসেল্স-এ অবস্থিত।এটি টিনটিন এবং দ্য স্মারফসের মতো বিখ্যাত কমিক্সের জন্মস্থান। হোটেলে লাগেজ রেখে প্রথমেই চলে গেলাম একটু হেঁটে ব্রাসেলসের সবচেয়ে আইকনিক ল্যান্ডমার্কগুলির মধ্যে একটি গ্র্যান্ড প্লেসে । এটি একটি চমত্কার কেন্দ্রীয় স্কোয়ার যা ঐশ্বর্যশালী ভবন দ্বারা বেষ্টিত। গ্র্যান্ড প্লেস হল ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং ইউরোপের সবচেয়ে সুন্দর স্কোয়ারগুলির মধ্যে একটি । স্কোয়ারটি 17 শতকের অত্যাশ্চর্য স্থাপত্যে সুশোভিত, যার মধ্যে রয়েছে সিটি হল এবং গিল্ডহল । গ্র্যান্ড প্লেসকে কেন্দ্র করেই ব্রাসেলসের সবচেয়ে বড় বাজার গড়ে উঠেছে। আড্ডা হোক কিংবা রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি, সবকিছুই অনুষ্ঠিত হয় ব্রাসেলসের এই প্রাণকেন্দ্রে। ৯৬ মিটার উঁচু ব্রাবানটাইন গোথিক টাওয়ারের এখানকার টাউন হল প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৪০২ সালে।হাতে অনেকটা সময় থাকাতে ছেলের উৎসাহে আমরা আবার ট্রেনে করে চললাম ব্রাসেল থেকে কিছুটা দূরে পশ্চিম ফ্ল্যান্ডার্স প্রদেশের রাজধানী ব্রুজেস (Brugge) শহরে । বেলজিয়ামের উত্তর-পশ্চিম কোণে অবস্থিত, এই মনোরম মধ্যযুগীয় শহরটি তার সু-সংরক্ষিত ঐতিহাসিক স্থাপত্য, মনোরম খাল এবং সুন্দর নির্মল পরিবেশের জন্য বিখ্যাত যা পর্যটকদের অনেকদিন ধরেই আকর্ষণ করে নিয়ে আসছে । ব্রুজকে প্রায়ই “উত্তরের ভেনিস” বলা হয়। এখানে অনেক নাম করা সিনেমার শুটিং হয়েছে । তার মধ্যে রয়েছে হ্যারি পটার ও বলিউডের আমির খানের পিকে । অনুস্কা শর্মা ও সুশান্ত সিং রাজপুতের অনেকটা অংশের শুটিং এখানে হয়েছে । এখানে উল্লেখযোগ্য স্থাপত্য নিদর্শনগুলির মধ্যে রয়েছে বেলফ্রি অফ ব্রুজস, দ্য ব্যাসিলিকা অফ দ্য হলি ব্লাড, এবং চার্চ অফ আওয়ার লেডি এর বিখ্যাত মাইকেলেঞ্জেলো ভাস্কর্য, ম্যাডোনা এবং চাইল্ড ৷ ব্রুজে অনেকক্ষণ কাটিয়ে আবার ফিরে আসলাম ব্রাসেলে ।তারপর একে একে দেখলাম – বাদ্যযন্ত্র যাদুঘর হল ( Musical Instruments Museum) , রয়্যাল সেন্ট-হুবার্ট গ্যালারী( Royal Gallery of Saint Hubert) , সেন্ট মাইকেল এবং সেন্ট গুদুলা ক্যাথেড্রাল(St Michael and St Gudula Cathedral), রয়্যাল প্যালেস অফ ব্রাসেলস হল(Royal Palace of Brussels), টিনটিন কমিক স্টোর ও নেপোলিয়নের তৈরি ‘দ্য মিউজিয়াম অব এনশিয়েন্ট আর্ট’ । বেলজিয়ান রন্ধনপ্রণালীর ওয়াফেলস, চকোলেট ও বেলজিয়াম ফ্রাই ( যার উৎপত্তি বেলজিয়ামে যা ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নামে প্রসিদ্ধ কারণ প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় আমেরিকান সৈন্যরা বেলজিয়ামে এই আলুর ফ্রাই খাওয়ার সময় ফ্রেঞ্চ কথা শুনে এর নাম দিয়েছিল ফ্রেঞ্চ ফ্রাই ) স্বাদ গ্রহণ না করলে বেলজিয়াম ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যাবে তাই পরেরদিন এসবের স্বাদ গ্রহণ করে আমরা রওনা দিলাম আকাশপথে আমার ছেলের বাড়ি হেলসিঙ্কি । ইউরোপের মধ্যে এতোগুলো দেশ ঘুরলাম কোথাও পাসপোর্ট দেখতে চাইলো না আর বুঝতেই পারলাম না যে অন্য দেশের মধ্যে ঢুকে গেছি । না জানলে মনে হতো একটা দেশের মধ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছি ।
Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos