মনুষ্যত্বই হোক আমাদের ধর্ম – সুপ্রিয় রায়

ধর্ম যদি হতো “মনুষ্যত্ব”, তাহলে বিভাজন নয়, হতো মিলন, ঘৃণা নয়, ছড়াতো ভালোবাসা।

ভাবুন তো, যদি—

  • মানুষ আগে মানুষ হিসেবে একে অপরকে সম্মান করত,
  • ধর্ম হতো সহানুভূতির, দয়ার, সহমর্মিতার নাম,
  • মন্দির-মসজিদ-গির্জা-প্যাগোডা—সব জায়গায় গাইত একই সুর: “তুমি আমার ভাই”—

তাহলে সত্যিই তো এই পৃথিবীটা হয়ে উঠত স্বর্গের মতো।

ধর্ম কি শুধু পোশাক? কিছু আচার? না-কি নির্দিষ্ট জায়গায় গিয়ে মাথা নত করা? না। ধর্ম তার চেয়ে অনেক বড় কিছু—এটা হওয়া উচিত মনুষ্যত্বের নামান্তর।

আজকের পৃথিবীতে ধর্মের নামে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরে, বিভাজন তৈরি হয়, মন-মনুষ্যত্বের দেয়াল ওঠে। অথচ সত্যিকারের ধর্ম কী শেখায়?- ভালোবাসো, দয়া করো, সহানুভূতিশীল হও।

একজন প্রকৃত ধর্মপ্রাণ মানুষ কখনোই অন্যের ক্ষতি করতে পারে না। সে জানে, মানুষকে ভালোবাসা মানেই সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবাসা। সে জানে, নিজের মতো বিশ্বাস করতে দেওয়াটাই হলো সবচেয়ে বড় মানবিকতা।

আজকের পৃথিবীতে ধর্মের নামে সবচেয়ে বেশি রক্ত ঝরে, বিভাজন তৈরি হয়, মন-মনুষ্যত্বের দেয়াল ওঠে। অথচ সত্যিকারের ধর্ম কী শেখায়?- ভালোবাসো, দয়া করো, সহানুভূতিশীল হও।

একজন প্রকৃত ধর্মপ্রাণ মানুষ কখনোই অন্যের ক্ষতি করতে পারে না। সে জানে, মানুষকে ভালোবাসা মানেই সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবাসা। সে জানে, নিজের মতো বিশ্বাস করতে দেওয়াটাই হলো সবচেয়ে বড় মানবিকতা। ধর্মের নামে যারা বিভাজন করে, তারা সাধারণত: – ধর্মকে ব্যবহার করে নিজস্ব রাজনৈতিক বা সামাজিক লাভের জন্য। ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করে মানুষকে প্রভাবিত করতে চায়। মানুষের আবেগকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।

আসলে তারা ধর্মপ্রাণ নয়, বরং – ধর্মের মুখোশ পরে নিজেদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। ধর্মকে বিভাজনের হাতিয়ার বানায়, যা ধর্মের সারবত্তার বিপরীত।

আমাদের মনে হয় – একজন প্রকৃত ধার্মিক মানুষ হয় নদীর মতো—সে নিজে শান্ত থাকে, অন্যকেও শান্তি দেয়। কিন্তু যারা ধর্মের নামে হানাহানি করে, তারা যেন বন্যার জলের মতো—অস্থির, বিধ্বংসী, নিয়ন্ত্রণহীন।

যদি আমরা শিখি—

  • একজন ক্ষুধার্তকে খাওয়ানোই সবচেয়ে পবিত্র দান,
  • একজন অসুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোই সবচেয়ে বড় ইবাদত,
  • আর একজন ভিন্নমতের মানুষকে শ্রদ্ধা করাটাই সবচেয়ে সত্য উপাসনা—

তাহলে?

তাহলে আর কোনো যুদ্ধ হতো না “তুই হিন্দু”, “তুই মুসলিম”, “তুই খ্রিস্টান” বলে।হতো না ঘৃণা, বর্জন, তীব্র বিদ্বেষ।বরং আমরা সবাই একে অপরের হাতে হাত রেখে বলতাম,
“তুই মানুষ, আমিও মানুষ। আমাদের সবার ধর্ম—মনুষ্যত্ব।”

আসুন, আমরা কারও প্ররোচনায় প্ররোচিত না হই । পরিবারের মাঝে মনুষ্যত্বের চর্চা করি।বাচ্চাদের শেখাই—ধর্ম মানে ভালো মানুষ হওয়া।পাড়ায়, সমাজে, অফিসে, অনলাইনে—সব জায়গায় ছড়িয়ে দিই এই বার্তা:
“মনুষ্যত্বই হোক আমাদের পরিচয়, ধর্ম হোক মানবতার আলয়।

7 thoughts on “মনুষ্যত্বই হোক আমাদের ধর্ম – সুপ্রিয় রায়

  1. Swapna Sen Gupta
    খুব ভালো লাগলো।এই কথাগুলো সব মানুষের আওয়াজ হতো তাহলে কতগুলো স্বার্থপর মানুষ এতো সাহস পায়না । অশিক্ষিত দেশে আমরা বাসকোরি।কতগুলো কথা বলে ফেললাম কিছু মনে করো না।

    Like

  2. Dipanwita Ganguly

    খুব সুন্দর লেখা আজ সবার মনোভাব যদি এইরকম চিন্তাভাবনার থাকত তাহলে আমাদের দেশ বলো কালচার বল অনেক দূর অনেক দূর দূরান্তে ছড়িয়ে এক শুভসমাজ গড়ে উঠতো। এই পজেটিভ চিন্তাভাবনা নতুন প্রজন্মকে সুবুদ্ধি দিক।।

    Like

  3. Ratnabali Chatterjee

    মানুষে মানুষে ধর্মের ভিত্তিতে,জাত পাতের ভিত্তিতে এই যে ভেদাভেদ তা তো মানুষেরই তৈরি। সব মানুষেরই রক্তের রং এক সেখানে কোন ভেদাভেদ নেই।

    আশা করব একদিন মানুষের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে , মানুষে মানুষে ঘৃণার আবহ একদিন চিরতরে শেষ হয়ে যাবে।

    এখনকার এই অস্থির সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে এমন একটা প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে এই লেখাটা সত্যিই প্রশংসনীয়।

    Like

  4. Udayan Kumar Mukherjee

    ভীষণ খাঁটি কথা কিন্তু গদিতে বসা রা সাধারণ মানুষ কে এটা ভাবতে দিচ্ছেনা । তারা উস্কানি দিছে আর সাধারণ মানুষরা তাদের কথাতেই লাফাচ্ছে। এতে গদিওয়ালাদেরই ফায়েদা এটাই আবহমান কাল ধরে হয়ে আসছে। গদিওয়ালাদের উস্কানি ইগনোর করলে যে নিজেদেরই ভালো সেটা বোঝেনা

    Like

  5. Banya Basu

    খুব সুন্দর লেখা …সবার যদি এই রকম ভাবার ক্ষমতা থাকতো তাহলে আজকে আমাদের দেশ সমাজ অনেক এগিয়ে যেত …আগামী দিনের প্রজন্ম র শুভ বুদ্ধির উদয় হোক এই কামনা করি

    Like

  6. Aparna Delahiri

    কবে যে মানুষের মধ্যে এই শুভ বুদ্ধি জাগবে জানিনা। রাজনৈতিক নেতাদের প্ররোচনায় পা না দিয়ে কবে তারা ভাতৃত্ববোধে উদ্দীপিত হবে সেই আশায় দিন গুনছি। আপনার লেখাটি খুব সুন্দর হয়েছে। 🙏

    Like

Leave a comment