সিগারেট ————— সুপ্রিয় রায়

সিগারেট ————— সুপ্রিয় রায়

কলেজ স্ট্রীটের কফি হাউসে গেলে মনটা কেন জানি না আনমনা হয়ে ওঠে । মনে পড়ে যায় মান্নাদের সেই গানটা – “ কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই ”।কফি হাউসে বসে ফিস ফ্রাই আর কফি খেতে খেতে আমি আর সাথী সেই আলোচনাই করছিলাম । অনেকদিন বাদে কলেজ স্ট্রীটে বিয়ের কার্ড পছন্দ করতে আসাতে কফি হাউসে আসা হল । সাথী এর আগে কোনদিন কফি হাউসে আসেনি । ওর জন্ম ও পড়াশুনা বেঙ্গলের বাইরে , তাই ওর আগে আর কোনদিন কফি হাউসে আসা হয়ে ওঠেনি । আমাদের একমাত্র ছেলে সাম্যর বিয়ের কথাবার্তা চলছে । মোটামুটি আমাদের পছন্দও হয়ে গেছে । মেয়েটির নাম অনিন্দিতা । পড়াশুনায় যেমন ভাল তেমনি দেখতে । একবার দেখলে যে কেউ পছন্দ করে নেবে । সবে কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার ডিগ্রি শেষ করেছে । ওর অমন শান্ত ন্ম্র ব্যবহার সাথীকে মুগ্ধ করেছে । কি সুন্দর গানের গলা । সাথী তো পারলে ঐ দিনই ওকে বৌ করে নিয়ে আসে । দুটি পরিবার মোটামুটি নিশ্চিত যে সাম্যর সাথে অনিন্দিতারই বিয়ে হবে । আর দুজনকে খুব সুন্দর মানাবে । সাম্যও ছেলে হিসাবে খুব ভাল । সুন্দর সুদর্শন চেহারা । খুব ভাল চাকরী করে। পাত্র হিসাবে খুবই লোভনীয় । সাথী ওর ছেলেকে নিয়ে সবসময় মনে মনে গর্ব করে যেটা আমি ভালই বুঝতে পারি । এই বিয়ে নিয়ে আমার ও সাথীর খুবই উৎসাহ । সবসময় নানা রকম পরিকল্পনা করছি । এখনও বিয়ের তারিখ ঠিক হয়নি অথচ আমরা চলে এসেছি বিয়ের কার্ড পছন্দ করতে । শীতকালের দুপুর বেলা কফি হাউস গম গম করছে ছাত্র ছাত্রীদের ভিড়ে । সামনেই প্রেসিডেন্সী আর কলকাতা ইউনিভার্সিটি । সাথী চারিদেকে তাকিয়ে তাকিয়ে উপভোগ করছিলো । খাওয়া শেষ করে আমরা দুজন সিঁড়ি দিয়ে নীচে নামছি । সিঁড়ির নীচে একটা পান , বিড়ি , সিগারেটের দোকান । একটু ভিড় রয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে । হঠাৎ সাথী শক্ত করে আমার হাতটা চেপে ধরল । আমি ওর দিকে তাকালাম । ও আমাকে ঈশারায় সিঁড়ির ডানদিকে তাকাতে বলল । আমি নিজের চোখে বিশ্বাস করতে পারছি না । দেখি অনিন্দিতা ওর দুই বান্ধবীর সাথে দাঁড়িয়ে আছে । ওদের সবার হাতে রয়েছে জ্বলন্ত সিগারেট । সাথী আর একটু হলেই পরে যাচ্ছিল । আমি ধরলাম ওকে শক্ত করে । বুঝলাম সাথী খুব ভেঙে পড়েছে । শুধু আমায় বলল আমি বাড়ি যাব । তাড়াতাড়ি আমরা ওখান থেকে বেড়িয়ে আসলাম । একটু দুরেই আমাদের গাড়ি রাখা ছিল । আমরা দুজনে গাড়িতে উঠে বাড়ির দিকে রওনা দিলাম । কারও মুখে কোন কথা নেই । দুজনের মনের মধ্যেই চলছে নানা টানাপোড়ন । সারা রাস্তা কেউ কোন কথা বললাম না ।

ঘরে ঢুকেই সাথীই প্রথম মুখ খুলল । অনিন্দিতার সিগারেট খাওয়া দেখে ও ভীষণ রেগে গেছে । এই মেয়েকে ও কিছুতেই সাম্যর বৌ করবে না ।

আমি বললাম , – আচ্ছা ধর যদি উল্টোটা হতো । মানে যদি অনিন্দিতার বাবা মা সাম্যকে দেখত সিগারেট খেতে । তাহলে কি ওরা সম্বন্ধটা সিগারেট খাওয়ার জন্য বাতিল করে দিত ।

– দেখ ছেলেরা বড় হয়ে গেলে অনেকেই সিগারেট খায় । ছেলেদের সিগারেট খাওয়া নিঃসন্দেহে খারাপ কিন্তু দোষের নয় । তাই বলে আমার ছেলের বৌ সিগারেট খায় এটা জেনে আমি কিছুতেই ওকে আমার ছেলের বৌ করতে পারবো না । যতই আমাদের পছন্দ হোক না কেন । ভাগ্যিস সাম্য এখনও ওকে দেখেনি । এসব মেয়ে খুব উদ্ধত হয় । দেখছনা কেমন openly সিগারেট খাচ্ছে । কাউকে কোন তোয়াক্কা করছে না ।

আমি বললাম – রাস্তা ঘাটে আমরা প্রায়ই ছেলেদের সিগারেট খেতে দেখি । আমাদের চোখ সয়ে গেছে । মেয়েদের দেখি না তাই মানতে পারছিনা । ছেলেদের মতো তুমি যদি মেয়েদের দেখতে পাড়ায় পাড়ায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খেতে , তাহলে প্রথম প্রথম তোমার খারাপ লাগত ঠিকই কিন্তু ধীরে ধীরে চোখ সয়ে যেত ।

– মেয়েদের সিগারেট খাওয়া উচিৎ নয় কারণ মেয়েরা সন্তান ধারন করে । সন্তানের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে ।আমি এটাও পড়েছি যে কোনও মহিলা দিনে ১০টি কিংবা তার বেশি সিগারেট খেলে তার গর্ভধারণ ক্ষমতা হ্রাস পায়, সে আর জন্ম দিতে পারেনা। সিগারেটের অভ্যাস থেকে একের পর এক নিকোটিনের লেয়ার মহিলাদের উর্বরতা সশক্তি হ্রাস করে এবং এই সমস্যা বন্ধ্যাত্বও এনে দেয় । – সাথী বলে উঠলো ।

– দেখ সিগারেট খাওয়াটা যে সবার পক্ষেই ক্ষতিকারক সেটা সবাই জানে । এব্যাপারে যথেষ্ট প্রচারও চলছে । যারা খাচ্ছে সে ছেলে হোক বা মেয়ে হোক , সবাই জেনে বুঝেই খাচ্ছে । নেশা , বুঝলে নেশার জন্য খাচ্ছে । আর নেশা আমাদের পুরাকাল থেকেই চলে আসছে । মেয়েরা পানের সাথে অনেকদিন ধরেই জর্দা, দোক্তা খেয়ে আসছে । এগুলোও তো নেশা । এগুলো খাওয়া কি স্বাস্থের পক্ষে ভাল ? এগুলো খেলে আপত্তি নেই কিন্তু মেয়েরা সিগারেট খেলে আপত্তি কেন ?

– দেখেছি এবং শুনেছি যে বিদেশে অনেক মেয়েরাই সিগারেট খায় ।

– কি বলছো , আমেরিকার পরেই ভারতে সবচেয়ে বেশী মেয়েরা সিগারেট খায় ।আমি সিগারেট খাওয়াটাকে কোনমতেই সমর্থন করছি না । পরিবেশ দূষণ ছাড়াও আমরা জানি এর থেকে অনেক রোগ হতে পারে এমনকি ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে । সিগারেট কারই খাওয়া উচিৎ নয় । সে ছেলেই হোক বা মেয়েই হোক ।

– দেখ ওরা যদি ভালবেসে বিয়ে করত তাহলে সব জেনেও আমি মেনে নিতাম কিন্তু সন্মন্ধ করে যখন বিয়ে হচ্ছে তখন আমি কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারবো না । তোমার কথাও আমি মানছি যে ছেলেরা খেলে দোষ নেই , মেয়েরা খেলেই দোষ ।

– ঠিক আছে , তাহলে একটা কাজ করি সাম্যকে সব বলি । তারপর ও যা বলবে তাই হবে ।

-আমার কথাটা একটু ভাব । ওকে দেখলেই আমার খালি ওর সিগারেট খাওয়ার মুখটাই মনে পড়বে আর মনটা খারাপ হয়ে যাবে । আমি কিছুতেই ওকে মন থেকে মেনে নিতে পারবোনা । শুধু শুধু আমাদের দুজনের মধ্যে সম্পর্ক ভাল হবে না । সেটা আমার খুব খারাপ লাগবে ।সেটা শুধু সিগারেট খাওয়ার জন্যই । না , মেয়ের বাড়িতে আমি জানিয়ে দিচ্ছি এ বিয়ে হবে না ।

– কি বলবে ? মেয়েকে সিগারেট খেতে দেখেছ , তাই ।

– সত্যি কথাই বলবো । ওদের মেয়ে , হয়তো ওদের ভাল লাগবে না । কিন্তু এছাড়া আর তো কোন কারণ নেই । দেখ বিয়ের পর জানলে আমার কষ্ট হলেও সাম্যর কথা ভেবে মেনে নিতে হতো । এই বিয়েতো আর হয়নি , আমরা ছাড়া কেউ জানেও না এই সন্মন্ধের কথা । তুমি কি চাও সারা জীবন আমি গুমরে গুমরে মরি ।Please আমাকে কিছু বোঝাতে এসো না , আমি কোন মতেই মানবো না ।

এই কথা বলেই আমার সামনে দিয়ে সাথী হনহন করে wash room এ চলে গেল । জানি ওখানে গিয়ে ও এখন লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদবে । অনিন্দিতাকে ওর খুব পছন্দ হয়ে ছিল । বাদ সাধল সিগারেট ।

দ্বিতীয় পর্ব

পরেরদিনই সাথী অনিন্দিতার মাকে ফোন করে সব জানিয়েছে । ওর মা অনেক অনুরোধ করেছেন কিন্তু সাথী নাছোড়বান্দা । ও কিছুতেই মানতে পারছে না । ছেলে যদি নিজেই পছন্দ করে নিত তাহলে বলার কিছু ছিল না । কিন্তু যেহেতু সাথীর উপর দায়িত্ব , তাই ও একটু খুঁতখুঁতে । সব দিক বিচার করে তবেই ও ছেলের বৌ পছন্দ করবে । অনিন্দিতার মাকে ফোন করার পর আরও দুদিন কেটে গেছে । সাথীর মনটা এখনও খচখচ করছে । বার বার মনে হচ্ছে সিদ্ধান্তটা ঠিক নিচ্ছে তো ! কোন ভুল করছে না তো । আসলে অনিন্দিতাকে ওর খুব ভাল লেগে গেছিল । ওদের বাড়ি থেকে ফিরে খালি সারাদিন অনিন্দিতার গল্পই করছিলো । ওকে নিয়ে একটা স্বপ্ন ওর মনের মধ্যে জেগেছিল । ভেস্তে গেল সিগারেটের জন্য । যদি কফি হাউসের নীচে অনিন্দিতাকে সিগারেট খেতে না দেখত তাহলে এর মধ্যে কতবার যে অনিন্দিতাকে ফোন করে ফেলত তার ঠিক নেই । ও নিজে খুব গান ভালবাসে তাই ওর স্বপ্ন ছিল ওর ছেলের বৌ গান জানবে । অনিন্দিতার গলায় গান শুনে ও মুগ্ধ । কতবার যে আমাকে বলেছে – ‘অনিন্দিতা সিগারেটটা না খেলেই পারত , কি বল ?’ আমিও বার বারই ওকে বলেছি অনিন্দিতার সাথে কথা বলার জন্য । কিন্তু ও কিছুতেই কথা বলতে চাইছে না ।

আরও দুদিন কেটে গেল কিন্তু সাথী অনিন্দিতাকে কিছুতেই ভুলতে পারছে না । অনিন্দিতাদের সাথে আমাদের কাস্টের মিল নেই । আমাদের আলাদা কাস্ট । এসব ব্যাপারে সাথীর কোন আপত্তি নেই । মেয়েদের বাড়ির অর্থনৈতিক অবস্থা কেমন সে ব্যাপারেও সাথীর কোন মাথাব্যাথা নেই । ওর শুধু একটাই লক্ষ্য মেয়েটা যেন মনের মতো হয় । খাওয়ার টেবিলে দুজনে বসে চা খেতে খেতে এইসবই ভাবছিলাম । হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠল । আমরা দুজনেই দুজনের দিকে তাকালাম । সাথী বলল – এই সকালবেলা এখন আবার কে এলো ? আমি বললাম – দেখ, কোন সেলস ম্যান এসেছে বুঝি । সাথী উঠে দরজা খুলতে গেল । দরজা খুলেই ও চমকে উঠলো – আরে তুমি ? আমিও চোখ তুলে তাকালাম । দেখি দরজায় দাঁড়িয়ে আছে অনিন্দিতা একা ।

সাথী কি বলবে বুঝতে পারছে না । চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে । আমি তাড়াতাড়ি উঠে দরজার দিকে এগিয়ে গেলাম । বললাম – এসো এসো । খুব ভাল করেছো এসে । তোমার কথাই আমাদের হচ্ছিল । এসো বস ।

অনিন্দিতা ঘরে ঢুকে আমাকে আর সাথীকে প্রনাম করে সাথীর সামনে দাঁড়িয়ে বলল – আনটি , আমি তোমার সাথে কিছু কথা বলতে এসেছি । আমার বাবা , মাকে বলেই এসেছি ।এটা ভেবনা যে আমি এই বিয়ের জন্য পাগল । আমি শুধু তোমায় জানাতে এসেছি যে সিগারেট খেয়ে আমি কোন অন্যায় করিনি । আশা করবো তুমি আমার কথাটা একটু মন দিয়ে শুনবে আর আমাকে ভুল বুঝবে না ।

সাথী আমতা আমতা করে বলল – ঠিক আছে আগে তুমি বস , তারপর তোমার কথা শুনছি । তুমি আমাদের বাড়ি প্রথমবার এলে কি খাবে বল ।

– না , না এখন কিছু খাব না । যদি আমি তোমাকে পুরাপুরি convince করতে পারি তাহলে খাব , নচেৎ না ।

– ঠিক আছে তাই হবে । তুমি বল কি বলতে এসেছ – সাথী সস্নেহে বলল ।

– সিগারেট খাওয়া স্বাস্থের পক্ষে খারাপ সেটা সবাই স্বীকার করবে । কিন্তু সিগারেট যারা খায় তারা খারাপ আর যারা খায় না তারা ভাল এটা আমি কিছুতেই মানতে পারছি না ।সিগারেট যারা খায় তারা সবাই উদ্ধত আর যারা খায় না তারা সবাই ন্ম্র স্বভাবের এটা আমি কিছুতেই মানতে পারছি না । চা , কফি , পান , দোক্তা , গুটকা এসবজিনিষ বড়দের সামনে খেলে তাদের অসন্মান করা হয় না , কিন্তু বড়দের সামনে সিগারেট খেলে সেটা অসন্মান , কেন ? সন্মান , অসন্মান তো মনের ব্যাপার । নিম্নবিত্ত আর উচ্চবিত্ত সমাজে এতো ঠুনকো সন্মান , অসন্মান নেই , যত সব মধ্যবিত্তদের মধ্যে । কেন আনটি আমায় বলতে পার ?

সাথী একমনে ওর কথা শুনছে । মনে মনে ভাবছে মেয়েটার মনে সাহস আছে । সোজাসুজি কথা বলতে পারে । ভালই লাগছে শুনতে । একবার জিজ্ঞেস করবো ও দিনে কটা সিগারেট খায় ? আগে শুনি ও কি বলছে তারপর নাহয় জিজ্ঞেস করা যাবে – সাথী মনে মনে এই চিন্তাই করছিলো ।

অনিন্দিতা বলে যাচ্ছিল – আচ্ছা আনটি তুমি কি জোড় দিয়ে বলতে পার আজ যে কোন নেশা করছে না , কাল সে কোন নেশা করবে না । বা যাকে তুমি কোন নেশা করতে দেখলে না সে যে কোন নেশা করে না সেটা তুমি জোড় দিয়ে বলতে পার ।আমি তো মনে করি চারিদিকের বেশিরভাগ মানুষই hypocrite মানে ভণ্ড , সামনে এক আর পিছনে আরেক ।

– তা , ঠিক ।ফুচকা তৈরি করা না দেখলে তুমি আনন্দের সঙ্গে খাবে আর দেখলে কি তুমি খেতে পারবে ?

– পরিচ্ছনতা আর অপরিচ্ছনতার সাথে বিবাহটা মিলিও না ।খাওয়ার ব্যাপারটা একদিনের বা মাঝে মাঝে কিন্তু বিবাহ বরাবরের । আমাদের দেশের প্রচুর নামকরা মহিলা আছেন যারা সিগারেট খান । তাদের আমরা সন্মান করি । কেন বল? তাদের গুনের জন্য । মানুষের বিচার তার আচরন , তার কোয়ালিটির ওপর । সে নেশা করে কিনা তার ওপরে নিশ্চয় নয় । তাইবলে ভেবনা আমি নেশা করাকে সমর্থন করছি । আমিও মনে করি যে কোন নেশা করা খারাপ । তার একটা সাইড এফেক্ট আছে । ধর তুমি সিগারেট খাওনা না কিন্তু কাকু তোমার সামনে সিগারেট খায়, তাহলে কি তোমার ক্ষতি হচ্ছে না ! ধূমপান যদি সবাই বন্ধ করে তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে একটা সুন্দর পৃথিবী উপহার দেওয়া যায় ।তোমরা আমায় সিগারেট খেতে দেখেছ সেটা একটা coincidence । আমি সত্যিই ধূমপান বিরোধী ।

– বাঃ । তোমার কথা শুনে আমার খুব ভাল লাগলো । সাথী বলল ।মনে মনে সাথী ভাবছিল মেয়েটা কি সুন্দর এই দুদিনের আলাপে কেমন আপন করে নিয়েছে ।

আমিও শান্তি পেলাম । মনে হচ্ছে জল গলছে । সাথীতো জানে না যে আমিই অনিন্দিতাকে ফোন করে আসতে বলেছিলাম । আমি জানতাম ও সাথীকে ঠিক convince করে নেবে । অনিন্দিতাও খুব আন্তরিক ভাবে সাথীকে মানিয়ে নিতে চাইছিল । সাথী যে শাশুড়ি হিসাবে খুব ভাল হবে সেটা ও জানত । সাম্যর কাছে ওর বাবা মার গল্প ও অনেক শুনেছে । ওরা ঠিক করেছিল প্রথমে ওরা জানাবে না । দুই বাবা মা আগে পছন্দ করুক তারপর জানাবে । পছন্দ না হওয়ার কোন কারণ ছিল না । কিন্তু বাঁধ সাধল সিগারেট । সাথী বেঁকে বসলো । তখন বাধ্য হয়েই সাম্য আমকে সব জানাল । অনিন্দিতা আর আমি দুজনে ঠিক করলাম আজকের ব্যাপারটা । এছাড়া অনিন্দিতা আমায় কথা দিয়েছে যে ওরা দুজনে কেউই সিগারেট ছোঁবে না । অনিন্দিতাকে আমারও খুব পছন্দ । তাই সাম্য বলাতে আরও উৎসাহ পেলাম । মনে মনে সাম্যের পছন্দের তারিফ করছিলাম ।

– ওকে কি আমাদের বাড়িটা ঘুরে ঘুরে দেখাবে , নাকি ওকে বসার ঘর থেকেই চলে যেতে দেবে । – আমি আস্তে আস্তে সাথীকে বললাম ।

সাথী হাসতে হাসতে বলল – দেখি আগে ওর মার সাথে কথা বলি । বলেই মোবাইলটা নিয়ে একটা নাম্বারে কল করলো । ওদিক থেকে হ্যালো আওয়াজ আসাতে সাথী বলে উঠলো – আজ থেকে অনিন্দিতা শুধু আপনাদেরই মেয়ে না , আমাদেরও । তাই আমরা ঠিক করেছি আমাদের বাড়িতে ও থাকবে ।মনে হচ্ছে ওরও ইচ্ছা আছে থাকার ।

অনিন্দিতা আর আমার চোখাচোখি হল , দুজনেই দুজনকে বললাম DONE .

Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos

9 thoughts on “সিগারেট ————— সুপ্রিয় রায়

  1. জানি না আপনাদের জীবনের ঘটনা , না একটি বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন / তবে ঘটনা আমারও হলে সাথীর মতই অবস্থা হত / আপনার বকলমে যে যুক্তিগুলি সাজিয়েছেন সেগুলোও ভীষণ রকমের বাস্তব / কিন্তু আবাল্য লালিত কিছু সংস্কার মনকে বাস্তবকে স্বীকার করে নিতে বাধা দ্যায় /
    খুব সুন্দর বিষয় এবং উপস্থাপনা /
    এই রকম উপস্থানার অপেক্ষায় থাকি সর্বদা …

    Liked by 1 person

    1. আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটা মন্তব্য উপহার দেওয়ার জন্য । ঘটনাটা কাল্পনিক । আবার বলি ধন্যবাদ ।

      Like

  2. Supriyo sir, you are indeed a very good writer. Although I could not catch everything but till wherever I reached its very lucid. Love to some fictions too from you

    Liked by 1 person

  3. Chanchal Bhattacharya
    খুব সুন্দর লেখা।
    ভালো লাগলো।
    Biplabshankar Mazumder
    খুবই বলিষ্ঠ বক্তব্য , পূরোনো ভাবধারণা গুলি যুক্তি দিয়ে পরিবর্তন করার প্রচেষ্টা সমর্থনের যোগ্য। বেশ ভালো লাগলো।
    Tapasi Banerjee
    Darun. Khub bhalo laglo
    Kanti S
    Khub bhalo laglo galpota
    Mita Sengupta
    Bah! Khub bhalo laglo.
    Naru Mahato
    দ্বিতীয় পর্ব সমাপ্তি টা অসাধারণ ।
    Apurba Neogi
    Excellent and pleasant content. Liked it very much.
    Pradip Kumar Das
    very nice story
    Anup Singha
    Nice story’
    Sanjay Ghosh
    খুব ভালো লাগলো তিলক দা ।
    Aparajita Sengupta
    খুব সুন্দর হয়েছে লেখা টা ।পড়ে ভালো লাগল ।
    Papia Kargupta
    Golper end ta ae rokom hok mone 2 atai chaichhilam

    Liked by 1 person

Leave a Reply

Fill in your details below or click an icon to log in:

WordPress.com Logo

You are commenting using your WordPress.com account. Log Out /  Change )

Facebook photo

You are commenting using your Facebook account. Log Out /  Change )

Connecting to %s