ভূমিকা
কর্ম জীবন থেকে অবসর নেওয়ার পর শুরু করলাম সারাদিনে যতটা সময় পাওয়া যায় পড়াশুনা করা আর তারমধ্যে থেকে ভালো ও দরকারী বিষয় লিপিবদ্ধ করা । এক একটা বিষয় নিয়ে যত website আছে এবং হাতের কাছে যেসব বই আছে , সব গুলো পড়তে শুরু করলাম মন দিয়ে আর বেছে বেছে দরকারী অংশগুলোকে লিপিবদ্ধ করতে লাগলাম । তারপর নিজের ভাষায় সেগুলো সাজানো আর স্ত্রীকে শোনানো । এমনি করেই সময় কাটতে লাগলো । অবশেষ এক জায়গায় ইতি টানলাম কারণ লেখতে চাইলে তো শেষ করা যাবে না । বিশাল পরিধি । তৈরি হল “ ঔষধ ছাড়া বাঁচতে হলে” । পুরাপুরি “স্বাস্থ্য সচেতনা ” । সবার ভালো লাগলে আবার শুরু করব দ্বিগুন উত্সাহে ।একটা কথা অবশ্যই বলবো যে , কোনো ব্যবসায়িক উদ্দেশ্য নেই এর পিছনে । – সুপ্রিয় কুমার রায়
সূচিপত্র
ক্রমিক সংখ্যা | বিষয় |
১ | আমাদের শরীর |
২ | মস্তিষ্ক বা ব্রেন |
৩ | হৃদয় বা হার্ট |
৪ | মূত্রগন্থি বা কিডনি |
৫ | যকৃৎ বা লিভার |
৬ | শ্বাসযন্ত্র বা লান্গ্স |
৭ | মানুষের শরীরের পদ্ধতি বা সিস্টেম |
৮ | পাকস্থলী বা Stomach |
৯ | চোখ বা EYE |
১০ | দাঁত বা Teeth |
১১ | কার্বোহাইড্রেট বা Carbohydrates |
১২ | কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান কার্বোহাইড্রেট আছে |
১৩ | প্রোটিন বা Protein |
১৪ | কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান প্রোটিন থাকে |
১৫ | চর্বি বা Fats |
১৬ | কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান ফ্যাট থাকে |
১৭ | ভিটামিন বা Vitamin |
১৮ | খনিজ পদার্থ বা মিনারেল |
১৯ | জল বা Water |
২০ | সাধারণ তাপমাত্রায় একটা সুস্থ শরীরের কতটা জলের প্রয়োজনীয়তা |
২১ | শরীরে জলের অভাব বা dehydration |
২২ | কত রোগ ঔষধ ছাড়া শুধু জল দিয়েই সারানো যায় |
২৩ | অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা Antioxidant |
২৪ | পরিমিত আহার বা এনার্জির পরিমান |
২৫ | শারীরিক কার্যকলাপের ফ্যাক্টার |
২৬ | এক ঘন্টার স্বাভাবিক (normal intensity) শারীরিক কার্যকলাপে আনুমানিক ক্যালোরি খরচার হার |
২৭ | সাধারণ খাদ্যের উপাদানে আনুমানিক এনার্জির পরিমান |
২৮ | কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট ও জল থাকে |
২৯ | ওজন ঠিক রাখতে, বাড়াতে বা কমাতে হলে প্রতিদিনের আহার আর শারীরিক কার্যকলাপের ভারসাম্য |
৩০ | সাধারণত যে সব খাবার আমরা খাই তার থেকে কতটা আনুমানিক ক্যালোরি পাই |
৩১ | রোগ নির্ধারণের জন্য পরীক্ষা বা Medical Check up |
৩২ | আদর্শ শরীরের ওজন |
৩৩ | কিভাবে বাড়িকে এবং নিজেকে জীবানু মুক্ত রাখতে হয় |
৩৪ | সংক্রামক বা ছোয়াচে আর অসংক্রামক বা ছোয়াচে রোগ নয় |
৩৫ | অসংক্রামক রোগের উদাহরণ |
৩৬ | সংক্রামক রোগের উদাহরণ |
৩৭ | টিকা বা VACCIN |
৩৮ | থার্মোমিটার বা Thermometer |
৩৯ | জ্বর বা Fever |
৪০ | জীবানুর সংক্রমণের হাত থেকে প্রতিকারের উপায় |
৪১ | সর্দি কাশি ও ফ্লু বা Cough & Cold and Flu |
৪২ | নাড়ির স্পন্দন / Pulse rate / হৃদস্পন্দন (Heartbeat) |
৪৩ | উচ্চ রক্তচাপ বা High blood pressure |
৪৪ | কোলেস্টেরল বা CHOLESTEROL |
৪৫ | যে সব খাবারে কোলেস্টেরল বা খারাপ কোলেস্টেরল নেই বলা যায় |
৪৬ | যে সব খাবার বেশি কোলেস্টেরল থাকে |
৪৭ | ট্রাইগ্লিসারাইড TRIGLYCERIDE |
৪৮ | রক্তে শর্করা বা BLOOD SUGAR |
৪৯ | শ্বেতসারের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট |
৫০ | শাক ও সবজির মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট |
৫১ | ফলের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট |
৫২ | রক্তাল্পতা বা ANAEMIA |
৫৩ | গ্যাস (Gas) |
৫৪ | পিত্তকোষে পাথর বা Gall bladder stone |
৫৫ | পাতলা পায়খানা বা Diarrhea |
৫৬ | পাতলা পায়খানায় ঘরে বানানো ভালো থাকার কিছু উপায় |
৫৭ | পাতলা পায়খানায় রোগীর খাবার |
৫৮ | যক্ষা বা টিবি বা Tuberculosis |
৫৯ | জল বসন্ত বা Chicken Pox |
৬০ | বাত বা ARTHRITIS |
৬১ | কোষ্ঠকাঠিন্য বা CONSTIPATION |
৬২ | ভালো থাকার কিছু ঘরোয়া চিকিত্সা |
৬৩ | ম্যালেরিয়া বা MALARIA |
৬৪ | কাঁধে ব্যাথা FROZEN SHOULDER |
৬৫ | এপেনডিসাইটিস বা APPENDICITIS |
৬৬ | পেটের আলসার, বুকজ্বালা আর অম্বল |
৬৭ | অর্শ বা PILES বা HAEMORRHOIDS |
৬৮ | খুব মোটা বা বেশি ওজন বা OBESE |
৬৯ | পেটে ব্যথা বা STOMACH PAIN |
৭০ | ইউরিক অ্যাসিড |
৭১ | যে সব কারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে |
৭২ | পোয়াতি অবস্থার পুষ্টি বা NUTRITIONAL NEEDS DURING PREGNANCY |
৭৩ | ভারতবর্ষের নিষিদ্ধ নিদিষ্ট মাত্রার ঔষধের সংমিশ্রন BANNED FIXED DOSE DRUG COMBINATIONS IN INDIA |
৭৪ | কলকাতার বেশ কিছু নামকরা হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার |
৭৫ | Glycemic Index (গ্লাইসেমিক সুচক) |
৭৬ | ডিম কেন খাব? / হাঁসের ডিম খাব না মুরগির ডিম খাব? /দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব? /তাজা ডিম চিনবো কি করে ? |
৭৭ | হাসি |
৭৮ | গোলমরিচ / গোলমরিচের ইতিহাস /কি কি আছে গোলমরিচে /গোলমরিচ ঝাল হয় কেন / গোলমরিচের উপকারিতা/গোলমরিচ ব্যবহারের সাবধানতা |
৭৯ | মধু ও তার উপকারিতা / খাটি মধু চিনবো কি করে /খাঁটি মধু চেনার কিছু পরীক্ষা / সর্বশেষ সতর্কতা |
৮০ | What can you do to reduce the risk of Cancer.ক্যান্সারের ঝুঁকি কি করলে কম হয়? এত দূষণ থাকা সত্বেও আমাদের দেশে ক্যান্সার কম কেন ? হলুদ কি ক্যানসার প্রতিরোধ করে? |
৮১ | অবসাদ দূর করতে – হাঁটা (কতক্ষণ হাঁটবো / কত দূর হাঁটবো/ কখন হাঁটবো/ হাঁটার উপকারিতা কি ) |
আমাদের শরীর
শরীর খারাপ হলে আমরা অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাব । কিন্তু শরীর খারাপ যাতে না হয় বা ডাক্তারের কাছে যাতে না যেতে হয় বা ঔষধ ছাড়া যদি বাঁচতে হয় তাহলে আমাদের কি করা উচিৎ সেটাই আমাদের বেশি করে জানা দরকার। এটাই স্বাস্থ্য সচেতনা। আমরা আমাদের জীবনের ৮0% পেয়ে যাই যদি একটা সুস্থ শরীর নিয়ে জন্ম গ্রহন করি এবং তাকে ধরে রাখতে পারি । বাকি ২0% জীবনের চাওয়া পাওয়াতে চলে যায় । তাইতো আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় বন্ধু হলো আমাদের শরীর । প্রতিটা অঙ্গ সারাদিন ধরে নিঃস্বার্থ ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছে শরীরটাকে ভাল রাখার জন্য । কোন অনুরোধ ছাড়াই বাইরের এবং ভিতরের শত্রুদের সাথে লড়াই করতে পিছপা হয় না । প্রতিদানে কিছুই চায় না । সুতরাং আমাদেরও উচিত এই প্রকৃত বন্ধুদের সাথে ভাল ব্যবহার করা । তাদের অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে না দেওয়া । তার জন্য আমাদের একটু সজাগ হতে হবে । যেমন, ভাল করে চিবিয়ে খেলে পাকস্থলিকে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে হবেনা । এই রকম আরও অনেক কিছু বলা যায় । আমাদের এই প্রিয় শরীরটাকে ঠিক রাখতে বেশি না কমপক্ষে পাঁচটি নিয়ম মানলেই চলে । 1. পরিমিত প্রয়োজনীয় আহার 2. পরিমিত পরিশ্রুত পানীয় 3. পরিমিত শারীরিক প্ররিশ্রম 4. শরীরের প্রতিটা অঙ্গের সাথে একটু পরিচিত হওয়া 5. শরীরকে ক্ষতি করে এমন সব জিনিস বর্জন করা । আমাদের প্রধান পাঁচটি বন্ধু বা অঙ্গ প্রতিদিন নিয়ম করে কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরটাকে চালনা করছে। সেই পাঁচটি বন্ধুদের নাম হলো:- মস্তিষ্ক (ব্রেন),হৃদয়(হার্ট) ,মূত্রগন্থি (কিডনি ) ,যকৃৎ (লিভার) এবং শ্বাসযন্ত্র ( লাঙ্গস) ।
মস্তিষ্ক বা ব্রেন

মস্তিষ্ক হলো আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের পরিচালক । আমাদের শরীরে যে পাঁচটি ইন্দ্রিয় আছে যেমন চোখ,কান,জিহবা,ত্বক্ ও নাক এদের মাধ্যমে আমাদের ব্রেন খবর নেয় আর তদানুসারে নির্দেশ দেয় পেশীদের কাজ করার জন্য। পেশীরা বা আমাদের শরীরের শক্তিমানরা তখনিই কাজটা সম্পন্ন করে। এক কথায় বলা যায় আমাদের মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্রের মাধ্যমে খবর সংগ্রহ করে আর সংকেত পাঠায় বিভিন্ন অঙ্গে।আমাদের মস্তিষ্ক আমাদের চিন্তাশক্তি, অনুভূতি,স্মৃতি সংগ্রহে এবং জাগতিক খোঁজ খবর রাখাতে দারুন ভাবে সাহায্য করে।
কিছু কিছু ভাল অভ্যাস দৈনন্দিন জীবনে করলে মস্তিস্কের শক্তিকে আরো বাড়ানো যায়। যার ফলে মস্তিষ্ক কিছু নতুন নিউট্রন তৈরী করতে পারে যেটা মনটাকে ধারালো করে এবং মস্তিস্কের শক্তি জোগায় ।
ভাল রাখতে হলে :
- দিনে সাত থেকে আট ঘন্টা ঘুমানো বা বলা যায় ঘুম থেকে উঠলে যেন ক্লান্ত না লাগে
- প্রতিদিন কিছুক্ষনের জন্য পড়াশোনা করা। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে হাত দিয়ে কিছু লিখলে সেটা মস্তিস্কের কিছু অংশকে দারুনভাবে সক্রিয় করে।
- গবেষণায় এও দেখা গেছে যে কমবয়সী যুবক ও যুবতিদের এক চটকা বা অল্পক্ষনের জন্য চেয়ারে বসে গভীর নিদ্রা অনেক সময় মস্তিস্কে ভাল কাজ দেয়।
- পরিমিত পানীয় গ্রহন।
- কোন বাদ্যযন্ত্রের অনুশীলন করা বা গান গাওয়া।
- মাঝে মাঝে প্রতিদিনের রুটিন ভাঙ্গা। একটু আলাদা কিছু করা ।
হৃদয় বা হার্ট

আমাদের সারা শরীরে রক্ত পৌছে দেবার দায়িত্বে রয়েছে আমাদের আরেক বন্ধু, হার্ট বা হৃদয় ।সারাদিন ধরে পাম্প করে চলেছে।পাম্প বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে শরীর স্তব্ধ হয়ে যাওয়া। হার্টের এই স্পন্দনকে হার্ট রেট বা হৃদস্পন্দন বলে। এই স্পন্দনের ফলে একটা চাপ সৃষ্টি হয় যেটা রক্তকে ধাক্কা মেরে সারা শরীরে পৌছে দেয়। এই চাপ কে রক্তচাপ বা হার্টপ্রেসার বলে।যারা কোন রকম শারীরিক কাজকর্ম করেনা তাদের হার্ট ধীরে ধীরে শক্তি,মনোবল,ও ক্ষমতা হারায় ।
ভাল রাখতে হলে :
- প্রতিদিন ৩0 মিনিটের শারীরিক পরিশ্রম যেটা আমাদের:-
- হার্টের রোগ থেকে বাঁচায়
- উচ্চ রক্তচাপ, ডাইবেটিস এবং ষ্ট্রোক হওয়ার ঝুঁকি কম করে
- ধূমপান থেকে বিরত থাকতে সাহায্য করে
- শারীরিক ওজন কম করতে সাহায্য করে
- উচ্চ রক্তচাপ ও ডাইবেটিস, কোলষ্টরেল নিয়ন্ত্রিত রাখতে সাহায্য করে
- মানসিক চাপ, বিষন্নতা, দুশ্চিন্তা কম করতে সাহায্য করে।
- এককথায় জীবনকাল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।।
- সবসময় পজিটিব থাকা এবং মানসিক চাপ বাড়ার কারণ খুঁজে বের করা ও তার প্রতিকার করা। কারণ মানসিক চাপ, হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপকে বাড়িয়ে তোলে। যার ফলে ধমনীর আস্তরনের ক্ষতি হয়।
- পরিমিত সুষম আহার। যেমন শাকসবজি,ফল,মাছ,মাংস যাই খাই না কেন তা যেন ভাজা কম হয়। দুই থেকে তিন চা চামচের বেশি তেল প্রতিদিনের খাবারে ব্যবহার না করাই উচিত।
- শরীরের ওজন ঠিক রাখা। অতিরিক্ত ওজন হার্টের পক্ষে একদম ভাল নয়।
- ধূমপান পরিত্যাগ করা।
- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রনে রাখা ।
- অতিরিক্ত মদ্যপান হার্টের ক্ষতি করে।
- পরিবারের কারও হাই ব্লাড প্রেসার, ডাইবেটিস, স্থুলতা থাকলে সতর্ক হওয়া উচিত।
- নিজের হৃদস্পন্দন এবং রক্তচাপ সমন্ধে সতর্ক থাকা উচিত।
- বয়স্কদের জন্য জগিং করার থেকে হাঁটা বেশি ভাল কারন জগিং-এ জয়েন্টের ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
- জাঙ্ক ফুড যতটা কম খাওয়া যায়।
- একটানা একজায়গায় যত কম বসা যায়। মাঝে মাঝে একটু চলাফেরা করে নেওয়া ভাল।
- পরিশেষে চাই প্রানখোলা হাসি
মূত্রগন্থি বা কিডনি

আমাদের শরীরে একজোড়া কিডনি তলপেটের পিছনের দিকে থাকে । প্রত্যেক পরিনত কিডনি ৪ থেকে ৫ ইঞ্চি লম্বা হয় । আমাদের শরীরের সমস্ত রক্ত সারাদিন ধরে কিডনির মধ্যে দিয়ে যায় । সারাদিন ধরে কিডনি যে কাজ করে চলেছে তা হলো :-
- কিডনির প্রথম কাজ রক্তকে পরিস্কার করা
- কিডনি শরীর থেকে খারাপ পদার্থ বের করে
- শরীরে তরল পদার্থের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে
- কিডনি রক্ত থেকে খারাপ ও অতিরিক্ত তরল পদার্থ আলাদা করে এবং রক্তের থেকে ইউরিয়া নিয়ে জল ও অনান্য পদার্থ মিশিয়ে ইউরিন বা পেচ্ছাব তৈরী করে
- হরমোন বের করে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করে
- ভিটামিন ডি- য়ের সক্রিয় ফর্ম তৈরী করে যেটা শরীরে মজবুত হাঁড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে
- লাল রক্ত কণিকার উতপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে
৩০বছরের পর প্রত্যেক দশ বছর অন্তর কিডনির ক্ষমতা প্রায় ১০% করে কমতে
থাকে । রক্তচাপ ,ডায়াবেটিস , প্রস্রাব ও ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করে কিডনির রোগ আছে কিনা জানা যায় । সুতরাং কিডনির রোগ থেকে বাঁচতে হলে বিশেষজ্ঞদের দেওয়া নিচের টিপসগুলো জানা দরকার ।
ভাল রাখতে হলে :
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের রোগকে আয়ত্তে রাখতে হবে
- খাবারে লবনের মাত্রা কম রাখা কারণ লবন খাবারে সোডিয়ামের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। লবন শুধুমাত্র রক্তচাপ বাড়িয়ে তোলে তা নয় ,কিডনিতে পাথর হতে সাহায্য করে । সারাদিনে এক চা চামচ বা ৫ থেকে ৬ গ্রাম লবনের বেশি খাওয়া স্বাস্থের পক্ষে ভালো নয়
- প্রতিদিন পরিমাপ মতো পরিশ্রত জল পান করা
- পেচ্ছাবের ইচ্ছাকে রোধ করা ঠিক নয় । একজন মানুষ দিনে ১ থেকে ২ লিটার অবধি সাধারনত পেচ্ছাব করে
- জাঙ্ক ফুড কম খেয়ে টাটকা ফল, তরকারী , মাছ , মাংস ,ডিম ,দুধ ,তরমুজ , কমলা লেবু , পাতি লেবু কিডনির পক্ষ্যে খুব ভাল
- শাক সবজি , ফলের রস যত পান করা যাবে তত ভাল । কিন্ত যদি কারো কিডনির অসুবিধা থাকে তাহলে পালং শাকের রস পান না করাই ভাল
- ধুমপান একদমই নয়
- অতিরিক্ত মদ্যপান কিডনির ক্ষতি হতে বাধ্য
- প্রতিদিন পরিমিত শরীর চর্চা
- ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঔষধ খাওয়া ঠিক নয়
- ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট বা ভেষজ সাপ্লিমেন্টস খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।
যকৃৎবা লিভার

লিভার পাচনতন্ত্রের এক গুরত্বপূর্ণ খেলোয়াড় । যা কিছু আমরা খাই বা পান করি ঔষধ সহ সবই লিভারের মধ্য দিয়ে যায় । লিভারের অনেক কাজ যেমন:
- ক্ষতিকারকরাসায়নিকপদার্থকে পরিস্কার করে
- ঔষধকে শরীরের জন্য ব্যবহার করে
- রক্তকে পরিস্কার করে
- পিত্তকে বাঁচায়
- রক্ত জমাট বাঁধার জন্য যে প্রোটিন দরকার সেটা তৈরী করে
এই বন্ধুটিকে ভাল করে রাখা এবং একে ভালোমতো কাজ করতে দেওয়া আমাদের উচিত ।
ভাল রাখতে হলে :
- স্বাস্থকর খাবার খাওয়া
- প্রতিদিন নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম করা
- কিছু ঔষধের ব্যপারে সতর্ক থাকা যেমন কোলেস্টেরল ড্রাগস্ এবং পেনকিলার অতিরিক্ত না খাওয়া কারণ তাতে লিভারের ক্ষতি হওয়ায় সম্ভবনা বেশি থাকে
- হেপাটাইটিসের ব্যাপারে সতর্ক থাকা
- উদ্ভিজ এবং খাবারের সপ্লিমেন্ত্স সমন্ধ্যে সতর্ক থাকা
- শরীরের জন্য যেটা বিষ তা স্পর্শ না করা বা তার সামনে নিঃশাস না নেওয়া
- কফি ,আদা, গাজর , মিন্ট ,ঘন সবুজ সবজি লিভারকে ভাল রাখে
- লেবু দারুন উপকারী এটা লিভার, কিডনি, গলব্লাডার, লান্গ্স (কলিজা ) ,পরিপাক নালীকে পরিস্কার করে ।
শ্বাসযন্ত্রবা লান্গ্স

নিঃশ্বাসের মাধ্যমে যে বাতাস আমরা গ্রহন করি লান্গ্স তার থেকে অক্সিজেনকে আলাদা করে রক্তের মধ্যে পাঠিয়ে দেয় এবং কার্বন ডাইঅক্সাইডকে আলাদা করে প্রশ্বাসের মাধ্যমে বাইরে বের করে দেয় ।
ভাল রাখতে হলে :
- মাঝে মাঝে দীর্ঘশ্বাস নেওয়া উচিত যার ফলে প্রচুর বাতাস শরীরের ভিতর প্রবেশ করতে পারে এবং পুরোটাই আস্তে আস্তে বের করে দেওয়া ভাল । দিনের মধ্যে কয়েকবার এরকম করলে লান্গ্স খুব ভাল থাকবে
- হাত দুটোকে যতটা সম্ভম দূরে সরিয়ে বুকটাকে প্রসারিত করে নিশ্বাস নেওয়া
- নিশ্বাস নেওয়ার সময় মুখের পেশী একদম সাধরণ অবস্থায় থাকবে
- মাঝে মাঝে মুখে জলের ছিটা দিলে হৃদস্পন্দন কম হয়
- সাঁতার কাটা লান্গ্সের পক্ষে খুব ভাল
- যে কোন সময়ে হালকা স্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করা যায় এমনকি টিভি দেখার সময়েও
- বেলুন ফুলানো, শাঁক বাজানো লান্গ্সের পক্ষে খুব ভাল ব্যায়াম
- নাকের উপর হালকা টিসু পেপার রেখে প্রশ্বাসের মাধ্যমে তাকে দূরে পাঠনোর চেষ্ঠা করা একটা ভাল ব্যায়াম
- যত উচ্চ স্থানে (high altitude) হাঁটা যাবে লান্গ্স তত মজবুত হবে কারণ যত উপরে যাবে তত অক্সিজেনের মাত্রা কম হবে ।
মানুষের শরীরের পদ্ধতি বা সিস্টেম

মাথা,ঘাড়,ধর (যার মধ্যে বুক ও উদর আছে ),বাহুদ্বয় , দুই হাত , দুই পা ও চরণ যুগল নিয়ে মানুষের দেহ গঠিত । শরীরের প্রতিটা অংশে বিভিন্ন ধরনের কোষ আছে । এছাড়াও মানুষের দেহ গঠিত হয় কিছু উপাদান দ্বারা যেমন কার্বন ,ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস ।
আমাদের শরীর কিছু পদ্ধতির দ্বারা চালিত হয় যারা দিনরাত সমানতালে কাজ করে চলেছে আমাদের শরীরটাকে ঠিক রাখার জন্য । এই পদ্ধতিগুলো সমন্ধে একটু জানার জন্য নীচেআলোচনা করা হচ্ছে ।
- সংবহন তন্ত্র বা Circulatory System: হৃদয় ,রক্ত ,রক্তনালী ,ধমনী এবং শিরা নিয়ে গঠিত এই সিস্টেম । এই সিস্টেমের মাধ্যমে রক্ত ,নুত্রিয়েন্ত্স (nutrients), অক্সিজেন , কার্বন –ডাই –অক্সাইড, এবং হরমোন সারা শরীরে পৌচ্ছায় ।
- পরিপাক তন্ত্র বা (Digestive System): মুখ, অন্ননালী, পেট , ছোট ও বড় অন্ত্র (small & large intestine), মলদ্বার , গুহ্যদ্বার নিয়ে এই সিস্টেম । লিভার ও অগ্ন্যাশয়(Pancreas) এই সিস্টেমের অঙ্গ কারণ এরা রস তৈরী করে যাতে ভাল করে পরিপাক হয় । এই সিস্টেমের মাধ্যমে শরীর খাবার গ্রহন করে এবং অতিরিক্ত জিনিষ শরীর থেকে বের করে দেয় ।
- অন্ত্র:স্রাবি বা Endocrine System: এই সিস্টেমে আটটি প্রধান গ্রন্থি আছে যারা রক্তের মধ্যে হরমোন নি:সারিত করে যেটা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন টিসুর মধ্যে প্রবেশ কোরে শরীরের বিভিন্ন কাজকর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে যেমন দেহের মধ্যে রাসায়নিক পরিবতর্ন , দেহের বৃধি, যৌন ক্রিয়াকর্ম ইত্যাদি ।
- রোগ প্রতিরোধক বা Immune System: এই সিস্টেমে রয়েছে নোড লসিকা (lymph nodes), প্লীহা ( the spleen) ,অস্থি মজ্জা ( bone marrow), লিম্ফোসাইট( lymphocytes) ,থাইমাস ( the thymus ),এবং শ্বেত রক্তকনিকা ( leukocytes) . এই সিস্টেম হলো শরীরের প্রতিরক্ষা দপ্তর যারা ক্ষতিকারক রোগ জীবানুর থেকে শরীরকে বাঁচায় ।
- লসিকাসংক্রান্ত সিস্টেম বা Lymphatic System: লসিকা গ্রন্থি (Lymph nodes), লসিকা নালী ( Lymph ducts ) এবং লসিকা জাহাজ ( Lymph vessels) এই সিস্টেমের মধ্যে । এরা শরীরের প্রতিরক্ষা করে । এই সিস্টেম তৈরী করে লিম্ফ , এক পরিস্কার তরল পদার্থ যার মধ্যে শ্বেতরক্ত কনিকা থাকে এবং পাঠিয়ে দেয় সংক্রামনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ।এই সিস্টেম শরীরের টিসু থেকে অতিরিক্ত লিম্ফ তরল বের করে আনে এবং সেটা রক্তে পাঠিয়ে দেয় ।
- স্নায়ুতন্ত্র বা Nervous system: মস্তিস্ক বা ব্রেন, মেরুদন্ড বা স্পাইনাল কর্ড ও স্নায়ু নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । এই সিস্টেমে শরীরের বিভিন্ন অংশের সাথে স্নায়ুদের যোগাযোগ থাকে । ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় শরীরের সর্বত্র সংকেত পৌচ্ছায় এই সিস্টেমের মাধ্যমে ।
- পেশীতন্ত্র বা Muscular Syestem : এই সিস্টেমে প্রায় ৬৫০ টি পেশী আছে যারা আমাদের নড়াচাড়া করতে , আমাদের রক্ত প্রবাহ সচল রাখতে এবং শরীরের অনান্য অংশকে কাজ করতে সাহায্য করে । আমাদের শরীরে তিন ধরণের পেশী আছে (১ ) স্কেলিটন পেশী বা Skeleton Muscles (২ ) স্মুউথ পেশী বা Smooth Muscles (৩ ) কার্ডিয়াক পেশী বা Cardiac Muscles । স্কেলিটন পেশী হাঁড়ের সাথে যুক্ত এবং হাঁড়ের নারাচাড়াতে সাহায্য করে । স্মুউথ পেশী সকল অঙ্গের ভিতরে থাকে যা বিভিন্ন পদার্থকে অঙ্গের মাধ্যমে চালনা করে আর কার্ডিয়াক পেশী হার্টের সাথে থাকে যা রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করে ।
- প্রজনন তন্ত্র বা Reproductive System: এই সিস্টেম বংশ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । ছেলেদের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বা পেনিস (Penis) ,টেস্তেস বা (Testes) , এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ভেজাইনা বা( Vegina) ,জরায়ু বা ইউট্রাস(Uterus ) , ডিম্বাশয় বা ওভারী ( Ovaries ) নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । ছেলেদের প্রজনন তন্ত্র শুক্রাণু তৈরী করে আর মেয়েদের প্রজনন তন্ত্র ডিম্বাণু তৈরী করে । ডিম জরায়ুতে বড় হয় ।
- কঙ্কাল তন্ত্র বা Skeletal System: ২০৬ টা হাঁড় নিয়ে এই সিস্টেম যারা রগ বা Tendons, লিগামেন্ট, কারটিলেজ এর সাথে যুক্ত । এরা শুধু আমাদের নড়তে চড়তে সাহায্য করে তা নয় এরা রক্ত কোষ তৈরী করতে এবং ক্যালসিয়াম ধরে রাখতেও সহায়তা করে । দাঁত , হাঁড় নয় কিন্তু এই সিস্টেমের অন্তর্গত ।
- শ্বসনতন্ত্র বা Respiratory System: শ্বাসনালী, মধ্যচ্ছদা বা Diaphragm, ফুসফুস বা Lungs নিয়ে এই সিস্টেম . নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন নেওয়া এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়া এই সিস্টেমের কাজ ।
- মূত্রাধার প্রণালী বা Urinary System: দুটো কিডনি, দুটো মূত্রনালী ,থলি বা ব্লাডার ,দুটো sphincter পেশী নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । এই সিস্টেম শরীর থেকে ইউরিয়াকে আলাদা করতে সাহায্য করে । কিডনি পেচ্ছাব তৈরী করে সেটা মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে থলিতে গিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় ।
- চামড়া বা The skin or Integumentary System: চামড়া, চুল , নখ নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ । রোগ জীবানু এককথায় বলা যায় বাহ্যিক জগৎ থেকে প্রথমে শরীরকে রক্ষা করে এই সিস্টেম । আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের শরীরের থেকে বর্জ পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এই সিস্টেম ।
পাকস্থলী বা Stomach

স্টমাক বা পাকস্থলী তলপেটের উপরের বাঁ দিকে লিভারের নীচেপ্লীহার পাশে থাকে । এর প্রধান কাজ হলো খাবারকে শরীরের অন্য অঙ্গে পুরোপুরি পরিপাক হওয়ার জন্য পাঠানোর আগে মজুত করে এবং পাকস্থলীর ভিতরেই খাবারকে ভেঙ্গে ফেলে । বেশি খাবার গ্রহন করতে পাকস্থলী নিজেকে বড় করতে পারে । গড়ে পাকস্থলী ১.৫ গ্যালন খাবার বা জলীয় পদার্থ ধারণ করতে পারে । অন্য অঙ্গে পাঠানোর আগে ৩ থেকে ৫ ঘন্টা খাবারকে নিজের কাছে রাখতে পারে । পরিপাক করার জন্য পাকস্থলীর প্রধান অস্ত্র পাচক রস । এই শক্তিশালী পাচক রস থেকে নিজেকে বাঁচাতে শ্লেষার মত একপ্রকার রস পাকস্থলী ব্যবহার করে । এই রসের অভাবে পাকস্থলিতে আলসার হয় । পাকস্থলীর কাজ শেষ হওয়ার পরে খাবারের মন্ড , পাচক রস সহ অন্য অঙ্গের মাধ্যমে ছোট অন্ত্র বা small intestine এর ভিতর প্রবেশ করে ।
ভাল রাখাতে হলে :-
- ঘুমানোর ২ থেকে ৩ ঘন্টার আগে কিছু না খাওয়া
- বেশি করে চর্বিহীন প্রোটিন খাওয়া
- গোটা শস্য খাওয়া
- কম চর্বি যুক্ত দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাওয়া
- লবনের পরিমান কম করা
- কম গ্লায়সেমিক সূচক বা Glycemic Index যুক্ত খাবার খাওয়া
- পর্যাপ্ত পরিমানে জল পান করা
- প্রতিদিন নিয়মিত শরীর চর্চা করা
- অতিরিক্ত মদ্যপান না করা
- খালি পেটে যত কম থাকা যায়
- মানসিক চাপ যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখা
- বিশেষজ্ঞদের মতে দুপুর ৩ টে থেকে ৪ টের মধ্যে প্রোটিন সমৃদ্ধ জলখাবার খেলে শরীরে ম্যাজিক ঘটে ।
চোখ বা EYE

চোখ আমাদের শরীরের একটি প্রধান অঙ্গ । জগতের সবকিছুর সাথে আমাদের পরিচিত করছে এই চোখ । সবকিছু ভালোভাবে দেখতে হলে চোখকে সবসময় সুস্থ রাখতে হবে । নিম্নলিখিত সামান্য কটা নিয়ম মানলেই চোখকে ভালো রাখা যাবে । যেমন :-
- প্রথমে জানতে হবে পারিবারিক ইতিহাস কারো চোখের কোন কঠিন রোগ ছিল কিনা
- যদি থাকে তাহলে একটু অতিরিক্ত খেয়াল রাখতে হবে
- পরিস্কার কাপড় দিয়ে নতুবা হাত ভাল করে ধুয়ে চোখ ধরা উচিত
- ২০ -২০-২০ নিয়ম মেনে চলা । প্রতেক ২০ মিনিট অন্তর ২০ ফুট দূরে ২০ সেকেন্ডের জন্য তাকানো । চোখের চাপ না বাড়তে এই নিয়ম খুব সাহায্য করে
- ঠান্ডা জল দিয়ে মাঝে মাঝে চোখ পরিস্কার করা এবং চোখকে ঠান্ডা রাখা
- রোদে বেরোনোর সময় চোখকে রোদ লাগতে না দেওয়া । যেমন স্নান্গ্লাস পরা যেটা আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি থেকে চোখকে বাঁচাতে পারে
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা
- চোখের দৃষ্ঠি ঠিক রাখতে সঠিক খাবার খেতে হবে । লাল নটে , পালং , সজনে ,গাজর, ঘন সবুজ রঙের শাক ও সবজি ,পেপে , আম , মাছ (প্রচুর পরিমানে ওমেগা -৩ ফ্যাটি অ্যাসিড আছে ) চোখের জন্য উপকারী । ভিটামিন এ যুক্ত খাবার রাতকানা হওয়া এড়ানো যায়
- ধুমপান থেকে বিরত থাকা
- ডায়বেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ থাকলে তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা
- প্রয়োজন না থাকলেও যাদের বয়স ২০ থেকে ৩০ তাদের ৫ থেকে ১০ বছরের এর মধ্যে , ৪০ থেকে ৬৫ যাদের তাদের ২ থেকে ৪ বছরের মধ্যে এবং যাদের বয়স ৬৫টির উপরে তাদের ১ থেকে ২ বছরের মধ্যে কমপক্ষে একবার চোখ পরীক্ষা করানো উচিত
- ১৯ ঘন্টার বেশি একটানা কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার না করা । দিনের শেষে কন্টাক্ট লেন্স খুলে রাখা উচিত
- রাত্রে শোয়ার আগে চোখের মেকআপ পরিস্কার করা
- রাত্রে শোয়ার আগে ঠান্ডা শসার টুকরো চোখের উপরে রাখলে চোখ ফোলা কমে
- কম্পিউটার এ কাজ করার সময় চোখ আর কম্পুটারের পর্দা একই উচ্চতায় থাকলে চোখের চাপ কম পরে
- কম্পিউটার ও মোবাইল ফোন ব্যবহার করার সময় চোখের পাতা কম পিটপিট করে । প্রতেক ৩০ সেকেন্ড বাদ চোখের পাতা পিটপিট করানো উচিত
- শোয়ার আগে পরিস্কার জলে চোখ ধোয়া খুব ভালো তাতে সারাদিনের জমা ধুলো ও ময়লা পরিস্কার হয়ে যায়
- কাজল পরার সময় প্রতেকের জন্য আলাদা আঙ্গুল বা কাঠি ব্যবহার করা উচিত এবং পরবার পর কৌটাটা ঢাকা দিয়ে রাখা উচিত যাতে ধুলো না পড়ে
- চোখে ময়লার কণা পড়লে পরিস্কার জল ঢেলে বা পরিস্কার কাপড়ের কোনা বা ভিজে তুলোর আগা দিয়ে চোখ থেকে ময়লার কণা সড়িয়ে ফেলা উচিত ।
দাঁত বা Teeth

যেমন খেতে সাহায্য করে তেমন মুখের সৌন্দর্যও বৃদ্ধি করে । যে দাঁতের ব্যথা উপলব্ধি করেছে সে জানে দাঁত কি জিনিস । দাঁতের ব্যথায় ভুগতে না হলে কটা নিয়ম পালন করতে হবে , যেমন :-
- সকলে ও রাত্রে দাঁত মাজা বা ব্রাশ করা । দাঁতের সব দিক ভাল ভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ব্রাশ করা
- তিন মাস অন্তর ব্রাশ পাল্টানো উচিত । যদি ব্রাশের আগা ভেঙ্গে গিয়ে থাকে তাহলে তিন মাস আগেই পাল্টানো উচিত
- খাওয়ার পর মুখের ভিতরটা acidic বা অম্লীয় হয়ে যায় যার ফলে দাঁতের এনামেল অস্থায়ীভাবে নরম হয়ে যায়, তখন ব্রাশ করা উচিত নয় । কমপক্ষে খাওয়ার ৩০ মিনিট পর ব্রাশ করা উচিত
- ফ্লোরাইড দাঁতের এনামেলকে রক্ষা করে ঠিক কথা কিন্তু ১০০০ ppm এর নীচেফ্লোরাইড থাকলে কোন কাজই হয় না । তাই পেস্ট কেনার আগে দেখে নেওয়া ফ্লোরাইড ১৩৫০ থেকে ১৫০০ ppm আছে কিনা
- দুটো দাঁতের মধ্যেখান ভালোভাবে পরিস্কার করা উচিত কারণ এর মধ্যেই খাবার থেকে জীবানু জন্মায়
- ব্রাশ করার পর যে মাউথ ওয়াসে ফ্লোরাইড আছে তা দিয়ে কমপক্ষে ২ মিনিট মুখে রেখে ফেলে দেওয়া উচিত কারণ তাহলেই মূখ জীবানু শুন্য হয়ে যাবে । এই মাউথ ওয়াস দাঁতের সমস্ত এনামেলকে পরিস্কার করতে পারবে
- ১/২ চামচ লবন গরম জলে মিশিয়ে ঘরেই মাউথ ওয়াস তৈরী করা যায়
- শুধু দাঁত পরিস্কার করলেই তো মুখ পরিস্কার হয় না তাই জিবও পরিস্কার করা আবশ্যক
- ধুমপান থেকে বিরত থাকাই শ্রেয়
- মিষ্টি বা আঠালো জাতীয় খাবার খাওযার পর অবশ্যই মুখ ভালোভাবেই পরিস্কার করা উচিত
- মদ্যপান এনামেলের ক্ষতি করে তাই মদ্যপান কম করাই উচিত
- আমলকি,কমলালেবু,পাতিলেবু,পেয়ারা,অন্কুর বেরানো ছোলা,টম্যাটো ইত্যাদি খাওয়া ভাল । মাড়ি সুস্থ রাখার জন্য যে সব ভিটামিন দরকার সেগুলি এইসব খাবারে থাকে । রাগি আর বাজরাতে যে ক্যালসিয়াম থাকে তা দাঁত শক্ত করে । দুধও দাঁত শক্ত করতে সাহায্য করে
- টুথপেস্ট আর মাজন না থাকলে সমান পরিমাণ লবন আর খাবার সোডা মিশিয়ে দাঁতের মাজন তৈরী করা যায় । ব্রাশটা ভিজিয়ে মাজন লাগালে মাজনটা ঝরে পড়বে না ।
কার্বোহাইড্রেট বা Carbohydrates

কার্বোহাইড্রেট হলো চিনি , শ্বেতসার বা starch , তন্তু জাতীয় বা fibre যা বিভিন্ন খাবারের মধ্যে পাওয়া যায় । রাসায়নিক গঠন অনুযায়ী কার্বোহাইড্রেটকে সহজ বা জটিল দুই ভাগে ভাগ করা যায় । যেমন চিনি হলো সহজ কার্বোহাইড্রেট যা প্রায় সব খাবার, ফল ,শাক সবজি , দুধ বা দুগ্ধজাতীয় খাবার , প্রক্রিয়াজাত খাবারের মধ্যে পাওয়া যায় আর জটিল কার্বোহাইড্রেট হলো শ্বেতসার ও তন্তু যা পাওয়া যায় ভাত , রুটি , শ্বেতসার বহুল শাক সবজি , শিম বা শুঁটি জাতীয় খাদ্যের মধ্যে । প্রতেক দিনের ক্যালরির প্রায় ৪৫ থেকে ৬৫ ভাগ আসা উচিত কার্বোহাইড্রেট থেকে । কার্বোহাইড্রেট থেকে আমরা এনার্জি বা ক্যালোরি পাই যা আমাদের কোষের শক্তি, দৈহিক তেজ, কর্মক্ষমতা,তাপ উত্পাদন ও চর্বি গঠন বাড়াতে সাহায্য করে ।এই জাতীয় খাবারই আমাদের দেহ গঠন এবং দেহ সংরক্ষণের প্রধান উপাদান । প্রতি ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট আমাদের ৪.১ ক্যালোরি দেয় । যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাই ,আমাদের শরীর কার্বোহাইড্রেট থেকে চিনি ও শ্বেতসার ভেঙ্গে শর্করা বা Glucose তৈরী করে যেটা রক্তের সাথে মিশে যায় আর তন্তু শরীর থেকে বাইরে বেড়িয়ে যায় হজম না হয়ে । বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index বেশি থাকে, সেসব রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় । আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index কম বা মাঝারি থাকে তারা রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না ।
কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান কার্বোহাইড্রেট আছে তা মোটামুটি দেওয়া হলো
খাবার(প্রতি ১০০ গ্রাম) | কার্বোহাইড্রেট (গ্রাম) | খাবার(প্রতি ১০০ গ্রাম) | কার্বোহাইড্রেট (গ্রাম) | খাবার(প্রতি ১০০ গ্রাম) | কার্বোহাইড্রেট (গ্রাম) |
দুধ | ৫ | কলা | ৩৬.৪ | গমের bran | ২৩ |
মাখন | ০ | চেরী | ১২ | মুড়ি | ৭৪.৩ |
ক্রিম | ৩ | আঙ্গুর | ১০.২ | চিড়া | ৭৮.২ |
চীস | ০ | কমলা লেবু | ১০.৬ | লাল আটা | ৭২.২ |
আইস ক্রিম | ২৫ | পেঁপে | ৯.৫ | সাদা ময়দা | ৭৪.১ |
মার্জারিন | ০ | আম | ১১.৮ | সুজি | ৬২.৮ |
ডিম | ০ | নারিকেল | ১৩ | মসুর ডাল | ৫৯.৭ |
শুয়োরের মাংস( গ্রীল ) | ০ | চিনা বাদাম | ৯ | ছোলার ডাল | ৬১.২ |
চিকেন (রোস্ট) | ০ | বিয়ার | ২ | সয়াবিন | ২০.৯ |
মাছ | ৮ | ওয়াইন | ০ | গোল আলু | ২২.৯ |
বিন্স সেদ্ধ) | ৩ | কফি (কালো) | ০ | রাঙ্গা আলু | ৩১ |
বাঁধাকপি (সেদ্ধ) | ১ | পাওরুটি | ৫০ | কচু | ২২.১ |
গাজর(সেদ্ধ) | ৪ | ভাত (সেদ্ধ সাদা) | ৩০ | মুলা | ৪.২ |
ফুলকপি (সেদ্ধ) | ১ | দুধ কর্নফ্লেক্স | ৩৪.৭ | পিয়াঁজ | ১১.৬ |
শশা | ২ | চকোলেট বিস্কিট | ৬৭ | আলু (সেদ্ধ ) | ২২ |
মটর শুঁটি (সেদ্ধ) | ৮ |
প্রোটিন বা Protein

প্রোটিন হলো শরীর গড়ার খাবার । ঠিকমত বেড়ে উঠার জন্য , মাংসপেশী , মাথার ঘিলু আর শরীরের আরো নানা অংশ সুস্থ রাখার জন্য প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন । খাবারের মধ্যে ডাল , মটরশুটি , বরবটি , সয়াবিন , বাদাম , ঘন সবুজ রঙের শাক সবজি , দুধ , দই , ছানা , মাংস , মাছ , ডিম ইত্যাদির মধ্যে প্রচুর পরিমানে প্রোটিন পাওয়া যায় । Small intestine বা ছোট অন্ত্রের মাধ্যমে শরীর প্রোটিন থেকে অ্যামিনো অ্যাসিড নিয়ে রক্তে পাঠায় আর রক্ত সেটা সারা শরীরে পাঠায়। প্রতেক দিনের ক্যালরির প্রায় ১০ থেকে ৩৫ ভাগ আসা উচিত প্রোটিন থেকে । এক গ্রাম প্রোটিন থেকে আমরা ৪.১ এনার্জি বা ক্যালোরি পাই যেটা কোষের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ।
কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান প্রোটিন থাকে তা মোটামুটি দেওয়া হলো
খাবার (১০০ গ্রাম) | প্রোটিন(গ্রাম) | খাবার (১০০ গ্রাম) | প্রোটিন(গ্রাম) | খাবার (১০০ গ্রাম) | প্রোটিন(গ্রাম) |
দুধ | ৩.৩ | নারিকেল | ৪.৫ | মাখন | ০ |
চিনা বাদাম | ২৪ | ক্রিম | ২ | বিয়ার | ০.৩ |
চীস | ২২ | ওয়াইন | ০ | চা /কফি(কালো) | ০ |
আইস ক্রিম | ৪ | পাওরুটি | ৮ | ডিম | ১২ |
মার্জারিন | ০ | ভাত (সেদ্ধ সাদা) | ২ | শুয়োরের মাংস (গ্রীল ) | ২৯ |
দুধ কর্নফ্লেক্স | ৬.৫ | চিকেন (রোস্ট) | ২৫ | চকলেট বিস্কিট | ৬ |
মাছ | ২০ | গমের bran | ১৪ | বিন্স (সেদ্ধ) | ২ |
মুড়ি | ৭.৫ | বাঁধাকপি (সেদ্ধ) | ১ | চিড়া | ৬.৬ |
গাজর (সেদ্ধ) | ০.৬ | লাল আটা | ১২.১ | শশা | ০.৬ |
ফুলকপি (সেদ্ধ) | ১.৫ | সাদা ময়দা | ১১ | সুজি | ১৩.৬ |
মটর শুঁটি (সেদ্ধ) | ৫ | মসুর ডাল | ২৫.১ | ছোলার ডাল | ১৭.১ |
আলু (সেদ্ধ ) | ১ | টমেটো | ১ | সয়াবিন | ৪৩.২ |
আপেল | ০.৩ | গোল আলু | ১.৬ | কলা | ১.৩ |
রাঙ্গা আলু | ১.২ | চেরী | ০.৬ | কচু | ৩ |
আঙ্গুর | ০.৮ | মুলা | ০.৭ | কমলা লেবু | ০.৯ |
পিয়াঁজ | ১.২ | পেঁপে | ০.৫ |
চর্বি বা Fats

ফ্যাট হলে শরীরের শক্তির উৎস যেটা শরীরকে ভিটামিন গ্রহণ করতে সাহায্য করে । ভূট্টা, ক্যানোলা, তেল , মাখন , ঘি , মাংসের চর্বি , বাদাম , পনীর হলো স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের উদাহরণ। ফাস্ট ফুড হলো অস্বাস্থকর ফ্যাটের উদাহরণ । প্রতেক দিনের ক্যালরির প্রায় ২০ থেকে ৩৫ ভাগ আসা উচিত ফ্যাট থেকে। এক গ্রাম ফ্যাট থেকে আমরা ৮.৮ এনার্জি বা ক্যালোরি পাই যেটা কোষের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে ।
কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান ফ্যাট থাকে তা মোটামুটি দেওয়া হলো
খাবার (১০০ গ্রাম) | ফ্যাট(গ্রাম) | খাবার (১০০ গ্রাম) | ফ্যাট(গ্রাম) | খাবার (১০০ গ্রাম) | ফ্যাট(গ্রাম) |
দুধ | ৪ | বিয়ার | ০ | মাখন | ৮২ |
ওয়াইন | ০ | ক্রিম | ২১ | চা/কফি (কালো) | ০ |
চীস | ২৫ | পাওরুটি | ২ | আইস ক্রিম | ৭ |
ভাত (সেদ্ধ সাদা) | ০ | মার্জারিন | ৮১ | দুধ কর্নফ্লেক্স | ৪ |
ডিম | ১১ | চকোলেট বিস্কিট | ২৮ | চিকেন (রোস্ট) | ৫ |
শুয়োরের মাংস ( গ্রীল ) | ২৪ | গমের bran | ৬ | মুড়ি | ০.১ |
মাছ | ১০ | চিড়া | ১.২ | বিন্স (সেদ্ধ) | ০ |
লাল আটা | ১.৭ | বাঁধাকপি (সেদ্ধ) | ০ | সাদা ময়দা | ০.৯ |
গাজর (সেদ্ধ) | ০ | সুজি | ৭.৬ | ফুলকপি (সেদ্ধ) | ০ |
মসুর ডাল | ০.৭ | শশা | ০ | ছোলার ডাল | ৫.৩ |
মটর শুঁটি (সেদ্ধ) | ০ | সয়াবিন | ১৯.৫ | আলু (সেদ্ধ ) | ০ |
গোল আলু | ০.১ | টমেটো | ০ | রাঙ্গা আলু | ০.৩ |
আপেল | ০ | কচু | ০.১ | কলা | ০.১ |
মুলা | ০.১ | পিয়াঁজ | ০.১ | চেরী | ০ |
আঙ্গুর | ০.১ | কমলা লেবু | ০.৩ | পেঁপে | ০.১ |
আম | ০.১ | নারিকেল | ৪১.৬ | চিনা বাদাম | ৪৯ |
বিয়ার | ০ | ওয়াইন | ০ |
ভিটামিন বা Vitamin

ভিটামিন হলো একটা জৈব যৌগ যেটা উদ্ভিদ ও প্রাণী তৈরী করে এবং যেটার সামান্য পরিমান আমাদের জীবন ধারণের জন্য লাগে । যেটার অভাবে আমাদের জীবনশক্তি কমে আসে এবং রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমিয়ে দেয় । আমরা ভিটামিন সংগ্রহ করি খাবার থেকে কারণ আমাদের শরীর ভিটামিন তৈরী করে না বা যথেষ্ট করে না । কোনো কোনো যৌগ মানুষের জন্য ভিটামিন কিন্তু অন্য প্রাণীর জন্য নয়। যেমন ভিটামিন সি (ascorbic acid) মানুষের জন্য ভিটামিন কিন্তু কুকুরের জন্য নয় কারণ কুকুর নিজের জন্য যতটা প্রয়োজন তৈরী করতে পারে, মানুষ পারে না ।
এখন পর্যন্ত ১৩ রকমের স্বীকৃত ভিটামিন পাওয়া গেছে । কিছু ভিটামিন চর্বিতে দ্রবণীয় আর কিছু জলে ।
চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন: এই ভিটামিনগুলি আমাদের শরীরের ফ্যাট টিসু এবং লিভারে মজুত থাকে পুরো দিনের জন্য । কোন কোন ভিটামিন আবার মাস অবধি মজুত থাকে । চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন , জলে দ্রবণীয় ভিটামিন থেকে সহজ ভাবে মজুত হয় । অন্ত্রের নালীর মাধ্যমে লিপিডের সাহায্যে এই ভিটামিন গুলি শরীর গ্রহণ করে ।
জলে দ্রবণীয় ভিটামিন : এই ভিটামিনগুলি শরীরে বেশিক্ষণ মজুত থাকতে পারে না , পেচ্ছাবের মাধ্যমে বেড়িয়ে যায় । অন্য জলে দ্রবণীয় ভিটামিন এর স্থান গ্রহন করে ।
A, D, E, এবং K ভিটামিন হলো চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন আর C এবং সকল B ভিটামিন হলো জলে দ্রবণীয় ভিটামিন।
প্রায় সব ফল ও শাক সবজির মধ্যে আমরা সব ভিটামিন ও মিনারেল পাই । কোনো কোনো ফল ও শাকসবজিতে কোনো কোনো ভিটামিন ও মিনারেল হয়ত বেশি মাত্রায় থাকে এবং অন্য ভিটামিন ও মিনারেল কম মাত্রায় থাকে। যেমন একটা আপেলে থাকে :-
মিনারেলস | ভিটামিন |
পটাসিয়াম -১৯৫মি.গ্রা, ক্যালসিয়াম -১১ মি.গ্রা , ফসফরাস -২০ মি.গ্রা,ম্যাগনেসিয়াম -০.৬৪ মি.গ্রা, লোহা – ০.২২ মি.গ্রা, সোডিয়াম -২মি.গ্রা,কপার -০.০৪৯মি.গ্রা , জিঙ্ক -০.০৭ মি.গ্রা এছাড়া আরও অন্য মিনারেল সামান্য পরিমানে আছে । | এ -৯৮ আই ইউ, বি১-.০৩১ মি.গ্রা,বি২-০.০৪৭ মি.গ্রা,নিয়াসিন -০.১৬৬ মি.গ্রা , বি৬-০.০৭৫মি.গ্রা,সি-৮.৪ মি.গ্রা, ই – ০.৩৩ মি.গ্রা ,কে – ৪ এম সি জি এছাড়া আরও অন্য ভিটমিন সামান্য পরিমানে আছে । |
ভিটামিনের নাম | কিসে দ্রবণীয় | ভিটামিনের অভাবে যে রোগ হয় | যে সকল খাবার থেকে বেশি পাওয়া যায় |
ভিটামিন A | চর্বিতে দ্রবণীয় | রাতকানা, চোখের অসুখ যেটা কর্নিয়াকে শুকিয়ে দেয় | মেটে, টমাটো ,মটর শুঁটি, গাজর , ব্রকলি , মিষ্টি আলু , মাখন , বাঁধা কপি , পেঁপে,সবুজ ও হলদে রঙের শাক-সবজি ও ফল ,দুধ ,মাছের তেল , ডিম , অপ্রিকট , ফুটি, ইত্যাদি |
ভিটামিন B | জলে দ্রবণীয় | বেরিবেরি (এক জাতীয় স্নায়বিক রোগ), ওএর্নিকি কোর্সা কফ (Wernicke -korsa koff ) এর লক্ষণ দেখা দেয় | ইস্ট , শুয়োরের মাংস , শস্য দানা , সূর্যমুখী বীজ , ব্রাউন রাইস , শতমূলী , পাতা কপি , ফুলকপি , আলু , কমলা লেবু , মেটে , ডিম ইত্যাদি |
ভিটামিন B 2 | জলে দ্রবণীয় | aribpflavinosis হতে পারে | শতমূলী , কলা , খেজুর , পনির , দুধ , দই , মাংস ,ডিম , মাছ , সবুজ শিম ইত্যাদি |
ভিটামিন B 3 | জলে দ্রবণীয় | অপুষ্টিরোগ | মেটে,, মাংস , মাছ, দুধ, ডিম, অভাকাড , খেজুর , টমেটো , শাকসব্জি , ব্রকলি , গাজর , মিষ্টি আলু , শতমূলী , বাদাম , গোটা শস্য , শিম , মাসরুম , ইস্ট ইত্যাদি |
ভিটামিন B 5 | জলে দ্রবণীয় | পারেস্থেসিয়া (paresthesia) | মাংস , গোটা শস্য ( কলে ছাঁটা নয় ), ব্রকলি , অভকাড , জেলি , মাছের ডিম ইত্যাদি |
ভিটামিন B 6 | জলে দ্রবণীয় | রক্তাল্পতা , পেরিফেরাল স্নায়ুরোগ | মাংস , কলা , গোটা শস্য , সবজি , বাদাম , দুধকে ফোটালে বা ফ্রীজে অনেক্ষণ রাখলে B 6 এর পরিমান অনেক কম হয়ে যায় |
ভিটামিন B 7 | জলে দ্রবণীয় | ডার্মাটাইটিস (Dermatitis), আন্ত্রিক প্রদাহ বা Enteritis | ডিম, ডিমের কুসুম , মেটে , সবজি ইত্যাদি |
ভিটামিন B 9 | জলে দ্রবণীয় | গর্ভাবস্থার অসুবিধা (Pregnancy deficiency linked to birth defects) | শাকসব্জি, শিম , লিভার , ইস্ট , সূর্যমুখী বীজ , ইত্যাদি |
ভিটামিন B 12 | জলে দ্রবণীয় | রক্তাল্পতা বা Megaloblastic anemia | মাছ , শামুখ , মাংস , ডিম , দুধ এবং দুগ্ধজাত খাদ্য , সয়া ইত্যাদি |
ভিটামিন C | জলে দ্রবণীয় | রক্তাল্পতা বা Megaloblastic anemia, রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা কমে যায় , শিশুর ওজন হ্রাস , | সকল প্রকার লেবু, টমাটো,ফল , অংকুরিত ছোলা,পিয়াঁজ,পালং শাক,বাঁধাকপি,আলু,মিষ্টি আলু,মটর শুঁটি,দুধ,দই,ঘোল ইত্যাদি |
ভিটামিন D | চর্বিতে দ্রবণীয় | রিকেট , রোগজীর্ণ অস্থি -কোমলতা (osteomalacia) | সূর্যের আলো থেকে , চর্বিযুক্ত মাছ ,মাছের ডিম,পাঁঠার মেটে, ডিমের কুসুম ,দুধ,মাখন,বড়ি,পাঁপড়,আচার, মাসরুম ইত্যাদি |
ভিটামিন E | চর্বিতে দ্রবণীয় | গর্ভ সংরক্ষক ভিটামিন বলে,সাধরনত এর অভাব হয় না . হলেও সামান্য | কিউই ফল , আলমন্ড , অভকাড , ডিম , দুধ , বাদাম , সবুজ শাক সবজি , শস্যদানা , মাছের বা খাসির তেল ,নারিকেল,কলা,মাংস,সয়াবিন, মটর শুঁটি, ইত্যাদি |
ভিটামিন K | চর্বিতে দ্রবণীয় | Bleeding diathesis বা রক্ত জমাট বাঁধে না | সবুজ শাক সবজি ,ব্রকলি , সয়াবিন , অভকাড , কিউই ফল , পার্সলে ইত্যাদি |
খনিজ পদার্থ বা মিনারেল

ভিটামিন আর মিনারেল শরীরকে ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে । সারাদিন শরীর বিভিন্ন খাবার থেকে ভিটামিন আর মিনারেল জোগার করে । কিছু খাবারে অন্য খাবারের থেকে বেশি ভিটামিন আর মিনারেল থাকে । ভিটামিন হলো জৈব বা অর্গানিক ( যেটা উদ্ভিদ ও প্রাণী থেকে তৈরী ) আর মিনারেল হলো অজৈব বা ইনর্গানিক ( যেটা জমি ও জল থেকে পাওয়া যায় ) । বেশি পরিমানে আমাদের শরীরের প্রয়োজন কিছু মিনারেলের যেমন ক্যালসিয়াম যেটা আমাদের শরীরের বৃদ্ধি এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে । আরো কিছু মিনারেল যেমন ক্রোমিয়াম (chromium) , তামা (copper), আয়োডিন (iodin), লোহা (iron), সেলেনিয়াম (selenium), দস্তা ( zinc) এগুলোকে বলা হয় চিহ্ন বা trace মিনারেল কারণ প্রতেক দিন খুব সামান্য পরিমান আমাদের শরীরের প্রয়োজন হয় ।
ভিটামিন ও মিনারেল আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোগ ব্যবস্থাকে জোরদার করে , বৃদ্ধি ও বিকাশের সহয়তা করে , কোষদের ও অঙ্গদের তাদের নিজদের কাজ করতে সাহায্য করে । ভিটামিন পিল , পানীয় ,সাপ্লিমেন্ট খাওয়ার থেকে ঠিকমত খাবার খাওয়া ভাল । যেমন এক গ্রাস দুধ থেকে আমরা ক্যালসিয়াম , ফসফরাস ,পটাসিয়াম পাই কিন্তু এক গ্রাস সোডা থেকে কিছুই পাই না । গোটা শস্য বা অপ্রক্রিয়াজাত খাদ্য হওয়া উচিত আমাদের সর্বতম পছন্দ ।
হাঁড়ের জন্য আমাদের প্রয়োজন ক্যালসিয়াম যেটা আমরা পেতে পারি দুধ , দই , ডিম , সবুজ শাক সবজি ইত্যাদি থেকে । দস্তা বা জিঙ্ক ও লোহা বা আইরন পেতে পারি শুকনো সকল প্রকার বিন, বীজ (seeds), ছোলা, লিভার , বাদাম , পাতা কপি , ঝিনুক , মসূর, সিদ্ধ শাক ইত্যাদি থেকে । এছাড়া সহজে যেটা বলা যায় :-
- রাগি ও বজরার মত দানা শস্যে প্রচুর ক্যালসিয়াম আর লোহা থাকে
- গুড় আর তেঁতুলে সুস্থ রক্ত তৈরি করার মত লোহা থাকে
- গারো সবুজ রঙের শাক সবজিতেও অনেক লোহা থাকে
- সমুদ্রের গাছ- গাছরায় আয়োডিন থাকে
প্রায় সব ফল ও শাক সবজির মধ্যে আমরা সব ভিটামিন ও মিনারেল পাই । কোনো কোনো ফল ও শাকসবজিতে কোনো কোনো ভিটামিন ও মিনারেল হয়ত বেশি মাত্রায় থাকে এবং অন্য ভিটামিন ও মিনারেল কম মাত্রায় থাকে। যেমন আপেল: –
মিনারেলস | ভিটামিন |
পটাসিয়াম -১৯৫মি.গ্রা, ক্যালসিয়াম -১১ মি.গ্রা , ফসফরাস -২০ মি.গ্রা,ম্যাগনেসিয়াম -০.৬৪ মি.গ্রা, লোহা – ০.২২ মি.গ্রা, সোডিয়াম -২মি.গ্রা,কপার -০.০৪৯মি.গ্রা , জিঙ্ক -০.০৭ মি.গ্রা এছাড়া আরও অন্য মিনারেল সামান্য পরিমানে আছে । | এ -৯৮ আই ইউ, বি১-.০৩১ মি. গ্রা,বি২-০.০৪৭ মি.গ্রা,নিয়াসিন -০.১৬৬ মি.গ্রা , বি৬-০.০৭৫মি.গ্রা,সি-৮.৪ মি.গ্রা, ই – ০.৩৩ মি.গ্রা ,কে – ৪ এম সি জি এছাড়া আরও অন্য ভিটমিন সামান্য পরিমানে আছে । |
জল বা Water

সারাদিনে আমাদের কতটা জল খাওয়া উচিত – এই প্রশ্নটা করা খুব সহজ কিন্তু উত্তর দেওয়া খুবই কঠিন কারণ জল খাওয়া নির্ভর করে অনেকরকম অবস্থার উপর যেমন শারীরিক অবস্থা, পরিশ্রমের মাত্রা , কি রকম তাপমাত্রাতে বাস করি ইত্যাদি । কোন একটা সুত্র বা ফর্মুলার উপর নির্ভর করে না । শরীরের প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে ।
জল আমাদের শরীরের প্রধান রাসায়নিক উপাদান । আমাদের শরীরের ৬০ ভাগ ওজন নির্ভর করে জলের উপর । প্রতেকটা সিস্টেম জলের উপর নির্ভরশীল। জল আমাদের খারাপ পদার্থ শরীর থেকে বাইরে বের করে দেয়, কোষের মধ্যে পরিপোষক পদার্থ বা nutrients বহন করে , চোখ ,নাক ও গলাকে ভিজিয়ে রাখতে সাহায্য করে ।
প্রতেক দিন নিঃশ্বাস-প্রশ্বাস, ঘাম , পেচ্ছাব , পায়খানার মাধ্যমে শরীর থেকে জল বেড়িয়ে যায় । গড়ে প্রায় প্রতিদিন কিডনির মাধ্যমে ১.৫ লিটার ,ফুসফুসের মাধ্যমে ০.৩৫ লিটার,চামড়ার মাধ্যমে ০.৪৫ লিটার আর অন্ত্রের মাধ্যমে ০.২ লিটার জল শরীর থেকে বেরিয়ে যায় । খাবার ও পানীয়র মাধ্যমে তা প্রতিদিন পূরণ করতে হয় । শরীরে জলের ভারসাম্য ঠিক রাখা খুবই দরকার । জলের অভাব ঘটলে শরীর দুর্বল বোধ করে , শক্তি হারায়। খাবার থেকে সাধারনত আমরা ২০% জল পাই কারণ ফল ও শাক সবজির মধ্যে প্রচুর জল আছে । বাকিটা আমাদের খেতে হবে । একটা অভ্যাস করে নিলে ভালো যেমন প্রত্যেক খাবারের সাথে বা দুটো খাবারে মধ্যে এক গ্লাস করে জল বা ক্যালোরি ফ্রী পানীয় নেওয়া আর শারীরিক পরিশ্রমের আগে,মধ্যে এবং পরে অবশ্যই ক্যালোরি ফ্রী বা কম ক্যালোরি যুক্ত পানীয় নিদেনপক্ষে জল গ্রহণ করা ।
বিভিন্ন সুপারিশ বিচার করার পর যা দাড়ায় তা হলো: –
সাধারণ তাপমাত্রায় একটা সুস্থ শরীরের জলের প্রয়োজনীয়তা
(খাবার থেকে ছাড়া )
বয়স (বছর ) | পরিমান ( লিটার প্রতিদিনে ) |
১ থেকে ৩ | ১.৩ |
৪ থেকে ৮ | ১.৭ |
৯ থেকে ১৩ | ২.৪ |
১৪ থেকে ১৮ | |
ছেলেদের | ৩.৩ |
মেয়েদের | ২.৩ |
১৯ থেকে ৭০ | |
পুরুষের | ৩.৭ |
মহিলাদের | ২.৭ |
বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী বেশি পরিমানে জল খুব তারাতারি পান করা স্বাস্থের পক্ষে বিপদজনক কারণ কিডনির কাজের সর্বোচ্চ হার ০.৭ থেকে ১ লিটার প্রতি ঘন্টায় ( ৩ থেকে ৪ কাপ প্রতি ঘন্টায় )।
সাধারনত তিন ধরনের কাজে আমাদের জল লাগে । (১) পান করতে (২) খাবার বানাতে (৩) পরিস্কার হতে বা করতে ।
বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী: –
- পরিস্কার জল একাই পারে জল সংক্রান্ত মৃত্যু (বিশেষ করে ডায়রিয়া)কে ২১ ভাগ কম করতে
- স্যানিটেশন একাই পারে জল সংক্রান্ত মৃত্যু (বিশেষ করে ডায়রিয়া)কে ৩৭ ভাগ কম করতে
- ভাল ভাবে হাত ধোয়া পারে জল সংক্রান্ত মৃত্যু (বিশেষ করে ডায়রিয়া)কে ৩৫ ভাগ কম করতে
সুতরাং নিশ্চয় জোর দিয়ে বলা যায় পরিশ্রুত জল আমাদের এই পৃথিবীকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে ।
শরীরে জলের অভাব বা dehydration
শরীরে যে পরিমান জল বা পানীয় থাকা উচিত তার থেকে কম থাকলে তাকে ডিহাইড্রেসন বা dehydration বলে । অনেক সময় ডিহাইড্রেসন বা dehydration মারাত্বক আকার ধারণ করে ।
কারণসমুহ :
- খুব অতিরিক্ত ঘাম হলে যেমন গরম আবহাওয়াতে অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে
- অসুখ করলে
- বমি বা পেট খারাপ হলে
- অতিরিক্ত পেচ্ছাব করলে
- অনেক সময় অসুস্থ থাকার ফলে খাবার বা পানীয়র পরিমান কম হওয়ার জন্য
- বমি বমি ভাব বোধ হলে
- গলা বা মুখে ব্যথা বা কোনো ক্ষতর জন্য
- বয়স্ক মানুষ এবং নির্দিষ্ট কিছু রোগের জন্য
উপসর্গ বা লক্ষণ :
- বেশি করে জল তেষ্টা পাওয়া
- মূখ শুকিয়ে গেলে বা আঠালো হলে
- পেচ্ছাব কম হওয়া
- ঘন হলুদ পেচ্ছাব
- শুস্ক বা ঠান্ডা চামড়া
- মাথাব্যথা
- পেশীর খিঁচুনি
- অলস ভাব
- ঘন ঘন শ্বাস-প্রশ্বাস
- ঘোলা চোখ
- অবসন্ন
- আঘাত
- সাময়িক উন্মত্ততা
- কম রক্তচাপ
- দাঁড়ালে যদি রক্তচাপ কমে যায়
- আঙ্গুলে কিছুক্ষণ চাপ দিয়ে ছেড়ে দিলে যদি গোলাপী রঙ না আসে
- নাড়ির গতি বৃদ্ধি পেলে
- কচি বাচ্চার মাথার তালুর নরম জায়গা বসে যাওয়া
- চামড়ার রবারের মত টানটান ভাব চলে যাওয়া । দু আঙ্গুল দিয়ে চামড়াটা টেনে ছেড়ে দিলে যদি চামড়ার ভাঁজ একেবারে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসে ।
প্রতিকার :
- প্রতেক দিন পরিমান মত পানীয় গ্রহণ করা
- গরম আবহাওয়াতে এবং অতিরিক্ত পরিশ্রম করলে যথেষ্ঠ পানীয় গ্রহণ করা
- জ্বর, পেট খারাপ, বমির ইচ্ছা হলেও প্রচুর পানীয় গ্রহণ করতে হবে
- চিনি ও নুনের সরবত শরীরে জলের অভাবে দারুন কাজ দেয় । চিনির বদলে মধু বা গুড় দিলে আরো ভালো
- ছোট ছেলেমেয়েদের বেলায় বেশি সতর্ক হওয়া উচিত কারণ ছোট ছেলেমেয়েদের জলের অভাবটা আরো তাড়াতাড়ি বেড়ে যায় ।
ঔষধ ছাড়া বাঁচা যায় কিন্তু জল ছাড়া কোনমতেই নয় . কত রোগ ঔষধ ছাড়া শুধু জল দিয়েই সারানো যায় যেমন :-
পাতলা পায়খানা , শরীরে জলের অভাব | প্রচুর তরল জিনিস খেতে হবে |
যে সব রোগের সাথে জ্বর থাকে | প্রচুর তরল জিনিস খেতে হবে |
বেশি জ্বর , সর্দিগর্মি, গরমে দারুন শ্রান্তি | সমস্ত শরীর ঠান্ডা জলে ভিজিয়ে রাখলে ভাল |
পেচ্ছাবের ছোটখাটো সংক্রমণ | প্রচুর জল খেতে হবে |
কাশি , হাঁপানি , বুকে সর্দি বসা, নিউমোনিয়া , হুপিং কাশি | প্রচুর জল খেতে হবে আর গরম জলের ভাপ নিতে হবে |
খোস,পাঁচড়া,গায়ে বা মাথায় দাদ,শিশুদের চাপ খুসকি | সাবান জল দিয়ে ঘষে ধুযে নিতে হবে |
ক্ষতে সংক্রমণ, ঘা, ফোড়া | গরম জলে সেঁক দিতে হবে |
পেশীতে বা গাঁটে খিল ধরা ,ব্যথা, | গরম জলে সেঁক দিতে হবে |
চামড়ায় চুলকানি, জ্বালা করা বা রস পরা | ঠান্ডা জলে সেঁক দিতে হবে |
ছোটখাটো পোড়া | ঠান্ডা জলে ডুবিয়ে রাখতে হবে |
গলা ব্যথা, টনসিলে সংক্রমণ | গরম জলে লবন মিশিয়ে কুলকুচি করতে হবে |
চোখে এসিড, ক্ষার,ধুলোময়লা বা করকর করার মত কিছু পড়া | তখনি প্রচুর ঠান্ডা জল দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে |
নাক বন্ধ হওয়া | লবন জল নাক দিয়ে টানলে ভাল |
কোষ্ঠকাঠিন্য বা শক্ত মল | প্রচুর জল খেতে হবে |
অর্শ , মলদ্বারে ক্ষত | এক গামলা কুসুম গরম জলে এক চিমটে পটাসিয়াম পারমাঙ্গানেট দিয়ে ডুবিয়ে রাখতে হবে |
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা Antioxidant

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হলো একটা রাসায়নিক যেটা শরীরকে ক্ষত থেকে বাঁচায় রেডিকালের সাথে লড়াই করে । এর আরেকটা নাম ঝাড়ুদার যে রেডিকালকে মুক্ত করে । মজার ব্যাপার হলো এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আর রেডিকাল প্রাকিতিকভাবে আমাদের শরীরই তৈরী করে একে অপরের সাথে লড়াই করার জন্য । রেডিকাল শরীরকে অসুস্থ বানায় এবং ক্ষতের সৃষ্টি করে । যদি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট না থাকতো তাহলে শরীরটা রেডিকালের মুক্ত অঞ্চল হয়ে যেত । পরিবেশ দূষণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের প্রয়জনীয়তা দিন দিন বাড়িয়ে তুলেছে । এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের হার্ট, চোখ, স্মৃতি, মুড এবং ইমিউন সিস্টেমকে রক্ষা করে । অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কাঁচা বা হাল্কা আঁচে গরম করে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায় । যারা খুব সিগারেট খায় তাদের বেশি করে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খাওয়া উচিত ।
তিনটে প্রধান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ভিটামিন হোল বেটাক্যারোটিন বা betacarotene , ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই । অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রঙিন ফল ও শাক সবজির মধ্যে সাধারণত পাওয়া যায় বিশেষ করে রক্তবর্ণ , নীল , লাল , কমলা , হলুদ রঙ যার মধ্যে আছে ।
যে সকল খাবার থেকে পাওয়া যায় :
বেটাক্যারোটিন | ভিটামিন সি | ভিটামিন ই |
আপ্রিকত , বিট , ব্রকলি , গাজর , ভুট্টা , আম , কয়াস, টমাটো , তরমুজ , মিষ্টি আলু , গোলাপি আঙ্গুর ,কুমড়ো, কিশমিশ ইত্যাদি | সকল প্রকার লেবু , টমাটো,ফল , অংকুরিত ছোলা ,পিয়াঁজ,পালং শাক,বাঁধাকপি,লাল লঙ্কা, ফুল কপি , আলু,মিষ্টি আলু,মটর শুঁটি,দুধ,দই,ঘোল ইত্যাদি | কিউই ফল , আলমন্ড , এভোকাড , ডিম , দুধ , বাদাম , সবুজ শাক সবজি , শস্যদানা , মাছের বা খাসির তেল ,নারিকেল,কলা,মাংস,সয়াবিন, মটর শুঁটি, ইত্যাদি |
পরিমিত আহার বা এনার্জির পরিমান
পরিমিত আহার বলতে আমরা বুঝি খাদ্যের সাথে কতটা এনার্জি বা ক্যালোরি শরীর গ্রহণ করছে । এনার্জি পরিমাপের একক হলো ক্যালোরি । এনার্জি ছাড়া আমাদের কোষ বাঁচতে পারে না । আমাদের হার্ট ,লান্গ্স বন্ধ হয়ে যাবে , শরীর শেষ । খাবার ও পানীয়র দ্বারা আমরা প্রতিদিন এনার্জি গ্রহণ করি এবং এনার্জি খরচা হয় আমাদের দৈনন্দিন শারীরিক কার্যকলাপের দ্বারা । যেমন ধরা যাক একটা আপেল থেকে আমরা ৮০ ক্যালোরি এনার্জি পাই কিন্তু ১০০ ক্যালোরি এনার্জি খরচা করতে হলে প্রায় ১ কিলো মিটার হাঁটতে হবে ।
প্রথমে জানতে হবে আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য প্রতিদিন কত ক্যালোরির প্রয়োজন । যদিও প্রত্যেক মানুষ বিপাকীয় ভাবে আলাদা হয় তবুও সাধরণভাবে বলা যায় আমাদের ওজন,উচ্চতা, শারীরিক কার্যকলাপ এবং লিঙ্গের উপর নির্ভর করে ক্যালোরির পরিমাপ । বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী :-
বি এম আর (BASAL METABOLIC RATE) = ১০ *ওজন (কি.গ্রা.) + ৬.২৫*উচ্চতা (সে.মি.)-৫*বয়স (বছর)+৫ (ছেলেদের বেলায়)
বি এম আর (BASAL METABOLIC RATE) = ১০ *ওজন (কি.গ্রা.) + ৬.২৫*উচ্চতা (সে.মি.)-৫*বয়স (বছর)- ১৬১ (মেয়েদের বেলায়)
শারীরিক কার্যকলাপের ফ্যাক্টার
কোনো শারীরিক পরিশ্রম না করা বা সামান্য করা | বি এম আর * ১.২ |
হালকা পরিশ্রম | বি এম আর * ১.৩৭৫ |
মাঝারি পরিশ্রম | বি এম আর * ১.৫৫ |
নিয়মিত পরিশ্রম | বি এম আর * ১.৭২৫ |
অতিরিক্ত পরিশ্রম | বি এম আর * ১.৯ |
বি এম আরের সাথে কার্যকলাপের ফ্যাক্টার গুন করলে প্রয়োজনীয় ক্যালোরির পরিমান পাওয়া যাবে । ধরা যাক একটি ছেলের ওজন ৬৫ কি গ্রা ,উচ্চতা ১৭২.৭২ সে মি আর বয়স ২২ বছর , যদি সে পরিশ্রম হালকা করে তাহলে তার ক্যালোরি প্রয়োজন
= (১০*৬৫ +৬.২৫*১৭২.৭২ -৫*২২ +৫) *১.২ =(৬৫০ + ১০৭৯.৫ -১১০ +৫ )*১.২ =(১৭৩৪.৫ -১১০ )*১.২ =১৬২৪.৫ *১.২ =১৯৪৯.৪
এক ঘন্টার স্বাভাবিক(normal intensity) শারীরিক কার্যকলাপে আনুমানিক ক্যালোরি খরচার হার
এক ঘন্টার কার্যকলাপ (স্বাভাবিকভাবে ) | ৫৫-৬০ কি গ্রা ওজনের মানুষের | ৭০-৭৫ কি গ্রা ওজনের মানুষের | ৮৫-৯০ কি গ্রা ওজনের মানুষের |
হাঁটা | ২৪০ | ৩০০ | ৩৬০ |
বেসবল | ৩০০ | ৩৭০ | ৪৪০ |
সাঁতার | ৩৬০ | ৪৪০ | ৫৩০ |
টেনিস | ৪২০ | ৫২০ | ৬২০ |
দৌড়ানো | ৪৮০ | ৬০০ | ৭১০ |
সাইকেল চালানো | ৪৮০ | ৬০০ | ৭১০ |
ফুটবল | ৪৮০ | ৬০০ | ৭১০ |
বাস্কেটবল | ৪৮০ | ৬০০ | ৭১০ |
সকার | ৪৮০ | ৬০০ | ৭১০ |
সাধারণ খাদ্যের উপাদানে আনুমানিক এনার্জির পরিমান
খাদ্যের উপাদান | ক্যালোরি কিলো জুল (KJ) প্রতি গ্রাম | ক্যালরি (KCAL) প্রতি গ্রাম | ক্যালোরি কিলো জুল (KJ) প্রতি আউনস | ক্যালরি (KCAL) প্রতি আউনস |
ফ্যাট বা FAT | ৩৭ | ৮.৮ | ১০৪৯ | ২৪৯ |
প্রোটিন বা PROTIENS | ১৭ | ৪.১ | ৪৮২ | ১১৬ |
কার্বোহাইড্রেট বা CARBOHYDRATES | ১৭ | ৪.১ | ৪৮২ | ১১৬ |
তন্তু বা FIBER | ৮ | ১.৯ | ২২৭ | ৫৪ |
ইথানল বা ETHANOL | ২৯ | ৬.৯ | ৮২২ | ১৯৬ |
জৈব এসিড বা ORGANIC ACID | ১৩ | ৩.১ | ৩৬৯ | ৮৮ |
পল্যল্স বা POLYOLS | ১০ | ২.৪ | ২৮৩ | ৬৮ |
১ KCAL=৪.১৮৪ KJ,১ আউনস =২৮.৩৫ গ্রাম
খুব সহজেই বলা যায় যে ১গ্রাম ফ্যাট থেকে পাওয়া যায় ৮.৮ ক্যালোরি , ১ গ্রাম প্রোটিন থেকে পাওয়া যায় ৪.১ ক্যালরি এবং ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট বা CARBOHYDRATES থেকে পাওয়া যায় ৪.১ ক্যালরি. খাবার বলতে আমরা জানি :-
- কার্বোহাইড্রেট বা CARBOHYDRATE
- প্রোটিন বা PROTIEN
- ফ্যাট বা FAT
- ভিটামিন বা VITAMINE
- মিনারেল বা MINAREL
- জল বা WATER
প্রথম তিনটে থেকে আমরা এনার্জি বা ক্যালোরি পাই. তাহলে আমাদের জানতে হবে কোন খাবারে কতটা পরিমান কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ফ্যাট থাকে এবং কতটা পরিমান খেলে শরীরের প্রয়োজনীয় ক্যালোরি পাওয়া যাবে. বিশেষজ্ঞদের দুটো মত আছে সাধারণ অবস্থায় .
- প্রোটিন -১৮%, ফ্যাট- ২৯% এবং কার্বোহাইড্রেট -৫৩%
- প্রোটিন-১০%, ফ্যাট- ২৫% এবং কার্বোহাইড্রেট -৬৫%
যদি শরীরের প্রয়োজন প্রতিদিন ২০০০ ক্যালরি হয়, তাহলে দ্বিতীয় মত অনুযায়ী খেতে হবে প্রতিদিন প্রোটিন – (১০%* ২০০০) বা ২০০ ক্যালোরি, ফ্যাট-(২৫%*২০০০) বা ৫০০ ক্যালোরি, এবং কার্বোহাইড্রেট – (৬৫%*২০০০) বা ১৩০০ ক্যালোরি .
এবার প্রতিদিন কত গ্রাম কোনটা খেতে হবে: –
- প্রোটিন – (২০০ /৪.১) বা ৪৮.৭৮ গ্রাম
- ফ্যাট – (৫০০ / ৮.৮) বা ৫৬.৮২ গ্রাম
- কার্বোহাইড্রেট – (১৩০০ / ৪.১) বা ৩১৭.০৭ গ্রাম
প্রায় সব ফল ও শাক সবজির মধ্যে আমরা সব ভিটামিন ও মিনারেল পাই । কোনো কোনো ফল ও শাকসবজিতে কোনো কোনো ভিটামিন ও মিনারেল বেশি মাত্রায় থাকে এবং অন্য ভিটামিন ও মিনারেল কম মাত্রায় থাকে। যেমন আপেল:-
মিনারেলস | ভিটামিন |
পটাসিয়াম -১৯৫মি.গ্রা, ক্যালসিয়াম -১১ মি.গ্রা , ফসফরাস -২০ মি.গ্রা,ম্যাগনেসিয়াম -০.৬৪ মি.গ্রা, লোহা – ০.২২ মি.গ্রা, সোডিয়াম -২মি.গ্রা,কপার -০.০৪৯মি.গ্রা , জিঙ্ক -০.০৭ মি.গ্রা এছাড়া আরও অন্য মিনারেল সামান্য পরিমানে আছে । | এ -৯৮ আই ইউ, বি১-.০৩১ মি. গ্রা,বি২-০.০৪৭ মি.গ্রা,নিয়াসিন -০.১৬৬ মি.গ্রা , বি৬-০.০৭৫মি.গ্রা,সি-৮.৪ মি.গ্রা, ই – ০.৩৩ মি.গ্রা ,কে – ৪ এম সি জি এছাড়া আরও অন্য ভিটমিন সামান্য পরিমানে আছে । |
কোন খাবারে আনুমানিক কতটা পরিমান কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন , ফ্যাট ও জল থাকে তা নীচেদেওয়া হলো
খাবার (১০০ গ্রাম) | ক্যালোরি | প্রোটিন(গ্রাম) | ফ্যাট(গ্রাম) | কার্বোহাইড্রেট(গ্রাম) | জল (গ্রাম) | ভিটামিন |
দুধ | ৬৫ | ৩.৩ | ৪ | ৫ | ৮৭ | এ, বি২, নিয়াসিন |
মাখন | ৭৪০ | ০ | ৮২ | ০ | ১৫ | এ |
ক্রিম | ২১০ | ২ | ২১ | ৩ | ৭২ | এ |
চীস | ৩১০ | ২২ | ২৫ | ০ | ৪৪ | এ,বি২,নিয়াসিন |
আইস ক্রিম | ১৭০ | ৪ | ৭ | ২৫ | ৬৪ | বি১,বি২,নিয়াসিন |
মার্জারিন | ৭৪০ | ০ | ৮১ | ০ | ১৬ | এ |
ডিম | ১৫০ | ১২ | ১১ | ০ | ৭৫ | |
শুয়োরের মাংস (গ্রীল ) | ৩৪০ | ২৯ | ২৪ | ০ | ৩৬ | |
চিকেন (রোস্ট) | ১৫০ | ২৫ | ৫ | ০ | ৫৫ | |
মাছ | ২২০ | ২০ | ১০ | ৮ | ৬০ | বি১, নিয়াসিন |
বিন্স (সেদ্ধ) | ২০ | ২ | ০ | ৩ | ৯০ | এ |
বাঁধাকপি (সেদ্ধ) | ১০ | ১ | ০ | ১ | ৯৬ | এ,বি,সি |
গাজর (সেদ্ধ) | ২০ | ০.৬ | ০ | ৪ | ৯১ | এ |
ফুলকপি (সেদ্ধ) | ১০ | ১.৫ | ০ | ১ | ৯৩ | এ, বি, সি |
শশা | ১০ | ০.৬ | ০ | ২ | ৯৬ | সি |
মটর শুঁটি (সেদ্ধ) | ৫০ | ৫ | ০ | ৮ | ৮০ | এ,বি১,বি২,নিয়াসিন,সি |
আলু (সেদ্ধ ) | ৮০ | ১ | ০ | ২২ | ৭৭ | বি১ |
টমেটো | ১৫ | ১ | ০ | ৩ | ৯৩ | এ,সি |
আপেল | ৪৫ | ০.৩ | ০ | ১২ | ৮৪ | এ,বি,সি |
কলা | ১৫৩ | ১.৩ | ০.১ | ৩৬.৪ | ৬১.৪ | বি, সি |
চেরী | ৫০ | ০.৬ | ০ | ১২ | ৮১ | এ,বি,সি |
আঙ্গুর | ৪৫ | ০.৮ | ০.১ | ১০.২ | ৮৫.৫ | এ,বি,সি |
কমলা লেবু | ৪৯ | ০.৯ | ০.৩ | ১০.৬ | ৮৭.৮ | এ, বি সি, |
পেঁপে | ৪০ | ০.৫ | ০.১ | ৯.৫ | ৮৯.৬ | এ, বি, সি |
আম | ৫০ | ০.৬ | ০.১ | ১১.৮ | ৮৬.১ | এ,বি,সি |
নারিকেল | ৪৪৪ | ৪.৫ | ৪১.৬ | ১৩ | ৩৬.৩ | এ, বি, ডি |
চিনা বাদাম | ৫৭০ | ২৪ | ৪৯ | ৯ | ৪ | বি১, বি২, নিয়াসিন |
বিয়ার | ৩০ | ০.৩ | ০ | ২ | ||
ওয়াইন | ৭০ | ০ | ০ | ০ | ||
চিনি,দুধ ছাড়া কফি (কালো) | ০ | ০ | ০ | ০ | নিয়াসিন | |
চিনি,দুধ ছাড়া চা (লাল) | ০ | ০ | ০ | ০ | ||
পাওরুটি | ২৩০ | ৮ | ২ | ৫০ | ৩৯ | বি১, নিয়াসিন |
ভাত (সেদ্ধ সাদা) | ১২০ | ২ | ০ | ৩০ | ৭০ | |
দুধ কর্নফ্লেক্স | ২০৫ | ৬.৫ | ৪ | ৩৪.৭ | এ১, বি১,বি২ নিয়াসিন ,বি | |
চকলেট বিস্কিট | ৫২০ | ৬ | ২৮ | ৬৭ | ২ | বি২, নিয়াসিন |
গমের bran | ২০০ | ১৪ | ৬ | ২৩ | ৮ | বি১, বি২,নিয়াসিন |
লাল চালের ভাত ১/২ কাপ | ১১১.৩ | ২ | ১ | ২৩ | ||
সাদা আটার রুটি ১টি | ৬৬.২ | ২ | ১ | ১২ | ||
মুড়ি | ৩২৮ | ৭.৫ | ০.১ | ৭৪.৩ | ১৪.৭ | |
চিড়া | ৩৫০ | ৬.৬ | ১.২ | ৭৮.২ | ১২.২ | |
লাল আটা | ৩৫৩ | ১২.১ | ১.৭ | ৭২.২ | ১২.২ | |
সাদা ময়দা | ৩৪৯ | ১১ | ০.৯ | ৭৪.১ | ১৩.৩ | |
সুজি | ৩৭৪ | ১৩.৬ | ৭.৬ | ৬২.৮ | ১০.৭ | এ, বি |
মসুর ডাল | ৪৫০ | ২৫.১ | ০.৭ | ৫৯.৭ | ১২.৪ | এ, বি |
ছোলার ডাল | ৩১৬ | ১৭.১ | ৫.৩ | ৬১.২ | ৯.৮ | এ, বি |
সয়াবিন | ৪৩২ | ৪৩.২ | ১৯.৫ | ২০.৯ | ৮.১ | এ, বি |
গোল আলু | ৯৯ | ১.৬ | ০.১ | ২২.৯ | ৭৪.৭ | বি, সি |
রাঙ্গা আলু | ১৩২ | ১.২ | ০.৩ | ৩১ | ৬৮.৫ | এ, বি, সি |
কচু | ১০১ | ৩ | ০.১ | ২২.১ | ৭৩.১ | বি, সি |
মুলা | ২১ | ০.৭ | ০.১ | ৪.২ | ৯৪.৪ | বি, সি |
পিয়াঁজ | ৫১ | ১.২ | ০.১ | ১১.৬ | ৮৬.৮ | বি |
ভেটকি মাছ | ৬৬ | ১৩.৭ | ১.১ | ০ | ||
ইলিশ মাছ | ২৭০ | ২১.৮ | ১৯.৪ | ০ | ||
কাতলা মাছ | ১০২ | ১৯.৫ | ২.৪ | ০ | ||
কই মাছ | ১৪২ | ৮.৮ | ০ | ০ | ||
মাগুর মাছ | ৭১ | ১৫ | ১ | ০ | ||
পার্শে মাছ | ১২৩ | ১৬.৬ | ৫.৯ | ০ | ||
রুই মাছ | ৮১ | ১৬.৬ | ১.৪ | ০ | ||
সিংঘি মাছ | ৯৯ | ২২.৮ | ০.৬ | ০ | ||
শোল মাছ | ৮৮ | ১০.৮ | ২.৩ | ০ | ||
টেংরা মাছ | ১৩৮ | ১৯.৮ | ৬.৪ | ০ | ||
মৌরলা মাছ | ১১২ | ১৮ | ৪.১ | ০ | ||
পুঁটি মাছ | ৯৬ | ১৮.১ | ২.৪ | ০ | ||
বাগদা চিংড়ি | ৯২ | ১৮.৮ | ১.৬ | ০ | ||
বাঁটা মাছ | ১২০ | ১৯.৪ | ৪.৪ | ০ | ||
মৃগেল মাছ | ৮৭ | ১৯.৫ | ০.৮ | ০ | ||
খয়রা মাছ | ১০২ | ১৮ | ৩ | ০ | ||
মাছের তেল | ২৫২ | ০ | ২৮ | ০ | এ,ডি |
ওজন ঠিক রাখতে বা বাড়াতে বা কমাতে হলে প্রতিদিনের আহার আর শারীরিক কার্যকলাপের ভারসাম্য হিসাব করে ঠিক রাখতেই হবে ।
সাধারণত যে সব খাবার আমরা খাই তার থেকে কতটা আনুমানিক ক্যালোরি পাই
- বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী আমাদের শরীরের ওজন যত কি.গ্রা. তাকে ২৪ দিয়ে গুন করলে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, প্রতিদিনের সর্বাধিক ক্যালোরি তার থেকে বেশি হওয়া উচিত নয়
- বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী যদি কেউ ওজন কমাতেও চায়, তাহলেও প্রতিদিনে যত ক্যালরি দরকার তার থেকে ৫০০ ক্যালরির কম খাওয়া উচিত নয়
খাবার | পরিমান | ক্যালোরি (আনুমানিক ) |
সিদ্ধ ডিম | ১ | ৮০ |
ডিমের পোচ | ১ | ৮০ |
ডিম ভাজা | ১ | ১১০ |
ডিমের ওমলেট | ১ | ১২০ |
পাওরুটির ফালি | ১ | ৪৫ |
মাখনের সাথে পাওরুটির ফালি | ১ | ৯০ |
চাপাটি | ১ | ৬০ |
পুরি | ১ | ৭৫ |
চাপাটি | ১ | ৬০ |
পুরি | ১ | ৭৫ |
পরোটা | ১ | ১৫০ |
সবজি | ১ কাপ | ১৫০ |
ইডলি | ১ | ১০০ |
সাদা ধোসা | ১ | ১২০ |
মশলা ধোসা | ১ | ২৫০ |
সাম্বার | ১ কাপ | ১৫০ |
সাদা ভাত | ১ কাপ | ১২০ |
ফ্রাইড রাইস | ১ কাপ | ১৫০ |
নান | ১ | ১৫০ |
ডাল | ১ কাপ | ১৫০ |
দই | ১ কাপ | ১০০ |
তরকারি | ১ কাপ | ১৫০ |
মাংস | ১ কাপ | ১৭৫ |
সালাদ (ভেজিটেবিল) | ১ কাপ | ১০০ |
পাপড় | ১ | ৪৫ |
কাটলেট | ১ | ৭৫ |
আচার | ১ টেবিল চামচ | ৩০ |
হালকা সুপ | ১ কাপ | ৭৫ |
ঘন সুপ | ১ কাপ | ৭৫ |
ফল | ১০০ গ্রাম | ৮০ |
চিনি,দুধ ছাড়া চা | ১ কাপ | ০ |
চিনি,দুধ ছাড়া কফি | ১ কাপ | ০ |
চিনি ও দুধ সহ চা | ১ কাপ | ৪৫ |
চিনি ও দুধ সহ কফি | ১ কাপ | ৪৫ |
দুধ চিনি ছাড়া | ১ কাপ | ৬০ |
চিনি সহ দুধ | ১ কাপ | ৭৫ |
ঘন ফলের রস | ১ কাপ | ১২০ |
সফট ড্রিঙ্কস | ৩৫০ মি.লি | ১৪৫ |
বিয়ার | ৩৫০ মি.লি | ১৫০ |
সোডা | ১ বোতল | ১০ |
আলকোহল নিট | ১ ছোট পেগ | ৭৫ |
পরিজ | ১ কাপ | ১৫০ |
জ্যাম | ১ টেবিল চামচ | ৩০ |
মাখন | ১ টেবিল চামচ | ৫০ |
ঘি | ১ টেবিল চামচ | ৫০ |
চিনি | ১ টেবিল চামচ | ৩০ |
পিজা | ১ | ৪০০ |
বিস্কুট (ক্রিম ক্রেকার ছাড়া) | ১ | ৩০ |
বাদাম ভাজা | ১ কাপ | ৩০০ |
পুডিং | ১ কাপ | ২০০ |
আইস ক্রিম | ১ কাপ | ২০০ |
মিল্ক স্যেক | ১ গ্লাস | ২০০ |
ওফের্স | ১ প্যাকেট | ১২০ |
সিঙারা | ১(৩০ গ্রাম) | ১০০ |
ভাল পুরি / পানি পুরি | ১ প্লেট | ১৫০ |
KEBAB | 1 PLATE | 150 |
মিষ্টি | ১ | ১৫০ |
মাখন ও জ্যাম/চিস সহ পাওরুটির ফালি | ১ | ১২০ |
সেরিয়ালস ও দুধ ও মিষ্টি | ১ কাপ | ১৩০ |
পরিজ ও দুধ | ১ কাপ | ১২০ |
পরিজ ও দুধ মিষ্টি সহ | ১ কাপ | ১৫০ |
সসেজ,বেকন,হ্যাম (ভাজা)ইত্যাদি | ১ প্লেট | ১২০ |
আলু সিদ্ধ | ১ কাপ | ১০০ |
আলু ভাজা | ১ কাপ | ২০০ |
স্যান্ডউইচ বড় | ১ | ২৫০ |
হ্যামবার্গার | ১ | ২৫০ |
STEAK & SALAD | 1 PLATE | 300 |
SPAGHETTI & MEAT, SAUCE ETC | 1 PLATE | 450 |
BAKED DISH | 1 HELPING | 400 |
ফ্রাইড চিকেন | ১ প্লেট | ২০০ |
চাইনিস নুডুলস | ১ প্লেট | ৪৫০ |
চাইনিস ফ্রাইড রাইস | ১ প্লেট | ৪৫০ |
রোগ নির্ধারণের জন্য পরীক্ষা বা Medical Check up
অসুখ করলে বা কোনো অসুবিধা হলে আমরা ডাক্তারের কাছে যাই এবং ওনার পরামর্শ মতো কিছু পরীক্ষা আমরা করি । দরকার ছাড়া আমরা শরীরের জন্য কোনো পরীক্ষা করাই না কারণ অনেকের মধ্যেই একটা ভয় কাজ করে । এছাড়া খরচার কথাও আমরা চিন্তা করি. পাঁচ বছরে একবার করে রক্ত পরীক্ষা আর রক্ত চাপ পরীক্ষা করলে শরীর সমন্ধে জানা যাবে অনেক, খরচাও খুব বেশি লাগে না । সবচেয়ে বড় কথা ভবিষ্যতের অনেক খরচা বাঁচিয়ে দিতে পারে সামান্য কটা পরীক্ষা । ঠিক সময়ে চিকিৎসা করলে অনেক কঠিন রোগ থেকে বাঁচা যায় এবং ভবিষ্যতের বড় খরচার হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় । নিম্নলিখিত পরীক্ষার মাধ্যমেই শরীর সমন্ধে প্রায় সবই জানা যায় । (১) ডাক্তার বা বিশেষজ্ঞ দ্বারা শারীরিক পরীক্ষা বা Physical Examination (২) রক্ত পরীক্ষা বা Blood test (৩) পেচ্ছাবের পরীক্ষা বা Urine Examination (৪) পায়খানা পরীক্ষা বা Stool Examination (৫) ই.সি.জি বা ECG (৬) চোখের পরীক্ষা বা Eye test (৭) কানের পরীক্ষা বা Ear test (8) এক্স রে এবং স্ক্যান বা X-ray and Scan ।
যাদের বয়স ৪০ বছরের বেশি তাদের দু বছরে একবার অবশ্যই শরীরের পরীক্ষা করানো উচিত । পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা শরীরের প্রতিটি সিস্টেমের কাজকর্ম সমন্ধে বিশদভাবে জানতে পারি । কোন সিস্টেমের জন্য কি পরীক্ষা সেটাও নীচেমোটামুটি জানানো হলো ।
কোন সিস্টেমের জন্য | কি পরীক্ষা |
উচ্চতা,ওজন,রক্ত চাপ, চোখ ও কানের প্রাথমিক অবস্থা HEIGHT, WEIGHT, BODY MASS INDEX, BLOOD PRESSURE, VISUAL ACUITY, COLOUR VISION, HEARING TEST RINNE’S AND WEBER’S, BODY FAT MONITOR | শারীরিক পরীক্ষা বা PHYSICAL EXAMINATION |
হার্টের অবস্থা বা CARDIAC SYSTEM | RESTING ECG, TRADMILL STRESS TEST AND 2D ECHO, CHEST X RAY |
কিডনির অবস্থা বা RENAL OR KIDNEY (BUN (BLOOD UREA NITROGEN), CREATINE, ELECTROLYTES, URIC ACID, SODIUM CHLORIDE, POTASSIUM ) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST এবং পেচ্ছাবে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বা CALCIUM LEVEL IN URINE, ইত্যাদি |
শ্বসনতন্ত্র বা RESPIRATORY SYSTEM | PULMONARY FUNCTION TEST |
চোখ,নাক,গলা বা ENT | AUDIOMETRY |
কোলেস্টেরল বা CHOLESTEROL OR LIPID LEVELS (LDL, HDL, VLDL AND TRIGLYCERIDES), | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
ডায়বেটিস বা DAIBETES: FBS(FASTING BLOOD SUGAR), PPBS(POST PRANDIAL BLOOD SUGAR), MEAN BLOOD GLUCOSE CONC) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
রক্ত সমন্ধীয় বা HEMOGLOBIN COUNT, DIFFERENTIAL COUNT OF POLYMORPHS, LYMPHOCYTES, EOSINOPHILS, MONOVYTES, BASOPHILS, PLATELETS, BLOOD GROUP, HB, VIT.B12, CBC, ESR AND | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
লিভারের অবস্থা বা LIVER FUNCTION TEST (TOTAL PROTEIN, ALBUMIN, GLOBULIN, BILIRUBIN, ALKALINE PHOSPHATASE, GAMMA GT, SGOT/AST, SGPT/ALT ETC) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
কর্কট রোগ বা CANCER MAKERS | PROSTATE SPECIFIC ANTIGEN (PSA)FOR MEN, ALPHA-FETOPROTEIN(LIVER), EBV FOR NPC |
হাঁড়ের অবস্থা বা BONE METABOLISM (CALCIUM, PHOSPHATE) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
গর্ভাবস্থা বা PREGNANCY | URINE AND BLOOD TESTS |
হেমাটোলজি বা HAEMATOLOGICAL TESTS (ABO&RH(D)TYPING COMPLETE BLOOD COUNT, IRON, BLOOD FILM) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
বাত বা ARTHRITIES SCREENING (URIC ACID(GOUT), RHEUMATOID FACTOR) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
থাইরয়েড বা THYROID FUNCTION (T3, T3RU, T4, THYROID STIMULATING HORMONE(TSH) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
এন্টিবডি বা SEROLOGY (VDRL) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
হেপাটাইটিস বা HEPATITIS STATUS (HEPATITIS A ANTIBODY TOTAL HEPATITIS BS ANTIGEN, HEPATITIS BS ANTIGEN, HEPATITIS BS ANTIBODY) | রক্ত পরীক্ষা বা BLOOD TEST |
পেচ্ছাব বা URINE ANALYSIS (URINE ROUTINE) | পেচ্ছাবের পরীক্ষা বা URINE TEST |
পায়খানা বা STOOL (OCCULT BLOOD, STOOL ROUTINE, PEPTIC ULCER BACTERIA TEST) | পায়খানার পরীক্ষা বা STOOL TEST |
লান্গ্সের অবস্থা বা LUNG FUNCTION | ভায়টালোগ্রাফ বা VITALOGRAPH |
মেরুদন্ড এবং নিতম্ব বা OSTEOPOROSIS (SPINE AND HIP) | এক্সরে বা স্ক্যান বা DEXA |
আদর্শ শরীরের ওজন

সাধরনতঃ একটা বাচ্চা ১ বছর বাদে তার জন্মের ওজনের ৩ গুন হয় এবং ২বছরের উচ্চতা দ্বিগুন হয় ১৮ বছর বয়সে । ৮ থেকে ৯ বছরের মধ্যে তার উচ্চতা তার প্রাপ্ত বয়সের উচ্চতার ৭৫% হয়ে যায় । সুতরাং বাচ্চার বৃদ্ধির দিকে ভাল করে নজর রাখা তার গুরুজনদের আসু কর্তব্য ।
সাধরনতঃ ছেলেদের তার শরীরের ওজনের ৬0% থাকে জল আর মেয়েদের থাকে ৫0% জল । সুতরাং জল শরীরের ওজনের ক্ষেত্রে অন্যতম উপাদান ।
নানাবিধ সূত্রের মাধ্যমে শরীরের আদর্শ ওজনের পরিমাপ করা হয় । তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: –
যে সকল প্রাপ্ত বয়স্কদের উচ্চতা ৫ ফুট বা ৬0 ইঞ্চির বেশি
ছেলেদের আদর্শ শরীরের ওজন = ৫0 কি.গ্রাম + ২.৩ কি.গ্রাম*(উচ্চতা ইঞ্চিতে – ৬0)
মেয়েদের আদর্শ শরীরের ওজন = ৪৫.৫ কি.গ্রাম + ২.৩ কি.গ্রাম*(উচ্চতা ইঞ্চিতে – ৬0)
ধরা যাক একটি প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলের উচ্চতা ৫ ফুট ৮ ইঞ্চি বা ৬৮ ইঞ্চি তাহলে তার আদর্শ ওজন হবে = ৫0 কি.গ্রাম+ ২.৩ কি.গ্রাম*(৬৮-৬0) = ৫0+২.৩*৮= ৫0+১৮.৪=৬৮.৪কি.গ্রাম
যে সকল প্রাপ্ত বয়স্কদের উচ্চতা ৫ ফুট বা ৬0 ইঞ্চির কম
ছেলেদের আদর্শ শরীরের ওজন = ৫0 কি.গ্রাম – ২.৩ কি.গ্রাম*(৬0 – উচ্চতা ইঞ্চিতে )
মেয়েদের আদর্শ শরীরের ওজন = ৪৫.৫ কি.গ্রাম – ২.৩ কি.গ্রাম*(৬0- উচ্চতা ইঞ্চিতে )
ধরা যাক একটি প্রাপ্ত বয়স্ক মেয়ের উচ্চতা ৪ফুট ৮ ইঞ্চি বা ৫৬ ইঞ্চি তাহলে তার আদর্শ ওজন হবে= ৪৫.৫ কি. গ্রাম-২.৩ কি.গ্রাম*(৬0-৫৬)=৪৫.৫-২.৩*৪= ৪৫.৫ -৯.২= ৩৬.৩কি.গ্রাম.
প্রথম উদাহরণের ক্ষেত্রে আদর্শ ওজনের পরিসর বা রেনজ হবে (৫কি.গ্রাম প্লাস এবং মাইনাস) অর্থাৎ ৬৩.৪ থেকে ৭৩.৪ কি.গ্রাম এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ৩১.৩ থেকে ৪১.৩ কি.গ্রাম।
বাচ্চার জন্মের সময় থেকে তার বিভিন্ন সময়ে গড় ওজন এবং উচ্চতা বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী নীচেদেওয়া হলো:-
ছেলেদের | মেয়েদের | |||
বয়স | ওজন প্রতি কি.গ্রা | উচ্চতা প্রতি সে.মি | ওজন প্রতি কি.গ্রা | উচ্চতা প্রতি সে.মি |
জন্মের সময় | ৩.৩/২.৬ | ৫০.৫/৪৭.১ | ৩.২ /২.৬ | ৪৯.৯/৪৬.৭ |
৩ মাস | ৬.০০/৫.৩ | ৬১.১ /৫৯.১ | ৫.৪ / ৫ | ৬০.২ /৫৮.৪ |
৬ মাস | ৭.৮ /৬.৭ | ৬৭.৮ /৬৪.৭ | ৭.২ /৬.২ | ৬৬.৬ /৬৩.৭ |
৯ মাস | ৯.২ /৭.৪ | ৭২.৩ /৬৮.২ | ৮.৬ /৬.৯ | ৭১.১ /৬৭ |
১ বছর | ১০.২/৮.৪ | ৭৬.১/৭৩.৯ | ৯.৫ /৭.৮ | ৭৫ /৭২.৫ |
২ বছর | ১২.৩ /১০.১ | ৮৫.৬ /৮১.৬ | ১১.৮ /৯.৬ | ৮৪.৫ /৮০.১ |
৩ বছর | ১৪.৬ /১১.৮ | ৯৪.৯ /৮৮.৯ | ১৪.১ /১১.২ | ৯৩.৯ /৮৭.২ |
৪ বছর | ১৬.৭ /১৩.৫ | ১০২.৯ /৯৬ | ১৬ /১২.৯ | ১০১.৬ /৯৪.৫ |
৫ বছর | ১৮.৭ /১৪.৮ | ১০৯.৯ /১০২.১ | ১৭.৭ /১৪.৫ | ১০৮.৪ /১০১.৪ |
৬ বছর | ২০.৭ /১৬.৩ | ১১৬.১ /১০৮.৫ | ১৯.৫ /১৬ | ১১৪.৬ /১০৭.৪ |
৭ বছর | ২২.৯ /১৮ | ১২১.৭ /১১৩.৯ | ২১.৮ /১৭.৬ | ১২০.৬ /১১২.৮ |
৮ বছর | ২৫.৩ /১৯.৭ | ১২৭ /১১৯.৩ | ২৪.৮ /১৯.৪ | ১২৬.৪ /১১৮.২ |
৯ বছর | ২৮.১ /২১.৫ | ১৩২.২ /১২৩.৭ | ২৮.৫ /২১.৩ | ১৩২.২ /১২২.৯ |
১০ বছর | ৩১.৪ /২৩.৫ | ১৩৭.৫ /১২৪.৪ | ৩২.৫ /২৩.৬ | ১৩৮.৩ /১২৩.৪ |
১১ বছর | ৩২.২ | ১৪০ | ৩৩.৭ | ১৪২ |
১২ বছর | ৩৭ | ১৪৭ | ৩৮.৭ | ১৪৮ |
১৩ বছর | ৪০.৯ | ১৫৩ | ৪৪ | ১৫০ |
১৪ বছর | ৪৭ | ১৬০ | ৪৮ | ১৫৫ |
১৫ বছর | ৫২.৬ | ১৬৬ | ৫১.৫ | ১৬১ |
১৬ বছর | ৫৮ | ১৭১ | ৫৩ | ১৬২ |
১৭ বছর | ৬২.৭ | ১৭৫ | ৫৪ | ১৬৩ |
১৮ বছর | ৬৫ | ১৭৭ | ৫৪.৪ | ১৬৪ |
কিভাবে বাড়িকে এবং নিজেকে জীবানু মুক্ত রাখতে হয়

আমরা প্রায় সবাই আমাদের নিজের বাড়িকে পরিস্কার সুন্দর রাখতে চাই । পরিস্কার রাখা মানে যে জীবানু মুক্ত, তা কিন্তু নয় ।বাড়িকে জীবানুমুক্ত রাখতে বেশি খরচ হয় না বা বেশি সময়েরও প্রয়োজন নেই । বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী বাড়ির ৬টা জায়গায় বিশেষ নজর দিলে বাড়িকে পরিস্কার জীবানু মুক্ত রাখা যায় ।
- রান্নাঘর বা Kitchen: রান্নাঘরে প্রচুর জীবানু বাসা বাঁধতে পারে যদি যে জায়গার উপর রান্না করা হয় , সিন্ক বা যেখানে সব ধোয়া হয় , স্পঞ্জ বা যা দিয়ে বাসন ধোয়া হয় , যা দিয়ে রান্না করতে করতে হাত মোছা হয় , যে কাপড় দিয়ে রান্নাঘর পরিস্কার করা হয় , রান্নাঘরে রাখা যে পাত্রে উছিস্ট সব ফেলা হয় ঠিকমত পরিস্কার না করা হয় । প্রতিদিন সাবান জলে ভালো করে পরিস্কার করা ও সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন জীবানু প্রতিরোধকারী দ্রবণ ব্যবহার করা উচিত । এক চা চামচ ব্লিচের সাথে জল মিলিয়ে সিন্কের মধ্যে ফেললে নালী ঠিকমত পরিস্কার হয়ে যাবে ।
- শাক সবজি কাটার পাটা বা Cutting Board: কাঁচ বা প্লাস্টিকের বোর্ড ব্যবহার করা উচিত কারণ এগুলোতে নীরন্ধ্র বা non porous হয় । ব্যবহারের পর সাবান জল এবং গরম জলে ধুয়ে নেওয়া উচিত । ব্লিচের সাথে জল মিশিয়ে মিশ্রন তৈরী করে মাঝে মাঝে এই মিশ্রণ দিয়ে ধোয়ার পর গরম জলে ধুয়ে নিলে পুরোপুরি জীবানু মুক্ত হয় কারণ জীবানু লুকিয়ে থাকতে পারে ছুরি দিয়ে কাটার ফলে যে খাঁজ তৈরী হয় তার মধ্যে ।
- দাঁত মাজার ব্রাস বা Toothbrush: দাঁত মাজার পর ভালো করে ব্রাশ ধুয়ে শুকনো বন্ধ কিছুর মধ্যে রাখা উচিত কারণ খোলা জায়গায় রাখলে যে কোনো মুহূর্তে জীবানু বাসা বাঁধতে পারে ।
- ইলেক্ট্রনিক জিনিষ বা Electronic items: যে সব ইলেক্ট্রনিক জিনিষ যেমন মোবাইল ফোন, কম্পুটারের মাউস বা কিবোর্ড মানে যেগুলো খুব বেশি ব্যবহার করা হয় সেগুলো সবসময় পরিস্কার শুখনো রাখা উচিত যাতে জীবানু বাসা বাঁধতে না পারে ।
- স্নানঘর ও টয়লেট বা Bathroom and Toilet: এই দুটো ভালো করে সবসময় পরিস্কার রাখা উচিত কারণ এরা জীবানুর আঁতুর ঘর ।
- জুতো বা Shoes: জুতোর সাথে যে জীবানু আসে তাকে ঘরের বাইরে রাখা ভালো । জুতো দরজার বাইরে খুলে পা পরিস্কার করে ঘরে ঢোকা উচিত ।
- সকালে ঘুম থেকে উঠে মলত্যাগ করার পর আর খাওয়ার বা খাবার তৈরী করার আগে সবসময় সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে । হাত ধোবার জন্য মাটি বা কাদা ব্যবহার করা উচিত নয় ।
- প্রায়ই স্নান করা উচিত বিশেষ করে গরম কালে রোজ । কঠিন পরিশ্রমের পর বা ঘেমে যাওয়ার পর অবশ্যই স্নান করা উচিত । প্রতিদিন ভালো করে স্নান করলে চামড়ার সংক্রমন , খুসকি , ব্রণ ,চুলকানি আর rash এড়ানো যায় ।
- যে সব অঞ্চলে বেশি হুকওয়ার্ম আছে সেখানে খালি পায়ে ঘোরা একদম উচিত নয় কারণ এই ক্রিমিগুলো পায়ের পাতার চামড়া দিয়ে ঢোকে । হুকওয়ার্মের সংক্রামন থেকে সাংঘাতিক রক্তাল্পতা হয় ।
- প্রতিদিন আর প্রতিবার মিষ্টি খাওয়ার পর দাঁত মাজা উচিত । টুথব্রাশ আর পেস্ট যদি না থাকে তাহলে লবন আর খাওয়ার সোডা দিয়ে দাঁত পরিস্কার করে নেওয়া যেতে পারে ।
- বাড়ির পোষা জন্তুদের যদি জীবানু মুক্ত না করা থাকে তাহলে কখনই তাদের চাটতে বা বিছানায় ওঠতে দেওয়া উচিত নয় ।
- যদি বাড়ির কাছে ছোটরা বা কোনো পশুপাখি মলত্যাগ করে , তখনি সেটা পরিস্কার করা উচিত । ছোটদের ধীরে ধীরে পায়খানা ব্যবহার করা শেখানো উচিত ।
- চাদর আর কম্বল প্রায়ই রোদে দেওয়া উচিত । যদি বিছানায় ছারপোকা থাকে তবে একই দিনে ফুটন্ত গরম জলে খাট, চাদর আর কম্বল কেচে ফেলা উচিত ।
- উকুন থাকলে সাথে সাথে চিকিত্সা করানো উচিত ।
- মাটিতে থুতু ফেলা উচিত নয় কারণ থুতু থেকে রোগ ছড়াতে পারে । কাশবার বা হাঁচবার সময় মুখটা নিজের হাত বা রুমাল দিয়ে ঢেকে নেওয়া উচিত ।
- মেঝে , দেওয়াল ও আসবাব পত্রের নিচটা ভালো করে পরিস্কার রাখা উচিত । যদি দেওয়ালে বা মেঝেতে কোনো গর্ত থাকে তাহলে যত তারাতারি সম্ভব বুজিয়ে ফেলা উচিত কারণ ঐ গর্তে নানারকম পোকা মাকড় লুকিয়ে থাকতে পারে ।
- পোকা মাকড় দূর করতে কাঁচা বাড়ি নিয়মিত কাদা দিয়ে নিকিয়ে নেওয়া উচিত ।
- পরিস্কার জল সরবরাহের ব্যবস্থা না থাকলে সব জলটাই খাবার আগে ফুটিয়ে নেওয়া সবথেকে ভালো । ফোটানো জল সবসময় পরিস্কার পাত্রে ঢাকা দিয়ে রাখা উচিত ।
- মাছি বা অন্য পোকামাকড় খাবারে বসতে বা ঘুরে বেড়াতে দেওয়া ঠিক নয় কারণ এইসব পোকামাকড় জীবানু নিয়ে আসে আর রোগ ছড়ায় । খাবার ঢেকে রেখে বা জালের আলমারিতে রেখে পোকামাকড় থেকে রক্ষা করা উচিত । খাবার খাওয়া হয়ে গেলে বাসন ধুতে না পারলে শুধু জল দিয়ে ধুয়ে রাখা উচিত তা না হলে টুকরো খাবারে মাছি আসে এবং জীবানু জন্মায়
- চেষ্টা করা উচিত আঢাকা খাবার কখনো না খাওয়া
- খাবার আগে সবসময় তরিতরকারি ও ফল ভলো করে ধুয়ে নেওয়া উচিত
- বাসি ও দুর্গন্ধযুক্ত খাবার না খাওয়া । টিন ফুলে গেলে বা কাটবার সময় তার থেকে পিচকারি দিয়ে কিছু বেরোলে সেই টিনের খাবার খাওয়া উচিত নয় ।
সংক্রামক বা ছোয়াচে আর অসংক্রামক বা ছোয়াচে রোগ নয়
সংক্রামক রোগ – যেটা একজন রুগীর থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে । জীবানু বা অন্য যে সমস্ত জীবন্ত প্রাণী শরীরের ক্ষতি করে সেগুলো থেকে সংক্রামক রোগ জন্মায় । এন্টিবায়োটিক বা যে সব ঔষধ জীবানুর সাথে যুদ্ধ করে তারা সংক্রামক রোগ সারাতে সাহায্য করে । এই সংক্রামক রোগগুলো যাতে ছড়িয়ে না পড়তে পারে বা এর থেকে অন্যদের রক্ষা করা, এই দুটো ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত ।
অসংক্রামক রোগ – যেটা একজন রুগীর থেকে আরেকজনের মধ্যে ছড়িয়ে পরে না । এই অসংক্রামক রোগের অনেক বিভিন্ন রকমের কারণ থাকে । কিন্তু যে সব রোগের বীজ , জীবানু বা অন্য জীবন্ত প্রাণী শরীরকে আক্রমন করে – সেগুলো কখনই এই সব রোগের কারণ হয় না । তাই এন্টিবায়োটিক বা যে সব ঔষধ জীবানুর সাথে লড়াই করে তারা অসংক্রামক রোগ সারাতে কোনো সাহায্যই করতে পারে না ।
অসংক্রামক রোগের উদাহরণ
শরীরের কোনো অংশ ক্ষয়ে গেলে বা কোথাও গোলমাল হলে যে সব সমস্যা হয় | বাইরের জিনিস শরীরের ক্ষতি করলে বা শরীরকে কষ্ট দিলে যে সব সমস্যা হয় | শরীরে যা যা দরকার তার মধ্যে কোনো কিছুর অভাবে যে সব সমস্যা হয় |
বাত , হার্টের রোগ ,মৃগী ,সন্ন্যাস রোগ ,মাইগ্রেন ,ছানি ,ক্যান্সার | এলার্জি ,হাঁপানি ,বিষক্রিয়া ,সাপের কামড় ,ধুমপান থেকে কাশি ,আলসার | অপুষ্টি ,পেলাগ্রা ,রক্তহীনতা ,গলগন্ড ,লিভারের সিরোসিস |
যে সব সমস্যা নিয়ে মানুষ জন্মায় | যে সব সমস্যা মনে জন্মায় |
গন্নাকাটা ,টেরা চোখ ,অন্যান্য খুঁত ,কয়েক রকম মৃগী , অপরিণত শরীর ,জন্মের দাগ | স্নায়বিক উদ্বেগ , ভয় |
সংক্রামক রোগের উদাহরণ
যে সব প্রাণী রোগ ঘটায় | রোগের নাম | রোগটা কি করে ছড়ায় বা শরীরে ঢোকে |
জীবানু | যক্ষা | বাতাস দিয়ে (কাশি) |
ধনুস্টঙ্কার | নোংরা ক্ষত | |
কিছু পাতলা পায়খানার রোগ | নোংরা হাত , জল , মাছি | |
নিউমোনিয়া (কয়েক রকমের) | বাতাস দিয়ে (কাশি) | |
গনোরিয়া আর সিফিলিস | যৌন সংস্পর্শে | |
যে সব প্রাণী রোগ ঘটায় | রোগের নাম | রোগটা কি করে ছড়ায় বা শরীরে ঢোকে |
কানে ব্যথা | সর্দির সঙ্গে | |
ক্ষতে সংক্রামন | নোংরা জিনিসের সংস্পর্শে | |
পুঁজ সমেত যা | সরাসরি সংস্পর্শে (ছোয়ায়) | |
ভাইরাস (ব্যাকটিরিয়ার থেকে ছোট জীবানু) | সর্দি ,ফ্লু , হাম , মামপস ,জলবসন্ত ,বাচ্চাদের পক্ষাঘাত , ভাইরাসঘটিত ,পাতলা পায়খানা | যার রোগ হয়েছে তার কাছ থেকে বাতাসের মধ্যে দিয়ে কাশি, মাছি ইত্যাদি দিয়ে |
জলাতঙ্ক (রেবিস) | জানোয়ারের কামড় | |
আঁচিল | ছোঁয়ায় | |
ছত্রাক | দাদ | ছোঁওয়া বা জামা কাপড় থেকে |
হাজা | ছোঁওয়া বা জামা কাপড় থেকে | |
ভেতরের পরজীবী (যে সব ক্ষতিকর প্রাণী মানুষের শরীরের মধ্যে বাস করে) | নাড়িভুঁড়ির মধ্যে: কৃমি ,এমিবা (আমাশয়) | মল থেকে , মুখ দিয়ে , পরিচ্ছন্নতার অভাবে |
রক্তে: ম্যালিরিয়া , গোদ | মশার কামড় | |
বাইরের পরজীবী (যে সব ক্ষতিকর প্রাণী শরীরের উপর থেকে) | উকুন, এঁটুলি , ছারপোকা , স্কেবিস | যাদের এই সব রোগ হয়েছে তাদের বা তাদের জামাকাপড়ের সংস্পর্শে |
টিকা বা VACCIN

ভবিষ্যতে অনেক বিপদজনক রোগের থেকে বাঁচতে হলে জন্মের পর থেকেই টিকা নেওয়া শুরু করা উচিত । সুস্থ অবস্থায় টিকা নিলে অনেক অসুস্থ অবস্থার থেকে বাঁচা যায় । শিশুদের জন্য সবথেকে জরুরী টিকাগুলি হলো: –
১. বি সি জি (যক্ষার জন্য): জন্মের সময় বা পরে যে কোনো সময়ে এই টিকা দেওয়া যায় । বাড়ির কারো যক্ষা থাকলে তাড়াতাড়ি এই টিকা দেওয়া বিশেষ প্রয়োজন । টিকা থেকে ঘা হয় কিন্তু সেরে যায় ।
২. ডি পি টি (ডিপথিরিয়া, হুপিং কাশি আর ধনুষ্টঙ্কারের জন্য ) :পুরোপুরি ফল পেতে হলে তিনটে ইনজেকশনের দরকার এবং তিনটের সবকটাই ৩ থেকে ৯ মাস বয়সের মধ্যে দেওয়া উচিত । দুটো ইনজেকশনের মধ্যে অন্তত এক থেকে দুই মাসের তফাৎ থাকা উচিত
৩. পোলিও (শিশুদের পক্ষাঘাতের জন্য ): অন্তত তিন মাত্রা পোলিওর টিকা দরকার । এটাও ৩ মাস থেকে ৯ মাস বয়সের মধ্যে এক মাসের তফাতে খাওয়ানো উচিত ।
(ডি পি টি আর পোলিও টিকার চতুর্থ বুস্টার মাত্রা ১৮ থেকে ২৪ মাস বয়সের মধ্যে দেওয়া যেতে পারে )
৪. ধনুষ্টঙ্কার : বড়দের আর ১২ বছরের বেশি বয়সের ছেলেমেয়েদের জন্য সবথেকে দরকারি এই টিকা । এক মাসের তফাতে দুটি ইনজেকশন দেওয়া হয় । দ্বিতীয় ইনজেকশনের ২ থেকে ৩ পরে তৃতীয় ইনজেকশনটি দেওয়া হয় । এতে দশ বছরের জন্য ধনুষ্টঙ্কার থেকে রক্ষা পাওয়া যায় । প্রতেকেরই ধনুষ্টঙ্কারের টিকা নেওয়া উচিত বিশেষ করে পোয়াতি মায়েদের যাতে শিশুরা জন্মের পরে ধনুষ্টঙ্কার থেকে রক্ষা পায় ।
৫. টি অ বি (টাইফয়েড): এটা প্রতি ৬ মাসে একবার দেওয়া হয় । গরমের মাসে এই টিকা দেওয়া বেশি ভালো ।
৬. মেনিনজাইটিস:হাম , জার্মান হাম ও মাম্পসের জন্য এই টিকা । বড়রা ও ছোটরা উভয়কেই দেওয়া যেতে পারে ।
৭. কলেরার টিকা: প্রতি ৬ মাসে একবার দিতে হয় বিশেষ করে গরম কালে বা যদি এলাকায় কারো কলেরা হয়ে থাকে ।
থার্মোমিটার বা Thermometer

শরীরের তাপমাত্রা মাপার একমাত্র যন্ত্র এই থার্মোমিটার। প্রত্যেক বাড়িতে এই যন্ত্রটি থাকা খুবই প্রয়োজন।
কেমন করে দেখতে হয় :
আস্তে আস্তে থার্মোমিটারটা ঘোরাতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত রুপালি পারার দাগটা দেখতে পাওয়া যায় । রুপালি রেখাটা যেখানে শেষ হয়েছে সেটাই হলো তাপের মাত্রা । যতক্ষণ না পর্যন্ত তাপের মাত্রা ৩৬ ডিগ্রীর নীচেনা আসছে ততক্ষণ জোরে জোরে ঝাকাতে হবে ।
রোগীকে পরীক্ষা করার আগে থার্মোমিটারটা ভালো করে সাবান জলে বা স্পিরিট দিয়ে পরিস্কার করা প্রয়োজন । তারপর দু মিনিট জিভের নীচেরেখে মুখ বন্ধ করে বা যদি থার্মোমিটার কামড়ে ফেলার ভয় থাকে তাহলে বগলের নীচে বা ছোট শিশুদের বেলায় ভিজিয়ে বা তেল লাগিয়ে সাবধানে মলদ্বারে রাখতে হবে । এরপর থার্মোমিটার শরীর থেকে বের করে নিয়ে তাপমাত্রা দেখে নেওয়া । বগলের তাপ মুখের চেয়ে একটু কম আর মলদ্বারের তাপ মুখের চেয়ে একটু বেশি দেখাবে । তাপমাত্রা দেখা হয়ে গেলে আবার থার্মোমিটারটা ভালো করে পরিস্কার করে রাখতে হবে ।
জ্বর বা Fever
জ্বর হলো কোনো অসুস্থার কারণে শরীরের সাময়িক তাপমাত্রা বৃদ্ধি । জ্বর সামান্য কদিনেই চলে যায় । জ্বর কমানোর ঔষধ সবসময়েই বাজারে পাওয়া যায় । জ্বর শরীরের সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে ।
যখন শরীরের মাথার একটা অংশের যার নাম হাইপোথালামাস(hypothalamus) বা যাকে শরীরের তাপস্থাপক বা thermostate বলা হয় সে যখন শরীরের চিহ্নিত স্বাভাবিক তাপমাত্রাকে উপরদিকে বদল করে তখন শরীরের তাপমাত্রার বৃদ্ধি ঘটে, শরীরে শীত শীত করে , তখন কাঁপুনি দিয়ে শরীর গরম রাখার চেষ্ঠা করে , এই অবস্থাকে আমরা জ্বর বলি । শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা সারা দিনে পরিবর্তন হয়. সকালে কম থাকে, দুপুরে এবং সন্ধ্যায় বেশি থাকে । বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী ৯৮.৬ F বা ৩৭ C হলো শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ।
কারনসমূহ :
- রোগজীবাণুর দ্বারা
- জীবানুর সংক্রমন
- অতিরিক্ত গরম লাগার ফলে
- চরম রোদে পোড়া
- বাতের জন্য
- টিউমারের জন্য
- কিছু অ্যানটিবায়টিক বা antibiotics খাবার জন্য
- কিছু টিকা নেওয়ার ফলে
জীবানুর সংক্রমণের হাত থেকে প্রতিকারের উপায়
- সর্বপ্রথম ভালো করে হাতের সামনে দিক ও পিছনে দিক ধোয়ার অভ্যাস করা । বিশেষ করে খাওয়ার আগে , টয়লেট করার পর , ভিড়ের থেকে আসার পর , কোনো অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শে আসার পর , গৃহপালিত জন্তুকে আদর করার পর , গণপরিবহনে যাতায়াতের পর
- · চেষ্টা করা নাকে, মুখে,চোখে হাত দেওয়ার আগে হাত ভালো করে ধুয়ে নেওয়া কারণ শরীরে জীবানু প্রবেশ করার প্রধান রাস্তা এগুলো
সর্দি, কাশি, হাঁচি দেওয়ার আগে মুখ ঢেকে নেওয়া । পারতপক্ষে লোকজনের থেকে অন্যদিকে ঘুরে যাওয়া
- অন্যের কোনো জিনিস ব্যবহার করার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া
- প্রচুর পানীয় গ্রহণ করা
- পরিপূর্ণ বিশ্রাম নেওয়া
- হালকা জামা কাপড় পরা এবং ঠান্ডা আবহাওয়াতে থাকা ।
এছাড়া বেশ কিছু শক্ত রোগ আছে যেগুলোতে জ্বর একটা বড় লক্ষণ । যেমন:
ম্যালেরিয়া : শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া আর শীত শীত করার সাথে হঠাৎ শুরু হয় জ্বর , থাকে কয়েক ঘন্টা । তাপমাত্রা কমার সাথে সাথে শুরু হয় ঘাম । সাধারনত প্রতেক দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে এর আক্রমন হয় । জ্বরের ফাঁকে রোগীকে মোটামুটি সুস্থ মনে হয় । প্রতেকবার তাপমাত্রা বাড়ার পর রোগী এক , দুই বা তিন দিন ভালো বোধ করতে পারে ।
টাইফয়েড : সর্দির মত শুরু হয় । প্রতিদিন একটু করে তাপমাত্র বাড়ে । নাড়ির গতি তুলনায় ধীর থাকে । কখনো কখনো পাতলা পায়খানা আর শরীরে জলের অভাব হয় । কাঁপুনি আর প্রলাপ হয় । রোগী খুবই অসুস্থ হয়ে পড়ে
হেপাটাইটিস : রোগীর খিদে চলে যায় । খেতে বা ধুমপান করতে চায় না । বমি বমি ভাব হয় । চোখ আর চামড়া হলদে , পেচ্ছাব গারো হলুদ বা খয়েরি আর পায়খানা সাদাটে রঙের হয়ে যায় । কখনো কখনো লিভার বড় হয়ে যায় আর যন্ত্রণা দেয় । জ্বর কম থাকে । রোগী খুব দুর্বল হয়ে পড়ে ।
নিউমোনিয়া : দ্রুত ওপর ওপর শ্বাস পড়ে । তাপমাত্রা তাড়াতাড়ি ওঠে । কাশির সাথে সবুজ , হলদে বা রক্ত মেশা কফ ওঠে । বুকে ব্যথা থাকতে পারে । রোগী খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে ।
বাতের জ্বর : ছোট ছেলেমেয়েদের আর কিশোর কিশোরীদের মধ্যে বেশি দেখা যায় । গাঁটে গাঁটে ব্যথা । বেশি জ্বর হয় । প্রায়ই গলায় ব্যথা হয়ে শুরু হয় । বুকে ব্যথার সাথে শ্বাসকষ্ট থাকতে পারে । রোগীর অনিচ্ছা সত্ত্বেও হাতপায়ের নড়াচড়া হতে পারে ।
যক্ষা : ক্লান্তি , ওজন কমে যাওয়া আর কাশির সাথে ধীরে ধীরে শুরু হয় । বিকেলের দিকে জ্বর হয় । সকালে তাপমাত্রা নেমে যায় । রাত্রে ঘাম হতে পারে । মাসের পর মাস এইরকম চলতে পারে ।
সূতিকার জ্বর: প্রসবের এক বা কয়েকদিন পরে শুরু হয়। অল্প জ্বর দিয়ে আরম্ভ হয় । পরে সাধারনত সেটা বাড়ে । যোনিদ্বার দিয়ে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব হয় । যোনিতে ব্যথা , কখনো কখনো রক্তপাতও হয় ।
এগুলো ছাড়া আরো অনেক রোগ আছে যেগুলোতে একই ধরনের লক্ষণ আর জ্বর হতে পারে . যখনই দরকার ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া ভালো ।
সর্দি কাশি ও ফ্লু বা Cough & Cold and Flu
সর্দি কাশি ও ফ্লু সাধারনত জীবাণুর সংক্রমণের জন্য হয় । ১০ থেকে ১২ ঘন্টা বাদে এর উপসর্গ দেখা দেয় যেমন নাক দিয়ে জল পরা , গলা খচখচ করা , কফ হওয়া , হাঁচি এবং অনেক সময় হালকা জ্বর । ফ্লু হলে একটু বেশি যেমন জ্বর ৩৯ ডিগ্রী C বা ১০২.২ ডিগ্রী F, শুকনো কফ , মাথা ব্যথা , শরীর ব্যথা , অবসন্ন লাগা , নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া , বমি ও পেটখারাপ ।
ভালো থাকতে হলে:
- কানে ব্যথা অনেকসময় সর্দি কাশির লক্ষণ হয় । সুতরাং কানে ব্যথার প্রতিকার করলে সর্দি কাশি না হওয়ার সম্ভবনা থাকে । কিছু রসুনের কোয়া পিষে বা থেতলে নিয়ে একটা পরিস্কার কাপড়ে মুড়ে কানে রাখতে হবে । কানের একদম ভিতরে দেওয়ার দরকার নেই
- চার পাঁচ টুকরো রসুনের কোয়া ভালো করে থেতলে নিয়ে দুটো টমাটো ও একটা লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে খেলে উপকার হয়
- এক চা চামচ হলুদ গুড়ো এক গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে খেলে উপকার হয় ।এর সাথে একটু মধু যোগ করলে স্বাদ ভালো হয়
- চার পাঁচ কাপ জলে এক চা চামচ হলুদ গুড়ো মিশিয়ে ফুটন্ত অবস্থায় ১০ মিনিট রাখতে হবে । তারপর একটু মধু ও লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে চা এর মতো পান করা । এর সাথে কয়েকটা তুলসী পাতা দিলে আরও ভালো
- চার টুকরো এলাচ, চারটা গোলমরিচের দানা , চারটা লবঙ্গ , কিছু আদার টুকরো আর একটু দারুচিনি জলের মধ্যে মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিতে হবে । তারপর বাসনটা ঢেকে হালকা আঁচে ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখতে হবে । একটু দুধ বা মধুও মেশানো যেতে পারে । তারপর গরম গরম পান করা
- ১৫টি পরিস্কার তুলসী পাতা ১.৫ কাপ জলে দিয়ে ভালো করে ফুটন্ত অবস্থায় ১০ মিনিট রেখে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান কলে উপকার হয়
- তিনটা পরিস্কার নিম পাতা এক গ্লাস জলে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে ঠান্ডা করতে হবে তারপর এক চা চামচ মধু ও রসুনের টুকরো মিশিয়ে খেলে গলা ব্যথার উপকার হয়
- কিছু গোলমরিচের দানা, একটু জিরার গুড়ো ও গুড় জলের মধ্যে মিশিয়ে ফোটাতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত ওটা ঘন হয় তারপর ঠান্ডা কোরে খেলে উপকার হয় ।
নাড়ির স্পন্দন / Pulse rate / হৃদস্পন্দন ( Heart beat )
বিশ্রাম অবস্থায় থাকাকালীন হৃদস্পন্দনের হার:
বয়স | প্রতি মিনিটে |
১ বৎসর অবধি | ১00 থেকে ১৬0 |
১ থেকে ১0 বৎসর | ৬0 থেকে ১৪0 |
১0 বৎসরের উপর | ৬0 থেকে ১00 |
একজন প্রাপ্ত বয়সের ছেলের বা মেয়ের হৃদস্পন্দন (heart beat ) সাধারনতঃ বিশ্রাম অবস্থায় প্রতি মিনিটে ৬0 থেকে ১00 র মধ্যে থাকা উচিত।
সাধারনতঃ হৃদস্পন্দন কমের দিকে থাকলে হৃদয়ের অবস্থা বেশ ভাল বলা হয় । একজন শিক্ষাপ্রাপ্ত ক্রিড়াবিদের বা স্পোর্টসম্যনের হৃদস্পন্দন প্রতি মিনিটে বিশ্রাম অবস্থায় ৪0 এর কাছাকাছি থাকতে পারে , সেটা খারাপ লক্ষণ নয়। কিন্তু যদি ক্রিড়াবিদ ছাড়া অন্য কারও ৪0এর কাছাকাছি থাকে এবং অন্য কোন লক্ষন থাকে যেমন অজ্ঞান হওয়া, সবসময় ক্লান্ত ভাব, বা ঘন ঘন নিঃশ্বাস – প্রঃশ্বাস তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের উপদেশ নেওয়া উচিত । অনেক সময় ধরে যদি কারও হৃদস্পন্দন বিশ্রাম অবস্থায় ১00 র উপরে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
নাড়ি পরীক্ষা করলেই বোঝা যায় হৃদস্পন্দন । নাড়ি পরীক্ষার জন্য তর্জনী বা দ্বিতীয় এবং তৃতীয় আঙ্গুলের ব্যবহার করা হয়। বুড়ো আঙ্গুলের নীচেকব্জির কাছে হাঁড়ের সামান্য উপরে শিরার উপর দুটি আঙ্গুল রাখলেই বোঝা যায় নাড়ির স্পন্দন। যদি কব্জিতে নাড়ি না পাওয়া যায় তাহলে গলার শব্দযন্ত্রের পাশে আঙ্গুল দিয়ে পরীক্ষা করা যেতে পারে কিংবা বুকের উপর কান রেখে । ১৫ সেকেন্ডে যতবার নাড়ির স্পন্দন হচ্ছে তাকে ৪ দিয়ে গুন করলেই এক মিনিটে নাড়ির গতি বা হৃদস্পন্দনের হার বোঝা যাবে।
যে কোন কাজের পর ১0 মিনিট বা তার থেকেও বেশি অপেক্ষা করে নাড়ি পরীক্ষা করলে তাকে বলা হয় বিশ্রাম অবস্থায় নাড়ি পরীক্ষা যেটা করা উচিত । সকালে ঘুম থেকে উঠার পর সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়। সারাদিন বিভিন্ন কাজকর্মের জন্য হৃদস্পন্দন এক এক রকম হবে। কাজের গতি বাড়লে হৃদস্পন্দনের গতিও বাড়বে।বিশ্রাম নিলেও হৃদস্পন্দনের গতি সাধারন অবস্থায় আসতে কিছুটা সময় নেবে।চা,কফি বা কোলা খাওয়ার পরও দেখা যায় হৃদস্পন্দন সাময়িক ভাবে বেড়ে গেছে ।
নাড়ির গতি তাড়াতাড়ি চলে:
- বেশি পরিশ্রম করলে
- খুব ঘাবড়ে গেলে
- খুব ভয় পেলে
- জ্বর হলে (প্রতি ডিগ্রী জ্বরের জন্য ২০ বার করে নাড়ির গতি বাড়ে বলে ধরে নেওয়া হয়)
- খুব যন্ত্রণা হলে
নাড়ির স্পন্দন পাল্টাচ্ছে কিনা তা দেখা জরুরী. যেমন:
- শকের অবস্থায় নাড়ি ক্ষীনভাবে কিন্তু তাড়াতাড়ি চলে
- নাড়ি খুব তাড়াতাড়ি, খুব ধীরে বা অনিয়মিত চলা হার্টের অসুখের লক্ষণ হতে পারে
- জ্বর বেশি অথচ নাড়ি তেমন তাড়াতাড়ি চলছে না, এটা টাইফয়েডের লক্ষণ হতে পারে
সুতরাং নাড়ির মাধ্যমে হৃদয় বা হার্ট এর অবস্থার নজর রাখুন।
উচ্চ রক্তচাপ বা High blood pressure
রক্তচাপ আমাদের শরীরের জীবনী শক্তি । আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গ এবং টিসু খাবার পায় এই রক্তচাপের ফলে । স্বাভাবিক অব্যস্থায় হৃদপিন্ড, রক্ত সঞ্চালন করার সময় , শিরা ও ধমনীর উপর যে চাপ দেয় তার থেকে বেশি থাকলে তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে । হৃদপিন্ড সংকোচনের সময় যে চাপে অক্সিজেনযুক্ত রক্ত সারা শরীরে পাঠায় তাকে সিস্টোলিক বা systolic রক্তচাপ বা উপরের সংখ্যা বলে এবং হৃদপিন্ডের প্রসারনশীল বা শিথিল অবস্থাকে ( দুই স্পন্দনের মাঝের অবস্থা ) ডায়াস্টলিক বা diastolic রক্তচাপ বা নীচের সংখ্যা বলে । এই অবস্থায় কার্বন ডাই অক্সাইড যুক্ত রক্ত শরীর থেকে হৃদপিন্ডে প্রবেশ করে । এই দুই সংখ্যার দ্বারা রক্তচাপ নির্ধারণ করা হয় । বিভিন্ন সময়ের রক্তচাপ পরিমাপ করে তার গড় করলে প্রকৃত রক্তচাপ পাওয়া যায় ।
প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের রক্তচাপ
অবস্থা | সিস্টোলিক রক্তচাপ | ডায়াস্টলিক রক্তচাপ |
সাধারনত | ১২০ থেকে ১৩৯ | এবং ৮০ থেকে ৮৯ |
উচ্চ রক্তচাপ প্রাথমিক অবস্থা | ১৪০ থেকে ১৫৯ | অথবা ৯০ থেকে ৯৯ |
উচ্চ রক্তচাপ দ্বিতীয় অবস্থা | ১৬০ বা তার বেশি | অথবা ১০০ বা তার বেশি |
- যদি সিস্টোলিক রক্তচাপ ১৪০ বা তার থেকে বেশি হয় , ডায়াস্টলিক রক্তচাপ যাইহোক না কেন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হবে ।
- যদি ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ৯০ বা তার থেকে বেশি হয় , সিস্টোলিক রক্তচাপ যাইহোক না কেন তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হবে ।
- যদি সিস্টোলিক রক্তচাপ ৯০ বা তার থেকে কম হয় , ডায়াস্টলিক রক্তচাপ যাইহোক না কেন তাকে কম রক্তচাপ বলা হবে ।
- যদি ডায়াস্টলিক রক্তচাপ ৬০ বা তার থেকে কম হয় , সিস্টোলিক রক্তচাপ যাইহোক না কেন তাকে কম রক্তচাপ বলা হবে ।
সিস্টোলিক এবং ডায়াস্টলিক দুই রক্তচাপই নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত তবুও সিস্টোলিক রক্তচাপের দিকে বেশি নজর দেওয়া ভালো কারণ হার্টের রোগের ঝুকি থাকে সিস্টোলিক রক্তচাপ বেশি থাকলে ।
মানুষের বিভিন্ন অবস্থায় রক্তচাপের পার্থক্য হয় । ঘুমানোর সময় একরকম , ঘুম থেকে উঠার পর আরেকরকম , পরিশ্রম করার সময় একরকম আবার শান্তভাবে বসে থাকলে আরেকরকম। মানুষের ক্রিয়াকলাপ বন্ধ হলে আস্তে আস্তে রক্তচাপ সাধারণ অবস্থায় চলে আসে । উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা খুব জরুরী নাহলে কোন খবর না দিয়েই শরীরের প্রচুর ক্ষতি হয়ে যেতে পারে ।
উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের জীবন যাত্রার উপর অনেকটাই নির্ভর করে । ঔষধ না খাওয়া বা ঔষধের মাত্রা কমিয়ে আনা নির্ভর করে সাস্থ্যকর জীবনযাত্রার উপর ।
ভাল থাকতে হলে :-
- ওজন ও কোমরের পরিধি কমানোর চেষ্টা করা :- রক্তচাপ প্রায়ই বাড়তে দেখা যায় ওজন বাড়ার সাথে সাথে । কোমরের চারপাশের ওজন বৃদ্ধিও রক্তচাপ বাড়ায় । ছেলেদের কোমর ৪০ ইঞ্চি বা ১০২ সেন্টিমিটার এবং মেয়েদের কোমর ৩৫ ইঞ্চি বা ৮৯ সেন্টিমিটার বেশি হলে রক্তচাপ বাড়ার ঝুকি বেশি থাকে
- প্রতিদিন নিয়মিত শরীর চর্চ্চা:- প্রতিদিন নিয়মিত ৩০ মিনিট শরীর চর্চ্চা করলে রক্তচাপ ৪ থেকে ৯ mmHg পর্যন্ত কমানো যেতে পারে । শরীর চর্চ্চা মানে হাঁটা , জগিং , সাইকেল চালানো , সাঁতার কাটা, নাচ করা ইত্যাদি । শরীর চর্চ্চা বন্ধ করলে আবার রক্তচাপ বাড়ার সম্বভানা থাকে
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া : – শস্যদানাযুক্ত খাবার ,ফল , শাকসব্জি ,কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধাজাতীয় খাবার ,সম্পৃক্ত চর্বি জাতীয় খাবার কম খেলে রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় । স্বাস্থ্যকর খাবারের মাধ্যমে প্রায় ১৪ mmHg অবধি রক্তচাপ কমানো যায় । পটাসিয়াম যুক্ত খাবার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে কারণ অতিরিক্ত সোডিয়ামের ক্ষতিকে আটকায়। ফল ও শাকসবজিতে প্রচুর পটাসিয়াম পাওয়া যায় ।
- লবনের পরিমান কম: এক চা চামচ লবনে ২৩০০ মিলি গ্রাম সোডিয়াম থাকে। সারাদিনে আমাদের রক্তচাপ কমানোর জন্য লবন ১৫০০ মিলি গ্রামের বেশি খাওয়া উচিত নয় । সোডিয়ামের পরিমান একটু কম করলে রক্তচাপ ২ থেকে ৮ mmHg কমতে পারে । খাবারের স্বাদের জন্য ভেষজ বা মশলা ব্যবহার করা যেতে পারে
- আলকোহলের মাত্রা ঠিক করা: আলকোহল শরীরের জন্য ভাল ও খারাপ দুটোই হতে পারে । কম মাত্রায় আলকোহল রক্তচাপ ২ থেকে ৪ mmHg অবধি কমাতে সাহায্য করে । দিনে একটা ড্রিংক মেয়েদের জন্য এবং ৬৫ এর উপর যে লোকেদের বয়স তাদের জন্য আর যেসব ছেলেদের বা লোকেদের বয়স ৬৫ য়ের কম তাদের জন্য দুটো ড্রিংক বা দুটো পেগ । একটা ড্রিংক ১২ আউন্স বিয়ারের ,৫ আউন্স ওয়াইনের সমান
- ধুমপান থেকে বিরত থাকা: প্রতেক সিগারেট অনেক সময়ের জন্য রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয় । ধুমপান থেকে বিরত থাকলে শরীরের অহেতুক ক্ষতি হয় না
- মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা: মানসিক চাপ রক্তচাপকে বাড়িয়ে তোলে । মানসিক চাপের কারনটা খুঁজে সরিয়ে দিতে পারলে ভাল নাহলে ১৫ থেকে ২০ মিনিট চুপচাপ বসে গভীরভাবে দীর্ঘশ্বাস নিলে মানসিক চাপকে কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় । গান শুনে, সিনেমা দেখে, বই পরে যেমনিভাবেই হোক মানসিকচাপকে সরিয়ে রাখতে পারলে শরীরের পক্ষে ভাল ।
- বেশি করে খাওয়া যে সব খাবারে বাজে কোলেস্টেরল নেই বলা যায়, সেই সব খাবার খাওয়া যেমন : ক্রিমযুক্ত দুধ ছাড়া চা বা কফি, সফট ড্রিংক,
- বিয়ার/জিন/রাম/হুয়েস্কি/ভদকা/ওয়াইন/ব্র্যান্ডি/স্যাম্পেন , স্কোয়াস, টমেটো, কমলা লেবু, লেবু, আপেল, নারিকেলের জল,কলা, আম, আঙ্গুর, নাশপাতি, খেঁজুর, পেপে, আনারস, লিচু, স্ট্রবেরি,চেরী, নারকেল, কচুরি, নিরামিষ পেটিস , আলুর বড়া, সিঙারা, ভেলপুরি, চাট , পপকর্ন, ঢোকলা, ক্রিম ক্র্যাকারস বিস্কুট , মেরি বিস্কুট, পাস্তুরিত দুধ, পাস্তুরিত বাটার দুধ, সয়াবিনের দুধ, রুটি, পরোটা, পুরি, ভাত, ইডলি, দোসা, উপমা, মিসি রুটি, নুডলস, মাক্রনি,পাওরুটি, কর্ন ফ্লেক্স , ওটস , বার্লি, ডাল , সাম্বার , আলু, টমেটো, পেঁয়াজ, মটর শুঁটি, গাজর,বাঁধাকপি, ফুলকপি, কর্ন, শসা, কুমড়ো, বিন, বেগুন, ব্রকলি, লেটুস পাতা, বিট, মাসরুম, মুলো , শাক, ডিমের সাদা অংশ , আলমন্ড, কাজু, বাদাম, শস্যের তেল , বাদাম তেল, বীজ তেল , চিনি, মধু, জ্যাম/জেলি , জিলাবি ইত্যাদি ।
- কম করে খাওয়া যে সব খাবারে বাজে কোলেস্টেরল আছে : পিজা , হ্যামবার্গার, চিকেন নাগেটস, ক্রিমযুক্ত দুধ , ভ্যানিলা/চকলেট শেক , পনির (ক্রিমযুক্ত দুধের) , চিস , আইসক্রিম, কুলফি, কনডেন্স মিল্ক , স্পাগেটি বা মাংসের বল, কুসুম সহ ডিম বা ওমলেট , মাংস , মেটে, মাখন, ঘি , মেয়নিস , গুলাব জামুন , রসগোল্লা ইত্যাদি ।
কোলেস্টেরল বা CHOLESTEROL
কোলেস্টেরল শরীরের প্রতেক কোষেই পাওয়া যায় । এর একটা গুরত্বপূর্ণ প্রাকিতিক কাজ আছে । শরীর কোলেস্টেরল তৈরী করে আবার খাবার থেকেও সংগ্রহ করে । এটা দেখতে মোম বা চর্বির মতন । কোলেস্টেরল তৈলাক্ত তাই রক্তের সাথে মেশে না । সারা শরীরে রক্তের মাধ্যমে লিপোপ্রোটিন দ্বারা ছড়িয়ে পরে । লিপোপ্রোটিন দুই ধরণের হয় । (১) কম ঘনত্ব লিপোপ্রোটিন বা Low density lipoprotein (LDL) যাকে বাজে কোলেস্টেরল বলা হয় (২) বেশি ঘনত্ব লিপোপ্রোটিন বা High density lipoprotein (HDL) যাকে ভাল কোলেস্টেরল বলা হয়। বেশি কোলেস্টেরল মানে হার্টের রোগের ঝুকি বেশি , হার্ট এটাকের সম্ভবনা বেশি । LDL এর মাত্রা বেশি হলে কোলেস্টেরল ধমনীতে জমা হয় কিন্তু HDL কোলেস্টেরলকে লিভারে নিয়ে যায় শরীর থেকে বের করার জন্য। কোলেস্টেরল ধমনীতে বেশি জমা হলে ধমনী সরু হয় এবং রক্তের প্রবাহটাকে বাঁধা দেয় । সীমিত ফ্যাট যুক্ত খাবার কোলেস্টেরলকে বাড়তে দেয় না ।
কোলেস্টেরলের প্রধান চারটি কাজ যাদের ছাড়া আমরা বাঁচতে পারতাম না ।
- কোষ প্রাচীর গঠনে অংশ গ্রহণ করে
- অন্ত্রের মধ্যে পরিপাক বাইল অ্যাসিডকে সাজায়
- ভিটামিন ডি তৈরী করতে শরীরকে সাহায্য করে
- কিছু হরমোন তৈরী করতে শরীরকে সক্ষম করে
কয়টি দারুন খাবার যারা কোলেস্টেরলকে কম করতে সাহায্য করে ।
- প্রতিদিনে কমপক্ষে ১৫ গ্রাম সয়াবিনের তৈরী খাদ্য
- এক মুঠো বাদাম
- ফল ও শাকসব্জি
- ওটস ও বার্লি, আশ যুক্ত খাদ্য
- অসংপৃক্ত চর্বি যেমন সবজির তেল, অলিভের বা জলপাইয়ের তেল
- স্টেরল বা স্টেনল মেশানো খাদ্য
- ঘোল
এছাড়া ধুমপান থেকে বিরত থাকা এবং প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করা ।
কোলেস্টেরলের জন্য যে খাবারগুলো খারাপ
- মাখন
- ঘি
- মেয়নিস
- সংপৃক্ত চর্বি
- দুগ্ধজাত চর্বি
- প্রক্রিয়াজাত খাদ্য
- চর্বিযুক্ত মাংস
- ডিমের কুসুম
হৃদপিন্ডের ঝুকি অনুযায়ী কোলেস্টেরলের মাত্রার নির্দেশিকা নীচেদেওয়া হলো
LDL কোলেস্টেরল
সন্তোষজনক বা optimal: ১০০ mg/dl থেকে কম
সন্তোষজনকের কাছাকাছি বা near optimal: ১০০ থেকে ১২৯ mg/dl
উচ্চ সীমান্তরেখা বা borderline high: ১৩০ থেকে ১৫৯ mg/dl
উচ্চ বা high: ১৬০ থেকে ১৮৯ mg/dl
খুব উচ্চ বা Very high: ১৯০ mg/dl ও তার বেশি
HDL কোলেস্টেরল
কম বা low: ৪০ mg/dl থেকে কম
উচ্চ বা high: ৬০ mg/dl ও তার বেশি
পুরো বা total কোলেস্টেরল
কাম্য বা desirable: 200 mg/dl থেকে কম
উচ্চ সীমান্তরেখা বা borderline high: ২০০ থেকে ২৩৯ mg/dl
উচ্চ বা high: ২৪০ mg/dl ও তার বেশি
কোলেস্টেরলের পরিমান জানতে হলে একমাত্র রক্ত পরীক্ষা করতে হবে। ৯ থেকে ১২ ঘন্টা কোনো খাবার, কোনো পানীয় বা কোনো ঔষধ না খেয়ে পরীক্ষা করলে ঠিক ফল পাওয়া যায় ।
যে সব খাবারে কোলেস্টেরল বা খারাপ কোলেস্টেরল নেই বলা যায় : ক্রিমযুক্ত দুধ ছাড়া চা বা কফি, সফট ড্রিংক, বিয়ার/জিন/রাম/হুয়েস্কি/ভদকা/ওয়াইন/ব্র্যান্ডি/স্যাম্পেন , স্কোয়াস, টমেটো, কমলা লেবু, লেবু, আপেল, নারিকেলের জল,কলা, আম, আঙ্গুর, নাশপাতি, খেঁজুর, পেপে, আনারস, লিচু, স্ট্রবেরি,চেরী, নারকেল, কচুরি, নিরামিষ পেটিস , আলুর বড়া, সিঙারা, ভেলপুরি, চাট , পপকর্ন, ঢোকলা, ক্রিম ক্র্যাকারস বিস্কুট , মেরি বিস্কুট, পাস্তুরিত দুধ, পাস্তুরিত বাটার দুধ, সয়াবিনের দুধ, রুটি, পরোটা, পুরি, ভাত, ইডলি, দোসা, উপমা, মিসি রুটি, নুডলস, মাক্রনি,পাওরুটি, কর্ন ফ্লেক্স , ওটস , বার্লি, ডাল , সাম্বার , আলু, টমেটো, পেঁয়াজ, মটর শুঁটি, গাজর,বাঁধাকপি, ফুলকপি, কর্ন, শসা, কুমড়ো, বিন, বেগুন, ব্রকলি, লেটুস পাতা, বিট, মাসরুম, মুলো , শাক, ডিমের সাদা অংশ , আলমন্ড, কাজু, বাদাম, শস্যের তেল , বাদাম তেল, বীজ তেল , চিনি, মধু, জ্যাম/জেলি , জিলাবি ইত্যাদি ।
যে সব খাবার বেশি কোলেস্টেরল থাকে : পিজা , হ্যামবার্গার, চিকেন নাগেটস, ক্রিমযুক্ত দুধ , ভ্যানিলা/চকলেট শেক , পনির(ক্রিমযুক্ত দুধের) , চিস , আইসক্রিম, কুলফি, কনডেন্স মিল্ক , স্পাগেটি বা মাংসের বল, কুসুম সহ ডিম বা ওমলেট , মাংস , মেটে, মাখন, ঘি , মেয়নিস , গুলাব জামুন , রসগোল্লা ইত্যাদি ।
ট্রাইগ্লিসারাইড TRIGLYCERIDE
ট্রাইগ্লিসারাইড হলো এক ধরনের ফ্যাট বা লিপিড যেটা রক্তের মধ্যে প্রবাহিত হয় । আমরা যখন খাবার খাই তখন ঐ মুহুর্তে যে ক্যালোরির প্রয়োজন হয় না সেটা শরীর ট্রাইগ্লিসারাইডে রুপান্তরিত করে এবং ফ্যাট সেলে জমা রাখে । পরে হরমোন, দুটো খাবারের মাঝে ট্রাইগ্লিসারাইডকে ব্যবহার করে বা বলা যায় ফ্যাট সেল থেকে মুক্ত করে শরীরের এনার্জির জন্য । কিন্তু কোলেস্টেরল (আরেক ধরনের লিপিড) ব্যবহৃত হয় কোষ গঠনে এবং কিছু হরমোন তৈরী করতে । ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বেশি হওয়া মানে হার্টের রোগের সম্ভবনা ।
- বিপদসীমার নীচে: ১৫০ mg/DL বা ১.৭ mmol/L থেকে কম
- বিপদসীমা: ১৫০ থেকে ১৯৯ mg/DL বা ১.৮ থেকে ২.২ mmol/L
- বিপদসীমার উপরে: ২০০ থেকে ৪৯৯ mg/DL বা ২.৩ থেকে ৫.৬ mmol/L
- খুব বেশি: ৫০০ mg/DL বা ৫.৭ mmol/L বা এর থেকে বেশি
যেহেতু এই লিপিডতা রক্তে দ্রবীভূত হয় না এবং প্রোটিনের সাহায্যে সারা শরীরে যাতায়াত করে তাই একে লিপপ্রটিনিস বা Lipoprotenis বলে । এই ট্রাইগ্লিসারাইড ধমনীর দেওয়ালকে শক্ত বা পুরু করে তারফলে হার্টের রোগের সম্বভনাকে বাড়িয়ে তোলে । এই ট্রাইগ্লিসারাইড রক্তে বেশি থাকলে আরও অনেক রোগ হওয়ার সম্বভনা প্রবল ।
ভালো থাকতে হলে:
- শরীরের ওজন কমাতে হবে
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত ক্যালোরি না খাওয়া
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবার না খাওয়া
- স্বাস্থ্যকর ফ্যাট খাওয়া
- ধুমপান না করা
- প্রতিদিন নিয়মত শারীরিক পরিশ্রম করা
- মদ্যপান নিয়ন্ত্রিত করা
- তন্তুযুক্ত ফল ও শাক সবজি বেশি পরিমানে খাওয়া
- প্রচুর পানীয় গ্রহণ করা
রক্তের লিপিড প্রফাইল পরীক্ষা করলে রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড মাত্রা জানা যায় । ৯ থেকে ১২ ঘন্টা কোনো খাবার, কোনো পানীয় বা কোনো ঔষধ না খেয়ে পরীক্ষা করলে ঠিক ফল পাওয়া যায় ।
রক্তে শর্করা বা BLOOD SUGAR
পেটের (Stomach) কাছে অগ্ন্যাশয়(Pancreas)থেকে ইন্সুলিন নামক হরমোন বের হয় রক্তের মধ্যে, রক্তে শর্করার (Glucose) মাত্রা অনুযায়ী। খাবার পরিপাক হওয়ার পর যে শর্করা পাওয়া যায় সেটাকে কোষের মধ্যে পাঠাতে ইন্সুলিন সাহায্য করে ,কোষের এনার্জি বা শক্তি বৃদ্ধি করতে।
যখন শরীর ঠিকমতো ইন্সুলিন তৈরী করতে পারে না তখন সেটাকে টাইপ ওয়ান ডাইবেটিস বলে আবার যখন ইন্সুলিন তৈরী হয় কিন্তু ঠিকমতো কাজ করে না তাকে টাইপ টু ডাইবেটিস বলে।তার ফলে শর্করা বা Glucose রক্তেই থেকে যায় , কোষের মধ্যে যথেষ্ট পরিমানে যেতে পারে না তখন তাকে high blood sugar বা রক্তে উচ্চ শর্করা বলে।
যখন খাবার, শরীরচর্চা এবং ইন্সুলিনের ভারসাম্য ঘটে তখন শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রার বৃদ্ধি ঘটে। সুতরাং যাদের ডাইবেটিস আছে তাদের ঠিকমতো খাবার,শরীর চর্চা ও ঔষধের(যদি ডাক্তার দিয়ে থাকে) মাধ্যমে নিজেকে ঠিক রাখতে হবে।
যাদের ডাইবেটিস আছে তাদের সারাদিনে ও রাত্রে রক্তে শর্করার পরিমাপ ব্যাপকভাবে পরিবর্তন হয় । রক্তে শর্করার পরিমান ৯0 থেকে ১৩0 mg/dl খাওয়ার আগে এবং খাওয়ার ১ বা ২ ঘন্টার মধ্যে ১৮0 mg/dl অবধি ঔষধের খুব একটা দরকার হয় না।
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index বেশি থাকে, সেইসব কার্বোহাইড্রেট রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় । আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index কম বা মাঝারি থাকে তারা রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না । সুতরাং গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বেশি কার্বোহাইড্রেট আর গ্লায়সেমিক ইনডেক্স কম কার্বোহাইড্রেট একসাথে মিশিয়ে খেলে গ্লায়সেমিক লোড কম হয় ।
উপসর্গ বা Symptom:
- দেখে মনে হয় শুকনো মূখ
- মাঝে মাঝে জল তেষ্টা পাওয়া
- মাঝে মাঝেই পেচ্ছাবের বেগ হওয়া
- রাত্রে পেচ্ছাবের বেগ বেশি হওয়া
- চোখের দৃষ্টি ঝাপসা লাগা
- চামড়ায় মাঝে মাঝে চুলকানি আর অনেকদিন ধরে চামড়ার সংক্রমন যেমন ফোড়া
- অকারণে ক্লান্তি বোধ করা
- শরীরের ওজন কমে যাওয়া
- খাওয়ার ইচ্ছার বৃদ্ধি
- হাতে বা পায়ে অসাড় ভাব বা ব্যথা
- পায়ের পাতায় ঘা যা সারতেই চায় না
- জ্ঞান হারানো ভয় থাকে
অনেক সময় উপসর্গ বোঝা যায় না।
ভাল থাকতে হলে:
- প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম কমপক্ষে ৩0 থেকে ৪৫ মিনিট।
- যেসকল কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে শর্করার পরিমান বেশি থাকে সেগুলো কম খাওয়া । সারাদিনে ভাত ১00 থেকে ২00 গ্রাম শারীরিক পরিশ্রম করলে, নতুবা ৫0 গ্রাম।
- তন্তুযুক্ত ফল ও ঘন সবুজ শাক সবজী যতটা বেশি খাওয়া যায়।
- চিনি ও মিষ্টি যত কম খাওয়া যায় ।
- ডাল,দুধ,ডিম,ওটস্,বিন,বরবটি,ব্রোকলি,আপেল,লেবু,গাজর,রসুন,তরমুজ,বাদাম,পেঁয়াজ,টমাটো,তৈলাক্ত মাছ, চর্বি ছাড়া মাংস ডাইবেটিসের উত্তম খাদ্য ।
- ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার কারণ ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন তৈরী করতে সাহায্য করে. যেমন বাঁধাকপি , বাদাম , আলু ইত্যাদি
- গ্রীন টি খাওয়া ভাল
- এসিডিক খাবার যেমন লেবু খাওয়া
- প্রোটিন একটু বেশি খেতে হবে
- পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন ।
- বেশি রাত করে খাবার না খাওয়াই শ্রেয় ।
- প্রচুর পরিমানে পরিশ্রুত জল পান করতে হবে ।
- অনেকক্ষণ এক জায়গায় না বসে মাঝে মাঝে একটু চলাফেরা করা ।
যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য প্রধানত দুটো জিনিসের দিকে একটু বেশি নজর দিলে ঔষধ খাওয়ার সম্ভবনা কম থাকে ।
- শারীরিক পরিশ্রম
- সঠিক আহার
যাদের শুধু ডায়াবেটিস আছে, তাদের ওজনের সাথে ২৪ দিয়ে গুন করলে যে সংখ্যাটা আসে তত ক্যালোরি খাবার খাওয়া উচিত । ক্যালরির ৫০% আসবে কার্বোহাইড্রেট থেকে , ৩০% আসবে প্রোটিন থেকে এবং ২০% আসবে ফ্যাট থেকে ।
সব খাবারই খাওয়া যেতে পারে কিন্তু যে খাবার ডায়াবেটিস বাড়াতে সাহায্য করে, খুব ইচ্ছা করলে সেটা সামান্য পরিমানে । কোন খাবার ডায়াবেটিসের পক্ষ্যে ভালো আর কোনটা খারাপ সেটা জানা খুব প্রয়োজন । আমরা জানি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে কেবলমাত্র কার্বোহাইড্রেট যদিও কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরের জন্যে খুব প্রয়োজন । শ্বেতসার , শাক সবজি , ফল সব কিছুর মধ্যেই কার্বোহাইড্রেট আছে । সুতরাং আমাদের জানা দরকার কোন জাতীয় খাবারের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিসের পক্ষ্যে ভালো বা খারাপ ।
শ্বেতসারের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট :
ভালো বিকল্প best option): গোটা শস্য (whole grain) যেমন ব্রাউন রাইস , ওট মিল , বাজরা , ভুট্টা , গমের আটা , মোটকথা গোটা শস্য দিয়ে যা বানানো , সেঁকা মিষ্টি আলু ইত্যাদি
খারাপ বিকল্প (worst option): প্রক্রিয়াজাত শস্য (processed grains) যেমন সাদা চাল,ময়দা প্রভৃতি , সেরিয়ালস (cereals)যার মধ্যে মিষ্টি বেশি থাকে , সাদা রুটি বা পাওরুটি , ভাজা খাবার , কেক,সোডা,কুকিস,ক্যান্ডি, জুস(প্রক্রিয়াজাত)ইত্যাদি
শাক ও সবজির মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট :
প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে শাক ও সবজি থেকে আমরা প্রচুর পরিমানে ফাইবার বা তন্তু পাই যেটা শরীরের জন্য ভালো. কম পাই ফ্যাট ও লবন (যদি না বাইরে থেকে যোগ করা হয় )
ভালো বিকল্প best option): তাজা শাক সবজি কাঁচা , হালকা আঁচে সিদ্ধ , ঝলসানো বা গ্রিল করা খেলে ভালো । গাঢ় রঙের শাক সবজি আরো ভালো । কম সোডিয়াম বা সোডিয়াম ছাড়া ক্যানের মধ্যে রাখা শাক ও সবজি. বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী প্রতিদিন আড়াই কাপ করে শাক ও সবজি খাওয়া উচিত
খারাপ বিকল্প (worst option): সোডিয়াম যুক্ত ক্যানের মধ্যে রাখা শাক ও সবজি । বেশি লবন, মাখন,চিস ,বা সস দিয়ে রান্না করা শাক ও সবজি
ফলের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট :
মনে রাখতে হবে ফলের থেকে আমরা কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার, ভিটামিন , মিনারেল সব পাই. বেশি ভাগ ফলের মধ্যেই ফ্যাট ও লবন কম থাকে । কিছু ফলের মধ্যে শাক ও সবজির থেকেও বেশি কার্বোহাইড্রেট থাকে সেগুলো কম খাওয়া
ভালো বিকল্প best option): তাজা ফল বা সাধারণ হিমায়িত ফল, চিনি ছাড়া ক্যানের মধ্যে রাখা ফল , কম বা বিনা চিনি যুক্ত জ্যাম বা জেলি , কম বা বিনা চিনি যুক্ত ফলের চাটনি , চিনি ছাড়া ফলের রস
খারাপ বিকল্প (worst option): চিনি যুক্ত ক্যানের মধ্যে রাখা ফল, বেশি মিষ্টি দেওয়া জ্যাম , জেলি , মিষ্টি চাটনি , প্রক্রিয়াজাত ফলের রস ।
সুতরাং পরিকল্পনা মাফিক খাবার আর পরিশ্রম রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে ।
রক্তাল্পতা বা ANAEMIA
যদি লাল রক্ত কণিকা বা লাল রক্ত কণিকার মধ্যে থাকা হিমোগ্লোবিন সাধারণ অবস্থার থেকে কম থাকে বা রক্তধারায় অক্সিজেনের মাত্রা কম থাকে তাকে রক্তাল্পতা বা ANAEMIA বলে । তাই রক্তল্পতায় শরীরের রক্ত পাতলা হয় । রক্ত তৈরী হতে শরীরের যতটা সময় লাগে , যখন তার থেকেও তাড়াতাড়ি রক্ত পড়ে বা নষ্ট হয়ে যায় তখনই এটা ঘটে । খুব সহজেই রক্ত পরীক্ষা করলেই বোঝা যায় রক্তল্পতার ধরণ । প্রায় ৪০০ রকমের এনেমিয়া আছে ।
উপসর্গ বা লক্ষণ:
- ফ্যাকাসে আর স্বচ্ছ চামড়া
- চোখের পাতার ভিতরটা ফ্যাকাসে
- ফ্যাকাসে মারি
- চকচকে মসৃণ জিভ
- সাদাটে হাতের নখ
- দুর্বলতা আর ক্লান্তি
- সহজে নিঃশ্বাস নিতে অসুবিধা, নাড়ি তাড়াতাড়ি চলতে পারে আর হাঁপ ধরে যেতে পারে
- কানের মধ্যে ভো ভো করা
- মাথা ব্যথা
- হাতের নখ কখনো কখনো সোজা বা চামচের মত হয়ে যায় । একফোটা জল দিলে যদি পরে না যায়, তাহলে বলতে হবে নখ চামচের মত হয়ে গেছে
- মুখ আর পা ফুলে যেতে পারে
কারণ সমূহ :
- লোহায় ভরা খাবারের অভাবে
- হুকওয়ার্মের সংক্রমণ
- আমাশা
- ম্যালেরিয়া
- রক্তপাত – ফুসফুস থেকে যেমন যক্ষায়, পেট থেকে যেমন আলসারে , মলদ্বার থেকে যেমন অর্শতে , বড় ক্ষত থেকে , মাসিকের সময় বেশি স্রাব , বারবার বাচ্চা নষ্ট হওয়া , ঘন ঘন বাচ্চা হওয়া
- কিছু ভিটামিনের অভাবে যেমন ফলিক অ্যাসিড এবং ভিটামিন বি ১২
- লাল রক্ত কণিকায় অসুবিধা থাকার ফলে যেমন থালাসসেমিয়া (Thalassaemia), হেমলায়টিক রক্তল্পতা(Haemolytic anaemia) .
- অনেকদিন ধরে কিডনির অসুখ থাকলে
- লিউকেমিয়া (Leukaemia) ও বন ম্যারো Bone marrow তে কোনো অসুবিধা থাকলে ।
ভালো থাকার নিয়মাবলী :
- পর্যাপ্ত পরিমানে লোহায় ভরা খাবার খেতে হবে । যেমন বাজরা আর রাগিতে বেশ ভালো পরিমানে লোহা আছে । সবুজ শাক -সবজি বিশেষ করে পালং, নোটে , বরবটি আর মটরশুটিতে প্রচুর লোহা আছে । লোহার পাত্রে তৈরী হয় বলে গুড়ে লোহা থাকে । মাছ,মাংস,ডিম,মুরগিতে বেশি পরিমানে লোহা থাকে । মেটেতেও ভালো লোহা থাকে
- যদি আমাশা (পাতলা পায়খানার সাথে রক্ত), হুকওয়ার্ম, ম্যালেরিয়া বা অন্য কোনো রোগ থেকে রক্তল্পতা হয় , তাহলে তাড়াতাড়ি তার চিকিত্সা করানো উচিত
- যদি রক্তল্পতা খুব বেশি হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া উচিত ।
গ্যাস (Gas)
মানুষের শরীর এক আশ্চর্য জটিল কাজকর্মের অধিকারী। প্রতি নিয়ত সারাদিন ধরে যে কাজকর্ম চলছে ,কোন পরীক্ষা ছাড়া তা উপলব্ধি করা অসম্ভব।
প্রাকৃতিক নিয়মেই শরীরে গ্যাস তৈরী হয় এবং সেটা বেড়িয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াও চলে ক্রমাগত। দিনে ১৫থেকে ২0 বার অবধি গ্যাস বেড়িয়ে যাওয়ার অবস্থাকে সাধারণ অবস্থা বলে। মাঝে মাঝে অতিরিক্ত গ্যাস শরীরে অসুবিধার সৃষ্টি করে । সাধারনতঃ এই গ্যাসে কোন গন্ধ থাকে না । কিন্তু অনেক সময় এটা দুর্গন্ধ যুক্ত হয় । কারণ এই গ্যাসে সালফার বা গন্ধক থাকে । বৃহদন্তে বা লার্জ ইনটেসটাইনে জীবানুর সংক্রমণে গ্যাসে দূর্গন্ধ হয় । এটা ক্ষতিকারক নয় ।
উপসর্গ :
- বেশি ঢেঁকুর তোলা ।
- বার বার পিছন দিয়ে গ্যাস বের করা ।
- পেটের নীচের দিক ফুলে যাওয়া ।
- পেটের নীচের দিকে ব্যাথা ।
কারণসমূহ:
- কথা বলা আর খাওয়ার সময় অতিরিক্ত বাতাস গিলে ফেলা ।
- হজমের প্রক্রিয়ার সময় খাবার থেকে কিছু গ্যাস উৎপন্ন হয় যেমন হাইড্রোজেন,কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেন ।
- প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেলে ।
- ধূমপান, অতিরিক্ত চুইং গাম চেবানো ও অতিরিক্ত চকোলেট খেলে শরীরে বেশি বাতাস প্রবেশ করে।
- খাবার ভাল করে না চিবিয়ে তাড়াতাড়ি গিলে খেলে শরীরে বেশি বাতাস প্রবেশ করে।
প্রতিকার:
- প্রতিদিন খাবার ভাল করে চিবিয়ে খেতে হবে।
- শরীরের প্রতিটা অঙ্গ সচল রাখার জন্য প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করা আবশ্যক ।
- সোডাযুক্ত পানীয় কম পান করতে হবে ।
- চা এমনকি রেড ওয়াইন গ্যাস কম করতে সাহায্য করে।
- শরীরে গ্যাস হলে ঢিলা জামা কাপড় পরাই শ্রেয়।
- চুমুক দিয়ে কোন পানীয় পান করা ভাল। স্ট্র দিয়ে পান করলে শরীরে বাতাস ঢোকার সম্ভবনা থেকে যায়।
- আদা,মধু,পিপারমেন্ট এবং আনারস শরীরের গ্যাস কম করতে সাহায্য করে।
- শরীরে গ্যাস হলে দুগ্ধ জাতীয় খাবার না খাওয়াই শ্রেয়।
- পেঁয়াজ ও রসুনে যেহেতু বেশি পরিমানে গন্ধক থাকে তাই শরীরে গ্যাস হলে এই দুটি সবজি না খাওয়াই শ্রেয়।
- প্রতিদিন যারা সালাদে(salad) বিন খায়,তাদের গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।সুতরাং প্রতিদিন সালাদে বিন না খাওয়াই শ্রেয়।
পিত্তকোষে পাথর বা Gall bladder stone
পিত্তকোষ একটা ছোট থলি যেটা ঠিক লিভারের নীচে থাকে। লিভারে তৈরী রস বা পিত্ত, পিত্তকোষে মজুত থাকে।এটা তেতো ও সবুজ রঙের হয় যেটা স্নেহজাতীয় খাবার হজম করতে সাহায্য করে । খাবারের পরে পিত্তকোষ খালি হয়ে যায় এবং মনে হয় বেলুন চুপসে গেছে আর খাবারের আগে পিত্তকোষ রসে ভরা থাকে, নাশপাতির মত আকার হয় ।
কারণসমুহ :
- পিত্তকোষের দরকার পিত্তকে খালি করা যেটা সুস্বাস্থের লক্ষণ। যদি পিত্তকোষ অসমর্থ হয় বা পিত্তকে খালি করতে না পারে তাহলে ধীরে ধীরে পিত্ত ঘন হয় এবং পাথরে পরিনত হওয়ার সম্বভানা থাকে
- পিত্ততে যখন বেশি মাত্রায় কোলেস্টেরল থাকে । পিত্ত সাধরণত কোলেস্টেরলকে দ্রবীভূত করে বা ভেঙ্গে ফেলে । কিন্তু যখন লিভার কোলেস্টেরল বেশি তৈরী করে যেটা পিত্ত দ্রবীভূত করতে বা ভাঙ্গতে পারে না তখন পিত্তকোষে পাথর হতে পারে
- হাভার্ড হেলথ পাবলিকেশন অনুযায়ী ৮০ ভাগ পাথর হয় কোলেস্টেরল দ্বারা এবং ২০ ভাগ পাথর হয় ক্যালসিয়াম সল্ট এবং বিলিরুবিন দ্বারা
উপসর্গ :
- অনেক সময় কোন উপসর্গ থাকে না
- পেটে – পাঁজরের খাঁচার ডানধারে – খুব ব্যথা । কখনো কখনো ব্যথাটা ডানদিকের পিঠের উপরদিকে পৌছে যায়
- বেশি ঝালমশলা দেয়া বা তেলা খাবার খাওয়ার এক ঘন্টা বা আর একটু পরে ব্যথাটা উঠতে পারে । সাংঘাতিক ব্যথা থেকে বমি হতে পারে
- জ্বর
- হলুদ শরীর বা হলুদ চোখ যেটাতে জন্ডিস মনে হয়
- বমির ভাব
- কাঁদা রঙের মল
পিত্তকোষ থেকে পিত্ত চলাফেরার পথে পাথর যখন বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তখন ব্যথা অনুভব হয় । ব্যথা সাধারনত এক থেকে দুই ঘন্টা অবধি থাকে ।এর তিন রকম অবস্থা হয় ।
- পিত্তকোষে পাথর তৈরী হয় কিন্তু ব্যথা থাকে না
- মাঝে মাঝে ব্যথা অনুভব করা । চর্বি জাতীয় বা ভাজা খাবার খাওয়ার সময় ব্যথা লক্ষ করা যায় । বেশি সময় ব্যথা থাকে না । এছাড়া পাকস্থলিতে ব্যথা , পেট খারাপ , বমি ভাব , হজমের গোলমাল বা চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হতে পারে
- পিত্তকোষ থেকে পিত্ত যাওয়ার নালীকে যখন পাথর আটকে দেয় তখন জরুরী অবস্থার সৃষ্টি হয় এবং নানাবিধ উপসর্গ দেখা দেয়
প্রতিকার :
পিত্তকোষে পাথর হওয়া আটকানো কঠিন কিন্তু জীবন যাত্রার পরিবর্তন করে এর ঝুকিকে কমানো যায় । যেমন
- পরিমিত খাবার খাওয়া
- অভুক্ত না থাকা
- প্রতেক দিন পরিমিত পানীয় গ্রহণ করা
শরীরের ওজন কমাতে চাইলে তা ধীরে ধীরে , একবারে বেশি করে নয় । সপ্তাহে ২ পাউন্ডের বেশি নয় ।
পাতলা পায়খানা বা Diarrhea
শরীর থেকে জল ও মিনারেল বেরিয়ে যাওয়ার ফলে শরীর শুকিয়ে যায় , শরীরে দুর্বলতা দেখা দেয় , খাওয়ারের ইচ্ছা থাকে না , অনেক সময় পেটেও ব্যথা হয় । পেটখারাপের সাথে জ্বর , ওজন কমে যাওয়া , রক্ত অথবা শ্লেষা থাকলে , পায়খানার রং সবুজ বা কালো হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরী ।
কারণ সমূহ :
- অপুষ্টি
- ভাইরাসের সংক্রমণ
- অন্ত্রে জীবানুর সংক্রমণ
- কৃমির সংক্রমণ
- কানে , টনসিলে বা পেচ্চাবে সংক্রমণ
- ম্যালেরিয়া
- খাবারে বিষক্রিয়া
- দুধ হজম করতে না পারা
- বেশি কাঁচা ফল বা তৈলাক্ত খাবার খাওয়া
- কিছু ঔষধের জন্য হতে পারে
- কয়েকটা বিশেষ খাবারে
এছাড়া ঘরে বানানো ভালো থাকার কিছু উপায় নীচেদেওয়া হলো :
- সর্ষে বীজ (Mustard seeds) দ্বারা : এক চা চামুচ জলে ১/৪ সর্ষে বীজ ১ ঘন্টা রেখে দিয়ে জলটা খেতে হবে । দিনে ২ থেকে ৩ বার যতক্ষণ পেটখারাপ ভালো না হচ্ছে
- লেমনেড(Lemonade) দ্বারা : একটা লেবুর রসের মধ্যে এক চা চামচ চিনি ও লবন ভালো করে মিশিয়ে এক ঘন্টা অন্তর খেলে ভালো । তিন দিন অবধি খেলে পাকস্থলী একদম পরিস্কার হয়ে যাবে । কদিন সুপ ও হালকা শক্ত খাবার খাওয়া উচিত
- আনার(Pomegranate) দ্বারা : দিনে দুটো আনার বা দিনে তিন বার আনারের জুস খেলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে । আনারের পাতা জলে ভালো করে ফুটিয়ে পান করলেও কাজ হয়
- মেথি বা Fenugreek seeds: এক বা দুই চা চামচ মেথির মিহি গুড়ো এক গ্লাস জলে ভালো করে মিশিয়ে প্রতেকদিন সকালে খালি পেটে খেলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- মধু বা Honey: ১/২ চা চামচ দারুচিনির গুড়ো ও এক চা চামচ খাঁটি মধু এক গ্লাস হালকা গরম জলের সাথে ভালো করে মিশিয়ে খালি পেটে সকালে পান করতে হবে । দিনে আরো দুবার দুদিন ধরে পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- ঘোল বা Buttermilk: এক চা চামচ লবন , এক চিমটে কালো গোল মরিচ বা জিরার গুড়ো বা হলুদের গুড়ো এক গ্লাস ঘোলের সাথে ভালো করে মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিন বার পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- সাগু বা Sagu : তিনঘন্টা যথেস্ট পরিমান জলে সাগু ভিজিয়ে রাখতে হবে তারপর সেই জল দিনের মধ্যে অনেকবার পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- স্বাস্থকর পানীয় বা Health drink: ২ চা চামচ দই , ১/৪ চা চামচ হলুদ গুড়ো , কারিপাতা ও লবন ফুটন্ত জলে মিশিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে জল বের করে ঠান্ডা করতে হবে তারপর সেটা দিনে দুবার তিন দিন পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- জল পান বা Liquidate body: ডায়রিয়া হলে দিনে সবমিলিয়ে ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানীয় পান করা দরকার । জল ছাড়াও সূপ, ফলের রস , ইলেক্ট্রোলাইট পাউডার জলে মিশিয়ে , ডাবের জল খেলে শরীর শুকিয়ে যাবে না
- পুদিনা ও মধু বা Mint and Honey: এক চা চামচ পুদিনা পাতার নির্যাস , এক চা চামচ মধু ও এক চা চামচ লেবুর রস ভালো করে মিশিয়ে দিনে ২ থেকে ৩ বার দুদিন থেকে তিন দিন পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- বেল বা Bael: ২৫ গ্রাম শুকনো বেলের পাতা ও বেলের গুড়োর সাথে দুই চা চামচ মধু মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চার বার খেলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- শুকনো আদার গুড়ো বা Dry Ginger Powder: ১/২ চা চামচ শুকনো আদার গুড়ো এক পেয়ালা ঘোলের সাথে ভালোভাবে মিশিয়ে দিনে তিন থেকে চার বার পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- কাঁচা পেপে বা Raw Papaya: তিন পেয়ালা জলের মধ্যে কাঁচা পেপে মিহি করে কেটে ১০ মিনিট ধরে ফোটাতে হবে তারপর ভালো করে মিশিয়ে গরম গরম দিনে দুই থেকে তিন বার পান করলে ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- চা বা Tea: দুধ ছাড়া চা পান করলে অনেকসময় ডায়রিয়া ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে ।
পাতলা পায়খানায় রোগীর খাবার
রোগী যদি বমি করে বা অসুস্থার জন্য খেতে না পারে | রোগী যখন খেতে পারবে তখন তরল খাবারের সাথে |
চা , ভাতের ফেন , মুরগি /মাংস /ডিম/ বরবটির সুপ ,মিষ্টি সরবত , চিনি নুনের সরবত , মায়ের দুধ | পাকা বা সেদ্ধ কলা , ভাত , দালিয়া , ভালোভাবে সেদ্ধ করা অন্য শস্য , ভালোভাবে সেদ্ধ করে চটকানো ভুট্টা ,আলু ,পেঁপে ,নানা ধরণের ডাল , ভালোভাবে সেদ্ধ করে চটকানো বরবটি বা মটর , ডিম সেদ্ধ , তেল মশলা ছাড়া ভালোভাবে সেদ্ধ করা মুরগি বা মাংস বা মাছ |
যক্ষা বা টিবি বা Tuberculosis
টিবি আমাদর দেশের গরীব মানুষের একটা প্রধান সমস্যা । এটা একটা জীবানুর সংক্রমন যেটা লিম্ফ গ্রন্থি ও রক্তধারার মাধ্যমে শরীরের যেকোন অঙ্গে প্রবেশ করতে পারে । এটা ফুসফুস বা লান্গ্সে বেশি দেখা যায় । এর জীবানু নিস্ক্রিয় থাকে বলে উপসর্গ প্রায় দেখা যায় না কিন্তু যখন ইমিউন সিস্টেম বা immune system দুর্বল হয় তখন এই জীবানু সক্রিয় হয়ে ওঠে । এই রোগ ছোয়াচে কারণ বাতাসের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায় । এই রোগ যার মধ্যে আছে তার সংস্পর্শে দিনের পর দিন প্রস্তুতি ছাড়া কাটালে এই রোগ হওয়ার সম্বভনা বেশি থাকে কারণ এর জীবানু বেশিরভাগ মানুষের শরীরে নিস্ক্রিয় অবস্থায় লুকিয়ে থাকে । যার শরীরে এই রোগ আছে সে যখন কফ , থুথু ফেলে ,কথা বলে , হাঁচি দেয় তখন জীবানু বাতাসে ছড়ায় ।
উপসর্গ বা লক্ষণ:
বিকালে অল্প জ্বর, ঠান্ডা লাগা , রাতের বেলা বেশি ঘাম হওয়া , খাবার অনীহা , শরীরের ওজন কমা , অবসাদ লাগা , বুকে বা পিঠের উপর দিকে ব্যথা , অনেকদিন ধরে কফ হওয়া , পুরানো কাশি বিশেষ করে ঘুম থেকে উঠার ঠিক পরে ,কাশির সাথে রক্ত (রোগ বাড়লে ), ফ্যাকাসে মোমের মত চামড়া (রোগ বাড়লে), গলার স্বর ভেঙে যাওয়া (রোগ বাড়লে)।
প্রতিরোধ বা prevention:
- বাচ্চাদের টিকা নেওয়া আবশ্যিক করতে হবে
- এছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ ও পথ্য
- পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
- শরীরে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা তৈরী করা
- প্রস্তুতি ছাড়া রোগীর সংস্পর্শে না আসা
- অন্য কারো বাসনে খাওয়ার আগে ভালো করে বাসন ধুয়ে নেওয়া
- ধুমপান না করা
- রাস্তাঘাটে খাবারের আগে সতর্ক হওয়া
রোগীদের কর্তব্য:
- প্রথমে কদিন চিকিৎসা চলাকালীন বাড়ি থেকে না বেরোনো
- এই রোগীকে বন্ধ ঘরে রাখা উচিত নয় । আলো বাতাস যুক্ত ঘরে রাখা উচিত যাতে জীবানু বাইরে বেড়িয়ে যেতে পারে মূখ সবসময় কাপড় বা টিসু দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যাতে হাসলে, হাঁচি দিলে বা কাঁশলে জীবানু বাইরে যেতে না পারে । ব্যবহিত কাপড় বা টিসু পুড়িয়ে ফেলা বা ভালো ঢাকনাযুক্ত কৌটার মধ্যে রাখা পরে পুড়িয়ে ফেলার জন্য প্রথম তিন মাসের মধ্যে বাইরে যেতে হলে চিকিৎসাতে ব্যবহিত মাস্ক পরে বাইরে যাওয়া উচিত ।
জল বসন্ত বা Chicken Pox
এই রোগের জীবানু সংক্রমণের পর ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে শরীরে rash বা ফুসকুড়ি দেখা যায় এবং সাধারনত থাকে ৫ থেকে ১০ দিন সাথে জ্বর , খাবার অনীহা , মাথা ব্যথা ও ক্লান্ত লাগা মানে শরীর ভালো না লাগা । প্রথম দিকে ছোট ছোট লাল দাগ ,ফুসকুড়ি বা ফোস্কা হয়ে ফুলে ওঠা তারপর মামড়ি তৈরী হওয়া । প্রথমে সাধারনত গায়ে তারপর মুখে , হাতে , পায়ে ও অন্য জায়গায় বেরোয় । একই সাথে দাগ , ফুসকুড়ি ও মামড়ি হতে পারে । ফোস্কা বেরোনোর পর ১ থেকে ২ দিন এর জীবানু ছোয়াচে থাকে । এই রোগ ছোয়াচে থাকে প্রথম ফোস্কা থেকে শেষ ফোস্কা বেরোনোর পর আরো দুই দিন পর্যন্ত । যারা অপুষ্টিতে ভোগে তাদের জন্য এই রোগ বিপদজনক । একবার এই রোগ হয়ে গেলে সাধারনত আর হয় না । টিকা নেওয়া থাকলে বা একবার জল বসন্ত হয়ে গিয়ে থাকলে যদি দ্বিতীয়বার হয় তাহলে সামান্যই হবে ।
কি করা উচিত:
- বিশ্রাম নেওয়া
- প্রচুর তরল জিনিস ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া
- হালকা জামা কাপড় পরা
- ঠান্ডা ঘরে থাকতে পারলে ভালো
- প্রথমেই হাতের নখ কেটে ফেলা যাতে ভুল করে চুলকে ফেললে চামড়ার ক্ষতি না হয়
- চুলকানির জায়গায় উলের জিনিস না ব্যবহার করা
- হালকা গরম জলে হালকা সাবান দিয়ে স্নান করা । ভালো করে জল দিয়ে সাবান ধুয়ে ফেলা
- স্নান করার পর চামড়াকে ঠান্ডা রাখার জন্য ময়স্তেরাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে
- গরম এবং সেত্সাতে জায়গায় না থাকা ভালো ।
বাত বা ARTHRITIS
বাত হলো দুই হাঁড়ের সংযোগস্থলের ব্যথা । এটা এক সংযোগস্থল বা জয়েন্ট মানে যেখানে দুটো আলাদা হাঁড় একসাথে মেলে সেখানেও হতে পারে আবার একসঙ্গে একের বেশিও জায়গায়ও হতে পারে । একশোরও বেশি রকমের বাত হয় তবে তার কারণ ও চিকিৎসা আলাদা হতে পারে ।
যে দুই রকমের বাত প্রায়ই দেখা যায় তা হলো osteoarthritis (OA) এবং rheumatoid (RA)। বাতের উপসর্গ বুঝতে বুঝতে বাতই আবির্ভাব হয়ে যেতে পারে । যে কোনো বয়সেই বাত হতে পারে কিন্তু সাধারনত ৬৫ বছরের উপরে যাদের বয়স তাদের বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকে এবং ছেলেদের থেকে মেয়েদের বেশি হয় বিশেষ করে যাদের ওজন সাধারণের থেকে বেশি ।
কারণ:
কার্টিলেজ হলো দুই হাঁড়ের যোগাযোগকারী টিসু যেটা মজবুত কিন্তু নমনীয় । যখন আমাদের শরীর নড়াচড়া করে বা কোনো ধকল নেয় তখন এই কার্টিলেজ আমাদের জয়েন্টগুলোকে চাপ বা ধকল থেকে রক্ষ্যা করে । সাধারনত আমাদের শরীরে যে পরিমান কার্টিলেজ টিসু থাকা দরকার তার থেকে কমে যাওয়াই বাতের কারণ ।
উপসর্গ:
জয়েন্টে ব্যথা, নাড়াচাড়া করতে অসুবিধা , জয়েন্ট ফুলে যাওয়া সাধারনভাবে এগুলোই বাতের উপসর্গ । চলাফেরার গতি কমে যাওয়া এবং অনেক সময় জয়েন্টের চারপাশের চামড়া লাল হয়ে যাওয়া । বাতের ব্যথা সকালের দিকে বেশি অনুভূত হতে লক্ষ্য করা গেছে । Rheumatoid Arthritis (RA) এ অনেক সময় দূর্বল লাগা, খাবারের অনীহা, রক্ত শূন্যতা, হালকা জ্বর ও লাল রক্ত কনিকার সংখ্যা কমে যাওয়া হতে পারে ।
ভালো থাকতে হলে :
প্রথমেই X-ray, MRI বা CT scans মাধ্যমে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে বাতের অবস্থা জেনে নেওয়া উচিত । প্রতিদিন নিয়মিত ব্যয়াম করলে জয়েন্ট নমনীয় হয় । সাঁতার কাটা সবচেয়ে ভালো ব্যয়াম কারণ এতে জয়েন্টে চাপ পরে না যেটা দৌড়ালে বা জোরে হাটলে পরে । শরীর নড়াচড়া করা খুব প্রয়োজন কিন্তু যখন বিশ্রামের প্রয়োজন তখন অবশ্যই বিশ্রাম নেওয়া উচিত ।
ওজন বেশি থাকলে তা অবশ্যই কম করতে হবে । যতটা সম্ভব অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খেতে হবে যা জ্বালা কমাতে সাহায্য করবে ।
কোষ্ঠকাঠিন্য বা CONSTIPATION

কোষ্ঠকাঠিন্য মূলত জীবনযাত্রার ধরণ ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের ফসল । কোলনের মধ্য দিয়ে মল ধীর গতিতে যাওয়ার জন্যই কোষ্ঠকাঠিন্য হয় । দুই তিনদিন পায়খানা না হলে আর শক্ত পায়খানা হলে বলা হয় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে । চিকিত্সা শাস্ত্র অনুযায়ী এক সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানা হলে তাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলে আর যদি এক সপ্তাহে একবারের কম পায়খানা হয় তাকে বেশীমাত্রায় কোষ্ঠকাঠিন্য বলে । অনেক সময় শক্ত পায়খানার জন্য মলদ্বারে রক্তপাত হতে পারে ।
কারণ সমূহ:
- তন্তুযুক্ত খাবার কম খাওয়া
- কম পানীয় পান করা
- শারীরিক প্ররিশ্রম কম করা
- বাচ্চা হওয়ার সময়
- ওজন কমানোর প্রক্রিয়ার সময়
- দুশ্চিন্তার কারণে
- অর্শ হলে
- অন্ত্রের পেশী দুর্বল হলে
- কিছু ঔষধ খাওয়ার জন্য
- বেশি ক্যালসিয়াম বা আইরন নেওয়ার জন্য
ভালো থাকার কিছু ঘরোয়া চিকিত্সা:
- প্রতিদিন একটা করে কমলা লেবু বা এমনি লেবু খাওয়া কারণ এতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ও ফাইবার আছে
- দুধ আর খেজুর দিয়ে পেস্ট তৈরী করে এক সপ্তাহ ধরে দুধ দিয়ে খাওয়া
- ত্রিফলাচূর্ণ মধু দিয়ে দিনে দুবার খেলে
- এক চা চামচ ঘি গরম দুধের সাথে মিশিয়ে রাত্রে শোবার আগে খেলে
- কিছু তাজা পাকা ডুমুর এক গ্লাস দুধের সাথে ফুটিয়ে রাত্রে শোবার আগে খেলে
- হাফ বা অর্ধেক কাপ বাঁধাকপির রস দিনে দুবার খেলে
- হাফ বা অর্ধেক গ্লাস পালং শাকের রসের সাথে অর্ধেক গ্লাস জল মিশিয়ে দিনে দুবার দু /তিন দিন খেলে
- দিনে কমপক্ষে তিন লিটার জল (যাদের অন্য কোনো অসুবিধা নেই)পান করে শরীরকে সবসময় আদ্র রাখা
- প্রতিদিন নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম বা যোগা করলে
- ঘন ঘন জোলাপ না খাওয়া ।
ম্যালেরিয়া বা MALARIA

সাধারনত এই রোগ গরম প্রধান জায়গায় দেখা যায় কারণ এই রোগের জীবানু গরম জায়গায়ই বাঁচতে পারে । যখন এনফেলেস মশা কাউকে কামড়ায় তখন মশা ম্যালেরিয়ার পরজীবী শরীরের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় যেটা রক্তের সাথে মিশে যায় । এই পরজীবীগুলো রক্তের মাধ্যমে লিভারে পৌছায় এবং সেখানেই বাড়তে থাকে । এই পরিনত পরজীবী আবার রক্তের মধ্যে প্রবেশ করে এবং লাল রক্ত কনিকাকে সংক্রমিত করে । ৪৮ থেকে ৭২ ঘন্টার মধ্যে এরা দ্রূত বাড়তে থাকে লাল রক্ত কনিকার ভিতর । এর থেকে শীত করে জ্বর আসে । মশা সংক্রমিত মানুষের রক্তের সাথে ম্যালেরিয়ার পরজীবী শুষে নিয়ে পরে যে মানুষটিকে কামড়ায় , তার শরীরে সেগুলো ঢুকিয়ে দেয় । ম্যালেরিয়ার বিশেষত্ব হলো যে সেটা দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে আক্রমন করে ও কয়েকঘন্টা থাকে ।
উপসর্গ বা লক্ষণ :
- শীত শীত করা আর প্রায়ই মাথাধরা দিয়ে শুরু হয় । রোগী ১৫ মিনিট থেকে ১ ঘন্টা পর্যন্ত শীতে ঠকঠক করে কাঁপে
- শীত করার পর জ্বর আসে এবং রোগী দুর্বল বোধ করে । রোগীর শরীর লালচে হয়ে যায় । কখনো কখনো বিকার হতে পারে । শরীরে জ্বর কয়েক ঘন্টা ধরে থাকে
- শেষে রোগীর ঘাম হতে শুরু করে এবং জ্বর কমে যায় । একবার ম্যালেরোয়ার আক্রমণের পর রোগী দুর্বল বোধ করলেও মোটামুটি ঠিক থাকে
- সাধারণত ম্যালেরিয়ায় প্রত্যেক দ্বিতীয় বা তৃতীয় দিনে জ্বর হয় (কি ধরনের ম্যালেরিয়া তার ওপর নির্ভর করে), তবে প্রথম দিকে রোজই জ্বর হতে পারে । তাছাড়া শিশুদের বেলায় বা আগে যাদের ম্যালেরিয়া হয়েছে তাদের বেলায় একটু অন্যরকম হতে পারে । তাই জ্বরের কারণ বোঝা না গেলে বিশেষ করে বর্ষাকালে রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া ভালো ।
অনেক সময় ম্যালেরিয়া মারাত্বক আকার ধারণ করতে পারে । তাই সন্দেহ হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত ।
কি ভাবে এড়াতে হবে:
- মশা এড়িয়ে চলতে হবে । যেখানে মশা আছে সেখানে মশারির নীচেশোয়া উচিত
- কারো ম্যালেরিয়া হলে তাড়াতাড়ি চিকিত্সা করতে হবে কারণ তার থেকে অন্য কারো হতে পারে
- মশা যাতে মরে তার জন্য বাড়ির চারপাশে ওষুধ দেওয়া ভালো এবং ওষুধ দেওয়ার সময় খাবার আর জল ঢাকা দিয়ে রাখা উচিত
- মশা বদ্ধ জলে জন্মায় । আশেপাশের ডোবা , গর্ত ,পুরানো টিন বা ভাঙ্গা পাত্রে যেখানে জল জমতে পারে সেগুলো সবসময় পরিস্কার রাখতে হবে
- ম্যালেরিয়ার ওষুধ বিভিন্ন মাত্রায় নিয়মিত খেলে ম্যালেরিয়া কমানো বা তার কুফল অনেকটা কমানো যেতে পারে ।
কাঁধে ব্যাথা FROZEN SHOULDER
ফ্রোজেন সোল্ডারকে অনেক সময় ভুল করে বাত বলা হয় । ফ্রোজেন সোল্ডার শুধু কাঁধের জয়েন্টে হয় আর বাত একটা জয়েন্টে বা একসাথে একের বেশি জয়েন্টে হতে পারে । ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সের মানুষের মধ্যে এই রোগ বেশি দেখা যায়। ছেলেদের থেকে মেয়েদের এই রোগ বেশি হতে দেখা যায় । X-ray অথবা MRI করলে ফ্রোজেন সোল্ডার হয়েছে কিনা বোঝা যায় ।
কারণ :
সবসময় এর কারণ বোঝা যায় না । তবে বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী যাদের এই ফ্রোজেন সোল্ডার হওয়ার সম্ভাবনা তারা হলো:
- যাদের বয়স ৪০ এর উর্দ্ধে
- মেয়েদের বেশি হওয়ার সম্ভাবনা । সমীক্ষায় দেখা গেছে ১০০ জনের মধ্যে মেয়েদের সংখ্যাই ৭০
- সাম্প্রতিক শল্যচিকিৎসা হয়েছে বা হাত ভেঙ্গেছে
- ডায়বেটিস যাদের আছে তাদের দুই থেকে চার বার হওয়ার সম্ভবনা থাকে
- স্ট্রোক হয়েছে এমন কারো
- হাইপারথাইরয়ডইজিম বা Hyperthyroidism রোগে
- কার্ডিওভাসকুলার বা Cardiovascular রোগে
- পারকিনসন বা Parkinson রোগে
প্রতিদিনের নিয়মিত ব্যয়াম এই রোগের থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে বিশেষ করে মাথা,কাঁধ ও হাতের ব্যায়াম প্রতিদিন করলে ভালো থাকা যাবে ।
এপেনডিসাইটিস বা APPENDICITIS

পেটের নীচের ডানদিকে বৃহদন্ত্রের সাথে লাগানো সাড়ে তিন ইঞ্চি আঙ্গুলের আকারের একটা থলি যাকে এপেনডিক্স বলে – তাতে সংক্রমন হলে এপেনডিসাইটিস বলে । শরীরে এপেনডিক্সের কি কাজ নিদিষ্ট করে তা বলা মুশকিল । তবে এটা বলা যায় যে এপেনডিক্স ছাড়া আমরা বাঁচতে পারি ।সংক্রমিত এপেনডিক্স কখনো কখনো ফেটে গিয়ে পেরিটোনাইটিস হয়ে যায় বা নাড়িভুঁড়ি ধরে রাখার গর্ত বা থলির ভিতরের দেওয়ালে খুব কঠিন সংক্রমন হলো পেরিটোনাইটিস । এপেনডিক্স বা নাড়িভুঁড়ির অন্য কোনো অংশ ফেটে বা ছিঁড়ে গেলে এটা হয় । এর তাতক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন ।
লক্ষণ বা উপসর্গ :
- পেটে একটানা ব্যথা যেটা ক্রমশঃ বাড়তে থাকে
- ব্যথাটা সাধারণতঃ নাভীর চারিদিকে শুরু হয় কিন্তু অল্পক্ষনের মধ্যেই নীচেডানদিকে সরে যায়
- তলপেট ফুলে যেতে পারে
- খিদে কমে যেতে পারে, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা অল্প জ্বর হতে পারে
- গ্যাস বাইরে বের করতে অসুবিধা হতে পারে
- পেস্রাবের সময় ব্যথা হতে পারে
এই সমস্ত বিপজ্জনক অবস্থায় প্রায়ই অপারেশনের দরকার হয় । যদিও আধুনিক চিকিৎসা শাস্ত্রে এন্টিবাযোটিক্সের মাধ্যমেও চিকিৎসা শুরু হয়েছে । তাড়াতাড়ি ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া উচিত । মুখে কিছু দেওয়া উচিত নয় জলের অভাব ঘটলে শুধুমাত্র দু /এক চামচ জল আর কিছু নয় । রোগীর উচিত আধবসা অবস্থায় খুব শান্তভাবে বিশ্রাম করা । চিকিৎসা শাস্ত্রে অনেক রকমের পরীক্ষা আছে যার মধ্যে একটি করলেই জানা যাবে এপেনডিসাইটিস হয়েছে কিনা ।
যারা তন্তুযুক্ত খাবার, তাজা ফল ও শাক সবজি বেশি পরিমানে খায়, তাদের মধ্যে এপেনডিসাইটিস কম দেখা যায় ।
পেটের আলসার, বুকজ্বালা আর অম্বল
সাধারণতঃ বেশি গুরুপাক বা তৈলাক্ত যুক্ত খাবার খেলে বা বেশি মদ বা সিগারেট খেলে বুকজ্বালা আর অম্বল হয় । এতে পেটে বাড়তি এসিড তৈরী হয় যার থেকে বুকে জ্বালা হওয়ার সম্ভবনা থাকে । পেটে বেশি এসিড তৈরী হতে থাকলে পাকস্থলিতে বা নাড়িভুঁড়িতে ঘা হয় এবং পেটের ঠিক মাঝখানে ব্যথা হয় যাকে আলসার বলে । খাওয়ার ২ বা ৩ ঘন্টা পরে, একবার খাওয়া বাদ দিলে বা মদ বা তেল বা মশলা দেওয়া খাবার খেলে ব্যথা বাড়ে । প্রায়ই রাত্রে ব্যথাটা বাড়ে ।
আলসার খুব বেশি রকমের হলে বমি হতে পারে এবং কখনো কখনো তাতে রক্ত থাকতে পারে । আলসার থেকে যে রক্তমাখা পায়খানা হয়, সেটা সাধারণতঃ আলকাতরার মত কালো হয় ।
ভালো থাকতে হলে খেতে হবে:
- ফোটানো দুধ
- পনীর
- সর / ননী
- ওট
- কলা
- সেদ্ধ করা খাবার
প্রতিদিন শোবার আগে দুধ খেলে উপকার পাওয়া যায় । খাওয়ার ব্যপারে যত্ন নিলে পেটের আলসার ,বুকজ্বালা আর অম্বল সারানো কোনো কঠিন কাজ নয় । রাগ ,উত্কন্ঠা বা ঘাবড়ে গেলে আলসার বাড়ে । শরীর ও মনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে এই তিন রোগের থেকে মুক্তি বা এড়ানো কঠিন নয় ।
অর্শ বা PILES বা HAEMORRHOIDS
জোড় করে পায়খানা করার সময় মলদ্বার বা মলনালীর টিসু ফুলে গেলে অর্শ হয় । এটা যন্ত্রনাদায়ক হতে পারে এবং এর থেকে রক্তপাতও হতে পারে । পোয়াতি অবস্থায় প্রায়ই দেখা দিয়ে চলে যেতে পারে । এটা বিপজ্জনক নয় ।
উপসর্গ :
- অনেক সময় অর্শের কোনো উপসর্গ বা যন্ত্রণা থাকে না
- পায়খানা করার সময় রক্ত পরা
- মলদ্বারে পিন্ড হওয়া
- মলদ্বারে শ্লেষা হওয়া
- সব সময় মনে হবে পুরো মল হয়নি
- মলদ্বারে চুলকানি হওয়া
- পায়খানা করার সময় যন্ত্রণা বা অসুবিধা বোধ করা
ভালো থাকার উপায় :
- জীবন যাত্রার ধারা একটু পরিবর্তন করে
- বেশি তন্তুযুক্ত খাবার খেয়ে কারণ তন্তুযুক্ত খাবার মলকে নরম করে তারফলে মলদ্বার দিয়ে যেতে কোনো অসুবিধা হয় না
- প্রচুর তরল পানীয় পান করে
- দিনে দু বার অল্প গরম জলে একটু পটাসিয়াম পারমাংগানেট দিয়ে মলদ্বার আধঘন্টা ডুবিয়ে রাখলে সুফল পাওয়া যায়
- একটা পাকা কলা এক কাপ দুধের মধ্যে দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে চটকে দিনে তিন থেকে চার বার খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়
- এক চা চামচ কালো শাহ জিরা সেঁকে,তার সাথে এক চা চামচ কালো শাহ জিরার মিশিয়ে তার থেকে ১/২ চা চামচ নিয়ে এক গ্লাস জলের সাথে দিনে এক বার খেলে সুফল পাওয়া যায়
- এক গ্লাস দুধের সাথে ১/৪ চা চামচ অজ্বাইন গুড়ো ও একটু লবন মিশিয়ে খেলে ।
খুব মোটা বা বেশি ওজন বা OBESE

কিছু ক্ষেত্রে বলা যায় এর কারণ বেশ সোজা । কতটা পরিমান এনার্জি বা ক্যালোরি খাবার ও পানীয়র সাথে গ্রহণ করছি আর কতটা পরিমান খরচা করছি তার ওপর নির্ভর করে মোটামুটি আমাদের ওজন । বেশি মোটা বা বেশি চর্বি হলে অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন – উঁচু রক্তচাপ , হার্টের রোগ , পিত্তকোষে পাথর , বহুমূত্র , পায়ে ও পায়ের পাতায় গেঁটে বাত ইত্যাদি ।
- যে পরিমান ক্যালোরি গ্রহণ করছি যদি সেই পরিমানই খরচা করি তাহলে ওজন একই থাকবে
- যে পরিমান ক্যালোরি গ্রহণ করছি যদি তার থেকে কম খরচা করি তাহলে ওজন অবশ্যই বাড়বে কারণ অতিরিক্ত এনার্জি চর্বিতে রূপান্তরিত হবে এবং সেটা শরীরে জমা হবে
- যে পরিমান ক্যালোরি গ্রহণ করছি যদি তার থেকে বেশি খরচা করি তাহলে ওজন অবশ্যই কমবে কারণ শরীর তার জমা চর্বি থেকে নেবে অতিরিক্ত এনার্জি খরচ করতে
এছাড়া :
- জিনের কারনেও হতে পারে যেটা বিজ্ঞানীরা শনাক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে
- কিছু ঔষধের কারনেও হতে পারে
প্রতিকার:
- সমানুপাতিক আহার
খাবারের অভ্যাসের দিকে নজর দেওয়া যেমন মিষ্টি , চর্বি এবং তৈলাক্ত যুক্ত খাবার যতটা সম্ভব না খাওয়া
- কি পানীয় গ্রহণ করা হচ্ছে তার দিকে নজর দেওয়া
- শ্বেতসার জাতীয় খাবার কমিয়ে ফল, শাক সবজি , চর্বি ছাড়া মাংস খাবার দিকে নজর দেওয়া
- প্রতিদিন নিয়ম করে শারীরিক পরিশ্রম
- নিজের শরীরের উন্নতির দিকে সতর্ক হওয়া
- পারলে মাঝে মাঝে ওজন পরীক্ষা করা
- যদি খাবারের পরিমান একদমই কমাতে ইচ্ছা না করে তাহলে প্রধান খাবারের আগে হাফ গ্লাস করে জল খেয়ে নিলে কিছুটা কাজ হবে ।
পেটে ব্যথা বা STOMACH PAIN
পেটের কোন অংশে ব্যথা করলে কোন রোগের সম্ভবনা তার একটা তালিকা নীচে দেওয়া হলো
ব্যথার জায়গা | রোগের সম্ভবনা |
পেটের উপরের দিকের মাঝখানে ব্যথা | পেটে ঘা বা আলসার |
প্রথমে পেটের মাঝখানে পরে ডান পাশে ব্যথা | এপেনডিসাইটিস |
পেটের ওপর ডানদিকে ব্যথা, প্রায়ই পিঠের দিকে চলে যায় | গলব্লাডারের রোগ |
পেটের ডানদিকে ব্যথা, মাঝে মাঝে বুকের দিকে ছড়িয়ে যায় | লিভারের রোগ |
পিঠের নিচের দিকে অল্প ব্যথা, কোমর দিয়ে ঘুরে তলপেটে আসে | পেচ্ছাবের রোগ |
পেটের একদিকে বা দুদিকেই ব্যথা পিঠেও ছড়িয়ে পড়ে | মেয়েদের ডিম্বকোষে প্রদাহ বা টিউমার |
ইউরিক অ্যাসিড
কিছু খাদ্যে এবং কিছু পানীয়তে থাকা পিউরিন ভাঙ্গার সময় শরীরের মধ্যে ইউরিক অ্যাসিড তৈরী হয় যেটা রক্তের দ্বারা কিডনিতে পৌছায় এবং পেচ্ছাবের মাধ্যমে বাইরে চলে যায় । যখন আমাদের কিডনি এই ইউরিক অ্যাসিডকে ভালো মত বাইরে বের করতে পারে না বা শরীরে অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড তৈরী হয় তখন রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে যায় ।এর ফলে গেঁটেবাত এবং কিডনিতে পাথর হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে । রক্ত পরীক্ষা ছাড়া ইউরিক অ্যাসিডের পরিমান বোঝা মুশকিল ।কেননা এর কোনো সাধারণত উপসর্গ থাকে না । লিভার , অঞ্চভিয়েস , ম্যাকরল , শুখনো বিন, শুখনো মটর শুঁটি , মাশরুম এবং বিয়ার ইত্যাদির মধ্যে পিউরিন পাওয়া যায় ।
যে সব কারণে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে :-
- মূত্রবর্ধক ওষুধে
- অতিরিক্ত মদ্যপানে
- বংশগত
- হাইপোথাইরয়েডিজম
- কিছু ঔষধে
- ভিটামিন বি ৩
- স্থুলতা
- সোরিয়াসিস বা Psoriasis
- যে খাবারে পিউরিন আছে
- কিডনির দূর্বলতা
- কেমোথেরাপি
ভালো থাকার ঘরোয়া ঔষধ :
1. এক গ্লাস জলের মধ্যে এক চা চামচ কাঁচা, জৈব এবং পাস্তুরাইসড নয় এমন আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে দিনে দুই থেকে তিনবার পান করতে হবে
2. হালকা গরম জলে একটা লেবুর রস মিশিয়ে সকালে খালি পেটে খেতে হবে কয়েকদিন
- কয়েক সপ্তাহ ধরে চেরি খেলে ভালো ফল হয় । এর সাথে খাবারের সাথে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পূর্ণ ফল ও শাক -সবজি খেলে আরো ভালো ফল পাওয়া যাবে
- দেড় চা চামচ বেকিং সোডা এক গ্লাস জলের সাথে মিশিয়ে দিনে চারবার এক গ্লাস করে কয়েক সপ্তাহ খেতে হবে । যাদের উচ্চ রক্তচাপ আছে তাদের এটা করা উচিত নয় । এছাড়া যাদের বয়স ৬০এর বেশি তাদের তিন গ্লাসের বেশি খাওয়া উচিত নয় ।.
- রান্নাতে অলিভের তেল ব্যবহার করলে ভালো হয়
সারাদিনে আট থেকে দশ গ্লাস জল খেলে ভালো হয়
পোয়াতি অবস্থার পুষ্টি বা NUTRITIONAL NEEDS DURING PREGNANCY
প্রথমে মা কি করে তার কবে প্রসব হতে পারে সেটা কি করে জানবে – যে দিন শেষ মাসিক শুরু হয়েছিল সেই দিন থেকে ৩ মাস বাদ দিয়ে ৭ দিন যোগ দিতে হবে ।
ধরা যাক শেষ মাসিক শুরু হয়েছিল ১০ ই ডিসেম্বর । তাহলে তার থেকে তিন মাস বাদ দিলে হয় ১০ ই সেপ্টেম্বর তার সাথে ৭ দিন যোগ দিলে হয় ১৭ ই সেপ্টেম্বর । শিশু ১৭ ই সেপ্টেম্বরের কাছাকাছি জন্মাবে ।
পোয়াতি অবস্থায় শরীরের মধ্যে প্রচুর শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তন হয় । এ এক আশ্চর্য বিজ্ঞান । সৃষ্টি সুখের আনন্দ পেতে মাকে যতটা সম্ভব পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে যাতে মা এক পরিনত স্বাস্থ্যবান শিশুর জন্ম দিতে পারে নিজেকে সুস্থ রেখে । কারণ প্রেগনেন্সি কোনো অসুখ নয় ।
কম মাত্রায় ভিটামিন ও মিনারেল এবং একটু বেশি মাত্রায় কার্বোহাইড্রেট বা Carbohydrates, প্রোটিন , চর্বি বা Fats খাওয়া খুবই জরুরী মা ও শিশুর ভালো থাকার জন্য । খাবার থেকেই সব ধরনের পুষ্টি পাওয়া যায় । যেমন শস্যদানা থেকে পেতে পারি কার্বোহাইড্রেট । ফল ও শাকসবজি থেকে পেতে পারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , তন্তু , জলে দ্রবণীয় এবং চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন । মাছ ,মাংস , বাদাম , শিম , বরবটি , মটর শুঁটি থেকে পেতে পারি ফ্যাট ,প্রোটিন , ফলিক অ্যাসিড ও লোহা । দুগ্ধজাতীয় খাবার থেকে পেতে পারি ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি । প্রসেসড জাঁক ফুডের থেকে প্রাকিতিক এবং কম চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া অনেক ভালো । তার মানে এই নয় যে নিজের পছন্দ মত সব খাবারই বাতিল । তবে লক্ষ্য রাখতে হবে পুষ্টিকর খাবারের দিকে ।
এছাড়া পর্যাপ্ত পরিমানে খেতে হবে তরল জিনিস কমপক্ষে প্রতিদিন ৮ গ্লাস ।
পোয়াতি অবস্থায় মেয়েদের ওজন বাড়াটা স্বাভাবিক , যদি না বাড়ে অবশ্যই ডাক্তারের সাহায্য নেওয়া উচিত । পোয়াতি অবস্থায় ৯ মাসে কমপক্ষে ওজন ৮ থেকে ১০ কিলোগ্রাম বাড়া উচিত । বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী –
পোয়াতি অবস্থার আগে মায়ের ওজন | ওজন বাড়া প্রয়োজন | ||
কম ছিল | ১৩ থেকে ১৮ কিলোগ্রাম | ||
স্বাভাবিক ছিল | ১১ থেকে ১৩ কিলোগ্রাম | ||
বেশি ছিল | ৭ থেকে ১১ কিলোগ্রাম | ||
খুব মোটা ছিল (Obese) | ০ থেকে ৭ কিলোগ্রাম |
পোয়াতি অবস্থার লক্ষণ :-
- মাসিক না হওয়া
- সকালের দিকে বমি পাওয়া বা বমি ভাব । দ্বিতীয় আর তৃতীয় মাসে সাধরনত এটা বাড়তে পারে
- ঘন ঘন পেচ্ছাপ হওয়ার সম্ভবনা
- পেটটা ধীরে ধীরে বড় হওয়া
- স্তন দুটি বড় হতে থাকা
- মুখে , স্তনে , পেটে কালচে দাগ হওয়ার সম্ভবনা
- পাঁচ মাসের মত সময়ে শিশু জরায়ুর মধ্যে নড়াচড়া শুরু করে
যে সব লক্ষণ দেখে বোঝা যায় যে প্রসবের সময় এগিয়ে এসেছে :-
- প্রসবের কয়েকদিন আগে শিশু গর্ভের মধ্যে নীচের দিকে নেমে আসে । এতে মায়ের শ্বাস নেওয়া সহজ হয়, তবে পেচ্ছাপের থলির ওপর চাপ পড়ার জন্যে আরো ঘন ঘন পেচ্ছাপ করবার দরকার হতে পারে
- প্রসবের একটু আগে একটা ছোট শ্লেষ্মার দলা (জেলি) বেরিয়ে আসতে পারে অথবা প্রসববেদনা শুরু হবার ২/৩ দিন আগে থেকে একটু করে শ্লেষ্মা বেরোতে পারে । কখনো কখনো তাতে রক্তের ছিটে থাকে । এটা স্বাভাবিক
- প্রসবের মোচড়ানো ব্যথা (জরায়ু হঠাত কুঁচকে যাওয়া) বা ব্যথা ওঠা প্রসবের কদিন আগে থেকেই শুরু হতে পারে । প্রথম দিকে দুবার ব্যথা ওঠার মধ্যে সাধারণতঃ অনেকটা সময় কেটে যায় – কয়েক মিনিট বা কয়েক ঘন্টাও । ব্যথাগুলো আরো জোরে , নিয়মিত আর ঘন ঘন হলে প্রসব শুরু হয় ।
ভারতবর্ষের নিষিদ্ধ নিদিষ্ট মাত্রার ঔষধের সংমিশ্রন BANNED FIXED DOSE DRUG COMBINATIONS IN INDIA
নিয়ম অনুযায়ী কোনো ঔষধ বাজারে ছাড়ার আগে সেটা পরীক্ষা করা হয় জন্তু-জানোয়ারের উপর তারপর মানুষের উপর । তারপর সেই ঔষধের কার্যক্ষমতা ও নিরাপত্তা দেখে বাজারে ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয় । কিন্তু অনেক সময় বাজারে ছাড়ার পর কোন ঔষধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা যায় । তার নানা কারণ থাকতে পারে যেমন কোন একটা ভেষজের বা ড্রাগের সংমিশ্রণে ঐ ঔষধের বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে । এই রকম ক্ষেত্রে ঐ ভেষজের নিদিষ্ট মাত্রার সংমিশ্রনকে নিষিদ্ধ করা হয় , ভেসজকে বা ড্রাগকে নয় । যেমন কিছু ঔষধ শরীরের মেদ বা ওজন কমানোর জন্য ভালো কাজ দিত । কিন্তু দেখা গেল ঐ ঔষধের মধ্যে নিদিস্ট কোনো ভেষজের সংমিশ্রনের ফলে কিছু গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে । তাই ঐ ভেষজের বা ড্রাগের নিদিষ্ট মাত্রার সংমিশ্রনকে নিষিদ্ধ করা হয়. যেমন :-
- ফেনফ্লুরামাইন বা FENFLURAMINE, দেক্ষ্ফেনফ্লুরামাইন বা DEXFENFLURAMINE এবং সিবুত্রমাইন বা SIBUTRAMINE এই তিনটি ড্রাগের সংমিশ্রনের ফলে ঔষধের ভালো কাজ হচ্ছে ঠিকই , কিন্তু হার্টের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে
- রিমোনাবান্ট বা RIMONABANT ড্রাগের সংমিশ্রনের ফলে ব্রেনের ক্ষতি হচ্ছে
প্রায় ৬০০০ এর উপর ভেষজ সংমিশ্রণ বা ড্রাগ কম্বিনেসনের পুনর্বিচার করে ১০ ই মার্চ ২০১৬ কেন্দ্রীয় ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বা Central Drugs Standard Control Organization (CDSCO) এক গেজেট নোটিফিকেসনের মাধ্যমে প্রায় ৩০০ এর উপর ড্রাগের সংমিশ্রনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে । ঔষধের মধ্যে ঐ সব ড্রাগের সংমিশ্রনের ফলে শরীরের মধ্যে গুরুতর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হচ্ছে । বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানির ঔষধও এর মধ্যে আছে । সেই সব কোম্পানি কোর্ট থেকে এর ওপর স্থগিতাদেশ নিয়ে আসার ফলে ঐসব ঔষধ বাজারে বিক্রি হতে কোনো সমস্যাই থাকছে না । বিদেশে নিষিদ্ধ অথচ আমাদের দেশে অনায়াসে চলছে কারণ আমাদের বিপুল সংখ্যক মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনা নেই বললেই চলে ।
কলকাতার বেশ কিছু নামকরা হাসপাতাল ও নার্সিংহোমের ঠিকানা ও ফোন নাম্বার
SL NO | HOSPITAL’S NAME | ADDRESS | PHONE NOS |
1 | ALL Asia Medical Institute | 8b Garcha 1st lane-700019 | 033-40012200 |
2 | Alpha Medical Services | 13, Lala Lajpat Rai Sarani, (Elgin Road), Kolkata-700020 | 033-22892530/33,9830049510 |
3 | AMRI Hospital | Jc 16 & Jc 17, Sector-3, Salt Lake-700091 | 033=23357710 |
4 | AMRI Hospital | 230, Barakhola Lane,Jadavpur, Mukundapur-700099 | 033-99060606/1000 |
5 | AMRI Hospital | 97a, Southern Avenue (Opp Lake Stadium)-700029 | 033-24654594/95/66228000 |
6 | AMRI Hospital | P-4&5, C.I.T Scheme, Block-A, Gariahat Road, Kolkata, West Bengal 700029 | 033 66260000 |
7 | Amulya Jyoti Eye Foundation | 105, Manohorpukur Road-700029 | 033-84668529 |
8 | Anandolok Hospital | D.K.7/3, Salt Lake City, Kolkata- 700091 | 033 23592931/34 |
9 | Angelmaternity Nursing Home | 3, Komedan Bagan Lane, Kolkata-700016 | 033-22493361 |
10 | Apex Clinic Pvt Ltd | 844 a Raja Ram Mohan Roy Road-700016 | 033-24068071 |
11 | Apex Inst of Medical Science | 12/9, Survey Park, Near Big Bazar, Hiland Park-700075 | 033-2416-4555 |
12 | Apollo Gleneagles Heart Centre | 48/1f, Leela Roy Sarani, Kolkata-700019 | 033-24618079 |
13 | Apollo Gleneagles Hospital | 58, Canal Circular Road, Kolkata – 700054. | 033-23585211/5215 |
14 | Arham Clinic | 70, Chittaranjan Avenue, Kolkata-700012 | 033-22217317 |
15 | Arogy Maternity and Nursing Home | 71, Tolygunge Circular Road,New Alipore Sital Sadan Compound – 700053 | 033-24000684/24000681 |
16 | Asg Hospital Pvt Ltd | Alcove Gloria, 403/1 Dakshindari Road, VIP Road-700048 | 033-25212211 |
17 | Assembly of God Church Hospital | 125/1, Park Street, Kolkata – 700017 | 22296666 / 4045 |
18 | Aurobindo Netralaya | 4a, Rajendra Deb Road- 700007 | 033-22412269 |
19 | B M Birla Heart Research Centre | 1/1, National Library Avenue, Alipore, Kolkata 700027 | 033-24567890/ 24567777 |
20 | B.P. Poddar Hospital & Medical Research Ltd | 71/1, Humayun Kabir Sarani, Block-G, New Alipore, Kolkata-700053 | 033-24458901/ 05 |
21 | B.R.Singh Hospital | Beliaghata Road, Sealdah, Kolkata – 700014, Near Sealdah Station | 23504075, 23502961 |
22 | Baghajatin State General Hospital | Raja Subodh Chandra Mullick Rd, Baghajatin Rd, Jadavpur, Baghajatin, Kolkata- 700092, | 033 24122593 |
23 | Balananda Bramhachari Hospital | 151 & 153, Diamond Harbour Road, Behala, Kolkata – 700034, Near Pathak Para | +(91)-33-23967801, 24072111, 23961687 |
24 | Baranagar State General Hospital | 104, A K Mukherjee Road, Nawapara Kolkata – 700090 | 033-28730916/25564893 |
25 | Behala Balananda Brahmachari Hospital & Research Center | 151 & 152 Diamond Harbour Road, Kolkata – 700034 | 24684060 / 24781687 / 7801 |
26 | Bellevue Clinic | 9, Dr. U. N. Brahmachari Street (Formerly Loudon Street), Kolkata – 700 017 | 033-23316925/ 7473 |
27 | Bellona Nursing Home And Diagonstic Centre Pvt Ltd | 51 A Diamond Harbour Road-700027 | 033-30901803/ 24487057 |
28 | Bharat Sevashram Sangha Hospital | 211 Rash Behari Avenue, Ballygunge, Kolkata 700019 | 91 33 24405178/ 2327, 24601381 |
29 | Bhattacharyya Orthopaedics and Related Research Centre | Narayanpur,Rajarhat, Gopalpur-700136 | 033-25732597 |
30 | Bidhannagar Sub Divisional Hospital | DD Block, Sector-1, Salt Lake City, Kolkata- 700064 | 033 – 23588348, 033 – 23373953 |
31 | Bijoygarh State General Hospital | Bijoy Garh Main Road, Near Canara Bank, Bijoygarh, Kolkata- 700032 | 033-24120070 |
32 | Binayak Multispeciality Hospital | 59 Kali Charan Ghosh Road, Kolkata-700050 | 033- 25329950/ 51 |
33 | Bindu Basini Nursing Home | 76, Madhusudan Banerjee Road, Birati-700051 | 033-25393892 |
SL NO | HOSPITAL’S NAME | ADDRESS | PHONE NOS |
34 | Bmri Hospital Pvt Ltd | 8 a -Diamondhurber Road, Thakurpukur-700063 | 033-24534078/79 |
35 | Brws Hospital | 10 Kendua Main Road, Garia, Kolkata-700087 | 033-24300603/ 24239851 / 24376732 |
36 | Calcutta Heart Research Centre | 114 B, Sarat Bose Road, Kolkata – 700029 | 24747613 / 2475747 / 24546083 / 6084 |
37 | Calcutta Lions Netra Niketan | 18/2/A/2, Uday Sankar Sarani,Golf Green-700095 | 033-24224637/24735009 |
38 | Capitol Nursing Home Pvt Ltd | 288/2, Apc Road-700009 | 033-23507272/4913 |
39 | Charnock Healthcare Institute, | Synthesis – Unit 4, CBD-1, Action Area-II, Major Arterial Road, New Town, Opp. Eco Park, Kolkata 700157 | (033) 40300300 / 842-000-333-0 / 842-000-333-3 |
40 | Charnock Hospital Pvt Ltd | Tegharia, Rajarhat, Kolkata-700059 | 033-25735707/ 25735708/ 55295710 |
41 | Charring Cross Nursing Home Pvt Ltd | 2 c, Motilal Basak Lane – 700054 | 033- 23598353/56/ 57/ 58 |
42 | Chittaranjan Cancer Institute | 37, S.P.Mukherjee Road,Kolkata-700 026 | 2475-9313/8057 (EPABX) :2476-5101,5102,5104 |
43 | Columbia Asia Hospital (Salt Lake) | Plot 193, Block-1B, sector-3, Salt Lake, Kolkata – 700091 | 033-39898969 |
44 | Cure Centre N H | 377/3 Prince A. Shah Road – 700068 | 033-24725962 |
45 | Currae Eye Care Hospital | 1 A, AJC Bose Road-700020 | 033-66306630 |
46 | Currae Eye Care Hospital | 106, Jessore Road, Madhyamgram-700129 | 033-66776677 |
47 | D M Hospitals Pvt Ltd | 113, James Long Sarani, Thakurpukur-700063 | 033-24536221/22 |
48 | Daffodil Nursing Home Pvt Ltd | 276 Canal Street, Kolkata-700048 | 033- 25346649/ 5681/ 4581 |
49 | Desun Hospital and Heart Institute | Desun More, Kasba Golpark, E M Bypass, Kolkata – 700107 | 033- 24434567 |
50 | Dewan Medicare | 48, Ambagan Road, Sukchar, B T Road-700115 | 033- 25235464/ 65 |
51 | Dilkush Nursing Home | 944, Dilkush Street-700017 | 033- 22404067/ 22404318/ 22803639 |
52 | Disha Eye Hospital | 4th floor, Pam Plaza, 169 Ras Behari Avenue-700029 | 033-24602820/ 1 |
53 | Disha Eye Hospital and Res Centre Pvt Ltd | 88, (63a) Ghosh Para Road, Barrackpore-700120 | 033-25947809/ 10 |
54 | Disha Eye Hospital Pvt Ltd | Rgm-17/201 Raghunathpur(N)-700059 | 033-25160095 |
55 | Disha Eye Hospital Pvt Ltd | 277/4 Bt Road, Sinthi, Ghoshpara-700036 | 033-25460261 |
56 | Disha Eye Hospital Pvt Ltd | 1090, Krishnanagar, Nabapally-700126 | 033-25240262 |
57 | Disha Eye Hospitals Pvt Ltd | 620 Dh Road, Behala Comm Estate Complex II-700034 | 033- 24472442 |
58 | Divine Nursing Home Pvt Ltd | 11A, Abinash Ch Banerjee Lane-700010 | 033-28950512/ 23505636/ 4765 |
59 | Dr Nihar Munsi Eye Foundation | 1/3 Dover Place, Kolkata-700019 | 033-24619844/ 8733/9769 |
60 | Dr. R. Ahmed Dental college | 114, Creek Lane, AJC Bose Road, Sealdah, Raja Bazar, Kolkata, | 033 22655771 |
61 | Dreamland Nursing Home | 2, Nayratna Lane-700004 | 033- 25553216/ 17/ 3245 |
62 | Drishti Eye Care Centre | 7, Narayan Roy Road, Near Barisha Pathghar-700008 | 033-24960048 |
63 | Dum Dum Eye Micro Surjery Centre | 5/1/1c, Kalicharan Seth Lane, Kolkata-700030 | 033- 25573022 |
64 | Dum Dum Municipal Specialised Hospital | 4, Harimohan Dutta Road-700028 | 033- 25471319 |
65 | Eco Hospital | III/1 Jessor Road, Barasat, Kolkata-700124 | 033-25626/ 854/25480111/ 25482452 |
66 | Ekbalpur Nursing Home P Ltd | 9 Ibrahim Road, Kolkata-700023 | 033- 0910909/ 24490455/24494514/24495151/2449 |
67 | Eskag Sanjeevan Pvt Ltd | P-48, Kshirod Vidyavinod Avenue, Baghbazar, Near Girish Mancha-700003 | 033-25545252/ 1818 |
68 | Eye Care Clinic and Nursing Home | A/13 Amarabati, Sodepur-700110 | 033- 25651057 |
69 | Five Point Micro SurgeryCentre Pvt Ltd | 227 APC Road, Shyambazar-700004 | 033-2530229 |
70 | Fortis Hospital Ltd | 730, Anandapur, E.M. Bypass Road, Kolkata, 700107 | 033-66284444 |
71 | Fortis Hospitals Ltd | 111A Rashbehari Avenue-700029 | 033-24633316/ 20 |
72 | Fortis Medical Centre | 2/7 Sarat Bose Road, Basundhara Building-700020 | 033- 4754320/ 4096 |
73 | Gardenreach State General Hospital | badartala, near bus no 12 stand, Kolkata- 700044 | 033-24894040 |
74 | Gd Hospital and Diabetes Institute | 139 a, Lenin Sarani – 700013 | 033- 22255030 / 31/ 32/ 33 |
75 | Genesis Hospital | Rash Behari Avenue Connector Road, Sector C, East Kolkata Township, Kolkata- 700107 | 033 24424242 |
76 | Green View Nursing Home | Bt Road, Dhankal Bus Stop, Panihati-700114 | 033-30626386 |
77 | Health Care Centre | 88 Jessore Road, Nagerbazar, Kolkata -700074 | 033- 25518282 |
78 | Health Care Nursing Home | Block-A, P677, Lake Town-700089 | 033-25345181/ 25212782 |
79 | Health Point | 21P Pandit Street- 700025 | 033-30585842/ 30585843 |
80 | Hindusthan Health Point Pvt Ltd | 2406, Garia Main Road, Hindusthan More-700084 | 033- 4359999 |
81 | ILS Hospitals | 1, Mall Road, Near Nager Bazar Flyover, Dum Dum, Kolkata-700080 | 033 40315000 |
82 | ILS Hospitals Salt Lake | Jeewan Satya, Dd-6, Salt Lake City-700064 | 033- 40206500 |
83 | Implants Better Sight Centre Pvt Ltd | 13a Colonel Biswas Road- 700019 | 033- 22800516 |
84 | Institute of Neurosciences | 185/1 Ajc Bose Road-700017 | 033-22867094/ 95/ 96 |
85 | Iris Hospital | 82/1Raja Sc Mullick Road-700047 | 033- 66096000 |
86 | Islamia Medical Institute | 94, New Park Street, Kolkata- 700017 | 033- 22806487 |
87 | James Long Clinic Pvt Ltd | 33 James Long Sarani, Kolkata-700034 | 033- 24453778 |
88 | Kasturi Medical Centre Pvt Ltd | Diamond Harbour Road, 3a Bus Stand, Joka-700104 | 033-24676870/ 24672609 |
89 | Kothari Medical Centre | 8/3 Alipore Road, (Opposite to Alipore Zoo), Kolkata 700027 | 033-40127000 |
90 | KPC Medical College and Hospital | 1F, Raja Subodh Chandra Mullick Road,Jadavpur, Kolkata 700032 | 033-30016100/ 156 |
91 | Labbaik Medical Centre | 40 Kavi Md Iqbal Road- 700023 | 033- 24491966/ 24480645 |
92 | Mayfair Hospital, B.T Road | 34/1a, Cossipore: B T Road, Kolkata-700002 | 91 033 25326746 |
93 | Medica Superspeciality Hospital | 127 Mukundapur, E.M Bypass, Kolkata – 700099 | 6460 4260 / 4262 / 2426 4967 / 66520000 |
94 | Medical College & Hospital Kolkata | 88, College Street, Kolkata – 700072 | 24512644 |
95 | Nil Ratan Sarkar Medical College and Hospital | 138, AJC Bose Road, Kolkata – 700014 | 033-22653333, 22441330 |
96 | North City Hospital & Neuro Institute [ Ultadanga ] | 73, Hudco Crossing Ultadanga, Bagmari Rd, Kolkata-700054 | 033 23211102 |
97 | Park Clinic | 4, Gorky Terrace, Acharaya Jagadish Chandra Bose Road, Kolkata- 700017 | 033 22801986 |
98 | Peerless Hospital & B K Roy Research Centre | Mail 360 Panchasayar, Kolkata – 700094 | 24622394 / 2462 / 0071 / 0072 / 0073 / 0766, 9924622462 (24 X 7 Helpline) |
99 | Phoenix Hospital & Diagonistic Centre Pvt. Ltd | 2 No, Motilal Colony, Nirmal Sengupta Sarani Airport, Kolkatta-700081 | 033 2512 8114, 2512 5825, 2512 7825, 9143321492 |
100 | Priyamvada Birla Aarvind Eye Hospital | 10 Loudon Street, Kolkata, West Bengal 700017 | 033 22894343 |
101 | R.G.Kar Medical CollegeCalcutta National MedicalCollege | 1, Khudiram Bose Sarani, Kolkata- 700004 | 033-25557656, 25434557 |
102 | Rabindranath Tagore International Institute of Cardiac Sciences (RTIICS) | 124, Mukundapur, E.M.Bypass, Near Santoshpur Connector, Kolkata – 700099 | 24364000 / 30014000 |
103 | Renaissance Hospital Private Limited | V.I.P. Road, Near Haldiram Prabhuji, Sri Ram Nagar, Teghoria, Kolkata- 700157 | 033 40144014 |
104 | RSV Hospital, Tollygounge | 40, Deshpransasmal Road, Tollygunge Phari, Kolkata- 700033 | 033 30013000 |
105 | Ruby Hospital | Kasba Golpark, E M Bypass, Kolkata – 700107 | 24426091 / 39871800 |
106 | S.S.K.M. Medical College | A.J.C. Bose Road, Kolkata -700020 | 033 2223- 6026 / 6242/1615/9735/6180/9692/8922 |
107 | Sankara Nethralaya | 147, Mukundapur, E M Bypass, (Near Purva Jadavpur Thana), Kolkata – 700099 | 44013000 |
108 | Shahid KhudiramBose Hospital | Barrackpore Trunk Rd, Rathtala, Adarsh Pali Para, Belgharia, Kolkata- 700058, | 033 25443435 |
109 | Shree Aurobindo Seva Kendra | 1H, Gariahat Road (S), Jodhpur Park, Kolkata- 700068 | 033 40171717 |
110 | Shree Vishudhanand Sarswati Marwari Hospital | 118, Raja Ram Mohan Roy Sarani, Kolkata-700009 | 033 30612200 |
111 | Silverline Eye Hospital | 396, Prince Anwar Shah Road, Near Hazratbal Masjid, Lake Garden, Kolkata-700045 | 033 24736940 |
112 | South Suburban Hospital | 67, Diamond Harbour Road Kolkata Kolkata, Kolkata – 700038 | 033 – 23967333, 23980275 |
113 | Sterling Hospital | 55/1, KC Bose Rd, Bhupen Bose Avenue, B.B.Rd, Hati Bagan, Shyambazar, Kolkata- 700004 | 033 25301314 |
114 | Susrut Eye Foundation & Research Centre | HB-36/A/1, Sec.-III, Salt Lake City, Kolkata-700106 | 033 23580201 |
115 | Tata Medical Center | 14 MAR(E-W), New Town, Rajarhat, Opp New Town Police Station, Kolkata- 700156 | 033 66057000 |
116 | Thakurpukur Cancer Research Hospital | Mahatma Gandhi Road, Thakurpukur, Kolkata – 700063 | 24532781 / 2782 / 2783 / 24678001 / 24678003 |
117 | Westbank Hospital | Andul Road, Mourigram, Howrah- 711109 | 033 26448888 |
118 | Wockhardt Hospital & Kidney Institute | 111A, Rash Behari Avenue, Kolkata – 700029 | 24633318 / 3319 , 24633320 (24 X 7 Helpline) |
119 | Woodlands Hospital | 8/5, Alipore Road, Kolkata – 700027 | 24567075 / 7076 / 7077 / 7078 – 89, 1800 345 9000 (24 X 7 Helpline) |
Glycemic Index ( গ্লাইসেমিক সুচক )
যাদের শরীরের রক্তে চিনির মাত্রা বেশি থাকে তাদের কার্বোহাইড্রেট কম খেতে বলা হয় । কিন্তু কার্বোহাইড্রট তো খেতেই হবে । তাহলে কোন কার্বোহাইড্রট খাবো। প্রতেক দিনের ক্যালরির প্রায় ৪৫ থেকে ৬৫ ভাগ আসা উচিত কার্বোহাইড্রেট থেকে । কার্বোহাইড্রেট থেকে আমরা এনার্জি বা ক্যালোরি পাই যা আমাদের কোষের শক্তি, দৈহিক তেজ, কর্মক্ষমতা,তাপ উত্পাদন ও চর্বি গঠন বাড়াতে সাহায্য করে ।এই জাতীয় খাবারই আমাদের দেহ গঠন এবং দেহ সংরক্ষণের প্রধান উপাদান । প্রতি ১ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট আমাদের ৪.১ ক্যালোরি দেয় । যখন আমরা কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার খাই ,আমাদের শরীর কার্বোহাইড্রেট থেকে চিনি ও শ্বেতসার ভেঙ্গে শর্করা বা Glucose তৈরী করে যেটা রক্তের সাথে মিশে যায় আর তন্তু শরীর থেকে বাইরে বেড়িয়ে যায় হজম না হয়ে ।
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index বেশি থাকে, সেইসব কার্বোহাইড্রেট রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় মানে তাড়াতাড়ি শরীরেBlood Sugar এর মাত্রা বেড়ে যায়। আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index কম বা মাঝারি থাকে তারা রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না । তাই যাদের শরীরেBlood Sugar সাধারনের থেকে বেশি থাকে তাদের যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index বেশি থাকে, তা কম খাওয়া ভাল ।আর একটা কাজও করা যেতে পারে – গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বেশি কার্বোহাইড্রেট আর গ্লায়সেমিক ইনডেক্স কম কার্বোহাইড্রেট একসাথে মিশিয়ে খেলে তাতে গ্লায়সেমিক লোড কম হবে । কিন্তু কারও শরীরে যদি হঠাৎ করে Blood Sugar কমে যায়, তাহলে তাড়াতাড়ি High Glycemic Index যুক্ত খাবার খাওয়ানোই ভাল। Glycemic Index তিন প্রকারের হয় ।
Low, Medium and High –
Low GI | 55 or less |
Medium GI | 56–69 |
High GI | 70 and above |
এবার জানতে হবে কোন খাবারের কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কতটা আছে ।নীচে অনেকগুলি কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবারের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্সের মাত্রা কত তা দেওয়া হল ।
FOOD | Glycemic index (glucose = 100) |
HIGH-CARBOHYDRATE FOODS | |
White wheat bread* | 75 ± 2 |
Whole wheat/whole meal bread | 74 ± 2 |
Specialty grain bread | 53 ± 2 |
Unleavened wheat bread | 70 ± 5 |
Wheat roti | 62 ± 3 |
Chapatti | 52 ± 4 |
Corn tortilla | 46 ± 4 |
White rice, boiled* | 73 ± 4 |
Brown rice, boiled | 68 ± 4 |
Barley | 28 ± 2 |
Sweet corn | 52 ± 5 |
Spaghetti, white | 49 ± 2 |
Spaghetti, whole meal | 48 ± 5 |
Rice noodles† | 53 ± 7 |
Udon noodles | 55 ± 7 |
Couscous† | 65 ± 4 |
BREAKFAST CEREALS | |
Cornflakes | 81 ± 6 |
Wheat flake biscuits | 69 ± 2 |
Porridge, rolled oats | 55 ± 2 |
Instant oat porridge | 79 ± 3 |
Rice porridge/congee | 78 ± 9 |
Millet porridge | 67 ± 5 |
Muesli | 57 ± 2 |
FRUIT AND FRUIT PRODUCTS | |
Apple, raw† | 36 ± 2 |
Orange, raw† | 43 ± 3 |
Banana, raw† | 51 ± 3 |
Pineapple, raw | 59 ± 8 |
Mango, raw† | 51 ± 5 |
Watermelon, raw | 76 ± 4 |
Dates, raw | 42 ± 4 |
Peaches, canned† | 43 ± 5 |
Strawberry jam/jelly | 49 ± 3 |
Apple juice | 41 ± 2 |
Orange juice | 50 ± 2 |
VEGETABLES | |
Potato, boiled | 78 ± 4 |
Potato, instant mash | 87 ± 3 |
Potato, french fries | 63 ± 5 |
Carrots, boiled | 39 ± 4 |
Sweet potato, boiled | 63 ± 6 |
Pumpkin, boiled | 64 ± 7 |
Plantain/green banana | 55 ± 6 |
Taro, boiled | 53 ± 2 |
Vegetable soup | 48 ± 5 |
DAIRY PRODUCTS AND ALTERNATIVES | |
Milk, full fat | 39 ± 3 |
Milk, skim | 37 ± 4 |
Ice cream | 51 ± 3 |
Yogurt, fruit | 41 ± 2 |
Soy milk | 34 ± 4 |
Rice milk | 86 ± 7 |
LEGUMES | |
Chickpeas | 28 ± 9 |
Kidney beans | 24 ± 4 |
Lentils | 32 ± 5 |
Soya beans | 16 ± 1 |
SNACK PRODUCTS | |
Chocolate | 40 ± 3 |
Popcorn | 65 ± 5 |
Potato crisps | 56 ± 3 |
Soft drink/soda | 59 ± 3 |
Rice crackers/crisps | 87 ± 2 |
SUGARS | |
Fructose | 15 ± 4 |
Sucrose | 65 ± 4 |
Glucose | 103 ± 3 |
Honey | 61 ± 3 |
Blood Sugar কোন রোগ নয়, কিন্তু অনেকদিন ধরে থাকলে বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে । তাই এটাকে নিয়ন্ত্রন রাখা খুবই জরুরী । নিজের শরীর ভাল রাখতে নিজেই ঠিক করে ফেলুন কি খাবেন , কেন খাবেন আর কতটা খাবেন ।
ডিম কেন খাব? / হাঁসের ডিম খাব না মুরগির ডিম খাব? /দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব ?/তাজা ডিম চিনবো কি করে ?

কেন খাব– ডিম
- এক কথায় ডিমকে বলা যেতে পারে – পাওয়ার হাউস অব নিউট্রিশন অর্থাৎ শক্তিতে ভরপুর । একটি বড় ডিম থেকে আমরা অনেক নিউট্রিয়েন্টস (পুষ্টি উপাদান) পেতে পারি। যেমন : ভিটামিন বি৬, বি১২, রিবোফ্লাভিন, ফলিক এসিড, আয়রন, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন এ প্রভৃতি।স
- হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপের ভয়ে অনেককে দেখেছি ডিমের কুসুম বাদ দিয়ে সাদা অংশটা খেতে। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন-এর মতে ডিমের কুসুমের মধ্যে তেমন কোন ঝুঁকি নেই। প্রতি সপ্তাহে ৫ থেকে ৬ টি ডিম বরং বিভিন্ন শারীরিক ঝুঁকি কমায়। হৃদরোগের সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্সফ্যাট। বিজ্ঞানীদের মতে, আমাদের শরীরের প্রয়োজনীয় কোলেস্টেরল মাংস ও ডিম থেকে আমরা পেতে পারি। ডিম টেসটোসটেরন হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে এবং মাংসপেশি গঠনের সহায়ক। খাবারের কোলেস্টেরল মূলত রক্তের কোলেস্টেরল বাড়ানোর মূলে নয় বরং সম্পৃক্ত চর্বি ও ট্রান্সফ্যাট থেকেই রক্তে কোলেস্টেরল বৃদ্ধি পায়। ইউনিভার্সিটি অব কানেকটিকাটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের কুসুম বরং রক্তে খারাপ চর্বি বা এলডিএল কমাতে ও ভালো কোলেস্টেরল বা এইচডিএল বাড়াতে সাহায্য করে।
- ডিম হলো প্রাণিজ প্রোটিনের মধ্যে আদর্শ প্রোটিন। এখানে সব ধরনের পুষ্টির উপাদান রয়েছে।
- ছোট্টো একটা ডিম কিন্তু হাজারো ভিটামিনে ভরা। এর ভিটামিন বি ১২ খাবারকে এনার্জি বা শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সাহায্য করে।
- ডিমে আমরা পাই ভিটামিন এ যা আমাদের দৃষ্টিশক্তিকে উন্নত করে। ডিমের কেরোটিনয়েড, ল্যুটেন ও জিয়েক্সেনথিন বয়সকালের চোখের অসুখ ম্যাকুলার ডিজেনারেশন হওয়ার সম্ভাবনা কমায়। এই একই উপাদান চোখের ছানি কমাতেও সাহায্য করে।
- ডিমে রয়েছে ভিটামিন ডি যা পেশীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
- ডিমে আছে ভিটামিন ই যেটা কোষ এবং ত্বকে উত্পন্ন ফ্রি রডিক্যাল নষ্ট করে দেয় এবং স্কিন ক্যানসার প্রতিরোধ করে।
- ডিমের সবচেয়ে বড়ো গুণ এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা যায় শরীর থেকে দিনে প্রায় ৪০০ ক্যালোরি কমাতে পারে সকালে একটি ডিম খাওয়া। তার মানে মাসে ওজন কমার পরিমাণ প্রায় তিন পাউন্ড। সমীক্ষা বলছে, ৬৫% বডি ওয়েট, ১৬% বডি ফ্যাট, ৩৪% কোমরে জমে থাকা মেদের পরিমাণ কমাতে পারে ডিম!
- ডিমে আছে আয়রন, জিঙ্ক, ফসফরাস। মেনস্ট্রুয়েশনের জন্য অনেক সময় অ্যানিমিয়া দেখা দেয়। শরীর তাড়াতাড়ি ক্লান্ত হয়ে পড়ে। ডিমের মধ্যে থাকা আয়রন এই ঘাটতি মেটাতে পারে সহজেই। জিঙ্ক শরীরের ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। আর ফসফরাস হাড় ও দাঁত মজবুত করে।
- প্রত্যেক নারীর শরীরে রোজ কমপক্ষে ৫০ গ্রাম প্রোটিনের দরকার। একটি ডিমে থাকে ৬.৫ গ্রাম প্রোটিন। সুতরাং চাঙা থাকতে রোজ ডিম খেতেই পারেন।
- ২০০৩ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় একটি সমীক্ষায় দেখিয়েছে অ্যাডোলেশন পিরিয়ডে বা পরবর্তী কালে সপ্তাহে ৬টি করে ডিম নিয়মিত খেলে প্রায় ৪৪% ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধ করা সম্ভব৷ সঙ্গে এটাও জানিয়েছে, ডিম হৃৎপিণ্ডে রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না। ফলে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনাও অনেকটাই কম থাকে।
- শরীর সুস্থ রাখার আরও একটি জরুরি উপাদান কোলাইন। কোলাইনের ঘাটতি ঘটলে অনেক সময় কার্ডিওভাসকুলার, লিভারের অসুখ বা নিউরোলজিক্যাল ডিজ-অর্ডার দেখা দিতে পারে। একটি ডিমে প্রায় ৩০০ মাইক্রোগ্রাম কোলাইন থাকে। যা কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেম, স্নায়ু, যকৃত্ ও মস্তিষ্ককে নিয়ন্ত্রণে রাখে।
- নতুন সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, ডিম কোলেস্টেরল বাড়ায় না। দিনে দুটো ডিম শরীরের লিপিড প্রোফাইলে কোনও প্রভাব ফেলে না। বরং ডিম রক্তে লোহিতকণিকা তৈরি করে।আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যাদের রক্তে কোলেস্টেরল ও এলডিএলের মাত্রা ঠিক থাকে, তাদের জন্য দৈনিক কোলেস্টেরল গ্রহণের পরিমাণ ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিগ্রাম।
- প্রোটিন শরীর গঠন করে। আর প্রোটিন তৈরিতে সাহায্য করে অ্যামিনো অ্যাসিড। একুশ ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড এই কাজে প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু আমাদের শরীর অতি প্রয়োজনীয় নয়টি অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করতে পারে না। তার জন্য আমাদের প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। খাবারের মধ্যে এই প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট হল ডিম। যা ঝটপট শরীরে প্রোটিন উত্পাদন করতে পারে।
- নখ ভেঙে যাচ্ছে চটপট? নাকি চুলের স্বাস্থ্য একেবারেই বেহাল? চোখ বন্ধ করে রোজ ডিম খেয়ে যান। ডিমের মধ্যে থাকা সালফার ম্যাজিকের মতো নখ আর চুলের মান উন্নত করবে।
- ডিমে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সুস্থতার জন্য জরুরি।
- একটি ডিমের মধ্যে ৭০ থেকে ৭২ কিলোক্যালসিয়াম পাওয়া যায়। ডিমের প্রোটিন পুরোটাই শরীরের কাজে লাগে। এটি মাংসপেশির গঠনে সাহায্য করে। ডিম থেকে অনেক কম কার্বোহাইড্রেট আসে। তাই একটি সিদ্ধ ডিম কুসুমসহ প্রোটিনের উৎস হিসেবে গ্রহণ করলে সেটি ওজন কমাতে অনেক সাহায্য করে।
- যাদের স্বাভাবিকের চাইতে কম থাকে ব্লাড প্রেসার তাদের জন্য ডিম খুবই উপকারী।
- ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল জানিয়েছে, ডিমে কোনও ক্ষতির সম্ভাবনা তো নেই-ই, উপরন্তু নানা ধরনের শারীরিক সমস্যার সমাধান হিসেবে কাজ করে ডিমে থাকা প্রোটিন, রিবোফ্লোবিন, ভিটামিন বি১২, ফলেট ও ভিটামিন ডি। তাই হৃদরোগের ভয়ে ডিম না খাওয়া একদমই অনুচিত।৩) কে ব
কোনটা খাব—হাঁসের ডিম না মুরগির ডিমমাত্র
- মুরগির ডিমের তুলনায় অনেকসময় হাঁসের ডিম আকারে বড় হয়। আকারে বড় হওয়ার কারণে তাই হাঁসের ডিমের কুসুমও অনেকসময় বড় হয়। তাই যদি বেশি কুসুম খেতে চান বা আপনার শরীরে বেশি প্রোটিনের প্রয়োজন হয় তাহলে হাঁসের ডিম খান।
- ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিম থেকে ১৮৫ কিলো ক্যালরি এনার্জি পাওয়া যায়। যেখানে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিম থেকে পাওয়া যায় ১৪৯ কিলো ক্যালরি এনার্জি।
- ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.৬৮ গ্রাম, ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ ৩.১ গ্রাম। হাঁসের ডিমে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ মুরগির ডিমের থেকে ৫০ শতাংশ বেশি।
- অ্যামাইনো অ্যাসিডের পরিমাণ হাঁসের ডিমে কিছুটা বেশি হলেও থ্রিওনিন, আইসোলিউসিন, ট্রিপটোফ্যান, লিউসিন, মিথিওনিন, লাইসিন, কিস্টিন, টাইরোসিন, ফেনিলালানিন, ভ্যালাইন, সেরিন, গ্লাইসিন, প্রোলিন, অ্যাসপারটিক অ্যাসিড, হিস্টিডিন, অ্যালানিন ও আর্জিনিন সব ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিডই মজুত মুরগির ডিমেও।
- ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে যেখানে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৮৮৪ মিলিগ্রাম, সেখানে ১০০ গ্রাম মুরগির ডিমে কোলেস্টেরলের পরিমাণ ৪২৫ মিলিগ্রাম। তাই হার্টের সমস্যা থাকলে অবশ্যই দূরে থাকুন হাঁসের ডিম থেকে। যারা হাই প্রোটিন ডায়েট মেনে চলতে চান তারা কুসুম ছাড়া হাঁসের ডিমের সাদা অংশ খেতে পারেন।
- ১০০ গ্রাম হাঁসের ডিমে ক্যালসিয়াম ৭০ মিলিগ্রাম, লৌহ ৩ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২৬৯ মাইক্রোগ্রাম। অন্যদিকে মুরগির ডিমে ক্যালসিয়াম ৬০ মিলিগ্রাম, লৌহ ২ দশমিক ১ মিলিগ্রাম, ভিটামিন এ ২৯৯ মাইক্রোগ্রাম।
- তুলনামূলক বিবেচনায় দেখা যাচ্ছে, হাঁসের ডিমে খাদ্যশক্তি, আমিষ, চর্বি, শর্করা, লৌহ ও ক্যালসিয়ামের মুরগির ডিমের তুলনায় সামান্য বেশি থাকে। আর মুরগির ডিমে হাঁসের ডিমের তুলনায় ভিটামিন এ এবং ভিটামিন বি২ সামান্য বেশি থাকে। চুলচেরা বিচারে হাঁসের ডিমকেই বেশি পুষ্টিমান বলা যেতেই পারে কিন্তু সাধারণভাবে হাঁস ও মুরগির ডিম উভয়কেই সমান পুষ্টিসম্পন্ন বলাই ঠিক ।
- তাই খাদ্যবিজ্ঞানীদের মতে, হাঁস এবং মুরগি উভয় ডিমেরই পুষ্টিমূল্য সমান। একই ওজনের একটি হাঁসের ডিম ও একটি মুরগির ডিমের পুষ্টিমান প্রায় একই রকম।নডি। যা পেশীর কমাতে সাহায্য
দেশি না পোলট্রি কোন ডিম খাব
দেশি মুরগির ডিমের কুসুমের রঙ গাঢ় হলুদ আর পোলট্রির ডিমের কুসুমের রঙ ফিকে হলুদ তাই হয়ত একটা গুনগত বিচারের ধারনা জন্মেছে কারণটা হল পোলট্রির মুরগি ,দেশি মুরগির মতো বাগানে চরে কচিপাতা – লতা না খেয়ে তৈরি করা খাবার (mash) খায় । তাই এর ডিমে ক্যারোটিন না থেকে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ থাকে যার জন্য কুসুমের রঙ গাঢ় হলুদ না হয়ে ফিকে হলুদ হয় । কারণ ক্যারোটিনের রঙ হলুদ এবং ভিটামিন এ র রঙ সাদা । ক্যারোটিন হল ভিটামিন এ র অগ্রদুত । যেটা আমরা খেলে পরে সহজেই যকৃতে ভিটামিন এ তে রূপান্তরিত হয়। তাই খাদ্যগুণের দিক দিয়ে বিচার করলে দু-রকম ডিমই সমান ।
তাজা ডিম চিনবো কি করে
আমরা সবাই জানি যে ডিমের কঠিন সাদা স্তরের (খোলা) ভেতরেই থাকে সাদা অ্যালবুমিন আর হলুদ রঙা কুসুম । তাজা ডিমের মধ্যে কোন বায়ুকোষ থাকে না , ঠাণ্ডা হলে ধীরে ধীরে ডিমের ভিতরে অ্যালবুমিন ও কুসুম সামান্য সঙ্কুচিত হয়ে বায়ুকোষের সৃষ্টি করে । তাজা ডিমের অ্যালবুমিন যথেষ্ট ঘন থাকে । ফলে হাতে করে তাজা ডিম ঝাঁকালে ভেতরে কিছু নড়ছে বলে মনে হয়না । কারণ ঘন অ্যালবুমিনের মধ্যে কুসুমের নড়াচড়া করার সুযোগ কম । আলোর সামনে ভালো ডিম ধরলে শুধু একটা লালচে আভাই দেখা যাবে । কিন্তু ডিম পুরনো বা পচা হলে তার অ্যালবুমিন পাতলা হয়ে যায় । কুসুমও আকারে অনেক সময়ই বড় এবং ঘন হয় । এক্ষেত্রে হাতে নিয়ে ডিম ঝাঁকালে বোঝা যাবে ভেতরে কিছু একটা নড়ছে । বাতির সামনে এধরণের ডিম ধরলে তার মধ্য দিয়ে আলো , ভালো ডিমের মতো সব জায়গা দিয়ে সমানভাবে ভেদ করে আসতে পারবে না – পাতলা অ্যালবুমিনের তুলনায় গাঢ় কুসুমে বাঁধা পাবে বেশি । ফলে ডিমের মধ্যে একটা জায়গায় তুলনামূলকভাবে অন্ধকার একটা ছায়া দেখা যাবে । তাজা ডিম পরীক্ষা করার এটাই আমাদের বহু পরিচিত মোমবাতি পরীক্ষা ।
হাসি

অনেকদিন আগে এক বহুল প্রচারিত দৈনিকে দেখেছিলাম একটা সংবাদ – “ নুসুবাবু হেসেছেন “। নুসুবাবু তখন ছিলেন এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত । একজন গম্ভীর মানুষ হেসেছেন সেটাই ছিল খবর। যদিও খবরের কাগজের লোকদের কাছে সেটা ছিল তোষামোদ , কিন্তু আজ আমার মনে হয় এই খবরের মুল্য অনেক। সকালবেলায় কোন হাসি মুখ দেখা , সারাদিনের এনার্জি গ্রহণ করার মতো । হাসি আসল বা নকল যাই হোক না কেন তার মুল্য অসীম । আজকাল আমরা সবাই জানি যে লাফিং থেরাপি বিভিন্ন রোগের এক বড় চিকিৎসা পদ্ধতি । ভাল থাকতে যার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয় না কিন্তু অনেক অর্থ ব্যায়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারে প্রতিদিনের এই প্রাণখোলা হাসি । দেখা যাক একটু হাসির কি উপকারিতা আছে –
- মুখের প্রতিটি মাড়ির দারুন ব্যায়াম হয় । মাড়ির সাথে সাথে হয় সমস্ত মুখের ব্যায়াম। তারফলে বাড়ে মুখের সৌন্দর্য ।
- হাসি,সম্পর্ক ভাল রাখার একটা বড় হাতিয়ার । যে কোন ধরণের রাগের উপশম দূর করতে একটা সুন্দর হাসির উপকারিতা অনেক বেশি।
- বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা মন খুলে হাসতে পারেন তাদের হার্ট ভালো থাকে , যারা কম হাসেন তাদের থেকে।
- আমেরিকার ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ক্যান্সার রোগীদের হাসানোর জন্য বিশেষ থেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। যা একজন ক্যানসার রোগীর দেহের ব্যথা দূর করে ও মন ভালো রাখে।
- আমরা যখন হাসি তখন আমরা ভুলে যাই আমাদের রাগ বা মানসিক চাপের কথা । আমরা জানি যে মানসিক চাপ- ই বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে । তাই মানসিক চাপ থেকে শরীরকে বাঁচাতে আমাদের হাসির খুবই প্রয়োজন ।
- হাসি আমাদের মস্তিষ্কের এনডোরফিন (হরমোন) নামের একটি কেমিক্যাল নিঃসরণ করে থাকে যা আমাদের শরীরে কোন ব্যথা থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।তাই বলা হয় আমরা যত বেশি হাসবো শরীরের ব্যথা ততবেশি কমে যাবে এবং শরীর একটা ভালো থাকার অনুভূতি দেবে ।
- হাসি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে । আমরা যখন হাসি তখন আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এবং বেশি অক্সিজেন গ্রহণের জন্য শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- বিশেষজ্ঞদের মতে সন্ধ্যায় যত বেশি করে হাসা যাবে রাতে তত ভালো ঘুম হবে। আর রাতে ভাল ঘুমানোর জন্য যদি কোন মজার গল্পের বই পড়া যায় তাহলে অবধারিত ভাল ঘুম আসবে ।
- নেতিবাচক মনোভাব এবং মানসিক চাপের কারণে শরীরে একধরণের কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন ঘটায় যা আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে তোলে এবং আমরা অসুস্থবোধ করি। কিন্তু প্রাণখোলা হাসি আমাদের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে তোলে। এতে করে আমাদের শরীর রোগ প্রতিরোধ করতে পারে এবং আমরা সুস্থ থাকি ।
- যতবার আমরা প্রাণখোলা হাসি হাসবো, ততবার ছোটখাটো হলেও বেশ ভাল একটা ব্যায়াম করা হবে আর শরীর করবে তার জন্য পরিশ্রম তাহলে হবে ক্যালোরি ক্ষয় । বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী মাত্র ১৫ মিনিটের প্রাণ খোলা হাসি আমাদের ২০-৪০ ক্যালোরি পর্যন্ত ক্ষয় করতে পারে ।
- বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে হাসলে এন্ডোরফিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি রক্তচাপ ও কমে যায়। রক্তচাপ কমা মানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমা । তাই বলা যেতে পারে যে হাসি জীবন রক্ষা করে ।
- হাসলে ফুসফুসের আকৃতি বৃদ্ধি পায়। ফলে ফুসফুস ধারন করতে পারে অনেকটা বেশি অক্সিজেন। একবার হাসলে শরীরের ছোটখাটো হলেও বেশ ভাল একটা ব্যায়াম হয়ে যায়। গবেষকদের মতে একবার হাসলে মানুষের শরীরের ০.০০৩ শতাংশ ক্যালোরি খরচ হয়। ফলে কমে যায় ওজনও।
- হাসি পুরো শরীরকে স্নিগ্ধ করে তোলে। একটি ভালো, প্রাণখোলা হাসি শারীরিক উত্তেজনা এবং চাপ থেকে শরীরকে মুক্তি দেয় । শরীরের পেশীগুলিকে 45 মিনিট অবধি নিরুত্তেজ করে রাখতে পারে ।
- তাইতো শরীর আর মন সুস্থ ও ভাল রাখার সবচেয়ে মিষ্টি ও শ্রেষ্ঠ চাবিকাঠি হল সারাদিনের প্রাণখোলা হাসি ( সেটা আসল বা নকল যাই হোক না কেন ) ।
গোলমরিচ / গোলমরিচের ইতিহাস /কি কি আছে গোলমরিচে /গোলমরিচ ঝাল হয় কেন / গোলমরিচের উপকারিতা/গোলমরিচ ব্যবহারের সাবধানতা

প্রতিদিন আমরা আমাদের খাবারের স্বাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের মশলা ব্যবহার করি। কোন মশলার কি উপকারিতা বা অপকারিতা জানলে খাবারের সাথে সেই মশলার ব্যবহার আমরা জেনে বুঝে করতে পারি। কদিন আগে আমাদের আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল হলুদ । আর আজ – গোলমরিচ । কারন গোলমরিচকে বলা হয় মশলার রাজা । গোল মরিচের ইংরেজি নাম Black pepper। এর Pepper শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ভাষার “পিপালী” শব্দ থেকে, যার অর্থ দীর্ঘ মরিচ। এখান থেকে উদ্ভূত হয়েছে লাতিন ভাষার piper যা মরিচ ও গোল মরিচ দুটোকেই বোঝানোর জন্য রোমানরা ব্যবহার করতো।
গোলমরিচের ইতিহাস – প্রথম এটা পাওয়া যায় আমাদের দক্ষিণ ভারতে। পরে এর উৎপাদন বিভিন্ন গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ছড়িয়ে পরে। আজ ভিয়েতনাম এর সর্বাধিক উৎপাদক । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বহু বছর ধরে ব্যবহৃত হচ্ছে এই গোলমরিচ। একসময় গ্রীসে মুদ্রাহিসাবেও এর ব্যবহার ছিল। একে অনেকজায়গায় Black Gold হিসাবেও ডাকতো । সারা বিশ্বে মশলাপাতির বাণিজ্য ক্ষেত্রে গোলমরিচ এক বড় স্থান করে নিয়েছিল ।তাই বহুযুগ ধরে ভারতবর্ষের উপর নজর ছিল বিশ্বের বনিক সম্প্রদায়ের ।
কি কি আছে গোলমরিচে – গোলমরিচে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার ,প্রোটিন , নেই চর্বি এবং কোলেস্টেরল । রয়েছে B2,C,K,B6 ভিটামিন। মিনারেলের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ম্যাংগানিজ, জিংক, ক্রোমিয়াম ।
গোলমরিচ ঝাল হয় কেন – পিপারিন নামক এক রাসায়নিক উপাদান থাকে বলে গোলমরিচে ঝাল হয়।
গোলমরিচের উপকারিতা
(১)হজমের সহায়ক-এর মধ্যে থাকা পিপারিন খাবার তাড়াতাড়ি হজম করতে খুব সাহায্য করে কারণ অন্ত্রে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিডের নি:সরন বাড়ায় গোলমরিচ।যেহেতু একটুখানি গোলমরিচ পাকস্থলী থেকে বেশি করে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বের করতে সাহায্য করে তারফলে খাবার তাড়াতাড়ি হজম হয় ।
(২) ক্যান্সার প্রতিরোধক- গোলমরিচের মধ্যে থাকা পিপারিন বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের থেকে আমাদের বাঁচাতে সাহায্য করে এবং ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গোলমরিচের মধ্যে থাকা প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ক্ষতিকারক ফ্রি রেডিকেলসে্র হাত থেকে আমাদের শরীরকে বাঁচানোর চেষ্টা করে ।ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে গোলমরিচ, তাই ক্যান্সার প্রতিরোধ করে গোলমরিচ।
(৩)ব্যাকটেরিয়ারোধী অ্যান্টিবায়োটিক- গোলমরিচ প্রাকিতিক ভাবে ব্যাকটেরিয়ারোধী এবং এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকাতে এটি একটি ভাল অ্যান্টিবায়োটিক হিসাবে কাজ করে।সর্দি, কাশি বা ঠাণ্ডা লাগলে , মধুর সাথে গোলমরিচ মিশিয়ে খেলে দারুন কাজ হয় । গলা ব্যাথা কমাতেও সাহায্য করে।
(৪) টক্সিন বের করে-আমরা জানি যে টক্সিন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকারক।গোলমরিচ শরীর থেকে টক্সিন ঘামের মধ্যে দিয়ে বের করিয়ে দিতে সাহায্য করে । ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকলেও গোলমরিচ কাজে দেয়।গ্যাস্ট্রিকের সমস্যাও দূর করে ।
(৫) সংরক্ষণের সুবিধা-গোলমরিচ অনেকদিন বাড়িতে ভালোভাবে সংরক্ষণ করা যায় , নষ্ট হয় না। প্রতিদিন খাবারের সাথে ব্যবহার করার কোন অসুবিধাই থাকে না ।
সাবধানতা
(১) গর্ভাবস্থায় ও বুকের দুধ দেওয়ার সমায় অতিরিক্ত মাত্রায় গোলমরিচ না নেওয়া ভাল ।
(২) ব্যবহারের সময় গোলমরিচের গুড়ো যাতে নাকে আর চোখে না পরে সেদিকে লক্ষ্য রাখা উচিৎ নাহলে জ্বালা করবে ।
উপসংহার –চর্বি আর কোলেস্টেরল ছাড়া উপকারী প্রায় সব জিনিষই আছে এই গোলমরিচে। এটা আমাদের শরীরকে বিভিন্ন রোগ থেকে প্রতিরোধ করে । সবচেয়ে বড় কথা এটা খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে তোলে এবং ব্যবহার করা খুব সোজা । তাই প্রত্যেক ঘরে ঘরে গোলমরিচের ব্যবহার হওয়া উচিৎ ।
মধু ও তার উপকারিতা / খাটি মধু চিনবো কি করে /খাঁটি মধু চেনার কিছু পরীক্ষা / সর্বশেষ সতর্কতা

মধু ও তার উপকারিতা –
আদিম কাল থেকে প্রাকৃতিক খাদ্য হিসেবে , মিষ্টি হিসেবে , সৌন্দর্য চর্চাতে , সর্বোপরি চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু। মধু সংরক্ষণে কোন প্রিজারভেটিভ(preservative) ব্যবহার করার দরকার হয় না । তাই নেই কোন মেয়াদ শেষের তারিখ(expiry date) । সবসময় ব্যবহার করা চলে । এছাড়া খাঁটি মধুতে কখন কটু গন্ধ থাকে না ।উপরের তালিকা থেকে এটা পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে যে মধুর মধ্যে ফ্যাট (Fat) ছাড়া Carbohydrates, Protein, Vitamins, Minerals ও জল (Water) সবই আছে যা আমাদের শরীরের জন্য দারুন ভাবে প্রয়োজনীয় । কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে যে সুগার আছে তা অপ্রক্রিয়াজাত যা সহজেই রক্তের সাথে মিশে যায়। আর যে ফাইবার আছে তা হজমে সাহায্য করে। ভিটামিনের মধ্যে আছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স আর ভিটামিন সি । মিনারেলসের মধ্যে আছে ক্যালসিয়াম, লোহা , ম্যাগনেসিয়াম , ফসফরাস , পটাসিয়াম , সোডিয়াম ও দস্তা । এককথায় বলা যায় মধু হলো ওষুধের ভাণ্ডার ।বাচ্চা জন্মগ্রহণের পর তাই হয়তো মুখে মধু দেওয়ার প্রচলন রয়েছে । সকাল বেলা খালি পেটে এক গ্লাস হালকা গরম জলে ১ বা ২ চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলে শরীরে ম্যাজিকের মতো কাজ হয় । আমাদের শরীরের জন্য মধুর উপকারিতা অনেক । দেখা যাক কি কি উপকারিতা আছে ।
- শরীরে শক্তি ও তাপ যোগায় (কারণ প্রচুর ক্যালোরি আছে)
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং হজমের সহায়তা করে (কারণ মধুতে রয়েছে ভিটামিন বি কমপ্লেক্স । পেটরোগা মানুষের জন্য মধু খুবই উপকারী ।)
- রোগ- প্রতিরোগের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে (কারণ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট সংক্রমনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মধু সাহায্য করে।)
- ওজন কমায় (কারণ মধুর নিজের চর্বি নেই, শরীরের চর্বি কমায়)
- ক্ষত সারায় (কারণ প্রাচীন কাল থেকে ক্ষত সারাতে ব্যবহৃত হয়ে আসছে মধু )
- কাশির ঘরোয়া ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয় (কারণ বাচ্চাদের জন্য অনেকদিন এর ব্যবহার হয়ে আসছে)
- প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ (কারণ রাতে ঘুমানোর আগে জলের সাথে খেলে মধু নিদ্রায় সাহায্য করে।)
- মুখ ও চামড়া পরিষ্কার করতে এবং সৌন্দর্য বিকাশে ব্যবহৃত হয় (কারণ প্রতিদিন মধু দিয়ে মুখ পরিষ্কার করলে Face Washer প্রয়োজন লাগবে না)
- তারুণ্য বজায় রাখে (কারণ মধু এনটি এজিং হিসাবে কাজ দেয় । পরিক্ষিত)
- রক্ত উৎপাদনে এবং পরিষ্কার রাখতে (কারণ এতে লোহা আছে)
- উচ্চ রক্তচাপ কমায় (কারণ এতে খারাপ কোলেস্টেরল নেই)
- গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তি পেতে (কারণ হজমের গোলমাল দূর করে বলে)
- মুখের ভিতরের স্বাস্থ্য রক্ষায় (কারণ দাঁত , মারি , ঠোটের স্বাস্থ্য বজায় রাখে )
- শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশে সাহায্য করে (কারণ প্রাকৃতিক জীবনী শক্তি আছে এর মধ্যে )
- ফুসফুসের রোগ ও শ্বাসকষ্ট সারাতে (কারণ মধু রক্ত পরিষ্কার ও উৎপাদন করে)
খাঁটি মধু চিনবো কি করে –
- ফ্রিজিং পরীক্ষাঃ – ফ্রিজে রাখলে খাঁটি মধু জমবে না কিন্তু ভেজাল মধু পুরোপুরি না জমলেও তলানিতে জমাট বাঁধবে ।
- পিঁপড়া পরীক্ষাঃ – যেখানে পিঁপড়ে যাতায়াত করে সেখানে ছোট্ট একটা কাগজে একটু মধু রেখে দিলে বোঝা যাবে মধু খাঁটি কিনা । ভেজাল মধু পিঁপড়ে খাবে কিন্তু খাঁটি মধুতে পিঁপড়ে আসবে না ।
- দ্রাব্যতা পরীক্ষা (১) – এক গ্লাস জলের মধ্যে এক চা চমচ মধু ফেলে ধীরে ধীরে নাড়ালে বোঝা যাবে মধু খাঁটি কিনা । ভেজাল হলে মধু জলের সাথে মিশে যাবে আর খাঁটি হলে ছোট ছোট পিণ্ডের আকার ধারন করবে ।
- দ্রাব্যতা পরীক্ষা (২) – এক গ্লাস জলের মধ্যে এক ড্রপ খাঁটি মধু ফেললে তা সরাসরি নিচে চলে যাবে কিন্তু ভেজাল মধু যাবে না ।
- শোষণ পরীক্ষাঃ – ব্লটিং পেপারে মধু ঢাললে বোঝা যাবে মধু খাঁটি কিনা । ভেজাল হলে ব্লটিং পেপার ভিজিয়ে দেবে আর খাঁটি হলে ব্লটিং পেপার টেনে নেবে ।
সতর্কতা –
- বেশি পুষ্টির আশায় বেশি করে মধু খাওয়া ঠিক নয় ।
- একদম ছোট বাচ্চাদের মধু খাওয়ানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ ।
- যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের অবশ্যই মধু খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিৎ ।
What you can do to reduce the risk of Cancer.ক্যান্সারের ঝুঁকি কি করলে কম হয় ? এত দূষণ থাকা সত্বেও আমাদের দেশে ক্যান্সার কম কেন? হলুদ কি ক্যানসার প্রতিরোধ করে ?

HOW TO REDUCE THE RISK OF CANCER
- Quit using tobacco products
- Maintain a healthy weight
- Avoid exposure to intense sunlight
- Consume alcohol in moderation
- Avoid exposure to known carcinogens
- Avoid risky behaviours such as unprotected sex
- Eat a healthy diet
- Exercise regularly
- Get vaccinated
- Get adequate sleep
- Get regular check-ups with your healthcare provider
- Discuss your family history with your healthcare provider
- Get the recommended cancer screening tests
- Monitor yourself and recognize early warning signs Age-standardised rate for all cancers (excluding non-melanoma skin cancer) ordered by the countries with the 50 highest rates
Country | Rate per 1lakh people | Country | Rate per 1lakh people |
Denmark | 338.1 | France | 324.6 |
Australia | 323.0 | Belgium | 321.1 |
Norway | 318.3 | US | 318.0 |
Ireland | 307.9 | Korea | 307.8 |
Netherlands | 304.8 | Caledonia | 297.9 |
Slovenia | 296.3 | Canada | 295.7 |
New Zealand | 295.0 | Czech Republic | 293.8 |
Switzerland | 287.0 | Hungary | 285.4 |
Iceland | 284.3 | Germany | 283.8 |
Israel | 283.2 | Luxembourg | 280.3 |
Italy | 278.6 | Slovakia | 276.9 |
Country | Rate per 1lakh people | Country | Rate per 1lakh people |
UK | 272.9 | Sweden | 270.0 |
Serbia | 269.7 | Croatia | 266.9 |
Barbados | 263.1 | Armenia | 257.0 |
Finland | 256.8 | French Polynesia | 255.0 |
Austria | 254.1 | Lithuania | 251.9 |
Uruguay | 251.0 | Spain | 249.0 |
Latvia | 246.8 | Portugal | 246.2 |
Martinique | 245.0 | Malta | 242.9 |
Estonia | 242.8 | Macedonia | 239.3 |
Montenegro | 238.3 | Kazakhstan | 236.5 |
Bulgaria | 234.8 | Poland | 229.6 |
Romania | 224.2 | Belarus | 218.7 |
Cuba | 218.0 | Japan | 217.1 |
Argentina | 216.7 | Puerto Rico | 211.1 |
India | |||
Men | 47.75 | Women | 53.75 |
Both- 101.49 |
উপরের স্ট্যাটিস্টিক থেকে একটা জিনিষ পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে ক্যানসার রোগের ক্ষেত্রে ভারতবর্ষ অনেক উন্নতশীল দেশের সংখ্যার দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে । যেখানে একটা উন্নতশীল দেশে একলাখ লোকের মধ্যে 300 জন ক্যানসার রোগে আক্রান্ত , ভারতবর্ষে তখন একলাখ লোকের মধ্যে 101 জন ক্যানসার রোগে আক্রান্ত। যদিও আমাদের দেশ সমস্তরকম দূষণে অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে উন্নতশীল দেশগুলি থেকে । আমাদের দেশে যে ধরনের কীটনাশক ব্যবহার হয় তা মোটেই উপরের দেশগুলিতে ব্যবহৃত হয় না । ওদেশের মানুষেরা যে পরিশ্রুত জল পান করে আমাদের দেশের সমস্ত মানুষ তা পায় না । স্বাস্থ্য সম্বন্ধে ওরা আমাদের থেকে অনেকবেশি সচেতন । যে পরিমাণ ভেজাল জিনিষ আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি তার বিন্দুমাত্র ওরা ব্যবহার করে না। তাহলে মনে প্রশ্ন জাগে যে ঐসকল দেশে ক্যানসার রোগের মাত্রা আমাদের থেকে বেশি কেন ।
টেকনোলজির প্রভাব আমাদের থেকে ওদের নিসন্দেহে বেশি । টেকনোলজির রেডিয়েসনের কি একটা কারণ বলে আপাত দৃষ্টিতে মনে হতে পারে ? প্রসেস খাবার ওরা বোধহয় একটু বেশিই খায়। সেটা কি কারণ হতে পারে ?দেখেছি উন্নত দেশ থেকে যখন কেউ আমাদের দেশে বেড়াতে এসে বাইরের কিছু খায় তখনই তার পেট খারাপ হয় । তার মানে কি ওদের ইমুনিটি পাওয়ার আমাদের থেকে কম। ছোটবেলা থেকে সবসময় ঔষধের ওপর নির্ভরশীল বলে ?
আমাদের দেশের কিছু বিশেষজ্ঞদের মত হল আমাদের দেশে রান্নার জন্য ব্যবহৃত কিছু মশলা ক্যানসার রোগ আটকাতে সাহায্য করে। যেমন হলুদ । সমীক্ষায় দেখা গেছে যে যারা খাওয়ার জন্য হলুদের ব্যবহার করে ক্যানসার রোগের ক্ষেত্রে তাদের সংখ্যা কম যারা হলুদের ব্যবহার করেনা তাদের থেকে । দেখা যাক কি উপকার আছে হলুদের মধ্যে ।
- · হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামক একটি পদার্থ আছে যার মধ্যে শক্তিশালী এন্টি-প্রদাহ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের বৈশিষ্ট্যগুলি আছে। তাই হলুদকে বলা হয় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ভাইরাল, অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি।
- হলুদে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন বি-৬, ম্যাগনেশিয়াম ও ভিটামিন সি যা বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে ।
- হলুদে থাকা কারকিউমিন নামক রাসায়নিক পদার্থ বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে আমাদের খাদ্যনালীকে বাঁচায়। খাবারে কাঁচা হলুদ বা হলুদ গুঁড়োর ব্যবহার আমাদের খাদ্যনালীকে অনেক ক্ষতিকারক জীবাণুর হাত থেকে বাঁচায় ।
- হাড়ের ক্ষয় ও হাড়ের গঠনের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে এবং হাড়কে সুস্থ ও মজবুত রাখতে কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন দারুন কাজ করে ।
- বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী হলুদ অ্যান্টি-ডায়াবেটিক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে ও রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এবং অগ্ন্যাশয়কে সুস্থ রাখে।
- হলুদে থাকা কারকিউমিন ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি বন্ধ করে তাদের মৃত্যু ঘটায়। ফলে ক্যান্সারের সম্ভাবনা হ্রাস পায়। বিভিন্ন স্টাডি থেকে জানা গেছে প্রায় ৫৬ রকম ক্যান্সারের সম্ভাবনা কাঁচা হলুদ রোজ নিয়মিত খেলে কমে।
- বেশি তাপমাত্রায় রান্না করার ফলে রান্নার তেলের যে অক্সিডেশন প্রক্রিয়া শুরু হয় তার ফলে অনেক ক্ষতিকারক পদার্থ উৎপন্ন হয় যা ক্যান্সার ও ফাইব্রোসিস ডেকে আনতে পারে। তাই কাঁচা হলুদের পেস্ট করে বা হলুদ গুঁড়ো দিয়ে রান্নার জিনিস মেখে রাখার পর তারপর তা দিয়ে রান্না করলে তা রান্নার তেলের অক্সিডেশন কমায় ও আমাদের ক্যান্সারের সম্ভাবনাকেও কমায়।
- বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন মাত্র ১২ সপ্তাহেই কোলেস্টেরলকে একধাক্কায় অনেকটা কমিয়ে আনে।
- কাঁচা হলুদে থাকা কারকিউমিন আমাদের রক্তনালীকে উন্মুক্ত করে ও রক্ত চলাচলে বাধাকে দূর করে। ফলে রক্তচাপ কমায়।
- কাঁচা হলুদ রক্তকে পরিশুদ্ধ রাখতে সাহায্য করে ও রক্তকে পরিষ্কার রাখে।
- খাবার সংরক্ষণে হলুদ ভাল কাজ করে এবং হলুদ কীটনাশক হিসাবেও ব্যবহৃত হয়।
- সৌন্দর্য বিকাশে হলুদের ব্যবহার অনেকদিনের।
আমরা অনেকদিন থেকেই দেখছি যে হলুদ আমদের দেশে বিশুদ্ধতা, সমৃদ্ধি ও উর্বরতার প্রতীক হিসাবে বিবেচিত হয়।তাই বিবাহের অনুষ্ঠানে এবং শুভ কাজে হলুদের ব্যাবহার আমাদের দেশে অনেকদিনের । কাঁচা হলুদ ব্যবহার নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভাল কিন্তু যদি গুড়ো হলুদ ব্যবহার করতে হয় তাহলে অবশ্যই তার বিশুদ্ধতা বিচার করে নেওয়া উচিৎ ।
অবসাদ দূর করতে – হাঁটা ( কতক্ষণ হাঁটবো / কত দূর হাঁটবো/ কখন হাঁটবো/ হাঁটার উপকারিতা কি )

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০১৭ তে স্বাস্থ্য দিবস ছিল অবসাদ । সত্যিই আজকের যুগে অবসাদ একটি বড় সমস্যা । কারণ মনে হয় অত্যাধিক মানসিক চাপ ও বন্ধুত্বের ( Face book friend নয় ) অভাব । এক এক সময় অবসাদ মানুষকে মৃত্যুর দিকে পর্যন্ত ঠেলে দিচ্ছে । এর থেকে বাঁচার জন্য চাই প্রতিদিন নিয়মিত ব্যায়াম এবং একাকিত্ব দূর করতে প্রকৃত বন্ধুর সঙ্গ বা গান -বাজনার অভ্যাস করা । সবচেয়ে সহজ এবং বিনা পয়সার সব বয়সের মানুষের জন্য ব্যায়াম হল হাঁটা । গান শুনতে শুনতে বা ভাল কিছু চিন্তা করতে করতে হাঁটা হোল সবচেয়ে ভাল।হাঁটা , অ্যারোবিক ব্যায়ামের মধ্যে পরে যার সাথে তুলনা করা যায় সাইক্লিং, সাতার, হাইকিং, টেনিস, ফুটবল ইত্যাদি খেলা । হাঁটার সব চেয়ে বড় সুবিধা–এটির জন্যে বাড়তি কোনো যন্ত্রপাতি বা কোনো ব্যায়ামের উপকরণ লাগে না ।
শুধু কি ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার, হৃদরোগ হলেই হাঁটব
নিয়মিত নিদিষ্ট সময় ধরে হাঁটলে কি কি উপকার হয়
- অবসাদ ও টেনশন কমাতে দারুন কাজ দেয়
- উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়
- রক্তে সুগার এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রনে রাখে
- শরীরে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে শরীরকে অফুরন্ত শক্তি যোগায়
- শরীরের সমস্ত মাংসপেশীকে সচল রাখে এবং শরীরের অতিরিক্ত মেদ কমায়
- তারুণ্য ধরে রাখে এবং ঘুম ভাল হয়
- হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বাড়ায়
- মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়
সপ্তাহে কতদিন ও কতক্ষণ হাঁটবেন
সপ্তাহে ৪ থেকে ৬ দিন হাঁটতে পারলে ভাল । কতটা হাঁটব তারথেকে বড় হল কতক্ষণ হাঁটবো । ডাক্তারের কোন বারন না থাকলে সাধারণত ৪৫ মিনিট থেকে ৬০ মিনিট হাঁটা ভাল ।
কোথায় হাঁটবেন
নিঃসন্দেহে সুন্দর, দূষণ মুক্ত, মনোরম পরিবেশে্ , পরিষ্কার ,সমান জায়গায় হাঁটতে পারলে সবচেয়ে ভাল লাগবে । নাহলে যে কোন জায়গায় সেটা হতে পারে বাড়ির বাগান, পার্ক , পরিষ্কার ফুটপাতে বা যেকোনো খোলা জায়গায় । মাঝে মাঝে হাঁটার রাস্তা বা জায়গা বদল করলে একঘেয়েমি কাঁটবে।
হাঁটার গতি কেমন হবে
হাঁটার গতি নির্ভর করবে শরীরের ওজন ও সুস্থতার উপর । একটা জিনিষ শুধু মনে রাখতে হবে যেন শরীর ক্লান্ত না লাগে বা নাড়ির গতি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি না পায় । অসুবিধা না হলে হাঁটার গতি হতে পারে গড়ে প্রতি মিনিটে ৮০ থেকে ১৩০ স্টেপ বা ৫০ থেকে ৮০ মিটার বা ১৬০ ফুট থেকে ২৬০ ফুট । শরীরকে কষ্ট দিয়ে কক্ষনও হাঁটবো না । প্রথম প্রথম ধীরে ধীরে শুরু করে তারপর ধীরে ধীরে গতি বাড়ানো যেতে পারে ।
হাঁটার আগে / পরে / মধ্যে জল খাওয়া উচিৎ কিনা
একটা জিনিষ সব সময় খেয়াল রাখতে হবে যে শরীর যেন কক্ষনও জলের অভাব বোধ না করে । সেই বুজে হাঁটার আগে , পরে বা মধ্যে জল খাওয়া যেতে পারে । এত বেশি করে নিশ্চয় জল খাবো না যাতে হাঁটলে শরীরের কষ্ট হয় ।
কখন হাঁটবো
যে কোন সময়ই হাঁটা যায় কিন্তু একই সময়ে প্রতিদিন হাঁটলে শরীরে ভাল কাজ দেয় । করা রৌদ্রতে হাঁটা খুবই কষ্টদায়ক তাই বাইরে হাঁটলে রোঁদ উঠার আগে বা পরে হাঁটা যেতে পারে ।দূষণ মুক্ত আবহাওয়ায় বিকালের পর হাঁটা সবচেয়ে ভাল। কারণ সারাদিনের কাজকর্মের পর শরীরের মাংসপেশী নরম থাকে এবং শরীরের তাপমাত্রা অনুকূলে থাকে তারফলে আর ওয়ার্ম
আপ করার প্রয়োজন লাগে না। বিশেষ করে শীত কালে । কিন্তু যেখানে বিকালে পরিবেশ দূষণের মাত্রা বেড়ে যায় সেখানে অবশ্যই সকালে হাঁটা ভাল । একটা কথা স্পষ্টভাবে বলা যেতে পারে যে যখনই সময় পাবেন হেঁটে নেওয়া ভাল তবে চেষ্টা করুন প্রতিদিন একই সময়ে হাঁটতে ।
হাঁটার সময় শ্বাস–প্রশ্বাস কেমন হবে
একদম স্বাভাবিক । তবে মাঝে মাঝে পেটটা একটু ভিতরের দিকে টেনে নাক দিয়ে জোরে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে ছাড়লে ভাল ।
যারা হাঁটাকে ব্যায়াম হিসাবে গ্রহণ করবে না
- যে সকল মানুষ অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করে
- যে সকল মানুষ পরিমিত খাবার পায় না
- যে সকল মানুষকে ডাক্তার বারন করেছে
আসুন, আমরা নিয়মিত হাঁটা হাঁটির মাধ্যমে সুস্থ এবং দীর্ঘ জীবন লাভ করার চেষ্টা করি।
Pradip Kumar Das
লেখা দেখলে বোঝা যায় তুই details এ পড়াশোনা করে লিখেছিস সাধারণ লোক অনেককিছু জানতে পারবে খুব ভালো লিখেছিস ।
Abhijit Samadder
বোঝা যাচ্ছে প্রচুর পড়াশুনা করেছো।খুব সুন্দর ভাবে লেখা ।অনেক কিছু জানা গেল।
Partha Pratim Dasgupta
কোথায় যেন পড়েছিলাম, “60 বছর পর আসল জীবন শুরু হয়”। লেখার শুরুতেই তুমি সেটাই প্রতিষ্ঠিত করেছো। অর্থাৎ “কর্মজীবন থেকে অবসর নেবার পর শুরু করলাম”…আসলে কর্মজীবনে তোমার এই কর্মকান্ডের কথা ভাবার অবকাশ ছিল না। তাই নতুন করে জীবনের চুল থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত ভাবার অফুরন্ত সময়। তবে এই প্রসঙ্গে মনে পড়লো জীবন সম্বন্ধে ডন ব্র্যাডম্যানের কথা, “”যতক্ষন ক্রিজে আছো পিটিয়ে খেলে চলে যাও “”।
Tapashi Banerjee
খুব সুন্দর তথ্য তুমি তুলে ধরে ছো। সবার খুব কাজে লাগবে।
Dalia Deb
লেখনীর ধারা আমাদের নতুন করে বেঁচে থাকতে শেখায়..,.অব্যাহত থাক চিরদিন…শুভ কামনায় জানাই শুভ সকাল….
Krishnasis Chatterjee
এত সুন্দর একটা লেখার জন্য কোনো ধন্যবাদ ই যথেষ্ট নয়। বেশ ভালো রকম পড়াশুনা না করলে এত বিস্তৃত ভাবে বিষয় গুলো লেখা যেতনা। তোর পরিশ্রম সার্থক।
Manatosh Baroi
সুপ্রিয় দা দারুন লিখেছেন , অনেক তথ্য জানতে পারলাম , আরও লিখুন আমাদের উপকার হবে ,
LikeLike
ও: সুপ্রিয় ভাবতে পারছি না । তুমি করেছ কি, অসাধারণ অসাধারণ। কি ধৈর্য্য আর নিষ্ঠা থাকলে এ রকম কাজ করা যায় সেটা বলে শেষ করা যাবে না। আমি বুঝতে পারছি না তোমার এই বিরাট কর্মযজ্ঞ কি করে আমার নজর এড়িয়ে গেল। আমি এখন শুধু পাতা উল্টিয়ে যাবার মত করে গেলাম। অনেক সময় নিয়ে ধীরে ধীরে পড়ব। তুমি এটা বই করে ছাপিয়ে ফেল। দারুণ দারুণ। বিরাট দরকারি একটা কাজ করেছ। বহু লোকের উপকার হবে এটা পড়লে। থেমো না ভাই চালু রাখ তোমার এই কাজ যেটা সবার কাজে লাগবে।
LikeLiked by 1 person
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এরকম আন্তরিক উৎসাহ দেওয়ার জন্য
LikeLike
Thank you
LikeLike