এত বছর রান্না নিয়ে নাড়াচাড়া করতে করতে খুব ভালভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি যে কেউ মন থেকে চাইলে রান্না করাটা কোন ব্যাপারই না । আমাদের কম বয়সে ভাল রান্না করতে রান্নার বইয়ের সাহায্য নিতে হত আর এখন আছে You tube । তাই রান্নার রেসিপি নিয়ে আলোচনা না করে রান্নার উপকরণ নিয়ে কিছু আলোচনা করার ইচ্ছা হচ্ছে, যারা নতুন রান্না করছে তাদের উদ্দেশ্যে ।
ইংরাজিতে একটা কথা আছে – well begin is half done ঠিক তেমনি রান্নার শুরুটা ভাল হলে অর্ধেক রান্নাই হয়ে যায় । আর রান্না শুরু হয় ‘ফোড়ন’ দিয়ে যাতে কেউ রান্না নিয়ে ফোড়ন কাটতে না পারে । সঠিক ফোড়নের ব্যবহার আর পরিমাণ মতো মশলা যে কোন রান্নাকে স্বাদে গন্ধে ভরিয়ে তুলতে পারে । প্রথমে আসি ফোড়নের বিষয়ে।ফোড়ন বলতে আমরা বুঝি গরম তেলের মধ্যে সাদা জিরা ,কালো জিরা কালো সরিষা , মৌরি,কাঁচালঙ্কা,শুকনোলাললঙ্কা, মেথি ,রাঁধুনি,দারচিনি,লবঙ্গ,মাষকলাই,
কারিপাতা,পেঁয়াজ, রসুন, তেজপাতা ইত্যাদির ব্যবহার ।এইবার আমার এই লেখনীর মাধ্যমে ফোড়নের উপর কিছু তথ্য সবার সাথে ভাগ করে নিচ্ছি । যেমন –
- জিরা , ধনে ,মৌরি ফোড়ন দেওয়ার সময় বেশি ভাজতে নেই কারন তাহলে এইসব উপকরনের গন্ধই নষ্ট হয়ে যাবে এবং রান্নার স্বাদও ভাল হবে না ।
- পেঁয়াজ-রসুন কখনও একসঙ্গে ফোড়ন দেওয়া উচিত নয় । কারণ পেঁয়াজ ভাজতে তেল যতটা গরম হওয়া দরকার, তাতে রসুন পুড়ে যায়। তাই আগে পেঁয়াজ ভেজে পরে রসুন দিতে হয়।
- পেঁয়াজ বাটা, আদা ও রসুন বাটা একসঙ্গে না দেওয়া উচিত । প্রথমে পেঁয়াজ বাটা কষিয়ে নিয়ে তারপর আদা ও রসুন বাটা দেওয়া উচিত ।
- মশলায় টক দই মেশানোর সময় ওভেন বন্ধ করে নেওয়া উচিত । না হলে দই ফেটে যাবে।
- যদি গরম মশলা ফোড়ন দিতেই হয় তাহলে ঘিয়ে বা তেলে অল্প আঁচে ফোড়ন দেওয়া ভাল ।
- সরষের তেল বা কোনও ভেজিটেবল অয়েলে ফোড়ন ব্যবহার করা ভাল, অলিভ অয়েলে নয় কারন অলিভ অয়েলে ফোড়ন দিতে গেলে তা ফেটে যায়।
- ফোড়ন দেওয়ার সাথে সাথে নুন, হলুদ দেওয়া উচিত নয় ।
- কারিপাতা ফোড়ন দেওয়ার সময় খেয়াল রাখতে হবে কারিপাতা যেন পুড়ে না যায় ।
- যদি মনে হয় ফোড়ন বেশি ভাজা হয়ে যাচ্ছে তাহলে সাথে সাথেই আনাজ দিয়ে দেওয়া ভাল ।
কোন রান্নার সবচেয়ে ছোট অংশ হোল ফোড়ন কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই মনোযোগ সহকারে ফোড়নের ব্যবহার করা উচিত ।