করোনা আতঙ্ক – সুপ্রিয় রায়

করোনা আতঙ্ক – সুপ্রিয় রায়

আনন্দেই কাটছিল দিনগুলো আমেরিকার সল্টলেকে । করোনা আতঙ্কের প্রভাব ওখানে তেমনভাবে অনুভব করিনি । রাস্তাঘাটে , মলে , দোকানে বেশীরভাগ কাউকে মাস্ক পড়তেও দেখিনি । কদাচিৎ রাস্তায় দেখেছি কাউকে মাস্ক পড়তে । যেটুকু আতঙ্ক হচ্ছিল তা খবর পড়ে । আগে থেকেই আমাদের দেশে ফেরার দিন ঠিক ছিল ৪ই মার্চ ।ছেলে বেশ কিছু মাস্ক আর স্যানিটাইজার কিনে এনে দিল ।সল্টলেক সিটি থেকে আমরা প্রথমে যাব লসএঞ্জেলেস , তারপর ওখান থেকে দোহা আর দোহার থেকে কোলকাতা । ছেলেরা বার বার করে বলে দিল মাস্ক বেশ কিছুক্ষণ ব্যবহারের পর চেঞ্জ করবে আর মুখে , নাকে , চোখে , কানে হাত দেওয়ার আগে পজিটিভলি স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোবে । এমনকি টয়লেটে যাওয়ার আগে এবং পরে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোবে। চার তারিখ ভোর বেলা সল্টলেক সিটি এয়ারপোর্ট পৌছালাম । ভালই ভিড় ছিল । কিন্তু কাউকে মাস্ক পড়তে দেখলাম না । তাই আমরাও চাইলাম না ‘ অড ম্যান আউট ’  হতে । সকাল সকাল পৌঁছে গেলাম লসএঞ্জেলেস ডোমেস্টিক এয়ারপোর্ট । ওখানেও কাউকে দেখলাম না মাস্ক ব্যবহার করতে । ডোমেস্টিক থেকে হেঁটে হেঁটে আসলাম ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে । ১০ মিনিটের হাঁটা পথ ।পৃথিবীর অনেক জায়গার এয়ারপোর্টে ট্রলি নিতে কোন পয়সা লাগে না কিন্তু ওখানে অর্থাৎ আমেরিকার ডোমেস্টিক এয়ারপোর্টে ছয় ডলার লাগলো ট্রলি নেওয়ার জন্য । ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে সব এয়ারলাইন্সের কাউন্টার দোতলায় । জিনিসপত্র নিয়ে লিফটে করে দোতলায় পৌছালাম । বিশাল এরিয়া । এবার দেখলাম অনেককে মাস্ক পরে থাকতে । বিশেষ করে চীন দেশীয় মানুষজনকে । একটা খালি জায়গা দেখে বসলাম । একটু একটু ভয় হচ্ছিল । কাউকে বেশী ঢেকে বসে থাকতে দেখে মনে হচ্ছিল করোনা রুগী । ভয় হচ্ছিল কিন্তু মনে মনে দুজনে একটাই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত না ধুয়ে কিছুতেই মুখে , নাকে , চোখে , কানে হাত দেবো না । এই রোগটা যে হাওয়ায় ওরে না সেটা আমরা পড়েছিলাম । তাই আর মাস্ক পড়লাম না । লসএঞ্জেলেস থেকে দোহা আসার সময় প্লেনে পাশে এক ইরানি মহিলা মাস্ক পরে বসেছিলেন । ভাল ভাবে লক্ষ করছিলাম ওনার সর্দি, কাশি আছে কিনা ? আমার স্ত্রী কায়দা করে একবার ওনার গায়ে টাচ করে দেখে নিল জ্বর আছে কিনা । এবার আমরা নিশ্চিন্ত  হয়ে বসলাম । জানিনা ওনিও আমাদের লক্ষ করছিলেন কিনা ? দোহাতে আমাদের হাতে খুব কম সময় ছিল । তাই সিকিউরিটি চেক করে সোজা পৌঁছে গেলাম প্লেনে উঠবার জন্য । আমরা ছাড়া প্রায় সব্বাইই মাস্ক পরে ছিল । মাস্কাটে কাজ করে মেদিনীপুরের একটি ছেলে আমাদের পাশে বসেছিল । দেখে সুস্থই মনে হচ্ছিল । কলকাতায় নেমে সব ডিটেলস দিয়ে ফর্ম ফিলাপ করতে হল তারপর হোল স্ক্রিনিং টেস্ট । ‘ ওকে ’  ফর্ম নিয়ে যেতে হোল ইমিগ্রেশনে । তারপর লাগেজ নিয়ে কাস্টম চেক সেরে বাড়ি । ৬ তারিখ ভোর হয়ে গেল বাড়ি পৌছাতে । এখানে এসে টিভি আর খবরের কাগজ পরে মনে হচ্ছে সবাই দারুণ আতঙ্কে আছে । ওদেশের মানুষজন যথেষ্ট সচেতন তবুও এই রোগ বাড়ছে আর আমাদের দেশে এখনো বেশীরভাগ মানুষ হাত না ধুয়েই সব করছে , এখনও রাস্তায় নির্দ্বিধায় থুথু  ফেলছে । আমাদের দেশে এটা কি মহামারীর আকার ধারণ করতে পারে তার ধারণাই নেই । মুখে সব সময় মাস্ক পড়ে থাকছে কিন্তু যেটা বেশী দরকার মুখে , নাকে , চোখে , কানে হাত দেওয়ার আগে পজিটিভলি স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া সেটা মানছে না । খুব দরকার না থাকলে বাড়ির বাইরে না যাওয়া । আমরা তো কাজের লোককেউ আসতে মানা করে দিয়েছি । সবার সহযোগিতা ছাড়া এই মহামারী আটকানো সম্ভব না ।  আর হ্যান্ড শেক না করে এখন করা উচিৎ নমস্কার ।  

Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos

2 thoughts on “করোনা আতঙ্ক – সুপ্রিয় রায়

  1. Mita Sengupta
    Thik kotha.amio maid ke chuti diye diyechi.jani na ekhane lokera kobe cautious hobe?
    Anupam Bandyopadhyay
    গতকালই আপনাদের কথা চিন্তা করছিলাম। ভালো থাকুন
    Swapnesh Ghosh
    sabdhane thaka khub i joruri
    Papia Kargupta
    Khub Valo somoy a Tora ghure asli akhon hole r jetei partis na bol lalda ?
    Chanchal Bhattacharya
    যাক, ভালো ভাবে ঘুরে এসেছেন, এটাই বড় কথা।
    ভালো থাকবেন।
    আমাদের দেশের সমস‍্যাটি সত্যিই অন্য ধরণের। তার বিভিন্ন কারণ রয়েছে, যা আমরা সবাই কম বেশী জানি।
    এই পরিস্থিতিতে সবার সহযোগিতা, সত্যিই খুব বেশী করে দরকার।।
    Ruby Nandy
    Khub valo Katha likhechen….
    Amitava Biswas
    খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দিয়েছেন। এই রোগটি হলে মুশকিল, কিন্তু প্রতিরোধ করা সহজ। এটাই আমরা বুঝতে চাইছি না। ইতালি তে যে মহামারীর আকার নিয়েছে তার কারণ একমাত্র অবহেলা। আমরা এখন স্টেজ ২ তে আছি। সুতরাং আমাদের এখনই সাবধান হওয়া উচিত। নইলে কত মানুষ যে চিকিৎসার ই সুযোগ পাবে না। ভালো থাকবেন।
    Swapan Dattaray
    We must take precaution for four weeks more to cover the third stage .
    Apurba Neogi
    Thank .You have timely reached safely and you are taking all necessary precautions which everyone should take.
    Alpana Munshi
    খুব ভালো লিখেছেন , আমাদের দেশে সবাই যে কবে সচেতন হবে জানিনা ।
    Soumendra Shome
    সত্যি কথা যত দিন যাচ্ছে অবস্থা তত খারাপ হচ্ছে।
    Sucheta Sen
    সত্যি বড্ড ভয়ে ভয়ে দিন কাটছে
    Asit Saha
    Supriya da dhanyabad lekhatir jonyo
    Rinki Sen
    Khub bhalo laglo lekha ta — ami chinta korchilam ei jhamela r modhdhe tomra ele — ki experience holo ki jani — tomar lekha pore sob jene nishchinto holam — sabdhan e theko
    Manoj Gupta
    Let all be safe and healthy
    Bijaya Chatterjee
    Khub valo
    Pk Bhattacharjee
    Khub bhalo janlam
    Krishnasis Chatterjee
    Thanks for lovely description of return journey amidst dangerous situation prevailing in the Globe
    Safe return stay blessed

    Liked by 1 person

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Twitter picture

You are commenting using your Twitter account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s