১৮/০৪/২০২৩ তারিখ আমরা হোটেল থেকে complimentary breakfast খেয়ে সকাল নটায় গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম ১৮৪ কিমি দূরে লাটভিয়ার রাজধানী রিগার উদ্দেশ্যে । রিগা বাল্টিক সাগরের উপকূলে অবস্থিত বাল্টিক অঞ্চলের বৃহত্তম শহর আর রাশিয়ার একদম পাশে । লাটভিয়া বিভিন্ন সময়ে সুইডিশ , পোল্যান্ড , জার্মানি ও রুশদের দ্বারা শাসিত হয় । তবে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে লাটভিয়া একটি সংসদীয় গণতন্ত্রের রাষ্ট্রে পরিণত হয় । আমরা আড়াই ঘণ্টা পর রিগা শহরে ঢোকার মুখেই পেলাম একটা বড় নদী যার নাম শুনলাম Daugava (Western Dvina) River । বেশ চওড়া নদী পরিষ্কার জলে ভরা । নদী পেরিয়ে প্রথমেই পৌঁছে গেলাম রিগার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য এর ওল্ড টাউন, যা ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। ওল্ড টাউন হল একটি গোলকধাঁধা সরু রাস্তা যার পাশে পাশে রয়েছে রঙিন মধ্যযুগীয় সময়কালের দালানকোঠা । ওল্ড টাউনের স্থাপত্য শৈলীগুলি হল গথিক, বারোক এবং আর্ট নুওয়াউর মিশ্রণ। তারপর গেলাম ঐ পুরাতন শহরেই দ্য হাউস অফ দ্য ব্ল্যাকহেডস দেখতে।এটি এখন জাদুঘর । এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানদের বোমার আঘাতে প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছিল। এটাকে আবার পুনর্নির্মিত করা হয় ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ এর মধ্যে । এখন এটা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত । বেশ কিছুক্ষণ পুরাতন শহরে কাটিয়ে রিগার আরও অনেক আকর্ষণীয় স্থান যেমন রিগা ক্যাথেড্রাল, সেন্ট পিটার চার্চ এবং স্বাধীনতার স্মৃতিস্তম্ভ দেখতে আসলাম ।তারপর আসলাম এখানকার শহরের সেন্ট্রাল মার্কেট দেখতে যেটা ইউরোপের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় বাজারগুলির মধ্যে একটি।শহরটার চারিদিকে এলোপাথাড়ি ঘুরে লিডো ( LIDO )নামে একটা খুব বড় ও সুন্দর রেস্টুরেন্টে খেতে গেলাম । অনেকগুলো কাউন্টারে নানা রকমের খাবার সাজানো । প্রত্যেক কাউন্টারে লোক রয়েছে খাবার, প্লেটে তূলে দেওয়ার জন্য । আমরা এক জায়গা থেকে প্লেট নিয়ে বিভিন্ন কাউন্টারে গিয়ে আমাদের পছন্দের খাবার তূলে দিতে বললাম । বিভিন্ন কাউন্টার থেকে আমাদের পছন্দের খাবার নিয়ে আমরা গেলাম পেমেন্ট কাউন্টারে । ওখানে দাম দিয়ে একটা টেবিল চেয়ার দখল করে খেতে বসলাম । আমি নিয়েছিলাম চারটে ছোট ব্রেড , একটা চিকেন কাটলেট । ছটা ছোট ছোট গ্রিল চিকেন , একটু আলুভাজা আর স্যালাদ । দারুন টেস্ট। রিগা থেকে পার্নু ফিরে আসার পথে লাটভিয়ারই আরও দুটো জায়গা তুরাইদা ও সিগুলদা- তে চলে গেছিলাম । তুরাইদা ক্যাসেল হল কুর্জেমে থেকে গাউজা নদীর বিপরীত তীরে লাটভিয়ার ভিডজেমে অঞ্চলের সম্প্রতি পুনর্নির্মিত একটি মধ্যযুগীয় দুর্গ। আর সিগুলদা হল লাটভিয়ার ভিডজেমে অঞ্চলের একটি শহর, রাজধানী শহর রিগা থেকে 53 কিলোমিটার দূরে।তারপর ওখান থেকে ফিরে আসলাম আবার এস্তোনিয়ার পার্নুতে, পরেরদিন হেলসিঙ্কি ফিরবো বলে । সামগ্রিকভাবে বলতে গেলে রিগা একটি প্রাণবন্ত এবং উত্তেজনাপূর্ণ শহর । এর সমৃদ্ধ ইতিহাস, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এটিকে পর্যটক এবং প্রবাসীদের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে । খুব সুন্দর একটা ভ্রমণ সারাজীবন আমাদের স্মৃতিকোটায় রয়ে গেল ।

Bharati Banerjee
Dada ki apurbo likhechhen apnader anubhutir kotha 🙏
LikeLike
Swapna Sen Gupta
খুব ভালো লাগলো লেখা পড়ে।
LikeLike
Lipika Roy
Khub valo laglo lekhata.
LikeLike
Tapashi Banerjee
Darun laglo. Khub sunder lekha. Anek kichu jante parlam.
LikeLike
Kanti S
Lekha o chobe khub bhalo laglo 👍
LikeLike
Prokash Bhowmick
Sundar barnana sathe sundar chhabi
LikeLike
Sudhir Bagchi
বা: খুব ভাল লাগল।
LikeLike
Great pictures!!
সুসমৃদ্ধ বর্ণনা…. যেন নিজেই পৌঁছে গেছি।
LikeLike
Sucheta Sen
দারুন সুন্দর জায়গা ও সুন্দর বর্ননা ।ছবি দেখে আমি ও আপনাদের সাথে ঘুরছি দাদা
LikeLike
Abani Banerjee
তোমার ভ্রমন বর্ননায় আমি মোহিত হই সব সময়ে !
LikeLike
Ruby Ghosh
খুব ভালো লাগছে পড়তে।
LikeLike
Partha Pratim Dasgupta
এত সুন্দর পুঙ্খানুপুঙ্খ ভ্রমণ কথা অসাধারণ বর্ণনা যেকোনো পাঠককে মুগ্ধ করে। পড়তে পড়তে ভাবি ছোট ছোট ফিচার লিখে যদি আজকাল পত্রিকার অশোক দাশগুপ্তের দপ্তরে পাঠাতে তাহলে অনেক বেশি সংখ্যক মানুষ আনন্দ পেতো।
LikeLike