মাথা,ঘাড়,ধর (যার মধ্যে বুক ও উদর আছে ),বাহুদ্বয় , দুই হাত , দুই পা ও চরণ যুগল নিয়ে মানুষের দেহ গঠিত । শরীরের প্রতিটা অংশে বিভিন্ন ধরনের কোষ আছে । এছাড়াও মানুষের দেহ গঠিত হয় কিছু উপাদান দ্বারা যেমন কার্বন ,ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস ।
আমাদের শরীর কিছু পদ্ধতির দ্বারা চালিত হয় যারা দিনরাত সমানতালে কাজ করে চলেছে আমাদের শরীরটাকে ঠিক রাখার জন্য । এই পদ্ধতিগুলো সমন্ধে একটু জানার জন্য নীচেআলোচনা করা হচ্ছে ।
-
সংবহন তন্ত্র বা Circulatory System : হৃদয় ,রক্ত ,রক্তনালী ,ধমনী এবং শিরা নিয়ে গঠিত এই সিস্টেম । এই সিস্টেমের মাধ্যমে রক্ত ,নুত্রিয়েন্ত্স (nutrients), অক্সিজেন , কার্বন –ডাই –অক্সাইড, এবং হরমোন সারা শরীরে পৌচ্ছায় ।
-
পরিপাক তন্ত্র বা ( Digestive System): মুখ, অন্ননালী , পেট , ছোট ও বড় অন্ত্র (small & large intestine), মলদ্বার , গুহ্যদ্বার নিয়ে এই সিস্টেম । লিভার ও অগ্ন্যাশয় (Pancreas) এই সিস্টেমের অঙ্গ কারণ এরা রস তৈরী করে যাতে ভাল করে পরিপাক হয় । এই সিস্টেমের মাধ্যমে শরীর খাবার গ্রহন করে এবং অতিরিক্ত জিনিষ শরীর থেকে বের করে দেয় ।
-
অন্ত্র:স্রাবি বা Endocrine System: এই সিস্টেমে আটটি প্রধান গ্রন্থি আছে যারা রক্তের মধ্যে হরমোন নি:সারিত করে যেটা পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন টিসুর মধ্যে প্রবেশ কোরে শরীরের বিভিন্ন কাজকর্মকে নিয়ন্ত্রণ করে যেমন দেহের মধ্যে রাসায়নিক পরিবতর্ন , দেহের বৃধি, যৌন ক্রিয়াকর্ম ইত্যাদি ।
-
রোগ প্রতিরোধক বা Immune System : এই সিস্টেমে রয়েছে নোড লসিকা ( lymph nodes),প্লীহা ( the spleen) ,অস্থি মজ্জা ( bone marrow), লিম্ফোসাইট( lymphocytes) ,থাইমাস ( the thymus ),এবং শ্বেত রক্তকনিকা ( leukocytes) . এই সিস্টেম হলো শরীরের প্রতিরক্ষা দপ্তর যারা ক্ষতিকারক রোগ জীবানুর থেকে শরীরকে বাঁচায় ।
-
লসিকাসংক্রান্ত সিস্টেম বা Lymphatic System: লসিকা গ্রন্থি ( Lymph nodes),লসিকা নালী ( Lymph ducts ) এবং লসিকা জাহাজ ( Lymph vessels) এই সিস্টেমের মধ্যে । এরা শরীরের প্রতিরক্ষা করে । এই সিস্টেম তৈরী করে লিম্ফ , এক পরিস্কার তরল পদার্থ যার মধ্যে শ্বেতরক্ত কনিকা থাকে এবং পাঠিয়ে দেয় সংক্রামনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ।এই সিস্টেম শরীরের টিসু থেকে অতিরিক্ত লিম্ফ তরল বের করে আনে এবং সেটা রক্তে পাঠিয়ে দেয় ।
-
স্নায়ুতন্ত্র বা Nervous system : মস্তিস্ক বা ব্রেন , মেরুদন্ড বা স্পাইনাল কর্ড ও স্নায়ু নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । এই সিস্টেমে শরীরের বিভিন্ন অংশের সাথে স্নায়ুদের যোগাযোগ থাকে । ইচ্ছায় হোক বা অনিচ্ছায় শরীরের সর্বত্র সংকেত পৌচ্ছায় এই সিস্টেমের মাধ্যমে ।
-
পেশীতন্ত্র বা Muscular Syestem : এই সিস্টেমে প্রায় ৬৫০ টি পেশী আছে যারা আমাদের নড়াচাড়া করতে , আমাদের রক্ত প্রবাহ সচল রাখতে এবং শরীরের অনান্য অংশকে কাজ করতে সাহায্য করে । আমাদের শরীরে তিন ধরণের পেশী আছে (১ ) স্কেলিটন পেশী বা Skeleton Muscles (২ ) স্মুউথ পেশী বা Smooth Muscles (৩ ) কার্ডিয়াক পেশী বা Cardiac Muscles । স্কেলিটন পেশী হাঁড়ের সাথে যুক্ত এবং হাঁড়ের নারাচাড়াতে সাহায্য করে । স্মুউথ পেশী সকল অঙ্গের ভিতরে থাকে যা বিভিন্ন পদার্থকে অঙ্গের মাধ্যমে চালনা করে আর কার্ডিয়াক পেশী হার্টের সাথে থাকে যা রক্ত পাম্প করতে সাহায্য করে ।
-
প্রজনন তন্ত্র বা Reproductive System : এই সিস্টেম বংশ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে । ছেলেদের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বা পেনিস ( Penis ) ,টেস্তেস বা (Testes) , এবং মেয়েদের ক্ষেত্রে ভেজাইনা বা( Vegina) ,জরায়ু বা ইউট্রাস(Uterus ) , ডিম্বাশয় বা ওভারী ( Ovaries ) নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । ছেলেদের প্রজনন তন্ত্র শুক্রাণু তৈরী করে আর মেয়েদের প্রজনন তন্ত্র ডিম্বাণু তৈরী করে । ডিম জরায়ুতে বড় হয় ।
-
কঙ্কাল তন্ত্র বা Skeletal System: ২০৬ টা হাঁড় নিয়ে এই সিস্টেম যারা রগ বা Tendons, লিগামেন্ট , কারটিলেজ এর সাথে যুক্ত । এরা শুধু আমাদের নড়তে চড়তে সাহায্য করে তা নয় এরা রক্ত কোষ তৈরী করতে এবং ক্যালসিয়াম ধরে রাখতেও সহায়তা করে । দাঁত , হাঁড় নয় কিন্তু এই সিস্টেমের অন্তর্গত ।
-
শ্বসনতন্ত্র বা Respiratory System: শ্বাসনালী ,মধ্যচ্ছদা বা Diaphragm, ফুসফুস বা Lungs নিয়ে এই সিস্টেম . নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন নেওয়া এবং কার্বন ডাই অক্সাইড ছাড়া এই সিস্টেমের কাজ ।
-
মূত্রাধার প্রণালী বা Urinary System : দুটো কিডনি, দুটো মূত্রনালী ,থলি বা ব্লাডার ,দুটো sphincter পেশী নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । এই সিস্টেম শরীর থেকে ইউরিয়াকে আলাদা করতে সাহায্য করে । কিডনি পেচ্ছাব তৈরী করে সেটা মূত্রনালীর মধ্য দিয়ে থলিতে গিয়ে বাইরে বেরিয়ে যায় ।
-
চামড়া বা The skin or Integumentary System : চামড়া , চুল , নখ নিয়ে এই সিস্টেম গঠিত । শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ । রোগ জীবানু এককথায় বলা যায় বাহ্যিক জগৎ থেকে প্রথমে শরীরকে রক্ষা করে এই সিস্টেম । আমাদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং আমাদের শরীরের থেকে বর্জ পদার্থ বের করতে সাহায্য করে এই সিস্টেম ।
পাকস্থলী বা Stomach
স্টমাক বা পাকস্থলী তলপেটের উপরের বাঁ দিকে লিভারের নীচেপ্লীহার পাশে থাকে । এর প্রধান কাজ হলো খাবারকে শরীরের অন্য অঙ্গে পুরোপুরি পরিপাক হওয়ার জন্য পাঠানোর আগে মজুত করে এবং পাকস্থলীর ভিতরেই খাবারকে ভেঙ্গে ফেলে । বেশি খাবার গ্রহন করতে পাকস্থলী নিজেকে বড় করতে পারে । গড়ে পাকস্থলী ১.৫ গ্যালন খাবার বা জলীয় পদার্থ ধারণ করতে পারে । অন্য অঙ্গে পাঠানোর আগে ৩ থেকে ৫ ঘন্টা খাবারকে নিজের কাছে রাখতে পারে । পরিপাক করার জন্য পাকস্থলীর প্রধান অস্ত্র পাচক রস । এই শক্তিশালী পাচক রস থেকে নিজেকে বাঁচাতে শ্লেষার মত একপ্রকার রস পাকস্থলী ব্যবহার করে । এই রসের অভাবে পাকস্থলিতে আলসার হয় । পাকস্থলীর কাজ শেষ হওয়ার পরে খাবারের মন্ড , পাচক রস সহ অন্য অঙ্গের মাধ্যমে ছোট অন্ত্র বা small intestine এর ভিতর প্রবেশ করে ।
ভাল রাখাতে হলে :-
ঘুমানোর ২ থেকে ৩ ঘন্টার আগে কিছু না খাওয়া
বেশি করে চর্বিহীন প্রোটিন খাওয়া
- গোটা শস্য খাওয়া
কম চর্বি যুক্ত দুগ্ধ জাতীয় খাবার খাওয়া
- লবনের পরিমান কম করা
কম গ্লায়সেমিক সূচক বা Glycemic Index যুক্ত খাবার খাওয়া
পর্যাপ্ত পরিমানে জল পান করা
- প্রতিদিন নিয়মিত শরীর চর্চা করা অতিরিক্ত মদ্যপান না করা
- খালি পেটে যত কম থাকা যায়
- মানসিক চাপ যতটা সম্ভব নিয়ন্ত্রণে রাখা
বিশেষজ্ঞদের মতে দুপুর ৩ টে থেকে ৪ টের মধ্যে প্রোটিন সমৃদ্ধ জলখাবার খেলে শরীরে ম্যাজিক ঘটে ।
Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos