মহাকাশে মানুষের ভাসমান বাড়ি ( স্পেস স্টেশন) – সুপ্রিয় রায়

ভাবতে অবাক লাগে যে মহাকাশে একটা ভাসমান বাড়ি আছে — অনেক ওপরে, যেখানে আকাশ শেষ হয়ে যায়। এই বাড়িটা পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে ঘুরে চলে। একে বলা হয় Space Station

এই বাড়ির নাম International Space Station (ISS) — অনেক দেশ মিলে বানিয়েছে এই স্পেস স্টেশন । স্পেস স্টেশন একটা ভাসমান গবেষণাগারের মতো। এখানে থাকা বিজ্ঞানীরা বা মহাকাশচারীরা কাজ করেন, গবেষণা করেন।যেমন –

  • এখানে জল, খাবার, শরীর কেমন থাকে ওজনহীন জায়গায়—সেসব পরীক্ষা করেন।
  • গাছপালা, ব্যাকটেরিয়া বা ওষুধ মহাকাশে কেমন আচরণ করে, সেটা নিয়ে গবেষণা করেন।
  • নতুন প্রযুক্তি, মহাকাশযান কেমন কাজ করে, সেটাও বোঝেন।
  • চাঁদ বা মঙ্গলগ্রহে যাওয়ার প্রস্তুতি নেন।

সেখানে তারা মাটি ছুঁতে পারে না, হাঁটতে পারে না , কারণ সেখানে মহাকর্ষ বল নেই (zero gravity)। সব কিছু ভেসে বেড়ায়! খাবার খেতে, ঘুমাতে, এমনকি টয়লেটেও বিশেষ নিয়ম মানতে হয়। তাদের বিশেষভাবে বাঁধা দিয়ে ঘুমাতে হয়, খাবার খেতে হয় প্লাস্টিক টিউব থেকে, আর চলাফেরা করতে হয় ভেসে ভেসে।

এটা যেন একদম একটা ভবিষ্যতের স্কুল বা ল্যাবরেটরি, শুধু সেটা  আকাশে ভাসছে!

যদি কল্পনা করি , একদিন ঘুম থেকে উঠে জানলা দিয়ে তাকিয়ে দেখলাম — আকাশে একটা ছোট্ট বাড়ি উড়ছে! না, এটা কোনো কল্পকাহিনি নয়, এটা স্পেস স্টেশন (Space Station)।

এই স্পেস স্টেশন আমাদের ভবিষ্যতের প্রস্তুতি। মানুষ যদি একদিন চাঁদে বা মঙ্গলগ্রহে থাকতে চায়, তাহলে স্পেস স্টেশনেই আগে শিখতে হবে কীভাবে মহাকাশে জীবন কাটানো যায়।

এক কথায় বললে—

স্পেস স্টেশন হচ্ছে ভবিষ্যতের এক টুকরো পৃথিবী, যা আজ আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। বিজ্ঞান মানুষের কল্পনাকে বাস্তবে রুপায়িত করেছে , এ  যেন বিজ্ঞান আর মানুষের কল্পনার এক আশ্চর্য মিলন।

জানার মতো কিছু মজার তথ্য:

  • প্রতি ৯০ মিনিটে স্পেস স্টেশন পৃথিবী একবার চক্কর দেয় — মানে এক দিনে তারা ১৬ বার সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত দেখে!
  • ওখানে চুল কাটা হয় ভ্যাকুম দিয়ে, কারণ কাটা চুল ভেসে গেলে সমস্যা হতে পারে।
  • মহাকাশে জল ভেসে বেড়ায়, ফোঁটার মতো ঝুলে থাকে — তাই সাবধানে খেতে হয়!
  • মহাকাশচারীরা সপ্তাহে দুই ঘণ্টা শরীরচর্চা করেন, না হলে হাড় আর পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে।

এই স্পেস স্টেশনই আমাদের শেখায় — ভবিষ্যতের পৃথিবীর বাইরের জীবনের পথ।

( নানা লেখার থেকে পড়ে নিজের ভাষায় সহজ করে লেখা  )  

12 thoughts on “মহাকাশে মানুষের ভাসমান বাড়ি ( স্পেস স্টেশন) – সুপ্রিয় রায়

  1. Ratnabali Chatterjee

    খুব ভাল লাগল লেখাটা।

    মনে পড়ে গেল 2001 , a space oddissey ছবিটার কথা।ছবিটা দেখে এক অদ্ভুত শিহরণ জেগেছিল । সত্যি মহাকাশে ভ্রমণ এক অনন্য অভিজ্ঞতা।আর তার জন্য মহাকাশচারীদের কত কৃচ্ছসাধন । অনেক কিছু জানতে পারলাম লেখাটিতে।

    সুন্দরভাবে মিলিয়ে দিয়েছেন বাস্তব আর কল্পনাকে।

    Like

  2. Aparajita Sengupta

    তোমার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লাগল, মনে হলো কল্পবিজ্ঞানের এক সুন্দর জগতে পৌঁছে গিয়েছি। অনেক অজানা তথ্য জানতে পারলাম। মহাকাশচারী রা কিভাবে থাকে তারও ধারণা পেলাম। আমাদের বোঝার মত করে সুন্দর লিখেছো।

    Like

  3. Lipika Roy

    কল্প বিজ্ঞান একটা দারুন আকর্ষণীয় বিষয়। তোমার উপস্থাপনা সহজভাবে বুঝতে সাহায্য করেছে আমাকে।

    Like

Leave a comment