গতকাল ছিল সপ্তমী । আমরা তিনটি পরিবার ভোর থাকতে বেড়িয়ে পড়লাম কলকাতার কলকোলাহল থেকে ১৮০ কিমি দূরে পশ্চিম মেদিনাপুর জেলার গরবেতা থেকে দুই কিমি দূরে গনগনিতে ।গনগনি হোল মার্কিন দেশের বিখ্যাত গ্র্যান্ড ক্যানিয়নের বা গিরিখাতের মিনিয়েচার ভার্সন। মার্কিন দেশের অ্যারিজোনার এই গিরিখাতটি পৃথিবীর ২০০ কোটি বছরের এক নীরব সাক্ষী যেটা দৈর্ঘ্যে ২৭৭ মাইল এবং প্রস্থে সর্বোচ্চ ১৮ মাইল এবং গভীরতায় প্রায় ১৮০০ মিটার।ঐখান দিয়ে কলোরাডো নদী কোটি কোটি বছর আগে প্রবাহিত হতো । এখন ঐ অঞ্চলে কলোরাডো নদী প্রায় লুপ্ত ।কিন্তু গনগনির এই গিরিখাত যে নদীর দ্বারা সৃষ্টি সেই শিলাবতী বা শিলাই নদী আজও বেণীর মতো এঁকেবেঁকে বয়ে চলেছে এই আগুন রাঙা লাল গিরিখাতের পাঁশ দিয়ে । আর এই নদীর জলের ক্ষয়ের কারণে লাল মাটির দেওয়ালে প্রাকৃতিকভাবে গঠন হয়েছে নানান ভাস্কর্য়।এই ভাস্কর্য় আর আরাবাড়ি জঙ্গলের টানে দূর হতে পর্যটকদের টেনে আনছে এই গনগনিতে।তাই দেখে আসলাম এই গনগনিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এক খুব সুন্দর পর্যটক আবাস তৈরি করেছে । শুনলাম নভেম্বর বা ডিসেম্বর থেকে খুলে যাবে এই পর্যটক আবাস । গনগনির খুব কাছেই রয়েছে গড়বেতার সর্বমঙ্গলা মন্দির । কথিত আছে ৮০০ বছর আগে এই মন্দিরে নরবলি হত । এও কথিত আছে যে মগধরাজ বিক্রমাদিত্যের সময়কার এই মন্দির । এছাড়া দেখলাম বেশ কিছু হোটেল রয়েছে আশেপাশে । আরাবারি জঙ্গলের মধ্যেও গড়ে উঠেছে রিসোর্ট ।আমরা অবশ্য থাকার জন্য যাইনি । আমরা কলকাতা থেকে গাড়ি নিয়ে গেছিলাম ,তাই সারাদিন ঘুরে কলকাতার সপ্তমী পূজার জনঅরণ্যে আবার ফিরে আসলাম ।
