অনেকদিন আগে এক বহুল প্রচারিত দৈনিকে দেখেছিলাম একটা সংবাদ – “ নুসুবাবু হেসেছেন “। নুসুবাবু তখন ছিলেন এক প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত । একজন গম্ভীর মানুষ হেসেছেন সেটাই ছিল খবর। যদিও খবরের কাগজের লোকদের কাছে সেটা ছিল তোষামোদ , কিন্তু আজ আমার মনে হয় এই খবরের মুল্য অনেক। সকালবেলায় কোন হাসি মুখ দেখা , সারাদিনের এনার্জি গ্রহণ করার মতো । হাসি আসল বা নকল যাই হোক না কেন তার মুল্য অসীম । আজকাল আমরা সবাই জানি যে লাফিং থেরাপি বিভিন্ন রোগের এক বড় চিকিৎসা পদ্ধতি । ভাল থাকতে যার জন্য অর্থ ব্যয় করতে হয় না কিন্তু অনেক অর্থ ব্যায়ের হাত থেকে বাঁচাতে পারে প্রতিদিনের এই প্রাণখোলা হাসি । দেখা যাক একটু হাসির কি উপকারিতা আছে –
মুখের প্রতিটি মাড়ির দারুন ব্যায়াম হয় । মাড়ির সাথে সাথে হয় সমস্ত মুখের ব্যায়াম। তারফলে বাড়ে মুখের সৌন্দর্য ।
হাসি,সম্পর্ক ভাল রাখার একটা বড় হাতিয়ার । যে কোন ধরণের রাগের উপশম দূর করতে একটা সুন্দর হাসির উপকারিতা অনেক বেশি।বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা মন খুলে হাসতে পারেন তাদের হার্ট ভালো থাকে , যারা কম হাসেন তাদের থেকে।
- আমেরিকার ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ক্যান্সার রোগীদের হাসানোর জন্য বিশেষ থেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। যা একজন ক্যানসার রোগীর দেহের ব্যথা দূর করে ও মন ভালো রাখে।
- আমরা যখন হাসি তখন আমরা ভুলে যাই আমাদের রাগ বা মানসিক চাপের কথা । আমরা জানি যে মানসিক চাপ– ই বিভিন্ন রোগের সৃষ্টি করে । তাই মানসিক চাপ থেকে শরীরকে বাঁচাতে আমাদের হাসির খুবই প্রয়োজন ।
- হাসি আমাদের মস্তিষ্কের এনডোরফিন (হরমোন) নামের একটি কেমিক্যাল নিঃসরণ করে থাকে যা আমাদের শরীরে কোন ব্যথা থাকলে তা দূর করতে সাহায্য করে থাকে।তাই বলা হয় আমরা যত বেশি হাসবো শরীরের ব্যথা ততবেশি কমে যাবে এবং শরীর একটা ভালো থাকার অনুভূতি দেবে ।
- হাসি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে । আমরা যখন হাসি তখন আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এবং বেশি অক্সিজেন গ্রহণের জন্য শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।
- বিশেষজ্ঞদের মতে সন্ধ্যায় যত বেশি করে হাসা যাবে রাতে তত ভালো ঘুম হবে। আর রাতে ভাল ঘুমানোর জন্য যদি কোন মজার গল্পের বই পড়া যায় তাহলে অবধারিত ভাল ঘুম আসবে ।
- নেতিবাচক মনোভাব এবং মানসিক চাপের কারণে শরীরে একধরণের কেমিক্যাল রিঅ্যাকশন ঘটায় যা আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল করে তোলে এবং আমরা অসুস্থবোধ করি। কিন্তু প্রাণখোলা হাসি আমাদের ইমিউন সিস্টেম উন্নত করে তোলে। এতে করে আমাদের শরীর রোগ প্রতিরোধ করতে পারে এবং আমরা সুস্থ থাকি ।
- যতবার আমরা প্রাণখোলা হাসি হাসবো, ততবার ছোটখাটো হলেও বেশ ভাল একটা ব্যায়াম করা হবে আর শরীর করবে তার জন্য পরিশ্রম তাহলে হবে ক্যালোরি ক্ষয় । বিশেষজ্ঞদের মত অনুযায়ী মাত্র ১৫ মিনিটের প্রাণ খোলা হাসি আমাদের ২০–৪০ ক্যালোরি পর্যন্ত ক্ষয় করতে পারে ।
- বিভিন্ন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যে হাসলে এন্ডোরফিনের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি রক্তচাপ ও কমে যায়। রক্তচাপ কমা মানে হৃদরোগের ঝুঁকি কমা । তাই বলা যেতে পারে যে হাসি জীবন রক্ষা করে ।
- হাসলে ফুসফুসের আকৃতি বৃদ্ধি পায়। ফলে ফুসফুস ধারন করতে পারে অনেকটা বেশি অক্সিজেন। একবার হাসলে শরীরের ছোটখাটো হলেও বেশ ভাল একটা ব্যায়াম হয়ে যায়। গবেষকদের মতে একবার হাসলে মানুষের শরীরের ০.০০৩ শতাংশ ক্যালোরি খরচ হয়। ফলে কমে যায় ওজনও।
- হাসি পুরো শরীরকে স্নিগ্ধ করে তোলে। একটি ভালো, প্রাণখোলা হাসি শারীরিক উত্তেজনা এবং চাপ থেকে শরীরকে মুক্তি দেয় । শরীরের পেশীগুলিকে 45 মিনিট অবধি নিরুত্তেজ করে রাখতে পারে ।
- তাইতো শরীর আর মন সুস্থ ও ভাল রাখার সবচেয়ে মিষ্টি ও শ্রেষ্ঠ চাবিকাঠি হল সারাদিনের প্রাণখোলা হাসি ( সেটা আসল বা নকল যাই হোক না কেন ) ।
Please visit my You tube channel : https://www.youtube.com/cha…/UCwI8JNW7FmslSEXnG6_GAgw/videos
বিভিন্ন বই ও ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লেখা হয়েছে ।
LikeLike