জীবন নামের মেশিন প্রযুক্তির ভাষায় – সুপ্রিয় রায়

একদিন স্বর্গের কারখানায় ঈশ্বর বসে বললেন,

“চলো, একটা নতুন মেশিন বানাই — নাম দিই মানুষ!”

প্রথমে মেশিনে ‘বেবি মোড’ লাগানো হলো।

চালু করতেই মেশিন শুধু “ওয়া ওয়া!” করে।

সব বাটন টিপে দেয় — খাওয়া, ঘুম, কান্না — সব একসাথে!

কোনো “সাইলেন্ট মোড” নেই, ব্যাটারি ফুল চার্জ থাকা সত্ত্বেও সারারাত বাজতেই থাকে!

তারপর আসে ‘কৈশোর আপডেট’।

মেশিন হঠাৎ বলে, “আমি নিজে জানি!”

কিন্তু পরের মুহূর্তেই “Error 404: Common Sense Not Found.”

যৌবনে ঢুকতেই ‘ওভারহিট মোড’ অন হয়।

হৃদযন্ত্রে এক্সট্রা সিগন্যাল — “LOVE Virus Detected!”

এই সময় মেশিন বেশি ভাবতে শুরু করে, কাজ কম করে, আর ভুলে যায় খাবার খেতে,

কারণ ‘CPU’ পুরো ব্যস্ত একটা নাম নিয়ে — প্রিয়তমা!

মধ্যবয়সে মেশিনে ‘Multi-tasking System’ চলে আসে —

অফিস, সংসার, EMI, স্কুল, বাজার —

সব ট্যাব একসাথে খোলা, RAM ওভারলোড!

বউ বলে, “তুমি শুনছো?”

মেশিন রিপ্লাই দেয় — “System Busy, Try Again Later.”

তারপর ধীরে ধীরে আসে ‘Low Battery Mode’ —

চোখের ক্যামেরা ঝাপসা, কানের স্পিকার ঢিলা, দাঁতের গিয়ার নড়ে।

কিন্তু তবুও মেশিন হাসে, কারণ সে জানে—

জীবনের মজাটা সফটওয়্যারে নয়, স্মৃতির ফোল্ডারে!

শেষে একদিন ঈশ্বর এসে বলেন,

“তোর ব্যাটারি শেষ হচ্ছে রে!”

মানুষ-মেশিন হেসে বলে—

“চিন্তা করো না, ব্যাকআপ তো রেখে গেছি — পরের প্রজন্মে।”

25 thoughts on “জীবন নামের মেশিন প্রযুক্তির ভাষায় – সুপ্রিয় রায়

  1. Ratnabali Chatterjee

    অসাধারণ এক প্রতিবেদন।মজার ছলে জীবন চক্রের বর্ণনা খুব ভাল লাগল।

    সত্যিই মানুষ গড়েছেন যিনি সেই ঈশ্বর , সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী।এমন মেশিন গড়েছেন যার শরীরের হাড় ভাঙলে তা আপনা থেকে জোড়া লেগে যায়।আঘাত লাগলে কেটে গেলে ধীরে ধীরে নিজেই সেই ঘা ভরে যায়।লিভারের কোন অংশ বাদ গেলে শুনেছি তা নিজের থেকেই আবার পূর্ণতা পায়।এছাড়া আভ্যন্তরীণ নানা কারিগরীর তো তুলনা হয় না। মস্তিষ্কের নানা কোষের কাজকর্ম তো এখনো মানুষের বিজ্ঞানের কাছে অধরা।আর মনের রহস্য ভেদ করা বিজ্ঞানের অসাধ্য।

    আজব এক কল বানিয়েছেন ঈশ্বর।আপনার লেখাটা পড়ে এই কথাগুলো মনে হল।

    ছবির কোলাজও ভারি ইন্টারেস্টিং।

    Like

  2. Lipika Roy

    তোমার কবিতায় বিশেষ করে শেষ লাইনগুলো খুব ভালো লাগলো,মন ছুঁয়ে গেলো। তোমার লেখার মধ্যে একটা পজিটিভ বার্তা প্রকাশ পেয়েছে যেটা খুব ভালো লাগলো

    Like

Leave a comment