ডিভোর্স  – সুপ্রিয় রায়

ডিভোর্স – সুপ্রিয় রায়

“ এতক্ষণ ধরে আপনারা আমাদের প্রিয় ইউনিভার্সিটির বাৎসরিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যে ধৈর্য সহকারে শুনছেন তার জন্য উপস্থিত সকল শ্রোতাদের জানাই আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ।এই অনুষ্ঠান যে আপনাদের আনন্দ দিচ্ছে তা আপনাদের করতালির শব্দে আমরা অনুভব করতে পারছি । আপনারা জেনে খুশী হবেন যে এবারের বাৎসরিক অনুষ্ঠানে আমরা বাইরে থেকে কোন শিল্পীকে ভাড়া করে আনিনি । এবারের সব শিল্পীই আমাদের ইউনিভার্সিটির ছাত্র – ছাত্রীরা । আমরা চাই আমাদের ছাত্র , ছাত্রীদের  প্রতিভা আপনাদের সবার সামনে আসুক । তাই এবার আপনাদের সামনে আমরা উপস্থিত করছি আমাদের ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিঙের ফাইনাল বর্ষের ছাত্র সার্থক রায়কে । সার্থকের আরেকটা প্রতিভা নিশ্চয় আপনারা জানেন । হ্যাঁ হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন –  সার্থক খুব ভাল ছবি আঁকে । এবারের আমাদের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতায় সার্থক প্রথম হয়েছে । যাইহোক আর দেরী নয় , এবার আপনাদের সামনে সঙ্গীত পরিবেশন করতে আসছে সার্থক রায় ।” – ঘোষকের বলা শেষ হতেই মঞ্চে প্রবেশ করলো একটি সৌম্য দর্শন যুবক । তারসাথে আরও কয়েকজন যুবক মঞ্চে আসলো বাদ্যযন্ত্র সহকারে । ঘোষক একে একে মঞ্চে উপস্থিত সকল শিল্পীর সাথে শ্রোতাদের পরিচয় করিয়ে মঞ্চ থেকে বিদায় নিল ।  সার্থক গান শুরু করতেই সবার গুঞ্জন থেমে গেল , শুধু শোনা যাচ্ছিল মাইকে গানের আওয়াজ । মন্ত্রমুগ্ধের মতো শ্রোতারা সার্থকের গান শুনছিল । এরপর আরও অনেক শিল্পী ছাত্র , ছাত্রী এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে মাতিয়ে রাখল । সবাই খুশী ইউনিভার্সিটির ছাত্র ,  ছাত্রীদের সাংস্কৃতিক দক্ষতা দেখে ।

পরেরদিন সকালে ইউনিভার্সিটির গেট দিয়ে ঢোকার মুখে সার্থকের ধাক্কা লাগলো একটি মেয়ের সাথে । আসলে সার্থক ছিল খুবই আনমনা । মনটাও ভাল ছিল না । মেয়েটি আর একটু হলেই পরে যেত ভাগ্যিস সার্থকের ঠিক সময়ে হুশ ফিরে আসে এবং ওকে ধরে ফেলে । কিন্তু পরমুহূর্তেই খুব লজ্জা পেয়ে গেল । এমনিতেই সার্থক খুবই শান্ত স্বভাবের এবং কম কথা বলে ।তবুও সার্থক বলে উঠলো – “ সরি , প্লীজ কিছু মনে করবেন না । আমি ইচ্ছা করে করিনি । আমারই দোষ । আমি খুব আনমনা ছিলাম। তাই একদমই  খেয়াল করিনি । কি বাজে ব্যাপার হল বলুন  তো !” মেয়েটি হাসি মুখে জবাব দেয় – “ যে এতো সুন্দর হৃদয় দিয়ে গান গাইতে পারে তার হৃদয় যে অপরিষ্কার হবে না সেটা আমি জোড় দিয়ে বলতে পারি । যাইহোক আমি সাথী । এবার ফিজিক্স অনার্স নিয়ে বিএসসিতে ভর্তি হয়েছি ।”

সার্থক বললো – “ আমি সার্থক, আমি কম্পুউটার সায়েন্স নিয়ে বিটেকের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র  ।”

“ আমি জানি । আমি কাল অনুষ্ঠানে ছিলাম । ওখানেই আপনার পরিচয় পেলাম । আপনি তো খুব ভাল ছবি আঁকতেও পারেন । আমি আপনার ছবি আঁকাও দেখেছি । ছবিটার মধ্যেও আমি কিন্তু  আপনার হৃদয়ের স্পর্শ পেয়েছি ।”

সার্থক একটা বোকা বোকা হাসি দিল । কি বলবে বুঝে উঠতে পারছিল না । সাথী বলতে থাকলো – “ বলতে নেই আপনি একটা দারুণ সুন্দর গলা পেয়েছেন । তার সাথে যোগ হয়েছে আপনার মাথা আর হৃদয় । এই তিনটে জিনিসের সমন্বয়ে যেটা কাল শুনলাম এক কথায় অনবদ্য । খুব ভাল লেগেছে । এবার আসি আপনার ছবির প্রসঙ্গে । ছবির মধ্যে যদি মনের ছোঁয়া না থাকে তাহলে সেটা শুধু ছবিই হবে , জীবন্ত রূপ তার মধ্যে থাকবে না আর সেটা অন্য কাউকে স্পর্শ করতেও পারবে না । কিন্তু আপনার ছবির মধ্যে সেই জীবন্ত রূপ ছিল যেটা আমি দেখতে পেয়েছি । আপনার ছবি আর গান শুনে আমি আপনার হৃদয়টা যেন উপলব্ধি করতে পারছি । কিছু মনে করবেন না , আমার মনে হয় আপনার বুকের ভিতর কোথাও যেন একটা ব্যাথা আছে ।”

সার্থক একটু ঘাবড়েই গেল । ওর সমন্ধ্যে সাথী কিছু জানে নাকি । ও তো কাউকে কোনদিন কিছু বলেনি । তাহলে এই মেয়েটা কি করে এই কথাটা বললো । ও কি সত্যিই অন্যের হৃদয় পড়তে পারে নাকি ! সার্থককে চুপ থাকতে দেখে সাথী ভাবল যে ও নিশ্চয় সাথীর কথায় মাইন্ড করেছে ।ও কি একটু বেশী বলে ফেললো ।

“ আচ্ছা চলি । আমার আবার ক্লাস শুরু হয়ে যাবে ।”

সাথীর কথা শুনে সার্থকের সম্বিৎ ফিরে আসলো । খুব ভাল লাগছিল সাথীর সাথে কথা বলতে । কি সুন্দর কথা বলে মেয়েটি ।অনেকদিন পরে কাউকে যেন মনে হল দারুণ আপন । যেন কত দিনকার চেনা । সাথীর সঙ্গ খুব ভাল লাগছিল সার্থকের ।তাই মুখ থেকে বেড়িয়ে গেল – “ আবার কখন দেখা হবে ?” বলেই বুঝতে পারলো এইরকম তো ওর স্বভাব না । না জানি সাথী কি মনে করলো । কিন্তু সাথী হেসে একটা কাগজে কি লিখে দিল । সার্থক দেখল একটা ফোন নাম্বার । সাথী বললো – “ যখন দেখা করতে ইচ্ছা হবে আমাকে ফোন করে দেবেন । আমি হাজির হয়ে যাব । এখন আসি ।” সার্থক এমনই একটা ছেলে যাকে ভাল না লেগে উপায় নেই । সাথীরও সার্থককে ভাল লাগলো । সাথী এগিয়ে গেল । সার্থক বেশ কিছুক্ষণ একদৃষ্টিতে সাথীর চলে যাওয়া দেখল । তারপর নিজের ক্লাসের দিকে এগিয়ে চললো ।

এরপর অনেক কটা দিন বয়ে গেছে । সাথী আর সার্থক একে অপরকে অনেকটা সময় দিয়েছে । দুজন দুজনের অনেকটাই কাছে এসে গেছে । সার্থক বিটেক পাশ করার পর কোলকাতার বাইরে একটা ভাল চাকরী পায় । কিন্তু সাথীর টানে সে চাকরীটা ও ছেড়ে দেয় । ওই ইউনিভার্সিটিতেই এম টেক নিয়ে ভর্তি হয় । সাথীও মনে মনে দারুণ খুশী । একে অপরের সঙ্গ পেতে আর কোন অসুবিধা রইলো না । এমনি করেই চলতে থাকলো ওদের রূপালি দিনগুলো । আরও নিবিড় হল ওদের বন্ধুত্ব । সুন্দর সময় তাড়াতাড়ি চলে যায় । ওদের জীবনের এই দুটো বছর খুবই তাড়াতাড়ি কেটে গেল । দুজনেই ভালভাবে পাশ করলো । আর পাশ করার সাথে সাথে সার্থকও একটা ভাল চাকরী পেয়ে গেল । কিন্তু পোস্টিং কোলকাতার বাইরে । ওরা ঠিক করলো যে এবার বিয়ে করে নেবে আর দুজনে মিলে শুরু করবে ওদের নূতন জীবন। এতদিন যখনই ওদের দেখা হতো কোথা দিয়ে যে সময় চলে যেত ওরা টেরই পেতো না । কত বিষয় নিয়ে ওরা অলোচনা করতো কিন্তু কোনদিন পারিবারিক বিষয় ওদের আলোচনার মধ্যে আসেনি । সার্থক এখন জানলো যে সাথী ওর বাবা , মার একমাত্র মেয়ে । ওর পুরো নাম সাথী সান্যাল । ওরা থাকে বালিগঞ্জে । আর সাথী জানতে পারলো যে সার্থকরা দুই ভাই । সার্থক বড় । ওরা থাকে গড়িয়াতে ।সাথী ওর বাবা, মাকে সার্থকের কথা বলেছে । এতো ভাল ছেলে ওর বাবা, মার আপত্তি করার কোন কারণই নেই । সাথী সার্থককে বললো –

“ তোমার বাবা, মাকে নিয়ে এরমধ্যেই একদিন আমাদের বাড়িতে আসো । কবে আসবে আমাকে জানিয়ে দিও । আমি বাড়িতে বলে রাখবো । তুমি বাইরে যাওয়ার আগে দুই বাড়ির মধ্যে সব কথাবার্তা হয়ে যাক । নাহলে আমার খুব টেনশন হবে ।” সার্থক বললো যে ও ওর মাকে সাথীর কথা সব বলেছে এবং এটাও বলেছে যে ওরা বিয়ে করতে চায় । বাড়িতে গিয়ে কথাবার্তা বলে সাথীকে জানাবে যে ওরা কবে আসবে ।   

সাথী আজ খুব সুন্দর করে সেজেছে কেননা একটু পরেই সার্থক ওর বাবা, মাকে নিয়ে আসবে ওদের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে । সময় যেন কাটতেই চায় না । অবশেষে বেল বাজলো । সাথী আর ওর মা এগিয়ে গেল দরজার দিকে । ঘরে ঢুকল সার্থক আর ওর পিছনে পিছনে ঢুকল ওর বাবা, মা । সার্থককে দেখে প্রথম দর্শনে সাথীর মার খুব পছন্দ হোল আবার সাথীকে দেখে সার্থকের বাবা, মার খুব পছন্দ হোল । অবশ্য ওদের দুজনকে অপছন্দ করার কোন কারণই নেই । সবাই সোফাতে বসতে বসতে সাথীর বাবা নমস্কার করতে করতে ঘরে ঢুকলেন । সাথীর বাবাকে দেখে সার্থকের মা সোফার থেকে প্রায় লাফিয়ে উঠে দাঁড়ালেন । জিজ্ঞেস করলেন – “ তুমি ?” সাথীর বাবা বললেন – “ হ্যাঁ , আমি সাথীর বাবা । তুমি কি সার্থকের মা । সার্থক কি আমাদের শুভ ?”

“ হ্যাঁ , আমি ওর ছোটবেলার তোমার দেওয়া নাম বদল করে সার্থক রেখেছি । কারণ আমি চাইনি তোমার কোন স্মৃতি নিয়ে ও বড় হোক । তা  তুমি তো জামশেদপুর ছিলে , এই কোলকাতায় কবে আসলে ?”

বাকী সবাই এ  ওর মুখের দিকে তাকাচ্ছে , কেউ কিছু বুঝতে পারছে না । তবে সবাই এটা বুঝতে পারছে যে সার্থকের মা আর সাথীর বাবা দুজনে দুজনের অনেকদিনের পরিচিত ।মুখ খুললো সাথীর বাবা । সার্থকের মাকে বললো –“ তোমার আমার ডিভোর্স হওয়ার পর কিছুদিন আমি জামসেদপুরে ছিলাম । তারপর আমি জামশেদপুর ছেড়ে নতুন চাকরী নিয়ে কোলকাতায় চলে আসি । শুনেছিলাম তুমিও শুভকে নিয়ে জামশেদপুর ছেড়ে কোথাও চলে গেছো । তোমার আর শুভর আর কোন খোঁজ আমার কাছে ছিল না । কোলকাতায় এসে সাথীর মার সাথে পরিচয় হয় এবং আমাদের বিয়ে হয় । সাথী আমাদের একমাত্র মেয়ে ।” সার্থকের মা বললো – “ সার্থকের তখন দুবছর বয়স ।তোমার সাথে আমার ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর ওকে নিয়ে আমি কোলকাতায় আমার বাবার বাড়ি চলে আসি । আমি একটা স্কুলে চাকরী নিই । এমনি করেই চলছিল । তারপর সার্থকের এখনকার বাবা আসে আমার জীবনে । আমাদের আরেকটি  ছেলে হয় । আমরা সবাই এখন দারুণ খুশী ।” এখানে বসেই সার্থকের মনে পরে যাচ্ছিল  ছোটবেলার কথা । চোখের সামনে সিনেমার মতো সব ঘটনাগুলো ভেসে উঠতে থাকলো । মনে পড়ছিল প্রতিদিন বাবা, মার  চীৎকার করে ঝগড়া করার ঘটনা । পরে বুঝতে পেরেছিল যে দুজনের এতো শিক্ষা থাকা সত্বেও একে অপরকে খুব খারাপ খারাপ কথা বলতো । বাবা , মার যখন ঝগড়া হতো সার্থক খুব ভয় পেয়ে যেত । চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতো । কতদিন ভাল করে খাওয়া হতোনা  । বাবা, মা  অনেক সময় কেউ কারও সাথে কথাই বলতো না । ওর খুব খারাপ লাগতো ।এসব ভাবতে ভাবতে  ও চীৎকার করে উঠলো –“ থামাও তোমাদের বাক্যালাপ । তোমাদের পুরানো কথা শুনতে আমার একদম ভাল লাগছে না । তোমরা তোমাদের স্বার্থে ছাড়াছাড়ি করেছো ।একবারের জন্য ভেবেছ ওই ছোট  ছেলেটার কথা ।ওরও তো একটা মন বলে কিছু  ছিল । প্রকাশ করতে পারতো না বলে তোমরা ওর কথা ভাবলেই না । সংসারে যে আরেকটি  প্রাণী আছে তার কথা বেমালুম ভুলে গেলে ।আমাকে আনার আগে কেন তোমরা একে অপরকে ছেড়ে দিলে না । অনেক সংসারে তো ভালবাসা থাকে না কিন্ত দায়িত্ব , কর্তব্য বোধ থেকে সংসার টিকে থাকে । নিজের নিজের দোষ না দেখে একে অপরের দোষই খালি দেখে গেলে । আগে বুঝে নিতে তোমাদের বনিবনা হবে কিনা , তারপর সন্তান আনতে । যেহেতু তোমাদের দুজনের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ছিল তাই ছাড়াছাড়ি হতে খুব বেশী চিন্তা করলে না । কতদিন আমি কারও সাথে ভাল করে মিশতে পারিনি যদি আমাকে কেউ আমার বাবা মার কথা জিজ্ঞেস করে এই ভয়ে । কি বলবো ?  আমার বাবা মার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে । একবারের জন্য  ভেবেছ এই কথা । ছোটবেলায় সবার বাবা স্কুলে আসতো শুধু আমার বাবা আসতো না ।ওই বয়সে আমার ছোট ছোট বন্ধুদের দেখতাম ওদের বাবার কোলে উঠে ওরা কত আবদার করতো । আমার ভীষণ কষ্ট হতো । মাকে আমার বাবার কথা জিজ্ঞেস  করলে মা কোন জবাব দিত না ।আর এখন তোমরা ভাল ব্যবহার করছো । একে অপরের খোঁজ নিচ্ছ । আমার ছোটবেলাটা নষ্ট করে তোমাদের শান্তি হয়নি , এখন আমার বড়বেলাটা নষ্ট করতে এসেছো ।” এই বলে সার্থক কারও দিকে না তাকিয়ে সোজা ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল । বোঝা যাচ্ছিল ওর দুচোখ জলে ভড়ে আছে ।আর সাথী, অবাক হয়ে ওর বাবা আর সার্থকের মার দিকে দেখছে  । বুঝতে পারলো মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে । কাউকে কিছু না বলে দৌড়ে চলে গেল নিজের ঘরে । দরজা বন্ধ করে হাপুস নয়নে কাঁদতে লাগলো । কিছুতেই মন মানতে পারছে না যে ওদের এতো দিনকার স্বপ্ন, ভালবাসা সব এক নিমেষে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে ?

যখন সার্থক চোখে জল নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে গেল আর সাথী চোখের জল সবাইকে লুকিয়ে নিজের ঘরে গিয়ে কেঁদে ভাসাচ্ছিল তখন কিন্তু সাথীদের বসার ঘরে বাকী সবাই বসে ছিল । সার্থকের বাবা , মা আর সাথীর বাবা , মা । সবারই খুব খারাপ লাগছিল । সার্থকের বাবা বলে উঠলেন –“ ওদের কি দোষ । ওদের যখন ভালবাসা হয় তখন তো ওরা জানত না যে ওদের পিছনে এরকম একটা ঘটনা আছে । আমার ওদের জন্য খুব খারাপ লাগছে । তোমরা একটু অন্য রকম ভাবে ভাবতে পারো না ?” সাথে সাথে সার্থকের মা জবাব দিল –“ দেখো সাথীকে আমারও খুব ভাল লেগেছে । কিন্তু হিসাব মতো ওরা ভাই -বোন । তাই কিছুতেই ওদের বিয়ে হতে পারে না ।”এতক্ষণ সাথীর বাবা চুপ করে বসেছিল । এখন সাথীর মার দিকে তাকিয়ে বললেন –“ আমরা দুজনে যে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম , আজ মনে হচ্ছে সেটা ভাঙতে হবে ।” সাথীর মা মাথা নাড়লেন অর্থাৎ সন্মতি দিলেন । সাথীর বাবা আবার বলতে লাগলেন – “ আজ আমি এমন একটা কথা সবার সামনে বলবো যে সবাই চমকে উঠবেন । সাথীকে একদম ছোটবেলায় আমরা দত্তক নিয়েছি । আমরা প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে কোনদিন কাউকে একথা জানাবো না কারণ সাথী কোনদিন জানতে পারলে ভীষণ দুঃখ পাবে । কিন্তু আজ ভাগ্যের কি পরিহাস । এই কথা জানলে সাথী সবচেয়ে বেশি আনন্দ পাবে । তাই আমাদের মনে হয় বিয়েতে আর কোন বাঁধা রইলো না । আমরা ওদের দুই হাত এক করে দিতে পারি ।যাও তুমি গিয়ে সাথীকে বুঝিয়ে এখানে নিয়ে এসো ।” এই কথা শুনে সাথীর মা সাথীর ঘরের দিকে এগিয়ে গেল । সার্থকের বাবা সার্থকের মাকে বললো – “ তুমিও যাও সার্থককে ডেকে আনো । ও নিশ্চয় গাড়িতে বসে আছে । ওই তো ড্রাইভ করে আমাদের এনেছে । আমাদের না নিয়ে ও যাবে না যতই ওর কষ্ট হোক । ওকে সব বুঝিয়ে বলো ।” ব্যাস সব কষ্টের অবসান । এখন শুধুই আনন্দ । ওদের দুজনকে এক করতে এবার দুটো পরিবারই উদ্যোগ নিচ্ছে । কিন্ত এখন যে করোনার প্রকোপ ,  বড় করে অনুষ্ঠান করা যাবে না । তাই ঠিক হলো সামনের মাসে ছোট করে রেজেস্ত্রি করে বিয়ে করে নেওয়া হবে এবং করোনা কাটলে হবে আসল অনুষ্ঠান ।              

               

***** Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos

2 thoughts on “ডিভোর্স – সুপ্রিয় রায়

  1. Apurba Neogi
    Very nice and amazing story which I liked very much.
    Priyanka Barman
    Sob character er point of view ato sundor vbe present korechen.. khub sundor
    Bani Paul
    Khub sundor Sarthok er moner abostha bujte parchhi hoeto bastobe anek bachhar ettai mone ashe soti khub sundor
    Tapasi Banerjee
    Khub valo. Laglo. Prothom theke sesh parjonto khub sunder vabe dhore rekhecho.
    Amitava Biswas
    একজন সুস্থ নাগরিক হওয়ার জন্য সমাজ ও সংসারের অবদান। ভালো ও শিক্ষনীয়।
    Sanjukta Mohanty
    nice
    Reena Dasgupta
    Apurbo
    Rinki Sen
    Khub sundor — Valo legeche
    Soma Dasgupta
    গল্পটা খুব ভালো লাগল কিন্তু খুব কষ্টের সার্থকের জীবনের কথায় মনটা ভারাক্রান্ত হয়েগেল ।
    Dulal Dasgupta
    Very nice story
    Arthita Sengupta
    Kaku ki likhecho go♥️♥️♥️♥️

    Liked by 1 person

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s