<strong>পূজার দিনক্ষণ কি হিসাবে ঠিক হয় </strong>

পূজার দিনক্ষণ কি হিসাবে ঠিক হয় 

প্রতি বছর বিশ্বকর্মা পূজা হয় ১৭ই সেপ্টেম্বর , কদাচিৎ হয় ১৮ই সেপ্টেম্বরে । কিন্তু বাকি পূজার দিন প্রতি বছর বদল হতে থাকে । কারন আমরা দৈনন্দিন জীবনে সূর্যের হিসাবে তারিখ হিসাব করি । কিন্তু পূজার তিথি নির্ভর করে চন্দ্রের তিথি হিসাবে। আমরা জানি সূর্যবর্ষ প্রায় ৩৬৫ দিনের এবং চান্দ্রবর্ষ হয় ৩৫৪ দিনের ।তাই এই পার্থক্য । যদিও প্রতি বছর আশ্বিন মাসে প্রথম যে অমাবস্যা হবে, সেটির নাম মহালয়া।তার এক সপ্তাহ বাদে শুরু হবে দুর্গাপূজা ।মহালয়ার ১৫ দিন বাদে পূর্ণিমাতে হবে লক্ষ্মীপূজা আবার মহালয়ার এক মাস বাদে প্রথম অমাবস্যাতে হবে কালীপূজা । যদি কোন মাসে দুটি অমাবস্যা পরে তাহলে সেই মাসকে মলমাস হিসাবে গণ্য করা হবে এবং সেই মাসে পূজা হবে না , সেটা পরের মাসে হবে । যেমন ২০২০সালের আশ্বিন মাস ছিল মলমাস । তাই মহালয়া পরেছিল ১৭ ই সেপ্টেম্বর এবং দুর্গাপূজা শুরু হয়েছিল ২২শে অক্টোবর থেকে ।

প্রতি চান্দ্রমাসে দুটি করে পক্ষ থাকে । একটি শুক্লা পক্ষ আরেকটি কৃষ্ণ পক্ষ । অমাবস্যার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে পূর্ণিমা পর্যন্ত ১৫ দিন শুক্ল পক্ষ এবং পূর্ণিমার পরের দিন অর্থাৎ প্রতিপদ থেকে অমাবস্যা পর্যন্ত ১৫ দিন কৃষ্ণ পক্ষ নামে পরিচিত। সংস্কৃততে  ‘শুক্ল‘ কথার অর্থ হল গৌর বা ফর্সা বা সাদা এবং  কৃষ্ণ কথার অর্থ হল কালো বা অন্ধকার ।যেহেতু অমাবস্যার পরের দিন থেকে আকাশে চাঁদ একটু একটু করে বড় হতে হতে পূর্ণিমাতে নিজের আকার ধারন করে আর চাঁদের আলোয় চারিদিক সাদা হয়ে যায় তাই এটা শুক্ল পক্ষ । ঠিক তেমনি পূর্ণিমার পর থেকে চাঁদ একটু একটু করে ছোট হতে হতে অমাবস্যায় পুরোপুরি মিলিয়ে যায় তাই এটা কৃষ্ণ পক্ষ । তখন চারিদিকে থাকে অন্ধকার । চান্দ্র বর্ষপঞ্জিতে শুক্লাপক্ষের এবং কৃষ্ণপক্ষের প্রতিটি তিথি হিন্দুদের কাছে পূজা বা উৎসবের দিন ।

যেমন – বৈশাখ মাসের শুক্লা তৃতীয়া( মানে অমাবস্যার পরে তিনদিন )  তিথিতে হয় অক্ষয় তৃতীয়া । শ্রাবন মাসের কৃষ্ণাপক্ষের  অষ্টমী তিথিতে( মানে পূর্ণিমার পরে আটদিন ) হয় জন্মাষ্টমী । ভাদ্র মাসের শুক্লা চতুর্থী তিথিতে হয় গণেশ পূজা । আশ্বিন মাসের শুক্লা পক্ষের পঞ্চমী থেকে দশমী পর্যন্ত চলে দুর্গাপূজা । কার্তিক মাসের শুক্লা প্রতিপদ তিথিতে দক্ষিণ ভারতে গোবর্ধন পূজা হয় আর দ্বিতীয়া তে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া বা ভাইফোঁটা বা ভাইদুজ । মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে হয় সরস্বতী পূজা ।

এবার আসি কী ভাবে পঞ্জীকাররা ঠিক করেন কোন বছরে দেবীর আগমনে ও গমনে কোন বাহনে হবে ?

শাস্ত্র অনুযায়ী প্রতি বছর গজ, ঘোটক, নৌকা আর  দোলা এইসব যানবাহন করে দেবী দুর্গার মর্ত্যে আসা ও যাওয়া।খুব সহজ হিসাব । শাস্ত্র অনুযায়ী ধরা হয় সপ্তমীতে আগমন আর দশমীতে গমন । আগমন আর গমনের বার হিসাবে বাহন ঠিক হয় ।

যেমন সোমবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে –  গজ

মঙ্গলবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে – ঘোটক

বুধবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে –  নৌকো

বৃহস্পতিবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে – দোলা

শুক্রবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে –  দোলা

শনিবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে – ঘোটক

রবিবার আগমন বা গমন হলে বাহন হবে – গজ

এই বছর সপ্তমী ২ অক্টোবর রবিবার। তাই দেবী আসবেন গজে। আবার এই বছরের দশমী বুধবার । তাই দেবীর গমন নৌকায়।       

One thought on “পূজার দিনক্ষণ কি হিসাবে ঠিক হয় 

  1. Lipika Roy
    অনেক অজানা কথা খুব সহজ ভাষায় তোমার লেখনির মাধ‍্যমে জানতে পারলাম।
    আমার কাছে এই subject টা খুব interesting.
    Sanjoy Das
    দাদা, অনেক ধন্যবাদ। আবার তোমার লেখা পড়ে অনেক কিছু আরো স্পষ্ট হয়ে গেলো। তোমার প্রত্যেকটা লেখার মাধ্যমে কিছু না কিছু জানতে পারা যায়। এইভাবেই লিখতে থাকো আর আমাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করো।
    Amitava Biswas
    দারুন বিশ্লেষণ তো। খুব ভালো লাগলো।
    Tapashi Banerjee
    Khub valo laglo.anek kichu jante parlam.
    Ranjan Goswami
    Good information
    Lakshmi Kanta Chatterjee
    Darun 👌🏾🙏
    Bharati Banerjee
    Satti Baby thik bolechhis.Dadar knowledge ashadharan
    Tapas Banerjee
    খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
    Naru Mahato
    সুন্দর তথ্য সুন্দর করে পরিবেশন করার জন্য ধন্যবাদ।
    Ratan Mukhopadhyay
    জানা ছিলো না, খুব ভালো লাগলো।
    Sucheta Sen
    এই নিয়ে আমাদের বাড়িতে কথা হচ্ছিলো যে দেবীর আগমন ও গমন কি ভাবে নির্ধারিত হয় ছেলে জানতে চাইছিলো দাদা অনেক ধন্যবাদ আজ ই আপনি জানিয়ে দিলেন খুব সুন্দর ভাবে লিখেছেন
    Krishna Kumar Ganguly
    Khub bhalo laglo
    Arthita Sengupta
    Khub bhalo information kaku… Anek kichu jante parlm
    Tanima Goswami
    Khub valo laglo. Onek kichu jante parlam.
    Sudhir Bagchi
    দারুণ দারুণ। তুমি তো ভাই প্রচুর পড়াশুনা করেছ তাই আমরা এত কিছু জানতে পারলাম। সত্যি তোমার ধৈর্য্য অসীম। এসব আমারও খুব ভাল লাগে কিন্তু পড়ার ধৈর্য্য নাই। খুব ভাল লাগল।
    Probodh Pal
    খুবই ভালো লাগলো পুজোর ব্যাপারে অনেক কিছু অজানা তথ্য জানতে পারলাম। ধন্যবাদ এই ভাবেই লিখে যাও আর আমরা জ্ঞান বর্ধন করি।
    Samarendra Nath Sarkar
    gσσd ínfσrmαtíσn….
    Bani Paul
    Khub valo laglo .ato kichhu jana chilo na ebar janlam
    Partha Pratim Dasgupta
    আমার অবশ্য পুজো-আর্চা, তিথি-নক্ষত্র বিষয়গুলো non-interested. কিন্তু তোমার এই লেখাটা এত সময়নুক্রমিক আর তথ্যসমৃদ্ধ তাই এটা আমি যারা এই বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল এবং আগ্রহী তাদের আমি সবাইকে শেয়ার করেছি।
    Gautam Chaki
    অপূর্ব অসাধারণ, আরো এই রখম লেখা পড়ার প্রতিক্ষায় থাকলাম।
    Sampa Gupta
    Khub bhalo information
    Soma Dasgupta
    খুব ভালো লাগলো অনেক অজানা তথ্য আজ তোমার লেখা পরে জানতে পারলাম।
    Aparajita Sengupta
    প্রচুর তথ্য পেলাম, খুব ভালো লাগল।
    Rinki Sen
    Khub bhalo information
    Indrajit Dutta
    Great. Keep on sharing with us.
    Anupam Bandyopadhyay
    অনেক দিনের মনে থাকা প্রশ্নের সরল উত্তর পেলাম। 🙏
    Priyabrata Panja
    একদম ঠিক।
    Kumkum Dutta
    অনেক অজানা তথ্য জানতে পারি এই post থেকে
    Aloka Mitra
    Khub bhalo laglo anek kichu janate parlam pujor agrim suvechha, tomader anek anekvalobasa
    Chanchal Bhattacharya
    খুব সুন্দর এবং অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, সাবলীল লেখা।
    বর্তমান কালে আমরা অনেকেই এসব ভুলে যেতে বসেছি।
    আপনার এই পোষ্ট সবাই -কে সমৃদ্ধ করবে। অজানা এক অধ্যায়কে জানতে সাহায্য করবে।
    খুব ভালো প্রচেষ্টা।।
    Reena Dasgupta
    Khub bhalo
    Bhaswati Rudra
    DARUN
    Subrata Roy
    Oh awesome.
    Madhab Sinharoy
    Very good information with explanation. 🙏

    Like

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s