ডিম কেন খাব ? / হাঁসের ডিম খাব না মুরগির ডিম খাব ? /দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব ?/তাজা ডিম  চিনবো কি করে ?

ডিম কেন খাব ? / হাঁসের ডিম খাব না মুরগির ডিম খাব ? /দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব ?/তাজা ডিম চিনবো কি করে ?

কেন খাবডিম

  1. এক কথায় ডিমকে বলা যেতে পারে পাওয়ার হাউস অব নিউট্রিশন অর্থাৎ শক্তিতে ভরপুর । একটি বড় ডিম থেকে আমরা অনেক নিউট্রিয়েন্টস (পুষ্টি উপাদান) পেতে পারি। যেমন : ভিটামিন বি৬, বি১২, রিবোফ্লাভিন, ফলিক এসিড, আয়রন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ প্রভৃতি।

  2. হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ভয়ে অনেককে দেখেছি ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশটা খেতে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনএর মতে ডিমের কুসুমের মধ্যে তেমন কোন ঝুঁকি নেই। প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ টি ডিম বরং বিভিন্ন শারীরিক ঝুঁকি কমায়। হৃদরোগের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্সফ্যাট। বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল মাংস ও ডিম থেকে আমরা পেতে পারি। ডিম টেসটোসটেরন হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে এবং মাংসপেশি গঠনেসহায়ক। খাবারের কোলেস্টেরল মূলত রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ানোর মূলে নয় বরং সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্সফ্যাট থেকেই রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়। ইউনিভার্সিটি অব কানেকটিকাটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের কুসুম বরং রক্তে খারাপ চর্বি বা এলডিএল কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়াতে সাহায্য করে।
  3. ডিম হলো প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে আদর্শ প্রোটিন। এখানে সব ধরনের পুষ্টিউপাদান রয়েছে।
  4. ছোট্টো একটা ডিম কিন্তু হাজারো ভিটামিনে ভরা। এর ভিটামিন বি ১২ খাবারকে এনার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে।
  1. ডিমে আমরা পাই ভিটামিন এ যা আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে। ডিমের কেরোটিনয়েড, ল্যুটেন ও জিয়েক্সেনথিন বয়সকালের চোখের অসুখ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। এই একই উপাদান চোখের ছানি কমাতেও সাহায্য করে।

  2. ডিমে রয়েছে ভিটামিন ডি যা পেশীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
  3. ডিমে আছে ভিটামিন ই যেটা কোষ এবং ত্বকে উত্‍পন্ন ফ্রি ডিক্যাল নষ্ট করে দেয় এবং স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
  1. ডিমের সবচেয়ে বড়ো গুণ এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায় শরীর থেকে দিনে প্রায় ৪০০ ক্যালোরি কমাতে পারে সকালে একটি ডিম খাওয়া। তার মানে মাসে ওজন কমার পরিমাণ প্রায় তিন পাউন্ড। সমীক্ষা বলছে, ৬৫% বডি ওয়েট, ১৬% বডি ফ্যাট, ৩৪% কোমরে জমে থাকা মেদের পরিমাণ কমাতে পারে ডিম!
  2. ডিমে আছে আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস। মেনস্ট্রুয়েশনের জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডিমের মধ্যে থাকা আয়রন এই ঘাটতি মেটাতে পারে সহজেই। জিঙ্ক শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আর ফসফরাস হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
  3. প্রত্যেক নারীর শরীরে রোজ কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের দরকার। একটি ডিমে থাকে ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। সুতরাং চাঙা থাকতে রোজ ডিম খেতেই পারেন।
  4. ২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমীক্ষায় দেখিয়েছে অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে বা পরবর্তী কালে সপ্তাহে ৬টি করে ডিম নিয়মিত খেলে প্রায় ৪৪% ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ সঙ্গে এটাও জানিয়েছে, ডিম হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই কম থাকে।

  5. শরীর সুস্থ রাখার আরও একটি জরুরি উপাদান কোলাইন। কোলাইনের ঘাটতি ঘটলে অনেক সময় কার্ডিওভাসকুলার, লিভারের অসুখ বা নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার দেখা দিতে পারে। একটি ডিমে প্রায় ৩০০ মাইক্রোগ্রাম কোলাইন থাকে। যা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম, স্নায়ু, যকৃত্‍ ও মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
  6. নতুন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ডিম কোলেস্টেরল বাড়ায় না। দিনে দুটো ডিম শরীরের লিপিড প্রোফাইলে কোনও প্রভাব ফেলে না। বরং ডিম রক্তে লোহিতকণিকা তৈরি করে।আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যাদের রক্তে কোলেস্টেরল ও এলডিএলের মাত্রা ঠিক থাকে, তাদের জন্য দৈনিক কোলেস্টেরল গ্রহণের পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম।
  7. প্রোটিন শরীর গঠন করে। আর প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে অ্যামিনো অ্যাসিড। একুশ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড এই কাজে প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আমাদের শরীর অতি প্রয়োজনীয় নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করতে পারে না। তার জন্য আমাদের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। খাবারের মধ্যে এই প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হল ডিম। যা ঝটপট শরীরে প্রোটিন উত্‍পাদন করতে পারে।

  8. নখ ভেঙে যাচ্ছে চটপট? নাকি চুলের স্বাস্থ্য একেবারেই বেহাল? চোখ বন্ধ করে রোজ ডিম খেয়ে যান। ডিমের মধ্যে থাকা সালফার ম্যাজিকের মতো নখ আর চুলের মান উন্নত করবে।
  9. ডিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুস্থতার জন্য জরুরি।
  1. একটি ডিমের মধ্যে ৭০ থেকে ৭২ কিলোক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ডিমের প্রোটিন পুরোটাই শরীরের কাজে লাগে। এটি মাংসপেশির গঠনে সাহায্য করে। ডিম থেকে অনেক কম কার্বোহাইড্রেট আসে। তাই একটি সিদ্ধ ডিম কুসুমসহ প্রোটিনের উৎস হিসেবে গ্রহণ করলে সেটি ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে।
  2. যাদের স্বাভাবিকের চাইতে কম থাকে ব্লাড প্রেসার তাদের জন্য ডিম খুবই উপকারী।

  3. ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল জানিয়েছে, ডিমে কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা তো নেই-ই, উপরন্তু নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার সমাধান হিসেবে কাজ করে ডিমে থাকা প্রোটিন, রিবোফ্লোবিন, ভিটামিন বি১২, ফলেট ও ভিটামিন ডি। তাই হৃদরোগের ভয়ে ডিম না খাওয়া একদমই অনুচিত।) কে ব

কোনটা খাবহাঁসের ডিম না মুরগির ডিমমাত্র

  1. মুরগির ডিমের তুলনায় অনেকসময় হাঁসের ডিম আকারে বড় হয়। আকারে বড় হওয়ার কারণে তাই হাঁসের ডিমের কুসুমও অনেকসময় বড় হয়। তাই যদি বেশি কুসুম খেতে চান বা আপনার শরীরে বেশি প্রোটিনের প্রয়োজন হয় তাহলে হাঁসের ডিম খান।

  2. ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিম থেকে ১৮৫ কিলো ক্যালরি এনার্জি পাওয়া যায়। যেখানে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিম থেকে পাওয়া যায় ১৪৯ কিলো ক্যালরি এনার্জি।

  3. ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.৬৮ গ্রাম, ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.১ গ্রাম। হাঁসের ডিমে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ মুরগির ডিমের থেকে ৫০ শতাংশ বেশি।
  4. অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিমাণ হাঁসের ডিমে কিছুটা বেশি হলেও থ্রিওনিন, আইসোলিউসিন, ট্রিপটোফ্যান, লিউসিন, মিথিওনিন, লাইসিন, কিস্টিন, টাইরোসিন, ফেনিলালানিন, ভ্যালাইন, সেরিন, গ্লাইসিন, প্রোলিন, অ্যাসপারটিক অ্যাসিড, হিস্টিডিন, অ্যালানিন ও আর্জিনিন সব ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডই মজুত মুরগির ডিমেও।
  5. ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে যেখানে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৮৮৪ মিলিগ্রাম, সেখানে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৪২৫ মিলিগ্রাম। তাই হার্টের সমস্যা থাকলে অবশ্যই দূরে থাকুন হাঁসের ডিম থেকে। যারা হাই প্রোটিন ডায়েট মেনে চলতে চান তারা কুসুম ছাড়া হাঁসের ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।
  6. ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে ক্যালসিয়াম ৭০ মিলিগ্রাম, লৌহ ৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২৬৯ মাইক্রোগ্রাম। অন্যদিকে মুরগির ডিমে ক্যালসিয়াম ৬০ মিলিগ্রাম, লৌহ ২ দশমিক ১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২৯৯ মাইক্রোগ্রাম।

  7. তুলনামূলক বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে, হাঁসের ডিমে খাদ্যশক্তি, আমিষ, চর্বি, শর্করা, লৌহ ও ক্যালসিয়ামের মুরগির ডিমের তুলনায় সামান্য বেশি থাকে। আর মুরগির ডিমে হাঁসের ডিমের তুলনায় ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি২ সামান্য বেশি থাকে। চুলচেরা বিচারে হাঁসের ডিমকেই বেশি পুষ্টিমান বলা যেতে পারে কিন্তু সাধারণভাবে হাঁস ও মুরগির ডিম উভয়কেই সমান পুষ্টিসম্পন্ন বলাই ঠিক
  8. তাই খাদ্যবিজ্ঞানীদের মতে, হাঁস এবং মুরগি উভয় ডিমেরই পুষ্টিমূল্য সমান। একই ওজনের একটি হাঁসের ডিম ও একটি মুরগির ডিমের পুষ্টিমান প্রায় একই রকম।নডি। যা পেশীর কমাতে সাহায্য

দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব

দেশি মুরগির ডিমের কুসুমের রঙ গাঢ় হলুদ আর পোলট্রির ডিমের কুসুমের রঙ ফিকে হলুদ তাই হয়ত একটা গুনগত বিচারের ধারনা জন্মেছে কারণটা হল পোলট্রির মুরগি ,দেশি মুরগির মতো বাগানে চরে কচিপাতা লতা না খেয়ে তৈরি করা খাবার (mash) খায় । তাই এর ডিমে ক্যারোটিন না থেকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ থাকে যার জন্য কুসুমের রঙ গাঢ় হলুদ না হয়ে ফিকে হলুদ হয় । কারণ ক্যারোটিনের রঙ হলুদ এবং ভিটামিন এ র রঙ সাদা । ক্যারোটিন হল ভিটামিন এ র অগ্রদুত । যেটা আমরা খেলে পরে সহজেই যকৃতে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। তাই খাদ্যগুণের দিক দিয়ে বিচার করলে দুরকম ডিমই সমান ।

তাজা ডিম চিনবো কি করে

আমরা সবাই জানি যে ডিমের কঠিন সাদা স্তরের (খোলা) ভেতরেই থাকে সাদা অ্যালবুমিন আর হলুদ রঙা কুসুম । তাজা ডিমের মধ্যে কোন বায়ুকোষ থাকে না , ঠাণ্ডা হলে ধীরে ধীরে ডিমের ভিতরে অ্যালবুমিন ও কুসুম সামান্য সঙ্কুচিত হয়ে বায়ুকোষের সৃষ্টি করে । তাজা ডিমের অ্যালবুমিন যথেষ্ট ঘন থাকে । ফলে হাতে করে তাজা ডিম ঝাঁকালে ভেতরে কিছু নড়ছে বলে মনে হয়না । কারণ ঘন অ্যালবুমিনের মধ্যে কুসুমের নড়াচড়া করার সুযোগ কম । আলোর সামনে ভালো ডিম ধরলে শুধু একটা লালচে আভাই দেখা যাবে । কিন্তু ডিম পুরনো বা পচা হলে তার অ্যালবুমিন পাতলা হয়ে যায় । কুসুমও আকারে অনেক সময়ই বড় এবং ঘন হয় । এক্ষেত্রে হাতে নিয়ে ডিম ঝাঁকালে বোঝা যাবে ভেতরে কিছু একটা নড়ছে । বাতির সামনে এধরণের ডিম ধরলে তার মধ্য দিয়ে আলো , ভালো ডিমের মতো সব জায়গা দিয়ে সমানভাবে ভেদ করে আসতে পারবে না পাতলা অ্যালবুমিনের তুলনায় গাঢ় কুসুমে বাঁধা পাবে বেশি । ফলে ডিমের মধ্যে একটা জায়গায় তুলনামূলকভাবে অন্ধকার একটা ছায়া দেখা যাবে । তাজা ডিম পরীক্ষা করার এটাই আমাদের বহু পরিচিত মোমবাতি পরীক্ষা ।

Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos

3 thoughts on “ডিম কেন খাব ? / হাঁসের ডিম খাব না মুরগির ডিম খাব ? /দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব ?/তাজা ডিম চিনবো কি করে ?

  1. Apurba Neogi
    Very helpful post.
    Pradip Kumar Das
    Very good and important information
    Shubhranshu Mohan Banerji
    Sunday ho ya Monday roj khao Ande…
    Is there any difference in between commercial poultry farm product and domestic product ?
    Tapan Kumar Sarkar
    Thanks a lot supriya for such informative update
    Naru Mahato
    .Very important tips. Many unknown things came to known.Thanks.
    Prasanta Chakraborty
    And I love eggs . I will show my wife this article
    Tama Karmakar
    Khub khishir khabar ….i love egg
    Dibakar Das
    Very nice information, Thanks.Shubha Bijoya.
    Goutam Choudhury
    Darun imformative. Thank you.
    Swapan Dattaray
    good information .
    Samir Barman
    very informative
    Manik Dutta
    Ei post ta amar jonyo sob cheye dorkari chilo. Eta kichu manush ke dekhabo jara amar dim khaoa te bicholito hochillo.. R dim holo bachelor der kache ashirwad😂.. dhonyobad sir.

    Liked by 1 person

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s