দাদা একটু দাঁড়ান । প্লাস্টিকের ব্যাগ ভর্তি ময়লা পুকুরে ছুঁড়ে ফেলার আগে একটু আমার সাথে কথা বলবেন ।
– অনেকদিন ধরেই এখানে ময়লা ফেলে আসছি । কেউ কোনদিন বাঁধা দেয় নি ।এখন please disturb করবেন না । তাড়া আছে । কেন ? কে আপনি ? আপনাকে তো আমি চিনিনা ।
– আমি কাছেই থাকি । আমি আপনার বেশী সময় নেব না । সবার বাড়িতে তো প্রত্যেকদিন সকালবেলা corporation এর গাড়ি আসে বাড়ির ময়লা নেওয়ার জন্য । তা আপনি কেন ওখানে ময়লা ফেলেন না ?
– সকালের দিকে তাড়া থাকে গাড়ি কখন আসে টেরই পাইনা ।
– কেন প্রত্যাকদিন এক সময়ে আসে না ? হুইসেল বাজায় না ?
– তা আসে । হুইসেলও বাজায় কিন্তু আমরা রেগুলার ফেলে উঠতে পারিনা । যেদিন পারিনা সেদিন এই পুকুরে এসে ফেলি ।
পাশ দিয়ে কয়েকজন কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়ে যাচ্ছিল । আমাদের কথা শুনে ওরা দাঁড়িয়ে গেল । ওদের মধ্য থেকে একজন বলে উঠলো – এমনিতেই জলাভুমি জমিরাক্ষসদের হাত থেকে বাঁচান যাচ্ছে না । যেখানে সেখানে জলাভুমি বুজিয়ে ফ্লাট বাড়ি বানিয়ে ফেলছে ।আমারা সাধারণ জনগণ যদি এমনি করে ময়লা ফেলে আমরাই পুকুর ভরিয়ে দিই তাহলে তো জমিরাক্ষসদের পোয়াবারো ।
– ঠিক বলেছিস । একজনকে দেখলে সবাই ফেলতে শুরু করবে – আরেকটি ছেলে বলে উঠলো ।
সবচেয়ে লম্বা যে মেয়েটি চোখ থেকে চশমাটা হাতে নিয়ে বললো – জানিস তো পুকুরে অনেক ছোট ছোট জলজ উদ্ভিদ হয় । এই উদ্ভিদগুলো সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় মাধ্যমে জলের মধ্যে প্রচুর অক্সিজেন মিশিয়ে দেয় । জল ভাল থাকে আর সেই জল মাছ , পশু পাখি খেয়ে সুস্থ থাকতে পারে ।। এই প্লাস্টিক ভর্তি ময়লা ফেলে এইসব গাছগুলোকে মেরে ফেলা হচ্ছে । তার ফলে পুকুরের জল পচে যাচ্ছে ।
– শুধু যে মাছ , পশু পাখিই অসুস্থ হচ্ছে সেটা ভাবলে চলবে না । আমরাও অসুস্থ হতে পারি ।
– কেমন করে ?
– এই প্লাস্টিক তো আর জলে বা মাটিতে মিশে যাবে না । ছোট ছোট টুকরো হয়ে জলে ভেসে বেড়াবে । কোন মাছের পেটে যাওয়ার পর যদি সেই মাছটা আমরা খাই তাহলে আমরাও অসুস্থ হবো ।
ভদ্রলোক ব্যাগ নিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছেন । প্লাস্টিকটা পুকুরে ফেলতেও পারছে না আবার চলে যেতেও পারছেন না । বুঝতে পারছি আমাকে মনে মনে খুব গালি দিচ্ছেন । যাকগে মনে মনে বলছেন তো ক্ষতি নেই কেউ শুনতে পারছে না ।
আরেকজন মেয়ে বলে উঠলো – এই যে জৈব পদার্থগুলো ফেলা হচ্ছে এর কুফল কি জানিস । বেশী জৈব পদার্থ একসাথে পচন ধরলে জল দূষিত হয়ে যায় ।
– এছাড়া পুকুর , দীঘিতে যেটা হয় সেটা কুয়োতে হয় না ।
– কি জিনিষ ? অন্য ছেলেমেয়েরা বলে উঠল ।
– পুকুর দীঘির জল একজায়গায় দাঁড়িয়ে থাকলেও , হালকা হাওয়ার জন্য ওপরের জলে ছোট ছোট ঢেউ হয় তারফলে বাতস থেকে কিছু অক্সিজেন জলে মিশে যায় । এছাড়া বৃষ্টির জল পুকুর , দীঘি এরাই তো ধরে রাখে । কতদিন কত কাজে লাগে এই জল বল ।এছাড়া পরিবেশকে ঠাণ্ডা রাখে এইসব জলাশয় । এই যে দেখুন দুটো হাঁস জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে , কি সুন্দর লাগছে । জলাশয় না থাকলে সেটাও দেখা যাবে না ।
ভদ্রলোক আর না থেকে বলে উঠলেন – তোমাদের কথা শুনে ভাল লাগলো । তোমরা এই বয়সেই কত কি জানো । আমাদেরই দোষ । ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে দোষী হওয়ার থেকে তোমরা আমায় বাঁচালে । আমাকে একটা জিনিষ বল , যদি পুজর ফুল হয় তাহলে কি করবো , সেটা তো আর corporation এর গাড়িতে দিতে পারবো না ।
– পুজর ফুল প্লাস্টিক থেকে বেড় করে পুকুরে ফেলতে পারেন । কারণ ফুল , জলে – মাটিতে একদম মিশে যাবে । কিন্তু প্লাস্টিক কখনই জলে ফেলবেন না । পুকুরের ধারে যদি ময়লা ফেলার জায়গা থাকে সেখানে ফেলবেন ।
এবার আমি ভদ্রলোককে বলতে বাধ্য হলাম – আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ যে আপনি আমাদের কথা মেনে নিলেন । অনেকেই তো বুঝতেই চায় না শুধু ঝগড়া করে । তাকে কেউ মানা করবে সেটা মানতেই চায় না । জলাশয় বাঁচিয়ে রাখা পরিবেশের ভালর জন্য খুব দরকার ।
– ঠিক বলেছেন কাকু । পুকুর প্লাস্টিকে ভরে থাকলে কি বিচ্ছিরি লাগে । প্লাস্টিকের ব্যাগ ছাড়া অন্য জিনিসের ব্যাগ ব্যবহার করলে তা জলে বা মাটিতে মিশে যায় , প্লাস্টিকের মতো ক্ষতি করে না ।
– একদম ঠিক ।Carry bags made of paper, cloth, jute and other eco-friendly materials can be used as alternatives to non-biodegradable plastic carry bags.
Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos
Apurba Neogi
Thanks a lot for the very nice writing highlighting the importance to try to make all of us conscious about the importance of maintaining ecological balance.
Chanchal Bhattacharya
খুব সুন্দর।
একটি সামাজিক দায় পালন করেছেন, যেটি আমরা অনেকেই এড়িয়ে যাই।
শুভ সকাল।।
Mita Sengupta
Khub sundor lekha.this type writings are the need of our society which makes people aware of the environment.
Champak Mitra
এই লেখা পড়ে যদি কয়েক জনেরও শুভবুদ্ধি হয় তাহলে মনে কোরবো আস্তে আস্তে সবার চেতনা ফিরে আসবে।সুন্দর লেখা,ধন্যবাদ।
Sucheta Sen
Khub bhalo laglo manusher lekhagulo porle jodi chetona hoye tahole to kothai nai
Shubhranshu Mohan Banerji
সময়োপযোগী একটি বিশেষ নিবন্ধের পরিবেশন ।
Kanti S
Jalasoy gulo sundor hok khub bhalo proyas
Rupa Bhattacharjee
লেখাটি র মধ্যে পরিবেশ সচেতনতা র একটা বক্তব্য আছে যেটা প্রত্যেক এর জানা দরকার। খুব ভালো লাগলো দাদা তোমার এই লেখাটা পড়ে তাই শেয়ার করলাম
Ranjan Goswami
Khuub Sundar Ekta samajik udaharan
Goutam Choudhury
anekdin par tomar lekhata pore khub bhalo laglo. ?Bhalo thako.
Provat Kumar Mitra
প্রাসঙ্গিক বিষয়,লেখা সুন্দর! এক সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রকাশ পেয়েছে লেখাটির মধ্যে!
Aloka Mitra
প্রত্যেক area te আপনার মত একজন থাকলে দেশের অনেক উন্নতি হতো
Aparajita Sengupta
লেখাটা পড়ে ভালো লাগল ।আমরা সবাই একটু সচেতন হলে পরিবেশ সুন্দর হয়ে উঠবে ।
Nilu Biswas
Khub sundr kintu k jn bojhe
LikeLiked by 1 person
THANKS TO ALL
LikeLike