আমাদের চোখে পাঞ্জাব ও হিমাচলের ভ্রমণ কাহিনির দ্বিতীয় পর্ব – চণ্ডীগড়

গত 05/10/2024 তারিখ অমৃতসর থেকে বিকাল 5 টায়  ইন্টারসিটি ট্রেন ধরে বিখ্যাত ফরাসি স্থপতি লে করবুসিয়ার দ্বারা পরিকল্পনা করা চণ্ডীগড় শহরে পৌছালাম রাত্রি 9.30 pm । চণ্ডীগড়ের আক্ষরিক অর্থই হল দেবী চণ্ডীর গড় বা দুর্গ। হোটেলে পৌঁছে পরেরদিন ব্রেকফাস্ট সেরে প্রথমেই গেলাম সুখনা লেক দেখতে । শিবালিক পাহাড়ের পাদদেশে 3 বর্গ কিমি প্রসারিত চণ্ডীগড় শহরের একমাত্র 1958 সালে মনুষ্যসৃষ্ট এই হ্রদ শহরের প্রান । আমাদের রবীন্দ্র সরোবরের মত প্রচুর মানুষ এখানে সকালে ও বিকালে হাঁটতে আসে । এছাড়া এখানে আছে বোটিং করার সব  রকম সুবিধা । সুখনা লেক হল অনেক উৎসব উদযাপনের স্থান। অনেকক্ষণ সুখনা লেকে কাটিয়ে আমরা চললাম চণ্ডীগড়ের অন্যতম পর্যটন আকর্ষণ বিখ্যাত ভাস্কর্য বাগান – ‘রক গার্ডেন’ দেখতে । এটি একটি অনন্য স্থাপত্য এবং ভাস্কর্য উদ্যান, যা পুরানো, পরিত্যক্ত এবং ভাঙাচোরা বস্তু দিয়ে তৈরি। রক গার্ডেনের সৃষ্টিকর্তা হলেন নেক চাঁদ, একজন সরকারি কর্মচারী, যিনি ১৯৫৭ সালে তাঁর অবসর সময়ের মধ্যে এই উদ্যান তৈরি করা শুরু করেন। মূলত তিনি ভাঙা সিমেন্ট,  সিরামিক, কাঁচের টুকরো, পরিত্যক্ত ইট, বাটি, মাটির পাত্র ইত্যাদি ব্যবহার করে বিভিন্ন ভাস্কর্য এবং স্থাপত্য তৈরি করেছিলেন।

রক গার্ডেনের বিশেষত্ব হলো, এটি শিল্প এবং পরিবেশ সচেতনতার একটি মিশ্রণ, যেখানে নষ্ট বস্তু দিয়ে শিল্প তৈরি করা হয়েছে। এটি প্রায় ৪০ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত এবং এখানে মানুষ, পশু, পাখির আকৃতির বিভিন্ন ভাস্কর্য দেখা যায়। রক গার্ডেনের বিভিন্ন করিডোর, ওয়াটারফল, সেতু, এবং খোলা জায়গা দর্শকদের বিশেষভাবে মুগ্ধ করে।টিকিত মুল্য ছিল 30 টাকা ।

আজও এই উদ্যান শিল্প ও পরিবেশ সচেতনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়।তারপর চণ্ডীগড় শহরকে প্রদক্ষিণ করে আমরা রওনা দিলাম মানালির উদ্দেশে ।

Leave a comment