পেটের ( Stomach) কাছে অগ্ন্যাশয় (Pancreas) থেকে ইন্সুলিন নামক হরমোন বের হয় রক্তের মধ্যে, রক্তে শর্করার ( Glucose) মাত্রা অনুযায়ী। খাবার পরিপাক হওয়ার পর যে শর্করা পাওয়া যায় সেটাকে কোষের মধ্যে পাঠাতে ইন্সুলিন সাহায্য করে ,কোষের এনার্জি বা শক্তি বৃদ্ধি করতে।
যখন শরীর ঠিকমতো ইন্সুলিন তৈরী করতে পারে না তখন সেটাকে টাইপ ওয়ান ডাইবেটিস বলে আবার যখন ইন্সুলিন তৈরী হয় কিন্তু ঠিকমতো কাজ করে না তাকে টাইপ টু ডাইবেটিস বলে।তার ফলে শর্করা বা Glucose রক্তেই থেকে যায় , কোষের মধ্যে যথেষ্ট পরিমানে যেতে পারে না তখন তাকে high blood sugar বা রক্তে উচ্চ শর্করা বলে।
যখন খাবার, শরীরচর্চা এবং ইন্সুলিনের ভারসাম্য ঘটে তখন শরীরের রক্তে শর্করার মাত্রার বৃদ্ধি ঘটে। সুতরাং যাদের ডাইবেটিস আছে তাদের ঠিকমতো খাবার,শরীর চর্চা ও ঔষধের(যদি ডাক্তার দিয়ে থাকে) মাধ্যমে নিজেকে ঠিক রাখতে হবে।
যাদের ডাইবেটিস আছে তাদের সারাদিনে ও রাত্রে রক্তে শর্করার পরিমাপ ব্যাপকভাবে পরিবর্তন হয় । রক্তে শর্করার পরিমান ৯0 থেকে ১৩0 mg/dl খাওয়ার আগে এবং খাওয়ার ১ বা ২ ঘন্টার মধ্যে ১৮0 mg/dl অবধি ঔষধের খুব একটা দরকার হয় না।
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা গেছে, যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index বেশি থাকে, সেইসব কার্বোহাইড্রেট রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয় । আর যেসব কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বা Glycemic Index কম বা মাঝারি থাকে তারা রক্তে তাড়াতাড়ি মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে না । সুতরাং গ্লায়সেমিক ইনডেক্স বেশি কার্বোহাইড্রেট আর গ্লায়সেমিক ইনডেক্স কম কার্বোহাইড্রেট একসাথে মিশিয়ে খেলে গ্লায়সেমিক লোড কম হয় ।
উপসর্গ বা Symptom :
-
দেখে মনে হয় শুকনো মূখ
-
মাঝে মাঝে জল তেষ্টা পাওয়া
-
মাঝে মাঝেই পেচ্ছাবের বেগ হওয়া
-
রাত্রে পেচ্ছাবের বেগ বেশি হওয়া
-
চোখের দৃষ্টি ঝাপসা লাগা
-
চামড়ায় মাঝে মাঝে চুলকানি আর অনেকদিন ধরে চামড়ার সংক্রমন যেমন ফোড়া
-
অকারণে ক্লান্তি বোধ করা
-
শরীরের ওজন কমে যাওয়া
-
খাওয়ার ইচ্ছার বৃদ্ধি
হাতে বা পায়ে অসাড় ভাব বা ব্যথা
পায়ের পাতায় ঘা যা সারতেই চায় না
জ্ঞান হারানো ভয় থাকে
অনেক সময় উপসর্গ বোঝা যায় না।
ভাল থাকতে হলে:
-
প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম কমপক্ষে ৩0 থেকে ৪৫ মিনিট।
-
যেসকল কার্বোহাইড্রেটের মধ্যে শর্করার পরিমান বেশি থাকে সেগুলো কম খাওয়া । সারাদিনে ভাত ১00 থেকে ২00 গ্রাম শারীরিক পরিশ্রম করলে, নতুবা ৫0 গ্রাম।
-
তন্তুযুক্ত ফল ও ঘন সবুজ শাক সবজী যতটা বেশি খাওয়া যায়।
-
চিনি ও মিষ্টি যত কম খাওয়া যায় ।
-
ডাল,দুধ,ডিম,ওটস্,বিন,বরবটি,ব্রোকলি,আপেল,লেবু,গাজর,রসুন,তরমুজ,বাদাম,পেঁয়াজ,টমাটো,তৈলাক্ত মাছ, চর্বি ছাড়া মাংস ডাইবেটিসের উত্তম খাদ্য ।
-
ম্যাগনেসিয়াম যুক্ত খাবার কারণ ম্যাগনেসিয়াম ইনসুলিন তৈরী করতে সাহায্য করে. যেমন বাঁধাকপি , বাদাম , আলু ইত্যাদি
-
গ্রীন টি খাওয়া ভাল
-
এসিডিক খাবার যেমন লেবু খাওয়া
-
প্রোটিন একটু বেশি খেতে হবে
-
পর্যাপ্ত ঘুমের প্রয়োজন ।
বেশি রাত করে খাবার না খাওয়াই শ্রেয় ।
প্রচুর পরিমানে পরিশ্রুত জল পান করতে হবে ।
- অনেকক্ষণ এক জায়গায় না বসে মাঝে মাঝে একটু চলাফেরা করা ।
যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের জন্য প্রধানত দুটো জিনিসের দিকে একটু বেশি নজর দিলে ঔষধ খাওয়ার সম্ভবনা কম থাকে ।
- শারীরিক পরিশ্রম
- সঠিক আহার
যাদের শুধু ডায়াবেটিস আছে, তাদের ওজনের সাথে ২৪ দিয়ে গুন করলে যে সংখ্যাটা আসে তত ক্যালোরি খাবার খাওয়া উচিত । অন্য কোন অসুবিধা না থাকলে ক্যালরির ৫০% আসবে কার্বোহাইড্রেট থেকে , ৩০% আসবে প্রোটিন থেকে এবং ২০% আসবে ফ্যাট থেকে । ব্যাক্তি বিশেষে পরিবর্তন হতেই পারে ।
সব খাবারই খাওয়া যেতে পারে কিন্তু যে খাবার ডায়াবেটিস বাড়াতে সাহায্য করে , খুব ইচ্ছা করলে সেটা সামান্য পরিমানে । কোন খাবার ডায়াবেটিসের পক্ষ্যে ভালো আর কোনটা খারাপ সেটা জানা খুব প্রয়োজন । আমরা জানি রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে কেবলমাত্র কার্বোহাইড্রেট যদিও কার্বোহাইড্রেট আমাদের শরীরের জন্যে খুব প্রয়োজন । শ্বেতসার , শাক সবজি , ফল সব কিছুর মধ্যেই কার্বোহাইড্রেট আছে । সুতরাং আমাদের জানা দরকার কোন জাতীয় খাবারের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিসের পক্ষ্যে ভালো বা খারাপ ।
শ্বেতসারের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট :
ভাল বিকল্প (best option) : গোটা শস্য (whole grain) যেমন ব্রাউন রাইস , ওট মিল , বাজরা , ভুট্টা , গমের আটা , মোটকথা গোটা শস্য দিয়ে যা বানানো , সেঁকা মিষ্টি আলু ইত্যাদি ।
খারাপ বিকল্প (worst option) : প্রক্রিয়াজাত শস্য (processed grains) যেমন সাদা চাল,ময়দা প্রভৃতি , সেরিয়ালস (cereals)যার মধ্যে মিষ্টি বেশি থাকে , সাদা রুটি বা পাওরুটি , ভাজা খাবার , কেক,সোডা,কুকিস,ক্যান্ডি, জুস(প্রক্রিয়াজাত)ইত্যাদি ।
শাক ও সবজির মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট :
প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে শাক ও সবজি থেকে আমরা প্রচুর পরিমানে ফাইবার বা তন্তু পাই যেটা শরীরের জন্য ভাল .কম পাই ফ্যাট ও লবন (যদি না বাইরে থেকে যোগ করা হয় )।
ভাল বিকল্প best option) :তাজা শাক সবজি কাঁচা , হালকা আঁচে সিদ্ধ , ঝলসানো বা গ্রিল করা খেলে ভাল । গাঢ় রঙের শাক সবজি আরো ভালো । কম সোডিয়াম বা সোডিয়াম ছাড়া ক্যানের মধ্যে রাখা শাক ও সবজি. বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী প্রতিদিন আড়াই কাপ করে শাক ও সবজি খাওয়া উচিত।
খারাপ বিকল্প (worst option) : সোডিয়াম যুক্ত ক্যানের মধ্যে রাখা শাক ও সবজি । বেশি লবন, মাখন,চিস ,বা সস দিয়ে রান্না করা শাক ও সব।
ফলের মধ্যে থাকা কার্বোহাইড্রেট :
মনে রাখতে হবে ফলের থেকে আমরা কার্বোহাইড্রেট, ফাইবার , ভিটামিন , মিনারেল সব পাই. বেশি ভাগ ফলের মধ্যেই ফ্যাট ও লবন কম থাকে । কিছু ফলের মধ্যে শাক ও সবজির থেকেও বেশি কার্বোহাইড্রেট থাকে সেগুলো কম খাওয়া ।
ভাল বিকল্প best option) : তাজা ফল বা সাধারণ হিমায়িত ফল , চিনি ছাড়া ক্যানের মধ্যে রাখা ফল , কম বা বিনা চিনি যুক্ত জ্যাম বা জেলি , কম বা বিনা চিনি যুক্ত ফলের চাটনি , চিনি ছাড়া ফলের রস ।
খারাপ বিকল্প (worst option) : চিনি যুক্ত ক্যানের মধ্যে রাখা ফল , বেশি মিষ্টি দেওয়া জ্যাম , জেলি , মিষ্টি চাটনি , প্রক্রিয়াজাত ফলের রস ।
সুতরাং পরিকল্পনা মাফিক খাবার আর পরিশ্রম রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে ।
Example of one of the Diabetes Diet (1600 Kcal/ Calories )
BREAKFAST (350 Kcal):
- Tea & Biscuit -25 Kcal
- Chapati 3 Pcs 60 gm atta -200 Kcal
- Milk 90 ml -50 Kcal
- Green Vegetable – 50 Kcal
- Oil (1 tsp.) – 50 Kcal
LUNCH (600 Kcal) :
- Rice (2Bati Rice @ 100 gm each) -200 Kcal
- Dal (30 gm) – 100 Kcal
- Egg (2 Pc) / Rajma ( 300 gm) /Fish (90 gm)/ Chicken (90 gm) – 100 Kcal
- Green Vegetable – 100 Kcal
- Curd / Dahi (100 gm) – 50 Kcal
- Oil (1 tsp) – 50 Kcal
EVENING TIFFIN (150 Kcal) :
- Fruit Salad (75 gm) – 75 Kcal
- Biscuit (2 Pcs) – 25 Kcal
- Milk (90 ml) – 50 Kcal
DINNER (500 Kcal):
- Chapatti (3 Pcs ) – 200 Kcal
- Dal ( 30 gm) – 100 Kcal
- Milk (90 ml) – 50 Kcal
- Green Vegetable – 100 Kcal
- Oil (1 tsp) – 50 Kcal
Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos
বিভিন্ন জায়গা থেকে সংগৃহীত
LikeLike
যেহেতু বিশ্ব মধুমেহ দিবস বা ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে ছিল ১৪ নভেম্বর । তাই ………
LikeLike
GOOD SUGGESTION
LikeLike
Thank you
LikeLike
Pradip Kumar Das
Good information
Apurba Neogi
Very nice and important information in details to keep ourselves safe when attacked by Diabetes.
Chinmoy Goswami
খুব প্রয়োজন ছিল এই কখাটার।
Gita Kar
Good information
Nikhil Laha
Good advice.
LikeLiked by 1 person
THANKS TO ALL
LikeLike